![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১৯৭৯ সালের দিককার কথা। তখন আমি ক্লাস টু কি থ্রিতে পড়ি। আমার ঘনিষ্ট সহপাঠী শামীমের আব্বা জনাব হাতেম আলী (বি.কম, বি.এড.) যে প্যান্ট-শার্ট পরে চলা ফেরা করতেন তা বেশ পরিপাটি ও বিশেষ করে প্যান্টে ভাজ পড়া থাকত। বিষয়টি আমার দৃষ্টি আকর্ষণের পর্যায়ে পৌঁছালে শামীমকে জিজ্ঞাসা করলাম- কীভাবে প্যান্টে ও রকম ভাঁজ পড়ে ? সে জবাব দিল- “ইস্ত্রি করলে ও রকম ভাঁজ পড়ে। বাবা নিয়মিত চিনাটোলা বাজার (আমাদের গ্রাম থেকে ৩ কিঃ মিঃ দূরে ঢাকা-সাতক্ষীরা মহাসড়কে অবস্থিত) থেকে প্যান্ট-শার্ট ইস্ত্রি করে নিয়ে আসে।” কাপড়ের যত্নে এ কাজটি সম্পর্কে আমার ধারণা একেবারেই নতুন মনে হলো।
অখ্যাত এক পল্লী পরিবারে জন্ম নেয়া এই বালকের মধ্যে ইস্ত্রি করা পরিচ্ছন্ন-পরিপাটি কাপড় পরার উচ্চ মাত্রার লোভ জেঁকে বসল যদিও তখন বেশির ভাগ সময় তার কাটত হাফ প্যান্ট পরে। এলাকায় তখনো বিদ্যুৎ আসেনি। কাপড় ইস্ত্রি করার অভূতপূর্ব প্রযুক্তি সরেজমিন দেখার জন্য চিনাটোলা বাজারে গেলাম। দেখলাম- লোহার একটি ত্রিকোণাকার যন্ত্র যা কিনা বেশ ভারী বলে অনুমান করা গেল লোকটি হাতলে ধরে কাপড়ের ওপর চেপে ঘষছে আর কাপড় সমান হয়ে যাচ্ছে। বাহ! দারুন তো ! ব্যাস, পেয়ে গেছি পদ্ধতি। এটা কোন ব্যাপারই না। বাজার থেকে ফেরার সময় পথেই মাথায় বুদ্ধিটা চলে এলো। বাড়িতে এসেই কাঠের পিঁড়ি চিৎ করে তাতে কয়েকটি বাটখারা, ইট ইত্যাদি চাপিয়ে দিয়ে কাপড়ের ওপর ঘষা শুরু করি। কিন্তু আশানুরূপ ফল পাওয়া গেল না। মনটা খারাপ হয়ে গেল। তাহলে কীভাবে ওটা করব ? জানতে পারলাম- শুধু ভারী হলেই হয় না, গরমও হতে হয়। তাই নাকি ?
পুণরায় গেলাম চিনাটোলা বাজারে। খুব খেয়াল করে দেখতে থাকলাম। সত্যিই তো- ওটা তো গরম। কাপড়ের ওপর চেপে ধরলে একটু একটু ধোঁয়া উড়তেও দেখা যাচ্ছে। লোকটি খানিক পর পর ডান পাশে একটু নিচে কোথায় যেন যন্ত্রটি রাখছিল। উঁকি দিয়ে দেখি সেখানে দিব্যি স্টোভ জ্বালানো। সেখানে একটা রাখছে আর একটা তুলে নিচ্ছে। ওকে, নো প্রোব্লেম! এ প্রযুক্তি তো আমাদের ঘরেই বিদ্যমান। এবার কাপড়-চোপড় সমান না হয়ে পারবে কী করে ?
বাড়ীতে ফিরেই মায়ের সাথে দরবার করলাম। ভাত রান্না হওয়া মাত্রই মাড় গালিয়ে গরম ভাত এ্যালুমিনিয়ামের ডিশে ঢেলে আমাকে দেয়া হলো। কাপড় আমি আগেই বাক্সের উপর রেডি করে রেখেছিলাম। এখন বাষ্প উড়া গরম ভাতের ডিশ কাপড়ের উপর ঘষতে শুরু করি। মুহূর্তেই হাসি ম্লান হয়ে গেল। ভাজ ফেলানো পরিপাটি কাপড় পরার দূরন্ত আশা মারাত্মক আহত হলো। কাপড় সমান হওয়া তো দূরের কথা গরম ডিশের তলা থেকে কাপড়ে একরকম দাগ পড়তে দেখা যাচ্ছে। নিয়তি বুঝি আমায় সাপোর্ট করল না। অতঃপর এ পদ্ধতিকে বিরাম দেওয়ার পালা। শৈশবের সেই অভিনব কাপড় ইস্ত্রি করার কথা আজ খুব মনে পড়ে ।
০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৮:৪৮
সালেহ মতীন বলেছেন: আমার ব্লগ কুটিরে বেড়াতে আসার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
২| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:৫৫
বিজন রয় বলেছেন: সেই যে আমার নানা রঙের দিনগুলি।
০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:০৬
সালেহ মতীন বলেছেন: আমার ব্লগ কুটিরে বেড়াতে আসার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
৩| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:৩১
কানিজ ফাতেমা বলেছেন: আহা! আশ্চর্য্যময়তায় ভরপুর শৈশব । শুভ কামনা ।
০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:০৬
সালেহ মতীন বলেছেন: মন্তব্যের জন্য এবং আমার ব্লগ কুটিরে বেড়াতে আসার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। আল্লাহর কাছে দোয়া রইল তিনি যেন আপনাকে সর্বক্ষণ কল্যাণের সাথেই রাখেন।
৪| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:৪২
কথাকথিকেথিকথন বলেছেন: হা হা । শৈশব স্মৃতিরা সবসময়ই ক্রিয়েটিভ !
