নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোহাম্মাদ ইউসুফ রানা

মোহাম্মাদ ইউসুফ রানা › বিস্তারিত পোস্টঃ

Hallwoeen/ হ্যালোইন কি ? হ্যালোইন কাদের উৎসব আর কারা পালন করে ।

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:৪৭

Hallwoeen/হ্যালোইন কি আসলে আমি জানতাম না। তবে সকাল থেকে ২ জনের ২ টা পোস্ট দেখে জানতে ইচ্ছে হল। একজনের পোস্ট খুব গায়ে লাগল। তাই অফিস থেকে আসার পর গুগল মামারে জিগাইলাম। এ নিয়ে আমার আজ লেখার কথা ছিলনা। কিন্তু লিখলাম সাদা চামড়াদের পদলেহী কিছু বাঙালিদের কথা মনে করে। সাদা চামড়াওয়ালা মানুষগুলো যা করে তাই যেন আমাদের করতে হবে – এমন বুদ্ধিবৃত্তিক দেউলিয়াগ্রস্থ চিন্তার কারনে গেল বছর ঢাকায় ৩১শে অক্টোবর রাতে হ্যালোউইনের উৎসব আয়োজন করেছিল কিছু আবাল।
Halloween শব্দের বর্তমান মানেটা হল ‘Hallowed evening’, ‘Holly evening’ (পবিত্র সন্ধ্যা)।



এর উৎপত্তি কোথা থেকে?
সেল্টিকরা সাও-উইনের রাতে নিজেদের ঘরের সামনে খাবার রেখে দিত। উদ্দেশ্য থাকত, মৃতদের জগত থেকে উঠে আসা খারাপ আত্মাগুলো যেন এই খাবার পেয়ে সন্তুষ্ট হয়ে চলে যায়, ঘরের ভেতর যেন আর না প্রবেশ করে।

