নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নতুন কিছু ভাবতে পছন্দ করি। নিজকে আরো জানতে চাই। শিখতে চাই মানুষের মন।

রাসেল রুশো

রাসেল রুশো › বিস্তারিত পোস্টঃ

সঙ্গিনী পাওয়ার প্রতিযোগিতায় আমরা কতটা স্মার্ট?

২০ শে মে, ২০১৫ সকাল ১১:২৯

আজকের প্রথম আলো বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি পেজে প্রকাশিত প্রতিবেদন:

সন্তান জন্মদানে নারীর ভূমিকাই বেশি বলে মনে করেন অনেকে। শুধু শুক্রাণু দেওয়া ছাড়া প্রজনন-প্রক্রিয়ায় পুরুষের আর কোনো অবদান নেই বললেই চলে। তারপরও তারা কী কারণে টিকে রয়েছে, তা জীববিজ্ঞানীদের কাছে দীর্ঘদিন ধরেই ছিল রহস্য। পুরুষের অস্তিত্বের প্রয়োজনীয়তা কতটুকু, তা নিয়ে নারীবাদীরা দীর্ঘদিন বিতর্ক করেছেন। যুক্তরাজ্যের একদল বিজ্ঞানী এবার সেই রহস্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
নেচার সাময়িকীতে গত সোমবার প্রকাশিত নতুন এক গবেষণা প্রতিবেদনে বিজ্ঞানীরা জানান, ‘যৌন বাছাই’ (সেক্সুয়াল সিলেকশন) প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার জন্য পুরুষের প্রয়োজন রয়েছে। আর প্রজাতিকে রোগমুক্ত রাখা, জিনগত বৈচিত্র্য রক্ষা করা এবং বিলুপ্তি রোধ করার জন্য এ প্রক্রিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অনেক প্রাণী অযৌন প্রজননের মাধ্যমে বংশবিস্তার করে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখে। তারা ছেলের পরিবর্তে শুধু মেয়েসন্তানের জন্ম দেয়। কেননা, পুরুষ প্রাণী অযৌন জনন প্রক্রিয়ায় বংশবিস্তার করতে পারে না। যেমন: মেক্সিকোর এক প্রজাতির লম্বা লেজওয়ালা টিকটিকি কেবল মেয়েসন্তানের জন্ম দেয় এবং এ প্রক্রিয়ায় বংশগতি বজায় রাখে। কিন্তু নতুন গবেষণায় বলা হচ্ছে, সঙ্গিনী পাওয়ার জন্য পুরুষেরা যে যৌন প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়, তার ফলে তাদের বংশধরেরা সুস্থ ও রোগমুক্ত থাকে এবং জিনগত বৈচিত্র্যের অধিকারী হয়।
গবেষক দলটির প্রধান এবং ইস্ট অ্যাংলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক ম্যাট গেইজ বলেন, পৃথিবীর প্রায় সব বহুকোষী প্রজাতি যৌন প্রজননের মাধ্যমে বংশবিস্তার করে। তবে তাদের অস্তিত্ব ব্যাখ্যা করার ব্যাপারটা সহজ নয়। কারণ, যৌন জনন প্রক্রিয়ায় সন্তান জন্মদানে তাদের কেবল অর্ধেকে (মেয়েরা) অংশ নেয়। তাহলে প্রজাতিগুলো কী কারণে ছেলেসন্তান জন্ম দিয়ে নিজেদের প্রচেষ্টার অপচয় করে? অযৌন প্রজনন প্রক্রিয়ায় শুধু নারীদের মাধ্যমেই তো কার্যকর বংশবিস্তারের সুযোগ ছিল। গবেষণায় দেখা যায়, প্রজনন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের জন্য পুরুষদের মধ্যে যে প্রতিযোগিতা হয়, তার অনেক ইতিবাচক দিক রয়েছে। কারণ, এতে গোটা প্রজাতির জিনগত স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে।
ইংরেজ প্রকৃতিবিজ্ঞানী চার্লস ডারউইন (১৮০৯-১৮৮২) প্রথম প্রাকৃতিক যৌন বাছাইয়ের ধারণা দেন। আর তা হলো পুরুষেরা প্রজননের জন্য প্রতিযোগিতা করে এবং নারীরা তাদের পছন্দের সঙ্গী বাছাই করে নেয়। এ কারণেই প্রাণিজগতে অধিকাংশ প্রজাতির পুরুষেরা তুলনামূলক উজ্জ্বল রঙের হয়ে থাকে এবং তারা সঙ্গিনীকে আকৃষ্ট করার কাজে অংশ নেয়। কিন্তু প্রজন্মের স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং সামাজিক সাফল্য নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে পুরুষের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার ব্যাপারটা এত দিন পর্যন্ত অজানাই ছিল।
প্রাণীদের জন্য যৌন বাছাই কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা জানার লক্ষ্যে বিজ্ঞানীরা ট্রাইবোলিয়াম নামে পরিচিত একধরনের পোকার ওপর পরীক্ষাগারের নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে ১০ বছর ধরে গবেষণা চালান। ওই পোকার কয়েকটি দলের মধ্যে দেখা যায়, ৯০টি পুরুষ পোকা মাত্র ১০টি স্ত্রী পোকার দৃষ্টি আকর্ষণ করার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়। সাত বছর পর ওই পোকার ৫০টি প্রজন্ম পেরিয়ে যায়। তখন গবেষকেরা দেখতে পান, যেসব দলের পুরুষ পোকা স্ত্রী পোকাকে আকৃষ্ট করার প্রতিযোগিতায় বেশি সক্রিয় ছিল, তাদের পরবর্তী প্রজন্ম অধিকতর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও প্রজনন সামর্থ্য নিয়ে টিকে আছে। আর সঙ্গিনী পাওয়ার প্রতিযোগিতা থেকে বিরত ছিল যেসব দলের পুরুষ পোকা, তাদের বংশধরেরা ১০টি প্রজন্মের পরেই বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
অধ্যাপক গেইজ বলেন, প্রজাতির স্বাস্থ্য ও অস্তিত্ব রক্ষার জন্যই যৌন বাছাই বা প্রতিযোগিতার গুরুত্ব রয়েছে। কারণ, এতে করে প্রজাতির জিনগত বৈচিত্র্য তৈরি হয়, যা তাদের অস্তিত্বের জন্য অপরিহার্য। প্রজাতির জিনগত স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্যই প্রজননের লক্ষ্যে প্রতিযোগীদের হারিয়ে সঙ্গিনীকে আকৃষ্ট করার ক্ষেত্রে পুরুষের পারদর্শিতা থাকাটা অত্যন্ত জরুরি।
সূত্র: রয়টার্স ও টেলিগ্রাফ।
আমাদের সমাজ সেক্সুয়াল সিলেকশন কতটা মানছে?মনে হচ্ছে নারী পুরুষকে নয়,পুরুষ নারীকে বাছাই করে।তাই নয় কী? সঙ্গিনী পাওয়ার প্রতিযোগিতায় আমরা কতটা স্মার্ট?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.