০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:০৭
সালেহ মতীন বলেছেন: মন্তব্যের জন্য এবং আমার ব্লগ কুটিরে বেড়াতে আসার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
৫| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৩
আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: হাঃ হাঃ হাঃ। তবুও নস্টালজিয়া!
০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:০৭
সালেহ মতীন বলেছেন: আসলেই নষ্টালজিয় ভাইজান। মন্তব্যের জন্য এবং আমার ব্লগ কুটিরে বেড়াতে আসার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
৬| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:৩৯
সুমন কর বলেছেন: অনুভূতির চমৎকার প্রকাশ। ভালো লাগল।
০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:০৭
সালেহ মতীন বলেছেন: মন্তব্যের জন্য এবং আমার ব্লগ কুটিরে বেড়াতে আসার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
৭| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:৪২
অপ্সরা বলেছেন: এসব কবেকার কথা ভাইয়া!!!!
০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:০৮
সালেহ মতীন বলেছেন: প্রায় দু দশক আগের কথা আপু। মন্তব্যের জন্য এবং আমার ব্লগ কুটিরে বেড়াতে আসার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
৮| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৪৩
বলবো না!! বলেছেন: তোশকের/বালিশের নিচে রেখে শুয়ে পড়লে দারুন কাজ হয়,তাই না!! কোন কিছু গরম করা লাগে না;এইটা প্রাচীন পদ্ধতি।
ধন্যবাদ।
০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:০৮
সালেহ মতীন বলেছেন: জী সেটাও একটা কার্যকর পদ্ধতি বটে। মন্তব্যের জন্য এবং আমার ব্লগ কুটিরে বেড়াতে আসার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
৯| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১:০০
কালীদাস বলেছেন: হা হা
কয়লার ইস্ত্রির কথা শুনেছিলাম মামার কাছে, এই টেকনিকটা জানতাম না। বলবো না-এর টেকনিকটাও পরীক্ষিত, কারেন্ট না থাকলে অনেকদিন এপ্লাই করেছি।
০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৮:৪৭
সালেহ মতীন বলেছেন: মন্তব্যের জন্য এবং আমার ব্লগ কুটিরে বেড়াতে আসার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
১০| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২০
দৃষ্টিসীমানা বলেছেন: সে সময়টাতে কয়লার ইস্তিরি বেশি ব্যবহার করা হত । আপনার এই সৃতি আমাকেও অতীতে টেনে নিয়ে গেল । কাঠের চুলা ,কয়লার ইস্ত্রি, পানির চাপা কল , বাহিরে খেলতে যাওয়া, নির্মল বাতাস, মানুষের প্রতি মানুষের ভালবাসা, আদর ,স্নেহ , কি সুন্দর সময় ছিল তাই না ?
শুনেছি স্মৃতি চারন করা ভাল ,আজ আপনার সাথে স্মৃতিচারণ করে আমারও ভাল লাগছে । ভাল থাকুন সব সময় ।
০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:৩৬
সালেহ মতীন বলেছেন: খুব ভালো লাগল আপনার সতেজ ও ভরাট মন্তব্যে। স্মৃতিচারণ করতে গিয়েও সমকক্ষ মানসিকতার সতীর্থ পেলেই আরেক ধাপ ভালো লাগা দৈনন্দিন জীবনে যোগ হয়। তখন মনে হয়, পেশাগত সীমাহীন ব্যস্তততার মাঝেও সময় করে এক চিলতে লেখা ভার্চুয়াল পাটাতনে দাঁড় করানোটা বৃথা যায়নি। আপনার জন্য সার্বিক কল্যাণ কামনা করছি। আমার ব্লগ কুটিরে বেড়াতে আসার জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
১১| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:৫৭
দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: পড়ে খুব মজা পেলামাল।
ভালো থাকুন নিরন্তর। ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:৪৬
রানার ব্লগ বলেছেন: দিনগুলো মোর সোনার খাঁচায় রইলো না।