![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আত্মকেন্দ্রিক, একা থাকতে খুব ভালো লাগে এবং একাকীত্ব আমি দারুণ ভালবাসি এবং উপভোগ করি ।
পিতৃসুত্রে তার নামটি রাখা হয়েছিলো কেল্টু খুব অদ্ভুত নাম তাইনা , কেল্টু দেখতেও খুব অদ্ভুত রকমের ছিলো । মাথাটা ছিলো গোল অনেকটা বল্টুর মতন এছাড়া বছরের অধিকাংশ সময় মাথার চুল কামিয়ে রাখা হতো তার । তাই কেল্টুর বদলে সবখানে স্থায়ী ভাবে তার নাম হয়ে গেলো বল্টু ।
আর স্কুল এ পড়াকালীন কতো নামে যে বল্টুকে ভূষিত করতো বল্টুর স্কুল বা মহল্লার বন্ধুরা । কেউ ডাকতো বল্টু আবার কেউ ডাকতো বাঙ্গি অবশেষে স্কুল নামটাই হয়ে গেল তার বল্টু বাঙ্গি । দোষটা অবশ্য ছিল বল্টুর শ্রদ্ধেয় মাতার , কারন তাহার মাতাজান প্রতি মাসে একের অধিকবার তার আদরের সন্তানের মাথা ন্যাড়া করে দিতেন । বন্ধুদের দোষ দিয়ে লাভ কি বলেন ।
আরো কতো কি যে গল্প কাহিনী হতো বল্টুকে নিয়ে স্কুলে তা নিয়ে রীতিমত এক উপন্যাস লিখে ফেলা যায় , প্রতিদিন প্রতি ক্লাসে বন্ধুদের সাথে মারামারি ছিলো অবধারিত বা প্রতি ক্লাস এ স্যারদের মারতো আছেই । কোন কিছু হলে দোষ কার , যত দোষ সব বল্টুর দোষ । প্রতি ক্লাসে ক্লাস ক্যাপ্টেন বল্টুর নামখানা সুন্দর করিয়া বোর্ড এর এক কর্নারে এ লিখে রাখতো , স্কুলে যারা বেশী দুষ্টামি করতো তাদের নাম বোর্ড এ লেখা থাকতো । বল্টু ক্লাস এ ফার্স্ট না হোক ক্লাস বোর্ড এ তার নাম সব সময় প্রথম তালিকায় থাকতো ।
বল্টুর স্কুলের এক স্যার ছিলেন উনি সমাজ পড়াতেন । তা সন্মানীয় সমাজ স্যার এর চিরাচরিত নিয়ম ছিলো ক্লাস এ প্রবেশ করার সাথে সাথে বল্টুর দিকে তার আঙ্গুল খানা ইঙ্গিত করিয়া বলিত এই তুই এই দিকে আয় আর সমাজ বইটা রিডিং পর । বল্টু রিডিং পড়াকালীন ক্লাসের কিছু বন্ধু মুখ দিয়ে হিস হিসহিস করে শব্ধ করতো , যার ফলে বল্টু ব্যাচারার যা হাসি হতো , স্যার বলতো এই তুই হাসলি কেন ? বল্টু সেই একই গৎবাঁধা পূরণ উত্তর দিতো স্যার আমি তো আর ইচ্ছা করে হাঁসিনি, দেখেন সবাই হিস হিস হিস করে শব্ধ করছে । স্যার বলতো তোর সব দোষ তুই নীলডাউন হয়ে থাক । কি আর করা একবারে টিফিন পর্যন্ত নীলডাউন হয়ে থাকা লাগতো বল্টু মহাশয়ের । তা শুধু সমাজ স্যার না প্রতি ক্লাস এ বল্টু ছিল স্যারদের গিনিপিগ ।
