নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি সেই রকম পৃথিবীর স্বপ্ন দেখি যেখানে সবাইকে সমান দৃষ্টিতে দেখা হবে। যেখানে থাকবে না কোন পাপ পঙ্কিলতা।

ইসিয়াক

সবার উপর মানুষ সত্য তাহার উপর নাই।

ইসিয়াক › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্মৃতি কথাঃ (৪) দূর্বিষহ শৈশব

০৫ ই জুন, ২০২৩ বিকাল ৪:২৩


আমি ছোটবেলা থেকে একটু অন্য টাইপের ছিলাম।অন্য টাইপের বলতে গড়পড়তা ছেলেদের মত ছিলাম না আর কি।আমার মধ্যে মেয়েলী ভাব ছিল প্রবল। আমার জ্ঞান হবার পর থেকে সবসময় মেয়েদের সাথেই খেলতে পছন্দ করতাম।নাটক সিনেমার নায়িকাদের নকল করে তাদের মত কথা বলা, হাসি দেওয়া,হাসতে হাসতে মুখে হাত চেপে ধরা এগুলো ছিল আমার অভ্যাস।বাস্তবে ছেলে হয়েও আমার সব আচরণ ছিল মেয়েদের মত। রান্নাবাটি, পুতুল খেলা, কিতকিত, লাফ দড়ি, ইচিং বিচিং এসব ছিল আমার প্রিয় খেলার তালিকায় আর আমার সঙ্গীরাও ছিল সবাই মেয়ে। আরও একটা ব্যপার ছিল আমি সবসময় মেয়েদের মত কোমর দুলিয়ে ঢং করে হাঁটতাম,হাত ঘুরিয়ে কানের কাছে থাকা চুল বিশেষ কায়দায় কানের পিছনে আনতাম (সেই সময় এটা মেয়ে অন্যতম স্টাইল ছিল)। কথায় কথায় বিশেষ ভঙ্গিতে মুখ বাঁকানো ছিল আমার বড় একটা মুদ্রা দোষ।সেই সঙ্গে কন্ঠস্বরও ছিল মেয়েদের মত চিকন।
সংগত কারণে রাস্তা ঘাটে স্কুলে আমাকে ডাকা হতো হাফ লেডিস, হিজড়া ইত্যাদি বিশেষণে।অল্প বয়সের কারণে এসব নিয়ে খুব বেশি মাথা ঘামাতাম না তবে অতিরিক্ত হয়ে গেলে মাঝে মধ্যে টিচারদের কাছে বা বয়োজ্যেষ্ঠ কারো কাছে নালিশ করতাম ব্যাস।কিন্তু দিন যত যেতে লাগলো আমার চারপাশটা ক্রমশ জটিল আকার ধারণ করতে লাগলো। আমাদের পরিবারে অশান্তি শুরু হলো। আমার মেয়েলী আচরণের কারণে আব্বা আমাকে তীব্রভাবে অপছন্দ করতেন।প্রায় সময় আমাকে নানা কথা শোনাতেন বা শাস্তি দিতেন।কড়া হুশিয়ারী দিয়ে আচরণ ঠিক করতে বলতেন। মায়ের সাথেও দূর্ব্যবহার করতেন,উঠতে বসতে তাকে দোষারোপ করতেন । মা ছিলেন খুব চাপা স্বভাবের তিনি নিরবে কষ্ট পেতেন তবে কখনোই আমাকে কোন কিছু নিয়ে ফোর্স করতেন না। বলতেন "তুমি তো তোমার মত।তুমি নিজেকে তোমার মত গড়বে আর অবশ্যই লেখাপড়া চালিয়ে যাবে।সব সময় নিজের পায়ে দাঁড়াতে চেষ্টা করবে।নিজের কাজ নিজে করবে।কোন অবস্থাতে কখনও হাল ছাড়বে না।।"