কেন এই উৎসব? কী হত এই উৎসবে?
সেল্টিকদের বিশ্বাস ছিল, এই রাতে মৃতদের খারাপ আত্মা দুনিয়াতে ভ্রমণ করতে আসে। খারাপ আত্মাগুলো ফসলের ক্ষতি করে। তাদের খুশি করার জন্য সেল্টদের প্রধান পুরোহিত খড়-লাকড়ি আর লতাপাতা জালিয়ে বিশাল আগুনের ব্যবস্থা করত। এই আগুনে সেল্টিকরা তাদের ফসল আর গৃহপালিত পশু-পাখি নিক্ষেপ করে সেগুলোকে জ্বালিয়ে খারাপ আত্মাদের প্রতি উৎসর্গ করত।
খারাপ আত্মাদের প্রতি ‘উৎসর্গমূলক’ এই অনুষ্ঠানটা ছিল প্রেত সাধনার মত। সেটা কীভাবে?
সেল্টিকরা মনে করত, গ্রীষ্মের শেষে খারাপ আত্মাগুলো পৃথিবীতে চলে আসার কারনেই ফসল ফলেনা, গাছের পাতা শুঁকিয়ে যায়, গাছ মারা যায়, চারপাশের সব মৃত আর ঠাণ্ডা হয়ে যায়। তারা এটাও বিশ্বাস করত, মৃতদের আত্মা ত্রিকালজ্ঞ – অতীত, বর্তমান আর ভবিষ্যৎ সব কিছু জানে আত্মারা। সেল্টিকরা ভাবতো, এই রাতে খারাপ আত্মাদের সন্তুষ্ট করতে পারলে সেল্টদের প্রধান পুরোহিতগণ তাদের মাধ্যমে ভবিষ্যতের ফসল-ফলাদি আর চাষাবাদের ব্যাপারে সম্যক ধারণা পাবে। কারণ তাদের বিশ্বাস অনুযায়ী, খারাপ আত্মাগুলোই তো ফসল ফলা না ফলার জন্য দায়ি।
খারাপ আত্মাগুলো যেন তাদের কোন ক্ষতি না করতে পারে এই ভেবে উৎসবের পুরোটা সময় জুড়ে সেল্টিকরা অদ্ভুত সব পোশাক আর মুখোশ পড়ত, একটা ছদ্মবেশে থাকত। পোশাকগুলো হত কল্পিত ভূতপ্রেতের মত। সেল্টিকরা এই কাজ করত এই ভেবে, তারা যদি ভূতপ্রেতের পোশাক পড়ে ছদ্মবেশ নেয় তবে ওপার জগত থেকে উঠে আসা খারাপ আত্মাগুলো তাদেরকে চিনতে পারবেনা, বেঁচে থাকা সেল্টিকদেরকে নিজেদের সদস্যই মনে করবে। ফলে খারাপ আত্মাদের দ্বারা তাদের কোন ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকবেনা।
সেল্টিকদের অঞ্চলগুলোতে ক্রিশ্চিয়ান ধর্ম প্রবেশ করা শুরু করলো একসময়।
৬০৯ সালে তৎকালীন পোপ সিদ্ধান্ত নিলেন, ক্রিশ্চিয়ান ধর্মের সাধুসন্ন্যাসী আর ধর্মযুদ্ধে নিহত ব্যক্তিদের আত্মাকে স্মরণ করে প্রতিবছর একটা শ্রদ্ধা নিবেদন অনুষ্ঠান আর একটা ফিস্টের আয়োজন করা হবে। সেই বছর দিনটা পড়লো ১৩ই মে। কী মনে করে পরবর্তী পোপ এসে সেই দিনটাকে ১৩ই মে থেকে সরিয়ে নভেম্বরের ১ তারিখে নিয়ে গেলেন। এই দিনটাকে তখন থেকে বলা হয় All Saints Day বা All Souls Day – মৃতদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করার দিন।
এরই মধ্যে সেল্টিক মানুষগুলোর মধ্যে ক্রিশ্চিয়ানটি ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়লো, মানুষ দলে দলে ক্রিশ্চিয়ানিটিতে দীক্ষিত হতে লাগলো। ক্রিশ্চিয়ানিটি আর সেল্টিকদের সংস্কৃতি মিশে একাকার হয়ে যেতে লাগলো একসময়।
ঐতিহাসিকদের মতে, চার্চ চাইত যে মৃতদের আত্মাকে কেন্দ্র করে সেল্টিকরা যে ‘সাও-উইন’ উৎসব পালন করে সেটাকে All Saints Day দিয়ে পরিবর্তিত করে দিতে। All Saints Day উৎসবটাও ‘সাও-উইন’ উৎসবের ন্যায় একই ঢঙে পালিত হতে লাগলো। এদিনও বিশাল আগুনের ব্যবস্থা করা হত, ক্রিশ্চিয়ানরা সাধুসন্ন্যাসী, দেবদূত আর শয়তানের কস্টিউম পরে ছদ্মবেশ নিয়ে ঘোরাঘুরি করত।
‘All Saints Day’কে ‘All-hallowmas’ আর ‘All-hallows’ বলেও ডাকা হত। কারণ মিডল ইংলিশে[ ‘Alholowmesse’ মানে হচ্ছে ‘All Saints Day’।
নভেম্বর ১ তারিখ হচ্ছে ‘All-hallows’ উৎসবের দিন। এর আগের রাত অর্থাৎ ৩১শে অক্টোবর সাও-উইনের রাতকে বলা হত All-hallows’ eve। স্কটিশ ভাষায় ‘Eve’ মানে হচ্ছে ‘even’; একে বলার সময় e’en বা een বলা হত। সময় অতিক্রান্ত হওয়ার সাথে সাথে এক সময়ের All-hallows’ eve টা হয়ে গেল (All) Hallow(s) e(v)en বা Halloween।

