![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিজ্ঞান আমাদের দিয়েছে বেগ, কেড়ে নিয়েছে আবেগ, আমরা প্রতিনিয়ত প্রবেশ করছি এক বিবর্ন সভ্যতায় ।
যতদুর মনে পরে ২০০০ সালের অক্টোবরের কোন একটা দিন আমরা কয়েকজন সবুজ মাঠে গোল হয়ে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম । কিছুক্ষন পরে এক বন্ধু এসে আমাদের সাথে যোগ দিল, কিন্তু তার চেহারায় এমন উচ্ছাস্ এমন আবেগী ভাব আগে কখনোই দেখি নাই। সবাই মিলে তাকে কারন জানার জন্য জোর প্রয়োগ করলে সে লজ্জামিশ্রিত মুখে বলল- আজকে সে তার প্রিয়তমাকে তাদের বাড়ির উঠানে এক নজর দেখতে পেয়েছিল। আর তাতেই তিনি আহাল্লাদে গদ গদ। সে যে কি অনুভুতি ছিল এক নজর দেখার, এক মিনিট কথা বলার, এক পলক লজ্জারাঙ্গা দৃষ্টিতে তাকানোর সেটা তখনকার জেনারেশন ছাড়া কাউকেই বুঝানো সম্ভব নয়। শুধুমাত্র এমন এক পলক দৃষ্টির মূল্য হাজার মিনিট ভিডিও কল কথা বলেও উশুল করা যাবে না। কোন কোন প্রিয়জনের দেয়া চিঠি যে কি যত্নে রাখা হত সম্ভবত কোন ব্যাংকও তার সব্বোর্চ সম্মানিত গ্রাহকের গয়না এতটা যত্নে রাখে না। আমরা তখন ইন্টারনেট ছাড়াই সারাদিন অনলাইনে থাকতাম কখন তার সাথে একটি বার দেখা হবে বলে, কখন তার কন্ঠখানি শুনতে পাব বলে। সেখানে ছিল হাজারও প্রতিক্ষার স্বপ্নবুনা এক রাজ্য।
তখন ছিল না ইন্টারনেটের কোন মায়াবি জাল, ছিল না কোন স্যোসাল মিডিয়ার চ্যাটরুম, ছিল না মোবাইলের গ্যালারি র্ভতি রঙ্গিন ভিডিও আর সেলফির যানজট। তখন গল্পের বিষয় থাকত স্কুলের মাষ্টারদের পড়ানোর স্টাইল, কোন বন্ধু তার বান্ধবিকে বাড়ির আঙ্গিনায় লুকিয়ে এক ঝলক দেখার তীব্র আবেগময় অনুভূতির প্রকাশ, পাশের বাড়ির আম জাম পেয়ারা পেপে চুরির কলা-কৌশল আবিস্কার, পাশের গ্রামের সাথে খেলায় জেতার সেই অন্যবদ্য সব প্লানিং।
দুঃখজনক হলেও সত্য, এখন আমি আমার ফ্লাটের পাশের রুমের লোকটার নামটাই এখন মাঝে মাঝে মনে রাখতে পারি না। অথচ ফেইসবুকের নীলপরি, এ্যান্জেল, পীর বাবা, সবাইকে চিনি শুধু নিজের সত্ত্বাকেই চিনতে পারছি না । আমার এক ভাতিজি যার কিনা ডরিমন, মটু-পাতলু কার্টুনের সব চরিত্র মুখস্ত শুধু জানতে পারল না বাড়ির পাশের গাছের নামগুলো। তাকে দেশীয় আম, পেয়ারা, খরগোশ, কাঠবিড়ালি চেনাতে বইয়ের পাতার ছবির উপর নির্ভর করতে হয়, আপেক্ষ করার জন্য এর থেকে বেশি কিছুর কি আর প্রয়োজন আছে?
এই জেনারেশন আস্তে আস্তে হারাচ্ছে তাদের নিজস্ব সত্ত্বা, সবুজ ঘাসের উপর খালি পায়ে হাটার অনুভূতির স্নায়ুতন্ত্র তাদের বিকল হয়ে গেছে, বৃষ্টিতে কাদামাখা মাঠে খেলার অনুভূতি তারা কখনোই নিতে পারছে না, পারছে না স্কুল পালানো, পুকুরে সাতরানোর উচ্ছাসটুকু বুঝতে। সবকিছু কেমন জানি একটা কৃত্তিমতার আবরনে ঢাকা পরে যাচ্ছে। হাতে লেখা চিঠি যখন কোন প্রিয়জনের কাছে পৌছাত তখন সেই কাগজটাই তার কাছে হয়ে উঠতো হাজার টাকার নোটের থেকেও বেশি মূল্যবান। স্কাইপ, হোয়াটস্অ্যাপ, ম্যাসেন্জার, ইত্যাদির কল্যানে আমরা অতি দ্রুতই যোগাযোগ করতে পারছি সত্য কিন্তু সেই সাথে হারাচ্ছি আমাদের মৌলিক অনুভুতিগুলো।
আমরা হয়তোবা জিবনের শেষলগ্নে এসে অতিতের স্মৃতিকে রোমন্ধনের জন্য কিছু উপাদান পেয়ে যাব। আজকের জেনারেশনের কাছে কি গল্প করার মত কিছু কৃত্রিম কাল্পনিক কার্টুন ছাড়া আর কিছু অবশিস্ট থাকবে?
২| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:০২
আজমান আন্দালিব বলেছেন: ঠিক।
৩| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:১১
বিবর্ন সভ্যতা বলেছেন: সবকিছু কেমন জানি একটা কৃত্তিমতার আবরনে ঢাকা পরে যাচ্ছে। স্কাইপ, হোয়াটস্অ্যাপ, ম্যাসেন্জার, ইত্যাদির কল্যানে আমরা অতি দ্রুতই যোগাযোগ করতে পারছি সত্য কিন্তু সেই সাথে হারাচ্ছি আমাদের মৌলিক অনুভুতিগুলো।
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:২১
মিথ্যা প্রেমের গল্প বলেছেন: hm... thik....