নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাঙতে নয়, গড়তে চাই। গড়তে চাই সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের একটি বিশ্ব সৌধ। আগামী প্রজন্মকে হানাহানিমুক্ত একটি শান্তিময় সুন্দর পৃথিবী উপহার দিতে চাই। সুন্দরকে আরো সুন্দর করে সাজানো এবং পরিশীলিত ব্লগিং চর্চার মাধ্যমে পরিশুদ্ধ ও ঐক্যবদ্ধ জাতি গঠনই আমার সাধনা।

সালেহ মতীন

সালেহ মতীন › বিস্তারিত পোস্টঃ

আরব শেয়ালের সংস্কৃতি

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:৩৯

এবার হজ্জের সফরে আমরা মক্কা মোকাররমা পৌঁছানোর দুদিন পর ৭ সেপ্টেম্বর আমাদের কাফেলার প্রায় ৮০ জনের কুরবানীর পশু সরেজমিন দেখতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হলো। পশু সরবরাহকারী বাদ আছর একটি মাইক্রো যোগে আমাদের ৫ জনকে নিয়ে গেলেন বাইতুল্লাহ থেকে প্রায় ২০/২২ কিঃমিঃ দক্ষিণ-পশ্চিমে একটি বিরাট আয়তনের খামারে। তিনদিকেই পাহাড়বেষ্টিত খামারটিতে দুম্বা, গরু, বকরী রয়েছে হাজারেরও বেশি। খোয়াড়ের ভেতরে পশুগুলো স্বভাবসুলভ দুষ্টুমিতে গুতাগুতিও করছে যা বহুদূরের এই বাংলা প্রান্তের পশুর সাথে মোটেও আলাদা করা যায় না। ভাবছিলাম উন্নত ও ধনী রাষ্ট্রের আরব পশু - সম্ভবত এক্সট্রা ভদ্র ও বিনয়ী হবে, কিন্তু ভাবনায় গরমিল লক্ষ্য করলাম। যাই হোক, আমাদের চুক্তিবদ্ধ রেটের সাথে বকরীর স্বাস্থ্য ও সাইজ দেখে আমরা সন্তুষ্ট হয়ে ফেরার পথে প্রায় ৫ কিঃ মিঃ আসার পর একটি অস্থায়ী চেকপোস্টে সৌদি পুলিশ আমাদের গতি রোধ করে এবং সাথে পাসপোর্ট বা অন্য আইডি কার্ড (আমাদের পাসপোর্ট তো বিমান বন্দর থেকে বাসে উঠার সময় নিয়ে নিয়েছে কিন্তু আইডি কার্ড তখনো আমরা হাতে পাইনি) না থাকায় পুনঃ আমাদের খামারে ফেরত পাঠায়। জানতে পারলাম যে, হজ্জের কয়েকদিন পূর্বে মক্কার প্রবেশ পথসমূহে এ ধরনের কড়াকড়ি চেক পোস্ট বসে।

আমরা এজেন্সী কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করে খামারে সময় কাটাতে থাকি। এরই মধ্যে সন্ধ্যা নামে। পাহাড়ের কোল ঘেষে আরব রাজ্যের রক্তিম সূর্য ধীরে ধীরে আমাদের কাছ থেকে বিদায় নেয়। ৪৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাতের মক্কাও যেন পাহাড়ের গায়ে হেলান দিয়ে বিশ্রামের প্রস্তুতি নিতে থাকে। খামারের ছোট্ট মসজিদে আমরা মাগরিবের নামায আদায় করে কিছুটা টেনশনের সাথে অপেক্ষা করছি। নগরী থেকে বেশ দূরে কোলাহলমুক্ত পাহাড়ে ঘেরা কিছুটা অন্ধকারের একেবারেই আনকোরা জায়গাটিতে আমরা একপ্রকার আবদ্ধ এটা ভাবতে কিছুটা ভয়ও পাচ্ছিলাম। অন্ধকারের মাত্রা ক্রমেই ঘুটঘুটে পর্যায়ে যাচ্ছে বলে মনে হলো। আমাদের দেশে শিশুদের ঘুম পাড়ানোর সময় মায়েরা আবহমান কাল থেকে গল্প কথায় ভয় জাগানো যে অন্ধকারের পরিবেশ রচনা করেন- আমরা ঠিক সেই অন্ধকারের সান্নিধ্য পেতে যাচ্ছি তাতে আর কোন সন্দেহ রইল না। অরব্য রজনীর গল্পকথায় মরুদস্যুর কথা পড়েছি তাও মনে পড়তে লাগল। তবে এখানে এসে যা জানতে পারলাম তাহলো বাস্তবে আরব মুলূকে যত্র-তত্র চোর ডাকাতের কোন ভয়ের কারণ নেই এই যা সান্তনা!