সিক্সে ওঠার পর সমস্যা আরও প্রকট হলো। যেহেতু তখন হাইস্কুলে পড়ছি।নতুন পরিবেশে এসে আমার নিজের স্বভাবের কারণে সহজেই উপরের ক্লাসের ছেলেদের চোখে পড়ে গেলাম।টিফিন আর ক্লাস শুরু হবার আগে তারা আমার ক্লাসের সামনে জটলা পাকাতো।আমার সহপাঠীরা মজা করে বলতো-বয়েজ স্কুলে লেডিস দেখে ওরা পাগল হয়ে গেছে। বুঝলি অপুর্ব ওরা তোরে খাইতে করতে চায়। "
এদিকে কেউ কেউ নানারকম ইশারাও করতো। আমি স্বভাব সুলভ ভঙ্গিতে এসব তেমন একটা পাত্তা না দিলেও খানিক লজ্জা লজ্জা ভাব করতাম।
এদিকে আমাকে নিয়ে আমার বাবা মায়ের সংসারে প্রবল অশান্তি শুরু হলো।পাড়াপ্রতিবেশি নানা আলোচনা করে টিটকারি মেরে জীবন আরও জটিল করে তুলল।
তারপর একদিন আব্বাকে বলতে শুনলাম আমাকে নাকি কোথায় রেখে আসবেন তিনি।সেখানে নাকি আমি খুব ভালো থাকবো। আমার মত নাকি সেখানে অনেকেই আছে। তারা সেখানে খেয়ে পরে ভালোই আছে।
সবশুনে আমার মনটা ভীষণ খারাপ হলো।কষ্টে বুক ফেটে যাচ্ছিল কিন্তু আমার কিছু করার ছিল না।সেই দিনগুলোতে আমার মা শুধু আমাকে জড়িয়ে ধরে চুপচাপ বসে থাকতেন।তাঁর মনের অব্যক্ত ভাব আমি ঠিক বুঝতে পারতাম।আমার ভীষণ ভীষণ কষ্ট হতো কিন্তু আমরা অসহায় ছিলাম।
আব্বা হয়তো আমার ভালোই চায়।তাছাড়া আমার জন্য আমার আব্বার সামাজিক মর্যাদা হুমকির মুখে তাই তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন হয়তো। আমার মনে হয় মেনে নেওয়াই উচিত।আমি চুপচাপ থাকি।কষ্টের কথা কাউকে বলি না।বলে কোন লাভ নেই যে।
কিন্তু আমার মা আমাকে কোথাও পাঠাতে রাজী হলেন না।আমাদের দুই ভাই বোনকে পাখির ডানা দিয়ে আগলে রেখে নানা অত্যাচার সহ্য করতে লাগলেন দাঁতে দাঁত চেপে। কয়েক বছর লড়াই চালিয়েও শেষ রক্ষা হলো না। আমাদের পরিবারটা ভেঙে গেল। আমার নানার বিশাল বাড়িতে প্রাথমিক অবস্থায় আমাদের ঠাই হলেও মামাদের প্ররোচনায় আমরা দুই ভাই বোন সেখান থেকে বিতাড়িত হলাম অচিরেই। পৃথিবীতে সম্পত্তির হিসাবটাই বড় হিসাব।
এরপর বাধ্য হয়েই আবার আমরা আমাদের আব্বার বাসায় এসে উঠলাম।পরে অবশ্য জেনেছিলাম আমার দাদীজানের ইচ্ছাতে বাবা আমাদের আশ্রয় দিতে বাধ্য হয়েছেন।
এবার শুরু হলো আমার অন্য রকম জীবন। বাসার কাজের সহকারীদের বিদায় করে দেওয়া হলো ক'দিনের মধ্যে। পরিবারের সব কাজ তখন আমাকে একাই করতে হতো। রান্না কাপড়চোপড় পরিষ্কার,ঘর গোছানোর কাজ,আটা ও মশলার মিল দেখাশেনা করা ইত্যাদি। তার মধ্যে আমি লেখাপড়া চালিয়ে যেতে চেষ্টা করলাম কিন্তু আমার স্কুল প্রায় বন্ধ হয়ে গেল অজস্র কাজের চাপে। সারাদিন শুধু কাজ আর কাজ।সাথে আছে আমার আব্বার নানা অত্যাচার। কতদিন যে রান্নায় লবন কম বা স্বাদ ঠিকঠাক না হবার জন্য গরম খুন্তির ছ্যাকা খেয়েছি তা বলতে পারবো না। শুধু চাইতাম এই দূর্বিষহ জীবন থেকে পালাতে কিন্তু ছোটবোনটার কথা ভেবে কোথাও পালাতে পারতাম না।কারণ ও ছিল আমার থেকেও অনেক ছোট।