কারা এই সেল্টিক?
সেল্ট (Celt) নামে পৃথিবীতে এক কালে ইন্দো-ইউরোপীয় একটা জাতি ছিল। লৌহযুগের সময়কালে এরা পৃথিবীতে বসবাস করত। আজ পৃথিবীর যে অংশটা আয়ারল্যান্ড আর ফ্র্যান্সের উত্তরাংশ, এক কালে এখানেই সেল্ট জাতি গোড়াপত্তন করেছিল।
ধর্মে তারা বহু-ঈশ্বরবাদে বিশ্বাসী এবং মূর্তিপূজক ছিল।
গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জী দিয়ে হিসেব করলে সেল্টিকদের বছর শেষ হত অক্টোবরের ৩১ তারিখে এবং বছর শুরু হত নভেম্বর ১ তারিখ থেকে। নভেম্বরের ১ তারিখকে ধরে নেয়া হত গ্রীষ্মের শেষ, সে হিসেবে ঠাণ্ডা শীতকালের শুরু। সেল্টিক মানুষগুলো শীতকালকে ভয় পেত কারণ তখন ফসল উৎপাদিত হত না। শীতকাল তাদের জন্য ছিল ‘অন্ধাকারাচ্ছন্ন’ আর ভয়ের।
সেল্টিকরা বিশ্বাস করতো, নতুন বছরের আগের রাতে অর্থাৎ অক্টোবরের ৩১ তারিখে ওপার জগত আর এপার জগতের মধ্যকার পর্দা সংকুচিত হয়ে যায়, মৃতদের সাথে এই দুনিয়ার মানুষদের সংযোগ ঘটে। তাই ৩১শে অক্টোবর সুর্য ডুবে যাওয়ার পরপরই সেল্টিকরা Samhain (উচ্চারনটা হবে ‘সাও-উইন’) নামে একটা উৎসব করত, যেটার ব্যপ্তি হত পরের দিন, অর্থাৎ নভেম্বর ১ তারিখ সূর্যাস্ত পর্যন্ত।
এই হচ্ছে হ্যালোইন উৎসবদের উৎপত্তির কাহিনী আর বর্তমান অবস্থা – আগাগোড়া যেটা পুরোটাই শয়াতানি, প্রেতসাধনা, কুসংস্কার আর শির্কি।
এই প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লমের একটা কথা মনে পড়ে গেল,
তিনি বলেছেন, “নিশ্চয়ই তোমরা তোমাদের পূর্ববর্তীদের আচার-আচরণকে বিঘতে বিঘতে, হাতে হাতে অনুকরন করবে। এমনকি তারা যদি গুইসাপের গর্তেও প্রবেশ করে থাকে, তাহলে তোমরাও এতে তাদের অনূকরন করবে।
জিজ্ঞাসা করা হলো, “ইয়া রাসুলাল্লাহ, এরা কি ইহুদি ও নাসারা?” তিনি বললেন, “আর কারা!
সহীহ বুখারী ৬৮২১ নাম্বার হাদীস।
হ্যালোইনের রাতে বিভিন্ন অদ্ভুত সব কস্টিউম পরেহ্যালোইন উৎসবে যাওয়া হারাম, কারণ এতে বহু-ঈশ্বরবাদী মূর্তিপূজক সেল্টিক আর আর ক্রিশ্চিয়ানদের সাদৃশ্য হয়। বিজাতিদের সাদৃশ্য হওয়া উম্মতের ঐক্যমতে হারাম।
আপনি একবার ভেবে দেখুন কারণ আপনি মুসলিম। দুষ্ট জিন, জাদু আর শয়তান থেকে মুক্ত থাকার জন্য কুরআনে আল্লাহ কতগুলো আয়াত দিয়েছেন। অথচ আমরাই আবার শয়তানের সাদৃশ্য নিচ্ছি, বাচ্চাদের পাঠাচ্ছি Trick-or-Treat’এর মত অনিষ্টকর কাজে।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই জুন, ২০২০ রাত ১১:৩৭

mrunnone বলেছেন: এত ছোট কারণের জন্য আপনি কাউকে আবাল বলতে পারেননা X(( জানি হারাম.।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.