এরই মধ্যে লক্ষ্য করলাম অদূরে দাঁড়িয়ে থাকা পাহাড়ের আড়ালে একটি শেয়াল হুককা-হু বলে ডেকে উঠল। তার মানে ? হ্যাঁ- শেয়ালের ডাকই তো। আমার হাজী সঙ্গীরা কথা বলছিলেন, তাদেরবে থামিয়ে দিলাম। আবার শোনা গেল। সাথে সাথে তার চেয়ে আরেকটু দূরে আরো কয়েকটি শেয়ালের অভিন্ন ডাক শুনতে পেলাম। ছোটকাল থেকেই আবহমান বাংলায় শেয়ালের এ ডাক ও সংস্কৃতির সাথে পরিচিতি গড়ে উঠেছে। তারা কেউ ডাকলে সাথে সাথে অদূরের অন্য শেয়ালও হাঁক ছাড়ে। এবং আশ্চর্য- আরব শেয়ালের মুখেও হুবহু বাংলা প্রান্তরের শেয়ালের অনুরূপ ডাকই শুনলাম। একের ডাক শুনে অন্যদের সমর্থনকারী বার্তা ঘোষণা তথা কণ্ঠ সাদার অনুশীলনের মধ্যেও কোন ভিন্নতা নেই।

ভৌগোলিক অবস্থানগত দূরত্ব ও ভিন্নতার কারণে বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মানুষের ভাষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও চেহারায় কত ভিন্নতা ! অথচ আরব শেয়ালের মধ্যে এর কোন ভিন্নতাই ঠাহর করতে পারলাম না। মনে হলো বিশ্বব্যাপী তাদের ভাষা ও একের ডাকে সহসা সাড়া দিয়ে অন্যদের ঐক্যের অবকাঠামো সুরক্ষার ব্যাপারে তারা খুবই তৎপর। শেয়ালের মতো প্রাণী এত দূর রাজ্যের ব্যবধানে যদি অভিন্ন ভাষা ও সংস্কৃতি লালন করতে পারে তবে আমরা পারি না কেন ? অথচ বিশ্বব্যাপী এই মানবজাতির এক থাকার দরকার ছিল বেশি!

-------
ঢাকা
২৯/১০/২০১৬

মন্তব্য ৩০ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৩০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:৫০

বিএম বরকতউল্লাহ বলেছেন: শেয়ালের বিবেক বিবেচনা নেই বলে এই দশা!

১০ ই নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:০২

সালেহ মতীন বলেছেন: অামার ব্লগ কুটিরে বেড়াতে আসার এবং মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

২| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:০২

সেলিম৮৩ বলেছেন: ভালো লাগলো অাপনার মনোভাবের জন্য।

১০ ই নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:০৩

সালেহ মতীন বলেছেন: অামার ব্লগ কুটিরে বেড়াতে আসার এবং মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

৩| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:০৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: হা হা হা

শেয়াল রা যে মানুষ না ;)

দু:খজনক সত্যকে অনুভব করেছেন।

+++

১০ ই নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:০৩

সালেহ মতীন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য ভাইয়া।

৪| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:৪৮

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: মানুষ নয় বলে উহাদের রুচির ভিন্নতা নেই।

১০ ই নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:০৪

সালেহ মতীন বলেছেন: ধন্যবাদ।

৫| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:০৩

মুহাম্মাদ খাইরুল ইসলাম বলেছেন: চমৎকার

১০ ই নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:০৫

সালেহ মতীন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই।

৬| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:২৯

মার্কো পোলো বলেছেন:
ভাল লাগলো।

১০ ই নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:০৬

সালেহ মতীন বলেছেন: মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

৭| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪৫

এ কে এম রেজাউল করিম বলেছেন:
শিয়ালরা এক কিন্তু মানুষরা না!