এদিকে আমার মায়ের সাথেও আমাদের কোন যোগাযোগ ছিল না।সেখানে নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছিল কাছের আত্নীয় স্বজনেরা। পরে জেনেছিলাম আমার মাও এক বৃত্তাবদ্ধ পরিস্থিতিতে আটকে পড়েছিল। সেই বন্দী জীবনে তার কোন স্বাধীনতা ছিল না। তাঁর জীবনও ছিল দূর্বিষহ।
যাহোক আমি সপ্তাহে দুই দিন করে স্কুলে যাওয়া আসা করতাম। তার মধ্যে দুষ্ট ছেলেদের জ্বালাতন তো আছেই। কেউ কেউ নানা ছুতায় গায়ে হাত দেবার সুযোগ খুঁজতো আমি প্রতিবাদ করি নালিশ করি তবে তেমন সুফল হতো না। এরপর একদিন, সেদিন স্কুলে গেছি। অন্য দিনের চেয়ে একটু আগেই গেছি কারণ আকাশে দারুণ মেঘ। আমার ছাতা ভেঙে গিয়েছিল। আমি বৃষ্টিতে ভিজতে চাইছিলাম না। একসময় ঝুম বৃষ্টি শুরু হলো। স্কুলে অল্প কিছু ছেলে এসেছে। সেজন্য সম্ভবত স্কুল তাড়াতাড়ি ছুটি হয়ে গেল। আমার এক সহপাঠী আমাকে নোট দেবার নাম করে তার বাড়িতে নিয়ে গেল।
আসলে ওটা ছিল একটা ফাঁদ। সেই ফাকা বাড়িতে আমাদের স্কুলের বড় ক্লাসের কয়েকজনকে দেখে আমি বেশ ঘাবড়ে গেলাম। আমি চলে আসতে চাইলাম। আমার ফিরতে হবে বাসায় অনেক কাজ।আমি রান্না না করলে দুপুরে কারো খাওয়া হবে না। নানা অযুহাত দেখালাম।
না সেদিন আমি যথাসময়ে ফিরতে পারি নি। চরমভাবে অপমানিত হয়ে নিজের উপর নিজেরই ঘৃণা লাগছিল।মানুষ এত নোংরা কি করে হয়?
এমন পরিস্থিতিতে আমি ঠিক করলাম। এই দূর্বিষহ জীবন আর আমি বয়ে বেড়াবো না। আমি আত্মহত্যা করবো।রাস্তায় ঘুরে ঘুরে সন্ধ্যার অন্ধকারে আমি আমাদের পাড়ায় ফিরে এলাম।নিজ উদ্দেশ্য চারিতার্থ করবার জন্য চঞ্চলদের নতুন বিল্ডিং এর পাঁচ তলাতে উঠলাম। উদ্দেশ্য লাফ দিয়ে নিচে পড়ে আত্মহত্যা করবো।
লাফ দেওয়ার জন্য যখন সব প্রস্তুতি শেষ করেছি ঠিক তখনই পেছন থেকে কে যেন ডেকে উঠলো
-ভাইয়া!
সঙ্গে সঙ্গে আমার পৃথিবীটা দুলে উঠলো তাইতো এটা কি করছি আমি। আমি ছাড়া আমার বোনটার যে আর কেউ নেই। না আমি হারবো না। আমি বাঁচবো,আমাকে বাঁচতে হবে। এবার থেকে আমি নিজের মত করে বাঁচবো। নিজেকে বদলাবো যথা সম্ভব।আমি পারবো। আমাকে যে পারতেই হবে।তারপর অনেক বছর পেরিয়ে...... আমি পেরেছি।
বেঁচে সত্যি দারুণ ব্যপার। জীবন অতি সুন্দর। আর তাই নিজেকে অনেক সাধনায় একটু একটু করে বদলে নিয়ে এখনও বেঁচে আছি। ভালো আছি।
© রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক

