নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ধুসর গোধুলী 2

ধুসর গোধুলী 2 › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভালবাসার অর্থ

১৬ ই জুন, ২০১৫ রাত ১১:৪৫

আমার এক বন্ধু তার জমি-জমা নিয়ে কিছু ঝামেলা চলছিলো। তাই সেদিন আমার বন্ধুটির সাথে আমি এক উকিলের কাছে গিয়েছিলাম। কাজের কথা শেষে চা খেতে খেতে জিজ্ঞাসা করলাম আপনার ছেলে মেয়ে কয়জন? কারণ ভদ্রলোকের বয়স প্রায় পঞ্চাশ এর উপর। উনি এমন এক হাসি দিয়ে পাল্টা প্রশ্ন করলেন যে, এক দিনের বিয়েতে কয়জন বাচ্চা হওয়া সম্ভব? এতে আমি আরও কৌতুহলি হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম এক দিনের বিয়ে মানে? পরবর্তিতে উকিল সাহেব বল্লেন ঐ সব বাদ দেন এরচেয়ে একটা গল্প বলি শুনেন। একটা ছেলের উকালতি প্রফেসন বেছেনেয়ার গল্প। উকিল সাহেবের কাছ থেকে যে গল্পটা শুনলাম তার সারমর্ম হলোঃ

ছেলেটা যখন অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলো তখন সে তার এক ক্লাশমেটকে পছন্দ করতো। মেয়েটাও তাকে ধীরে ধীরে পছন্দ করতে শুরুকরে। এভাবেই এক সময় তাদের মধ্যে ভালবাসার সম্পর্ক তৈরি হয়। এভাবে কিছুদিন যাওয়ার পর এক সময় মেয়ের বাসা থেকে ছেলে দেখা শুরু হলো এবং এক পর্যায় মেয়ের বাসা থেকে এক পাত্র প্রায় ঠিক করা হয়ে গেলো। যেহেতু ঐ সময় সে ছাত্র ছিল এবং দুই পরিবারের সামাজিক অবস্থানের ব্যবধান এতটাই বেশিছিল যে মেয়ের বাসা থেকে তাকে মেনে নেয়ার কোন সম্ভাবনাই ছিলনা। তাই অনন্যপায় হয়ে তারা বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় এবং তৃতিয় দিনের মাথায় তারা বিয়ে করে। বিয়ের পরদিন মেয়ের বাবা তাদের বিয়ে মেনে নেয়ার আশ্বাস দিলে তারা বাড়ি ফিরে আসে। এরপর ই আসল বিপত্তির শুরু। মেয়ের বাবা ছেলের বিরুদ্ধে আগেই অপহরণ মামলা করে রেখেছিল এর সাথে যুক্ত হলো নারী নির্যাতনের মামলা। পুলিশ এসে ছেলেকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। ছেলের বাসা থেকে সমোঝতার সব চেষ্টাকেই বৃথা করে দিয়ে ছেলেকে আদালতে আসামীর কাঠগরায় দাঁড়া কারানো হয়। যখন আদালতে দাঁড়িয়ে মেয়ে তাদের উকিলের শিখিয়ে দেয়া কথা গুলো বল্লো তখন ছেলেটার বাঁচার শেষ পথটা ও বন্ধ হয়ে গেলো। কিছুদিন জেল খাটার পর ছেলে জামিনে মুক্তি পেলেও তার জীবনের যা ক্ষতি হওয়ার তা হয়ে গেছে। ছেলের বাবা তো আগেই গত হয়েছিল এবার মা গেল। বড় ভাই ধীরে ধীরে নিজের সংসার এর দিকে মন দিল। কিন্তু ছেলেটার জীবন ঐ এক জায়গাতেই আটকে গেল। মেয়েটা তার পরিবারের পছন্দ অনুযায়ী পাত্রকে বিয়ে করে ঠিক ই সংসার করতে লাগলো কিন্তু ছেলেটা একা একাই রয়ে গেলো। ছেলেটা এখনো মেয়েটা কে ভালবাসে। তাই সে ঐ একদিনের বিয়ের স্মৃতি নিয়েই বাকিটা জীবন কাটিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। যদিও ছেলেটা পড়ালেখা শেষ করেছিল এবং ইচ্ছা করলে বি,সি,এস দিয়ে ভালো একটা চাকরিতে যোগ দিতে পারতো কিন্তু সে তা না করে পেশা হিসাবে উকালতি কে বেছে নেয়। কারণ ছেলেটার মতো আর কারো জীবনে যেন এমন ঘটনা না ঘটে, সবাই যেন ন্যায় বিচার পায়!

গল্পটা শেষ হওয়ার পর, উকিল সাহেবের উদাস হয়ে যাওয়া মুখ আর চোখের কোণায় জমে থাকা দুই বিন্দু জল দেখে আর বলে দেওয়ার অপেক্ষা থাকে না যে, এটা তার জীবনের গল্প!

আধুনিক যুগে যখন দেখি ছেলেমেয়েরা ফেসবুকের মাধ্যমে প্রেম, পারলে তারা বিয়েটা ফেসবুকাই করেফেলে। আবার তুচ্ছ এক কারণে ব্রেকআপ। পরদিন আবার নতুন আরেক জনের সাথে ক্রাশ খায়, ভাবটা এমান যে তাকে ছাড়া বাচবে না। কিন্তু তারা একই সাথে একাধিক জনের সাথে সম্পর্ক অবলিলায় চালায় যেতে পারে। এমন যুগে এমন ভালবাসা সত্যিই বেমানা। এমন একজন মানুষের সাথে দেখা হওয়া মানে ভালবাসার প্রকৃত অর্থ খুজে পাওয়া।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই জুন, ২০১৫ রাত ১২:১১

রিপন বড়ুয়া বলেছেন: হা ভাই অনেক feel করলাম.

২| ১৭ ই জুন, ২০১৫ দুপুর ১২:১২

আহমেদ জী এস বলেছেন: ধুসর গোধুলী 2 ,




গল্পটি যদি সত্যিই হয়ে থাকে তবে এমন ভালোবাসার তুলনা নেই । প্রেম, ভালোবাসার মতো একটি মানবিক আবেগ নিয়ে বর্তমানের ফেসবুকীয় যে কালচারের কথা বললেন, সেখানে উকিল সাহেবের এই অবিচল ভালোবাসা আসলেই যেন বেমানান ।

৩| ১৭ ই জুন, ২০১৫ দুপুর ১২:৩১

এ কে এম রেজাউল করিম বলেছেন:
প্রেম, ভালোবাসার মতো একটি মানবিক আবেগ নিয়ে বর্তমানের ফেসবুকীয় যে কালচারের কথা বললেন, সেখানে উকিল সাহেবের এই অবিচল ভালোবাসা আসলেই যেন বেমানান ।

সহমত!!

৪| ২৩ শে জুন, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৩

ধুসর গোধুলী 2 বলেছেন: ধন্যবাদ রিপন বড়ুয়া।

৫| ২৩ শে জুন, ২০১৫ বিকাল ৪:৪০

ধুসর গোধুলী 2 বলেছেন: জি ভাই গল্পটি সত্যিই মন্তব্য এর জন্য ধন্যবাদ।

৬| ২৪ শে জুন, ২০১৫ সকাল ১০:০১

ধুসর গোধুলী 2 বলেছেন: মন্তব্যের ধন্যবাদ এ কে এম রেজাউ করিম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.