১০ ই নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:০৭

সালেহ মতীন বলেছেন: অামার ব্লগ কুটিরে বেড়াতে আসার এবং মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

৮| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৩:১১

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন:
একটা প্রবাদই তো আছে 'সব শেয়ালের এক রা'

১০ ই নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:০৯

সালেহ মতীন বলেছেন: অামার ব্লগ কুটিরে বেড়াতে আসার এবং মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

৯| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৬ ভোর ৬:২১

এখওয়ানআখী বলেছেন: ভাল লিখেছেন---।

১০ ই নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:১০

সালেহ মতীন বলেছেন: ধন্যবাদ

১০| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৯

মিয়াদাদ বলেছেন: সব মানুষের এক রা হয়না কেন?????

১০ ই নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:১১

সালেহ মতীন বলেছেন: সেটা বোধ হয় নিরুত্তর প্রশ্নবোধক। ধন্যবাদ।

১১| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০৪

হাসান রাজু বলেছেন: সব দোষ শিক্ষার, তথা স্কুল কলেজের । একেক দেশের স্কুলে একেক ভাষায় পড়ানো হয় তাই মানুষদের ভাষা আলাদা । ভালো যে শিয়াল স্কুল কলেজে যায়না তাই তাদের ভাষা ও একই । আমাদের ও উচিৎ শিক্ষা দীক্ষা ছেড়ে দেয়া । সবাই একই ভাবে একই ভাষায় কথা বলা ।

১০ ই নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:১১

সালেহ মতীন বলেছেন: অামার ব্লগ কুটিরে বেড়াতে আসার এবং মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

১২| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫২

অনিন্দ্য অবনী বলেছেন: বেশ ভালো বলেছেন,,, মানবতার জয় হোক।

১০ ই নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:০৮

সালেহ মতীন বলেছেন: অামার ব্লগ কুটিরে বেড়াতে আসার এবং মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

১৩| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৬ ভোর ৪:৫৫

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: ধন্যবাদ আরবের শেয়ালের ডাক কেমন তা আমদেরকে অবহিত করার জন্য । সৌদি আরবে তিন জাতের শেয়ালের অস্তিত্ব আছে । তবে বেশীরভাগই কনজারভেটরী এলাকাতেই আছে । সৌদি সরকার এদের প্রতি বিশেষ যত্নশীল ।
১) এরাবিয়ান রেড ফক্স : এদের ওজন ৩ থেকে ৫ কেজি পর্যন্ত

২) ব্লান্ডফর্ড ফক্স : এদের ওজন ২ থেকে ৩ কেজি পর্যন্ত

৩)রাপেলস ফক্স ( সেন্ড ফক্স নামে পরিচিত) : এদের ওজন ১ থেকে ২ কেজি পর্যন্ত ।

এশিয়ান তথা বাংলাদেশী শিয়ালের থেকে এরা সাইজে বেশ ছোট ।অাকারে বেশ ছোট হলেও চেহারায় প্রায় একই রকম ।

এরাবিয়ান ফক্স বলতে গেলে এখন বিলুপ্ত প্রায় প্রাণী । রাতের বেলাতেই এদের বিচরণ বেশী ।
ছবি সুত্র : উইকিডিডিয়া , গুগল নেট ।

শুভেচ্ছা রইল

১০ ই নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:০৯

সালেহ মতীন বলেছেন: মন্তব্যের সাথে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেয়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

১৪| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:০৭

এডওয়ার্ড মায়া বলেছেন: হজ্বে গিয়ে শিয়ালের কাহিনী ।

১০ ই নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:০২

সালেহ মতীন বলেছেন: হজ্জ সফরের সাথেই এ বাস্তবাটা মিশে আছে ভাইয়া। ধন্যবাদ।

১৫| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:২৬

গেম চেঞ্জার বলেছেন: দারুণ চিন্তা দেখছি! :P

১০ ই নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:০০

সালেহ মতীন বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.