মন্তব্য ৩৬ টি রেটিং +১২/-০

মন্তব্য (৩৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই জুন, ২০২৩ বিকাল ৫:০২

নতুন বলেছেন: some time life really is stranger than fiction :|

০৮ ই জুন, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:০৮

ইসিয়াক বলেছেন:





কখনও কখনও বাস্তব অবশ্যই বইয়ে লেখা কাহিনীকে হার মানায়।আমার চলার পথ কখনওই মসৃণ ছিল না। তবু আমি ভালো থাকার চেষ্টা করি সবসময়। নিজেকে হাসিখুশি রাখি।জীবন তো একটাই!
ভালো থাকুন। প্রিয় ব্লগার শুভেচ্ছা রইলো।

২| ০৫ ই জুন, ২০২৩ বিকাল ৫:২০

মিরোরডডল বলেছেন:



বেঁচে সত্যি দারুণ ব্যপার। জীবন অতি সুন্দর। আর তাই নিজেকে অনেক সাধনায় একটু একটু করে বদলে নিয়ে এখনও বেঁচে আছি। ভালো আছি।

একজন প্রকৃত যোদ্ধা ও বিজয়ীর গল্প।
ভেরি ওয়েল ডান!
আগামী দিনগুলোও অনেক ভালো থাকুক।


০৮ ই জুন, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:১১

ইসিয়াক বলেছেন:







পাশে থাকার জন্য অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা রইলো প্রিয় ব্লগার। কেন জানি না আমার এই পোস্টে আপনার একটা মন্তব্য আশা করেছিলাম পোস্ট দেবার সময়। প্রায় সঙ্গে সঙ্গে আপনার মন্তব্য পেয়ে ভীষণ ভালো লেগেছিল।
শুভেচ্ছা সতত।
শুভ সময়।

৩| ০৫ ই জুন, ২০২৩ বিকাল ৫:৪৫

ধুলো মেঘ বলেছেন: আপনার জায়গায় আমি হলে ঐ ছেলেগুলোর মধ্যে দু'একটাকে খোজা করে দিতাম।

০৮ ই জুন, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:১৪

ইসিয়াক বলেছেন: তখন বয়স ছিল একদমই অল্প। অত কিছু মাথায় আসে নি।ছেলেগুলো ভীষণ নোংরা ছিল। এই ঘটনার পর আমার জীবন অনেক বদলে গিয়েছিল।
ভালো থাকুন।
শুভেচ্ছা রইলো।

৪| ০৫ ই জুন, ২০২৩ বিকাল ৫:৫৭

আমি সাজিদ বলেছেন: আমাদের সত্যিকারের হিরো আপনি। আপনি অদম্য যোদ্ধা, আপনি বিজয়ী। অনুপ্রেরণা।

০৮ ই জুন, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৩৯

ইসিয়াক বলেছেন:






পাশে থাকার জন্য অশেষ কৃতজ্ঞতা রইলো প্রিয় ব্লগার।
শুভেচ্ছা সতত।

৫| ০৫ ই জুন, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৩৬

শাওন আহমাদ বলেছেন: আমার একটি পোস্টে আপনি আপনার জীবনের কিছুটা সংকেত দিয়েছিলেন, আমি বলেছিলাম আপনার গল্পগুলো ব্লগে শেয়ার করতে। আপনি সেটা করেছে। আপনার বোন ভালো আছেন? আর আপনার বাবা নামের সেই জঘন্য মানুষ? জঘন্য এ জন্যেই বললাম যে সে আসলে বাবাপ হবার যোগ্যতা রাখেনা। বাবারা নিজেকে বিসর্জন দিয়ে সন্তান কে বাঁচিয়ে রাখে কিন্তু সে শুধু নিজেকে নিয়েই ভেবেছে। সে কখনোই বাবা হতে পারেনা। সুন্দর জীবন নিয়ে, নেক হায়াতে বেঁচে থাকুন দীর্ঘ বছর।

০৯ ই জুন, ২০২৩ রাত ৮:২৯

ইসিয়াক বলেছেন: আমার বোন এখন অনেক ভালো আছে তবে জীবনে অনেক চড়াই উৎরাই পার হতে হয়েছে তাকে। আর আমার মা নানা অত্যাচারে জর্জরিত হয়ে অনেক আগেই মারা গেছেন। বনেদী পরিবারের জটিল আবর্তে তার জীবন বৃত্তাবদ্ধ হয়ে গিয়েছিল। আর আমার বাবার সাথে আমার বোনের প্রায় ত্রিশ বছর দেখা হয় নি।তিনি তার রাজ্য নিয়ে ঢাকা শহরে মহাদাপটে টিকে আছেন।
ব্লগে যেটুকু ঘটনা দিয়েছি পরবর্তীতে আরো মারাত্মক ঘটনার সম্মুখীন হয়েছিলাম৷ আমি এবং আমার বোন।যা ছিল কল্পনাতীত।বলবো হয়তো কোন একদিন।
শুভকামনা রইলো প্রিয় ব্লগার।

৬| ০৫ ই জুন, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:০৪

একলব্য২১ বলেছেন: কি লিখবো বুঝে উঠতে পারছি না। আমি বাকরুদ্ধ।

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এই স্মৃতি কথা শেয়ার করার জন্য।

জানতে ইচ্ছা করে আপনার মা এখন কেমন আছেন।

০৯ ই জুন, ২০২৩ রাত ৮:৩৫

ইসিয়াক বলেছেন: জীবন কখনও বইয়ে লেখা কাহিনীর চেয়েও চমকপ্রদ হয়।আর কঠিন পরিস্থিতি সইতে সইতে একসময় সবই মনে হয় সহ্য হয়ে যায়।আমাদের ক্ষেত্রেও তেমনটি হয়েছিল।
দীর্ঘ রোগ শোকে ভুগে আমার মা অনেক আগে ই মারা গেছেন। সেও এক লম্বা কাহিনী। বলবো হয়তো কোনদিন।
ভালো থাকুন প্রিয় ব্লগার।
শুভেচ্ছা সতত।

৭| ০৫ ই জুন, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৫১

শেরজা তপন বলেছেন: একলব্যের মত আমিও বাকরুদ্ধ!
এটা আমাদের প্রিয় কবি ব্লগার দুর্দান্ত গল্প লিখিয়ে ইসিয়াকের নিজের জীবনের স্মৃতিকথা ভাবতেই পারছি না।
আহারে কি ভয়ঙ্কর দুঃসময়ের সঙ্গই না পেয়েছেন আপনি। আমার এক কাজিন ছিল এমনটাই। আমরাও ছোট বেলায় তাঁকে নিয়ে মজা করেছি কিন্তু তাঁর প্রতি কেউ অবিচার করেনি। ছোট বেলা থেকে রান্নার প্রতি তাঁর দারুণ ঝোঁক ছিল -এখন সে ইউকে'তে একটা হোটেলের শেফ।
আসলে আমাদের চারপাশের জগতের সব্বাই বড় বেশী একচোখা। এরা প্রকৃতির ব্যাতিক্রম কিছু দেখতেই চায় না।
যাক বেঁচে আছেন সুস্থ্য ও প্রান প্রাচুর্যে ভরপুর আছেন সেটা বড় কথা।
বাকি দিনগুলোতে ভাল থাকুন।

০৯ ই জুন, ২০২৩ রাত ৮:৪৬

ইসিয়াক বলেছেন: পাশে থাকার জন্য অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রিয় ব্লগার। আপনাদের সহমর্মিতায় সত্যি আমি আপ্লূত।কৃতজ্ঞতা জানাবার ভাষা নেই । এতদিন কারোও সাথে কোথাও বলতে পারিনি নিজের মনের কথা। বয়ে নিয়ে বেড়িয়েছি বুকের মধ্যে। নিকট আত্নীয়দের তুচ্ছ তাচ্ছিল্য ষড়যন্ত্র আমাদের জীবনকে সর্বদা বিষময় করে তুলেছিল যা এখনও চলমান। তবু ভালো আছি নিজের মত।
শুভেচ্ছা সতত।

৮| ০৫ ই জুন, ২০২৩ রাত ৮:০৮

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আমার ধারণা আপনার সমস্যাটা মানসিক ছিল। ক্লাস সেভেনে যখন পড়ি তখন আমার এক সহপাঠী আপনার মত ছিল। আশা করি আপনি এখন স্বাভাবিকভাবেই জীবন যাপন করছেন কোন সমস্যা ছাড়া। আপনার মায়ের জন্য খারাপ লাগছে। ওনার সাথে কি যোগাযোগ আছে?

১১ ই জুন, ২০২৩ সকাল ১১:০৬

ইসিয়াক বলেছেন: আমার সমস্যাটা অনেক জটিল ছিল। আমার আব্বার ভুল ধারণায় জটিলতা আরও প্রকট হয়েছিল।যাহোক আমি নিজেকে অনেক চেষ্টা ও সংগ্রামের মাধ্যমে বদলে নিয়েছি। যদিও ব্যপারটা সহজ ছিল না তবুও আমি পেরেছি এবং ভালো আছি।আমার মা অনেক আগেই মারা গেছেন।

ভালো থাকুন প্রিয় ব্লগার, শুভেচ্ছা সতত।

৯| ০৬ ই জুন, ২০২৩ রাত ১:৫২

কাছের-মানুষ বলেছেন: আপনাকে সাধুবাদ জানাই আপনি সাহস অতীতের এই অধ্যায় নিয়ে লিখেছেন। আশা করি বর্তমানে আপনি ভাল এবং সুখী আছেন। আপনার বর্তমান পরিস্থিতি, বোন এবং মা এর ব্যাপারে জানতে আগ্রহ বোধ করছি! আপনার প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি কি এখন তাদের।

১১ ই জুন, ২০২৩ সকাল ১১:০৯

ইসিয়াক বলেছেন: আমার মা অনেক বছর আগেই মারা গেছেন। আমার বোন ভালো আছে। আমরা খুব কাছাকাছি জায়গায় থাকি।এছাড়া আমাদের তো কেউ নাই। আমি এখন আমার মতো অনেক অনেক ভালো আছি।

শুভকামনা রইল প্রিয় ব্লগার।
ভালো থাকুন সবসময়।

১০| ০৬ ই জুন, ২০২৩ রাত ২:৩৫

জ্যাক স্মিথ বলেছেন: আপনার পোস্ট আমার হ্রদয়কে নাড়িয়ে দিয়েছে, কি দূর্বিষহ শৈশবই না ছিল আপনার!! ধিক্কার জানাই তৎকালীন জঘণ্য ওই সমাজ ব্যবস্থার প্রতি। আমি আপনার সংগ্রামী জীবনের বাকিটুকুও জানতে খুব আগ্রহী।

কর্তৃপক্ষকে এই পোস্ট'টিকে নির্বাচিত করার দাবি জানাই।

১১ ই জুন, ২০২৩ সকাল ১১:১২

ইসিয়াক বলেছেন: বাকিটুকু আরও আরও কষ্টের প্রিয় ব্লগার। হয়তো কোন একদিন লিখবো সবই। আসলে এই সব দূর্বিষহ স্মৃতি মনে করতে ভয় করে। দুঃস্বপ্ন মনে হয় সবকিছু ।
পাশে থাকার জন্য কৃতজ্ঞতা রইলো প্রিয় ব্লগার।
শুভকামনা রইলো।

১১| ০৬ ই জুন, ২০২৩ সকাল ৭:২৩

হাসান জামাল গোলাপ বলেছেন: অনেক কষ্টের কথা লিখেছেন, verbal আর physical abuse আমাদের দেশে প্রকট, সম্ভবত সর্বব্যাপী, যা অপ্রকাশিত থেকে যায়।

১৬ ই জুন, ২০২৩ সকাল ৮:০৯

ইসিয়াক বলেছেন:






পাশে থাকার জন্য অশেষ কৃতজ্ঞতা রইলো প্রিয় ব্লগার।
ভালো থাকুন সব সময়।

১২| ০৬ ই জুন, ২০২৩ দুপুর ১:৪৫

জটিল ভাই বলেছেন:
মূল লিখার মাঝেই মন্তব্য নিহিত ♥♥♥

১৬ ই জুন, ২০২৩ সকাল ৮:১০

ইসিয়াক বলেছেন: ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা রইলো প্রিয় ব্লগার।শুভেচ্ছা সতত।

১৩| ০৬ ই জুন, ২০২৩ বিকাল ৩:১৬

নীলসাধু বলেছেন: হুম।

১৬ ই জুন, ২০২৩ সকাল ৮:১২

ইসিয়াক বলেছেন:







ধন্যবাদ প্রিয় ব্লগার।
ভালো থাকুন সব সময়।

১৪| ০৬ ই জুন, ২০২৩ বিকাল ৩:২৭

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
কি নির্মম স্মৃতিচারণ। আপনি লড়াকু বলেই ভাই বোন দুজনে বাঁচতে পারলেন। ভাল থাকুন।

১৭ ই জুন, ২০২৩ রাত ৯:২৪

ইসিয়াক বলেছেন:






আপনিও ভালো থাকুন প্রিয় ব্লগার।
শুভেচ্ছা সতত।

১৫| ০৬ ই জুন, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৫৩

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: আপনার বদলে যাওয়ার সেই দিন গুলো নিয়েও লিখবেন।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

১৭ ই জুন, ২০২৩ রাত ৯:২৫

ইসিয়াক বলেছেন:





একটু সময় নিয়ে লিখবো নিশ্চয়।
পাশে থাকার জন্য কৃতজ্ঞতা রইলো প্রিয় ব্লগার।
ভালো থাকুন সব সময়।

১৬| ০৮ ই জুন, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৩১

নতুন বলেছেন: আপনার ঘুরে দাড়ানোর গল্প সবাইকে বলুন। আপনার লেখা অনেকের জীবন বাচাতে অনুপ্রেরনা জোগাবে, অনেকের ভাবনায় পরিবর্তন আনবে।

১৭ ই জুন, ২০২৩ রাত ১০:০৩

ইসিয়াক বলেছেন: নিশ্চয়ই লিখবো প্রিয় ব্লগার।
শুভেচ্ছা রইলো।

১৭| ১৬ ই জুন, ২০২৩ সকাল ৭:২৬

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: কী বলব বুঝতে পারছি না। আমি বাকরুদ্ধ।

১৭ ই জুন, ২০২৩ রাত ১০:০৬

ইসিয়াক বলেছেন: পাশে আছেন এই তো কত!
এক সময় কাউকেই পাশে পাইনি। সমস্ত পৃথিবী শত্রু মনে হতো। তখন এই অসম লড়াই এর প্রেরণা ছিল শুধু মাত্র আমার মা। তাঁর জন্য আমি কখনও হারিনি।

১৮| ১৭ ই জুন, ২০২৩ রাত ১০:১৯

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: সত্যিই দুর্বিষহ অবর্ণনীয় জীবন আপনার। আপনাকে রান্না করতে হতো ঔ জায়গাটা পরিস্কার হয়নি।মানে তখন কি আপনার মায়ের সঙ্গে বাবার ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে? যাইহোক অসুবিধা থাকলে প্রসঙ্গে না যাওয়াই ভালো।
পোস্টে দ্বাদশ বিষন্নতার লাইক।
শুভেচ্ছা প্রিয় ইসিয়াক ভাইকে।

১৭ ই জুন, ২০২৩ রাত ১১:১৫

ইসিয়াক বলেছেন: কোন অসুবিধা নেই প্রিয় ব্লগার।আমার জীবন যন্ত্রণার কথা বলতেই ব্লগে আাসা।অনেক আগে এই ঘটনাই আমি গল্প আকারে ব্লগে লিখছিলাম।একজন বর্ষীয়ান ব্লগার আমাকে কড়া ভর্ৎসনা করেন। উনার ধারণা পৃথিবীতে একটিও খারাপ বাবা নেই।
যাহোক আমার মায়ের সাথে আমার বাবার কোনদিনই ডিভোর্স হয়নি। আমার মা স্বেচ্ছায় সরে গিয়েছিলেন আমাদের নিয়ে। তখন আমাদের তিনজনের স্থান হয়েছিল যশোর শহরে আমার নানা বাড়িতে কিন্তু মামাদের সম্পত্তির হিসাব ছিল সবসময় টনটনে।বোন এবং বোনের ছেলেমেয়েদের আশ্রয় দিতে তাদের ঘোর আপত্তি ছিল। শেষ মেষ বোনকে তারা কাজের লোক হিসাবে আশ্রয় দিলেও বোনের ছেলেমেয়েদের ছুড়ে ফেলেছিল রাস্তায়। যাওয়ার কোন জায়গা ছিল না।আমার মা অনেক চেষ্টা করেছিল কিন্তু কিছু করতে পারে নি।তবে এক্ষেত্রে নিজ পরিবারের সম্মানের কথা ভেবে আমার দাদীজান আমাদের আশ্রয় দিয়েছিল। আব্বাও বাধ্য হয়ে মেনে নিয়েছিল কারণ আব্বার যা কিছু সম্পত্তি সব দাদীজানের নামে ছিল। সেই সময় সব কাজ আমাকেই করতে হতো।কাজের লোক সব ছাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।

আরও প্রশ্ন থাকলে করতে পারেন। সমস্যা নেই কোন। শুভেচ্ছা রইলো প্রিয় ব্লগার।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.