টিফিন কালীন ছুটিতে বা টিফিন সময়ে সবাই নানা ধরণের খেলা খেলতো যাতে বল্টুর অংশগ্রহণ না বললেই চলে , ইচ্ছা থাকতো কিন্তু অনেকে নিতে চাইতো না বা অনেক খেলায় তা্র অংশগ্রহনের সুযোগ ছিলোনা । সে সময় স্কুলে একটা জনপ্রিয় খেলা ছিলো নাম ছিলো জালান্তিস , ওই খেলার নিয়ম একটা টেনিস বল দিয়ে যে যাকে পাইতো জালাইতো, মূলত ওই খেলায় বল্টুর অংশগ্রহণ ছিলো বেশী আর টার্গেট থাকতো সব সময় বল্টু । বল্টু কোন খেলায় অংশগ্রহণ না করিতে পারিয়া জালান্তিস খেলতে যেতো আর খেলা শেষে তার শরীরের প্রতি অংশে থাকতো বলের লাল ছোপ ছোপ দাগ । আর প্রতি ক্লাসে বন্ধুদের সাথে তার মারামারি তো ছিলো ডাল ভাত ।
পারিবারিক ভাবে বল্টুর পরিবার কিছুটা অসচ্ছল ছিলো , একবার ক্লাস ৮ এর ঘটনা, বার্ষিক পরীক্ষা শেষ , পিকনিক এ যাবে ক্লাস থেকে । অনেক কষ্টে বাবার কাছে থেকে টাকাটা ম্যানেজ করলো বল্টু । তা সত্যি বলতে কি বল্টুর স্কুল শার্ট ছাড়া মাত্র একটি শার্ট ছিলো যেটি পড়ার উপযোগী ছিলোনা । এর মধ্যে শার্টখানা ছিলো অসংখ্য যায়গাতে ছিঁড়া , বল্টু পিকনিকে যাওয়ার আগে ওইটা পড়লো , শীতের সময় ছিলো ওইটার উপর বল্টু চালাকি করে সোয়েটার গায়ে চরালো । কেউ বুঝলো না বল্টুর এই ছিঁড়া শার্ট এর কাহিনী , কিন্তু পিকনিকে গোসল করতে যাওয়ার সময় বল্টু ছিড়ে শার্ট সমেত বন্ধুবান্ধবের কাছে ধরা পরে গেলো । আর বন্ধুদের যে দাত কেলীয়ে হাসা বল্টু আজো ভুলতে পারেনা ।
এবার এলাকা থেকে ঘুরে আসি, বল্টুর মহল্লার বন্ধুরা পার্কে প্রতিদিন ফুটবল খেলতো । বল্টুর স্কুল ছুটি দেওয়া হতো সোয়া ৪টা তে । স্কুল ছুটি হওয়ার পর যখন বাসায় আসার পথে বল্টু দেখত তার মহল্লার বন্ধুরা খেলা শুরু করে দিয়েছে । বল্টু বাসায় গিয়ে আর এক ফোঁটাও সময় নষ্ট করতো না তাড়াতাড়ি ভাত খেয়ে এক দৌড়ে যখন খেলতে আসতো তখন বন্ধুবান্ধব তাকে খেলাতে নিতো না , অনেক অনুরোধের পর যদিও তাকে নেওয়া হতো , তাও গোলকিপার হিসাবে , মানে দারওয়ানের চাকরী একখানে দাড়িয়ে থাকো । আর খেলার মাঠে মারামারি সে আবার বলতে ওইটাতো সব সময় বল্টু ভাইজানের জন্য ডাল ভাত ছিলো । বল্টু ভাইজানের আবার একটা বদ অভ্যাস ছিলো মারামারির সময় না পারলে প্রতিপক্ষকে কুকুরের মতো কামড় দিতো তাই এলাকাতে বল্টু ভাইজানের নাম হয়ে গেল বুলডগ । নামের বলিহারি আমাদের এই বল্টু ভাইজানের ।
আবার যেদিন কোন কারনে খেলা থাকতো না বল্টু ভাইজান তখন তাদের এলাকাতে আড্ডা মারতো , তা বল্টু একবন্ধুর বাসার ছাঁদে সবসময় আড্ডা দিতো , কিন্তু বন্ধুরা যখন অন্য আর একটা ছাঁদে উঠতো বল্টুর ওই খানে উঠা নিষেধ ছিলো । তার জন্য ওই ছাদে কারফিউ জারি ছিলো কারন বল্টু্র বন্ধুদের কিছু বন্ধু ছিলো যারা আবার পরাশুনার দিক দিয়ে তার এক ব্যাচ সিনিয়র , তাই বল্টু্র জন্য ওই ছাদের কারফিউ জারী করা হয়েছিলো । অথচ ওই ছাঁদে বল্টুর এক বন্ধু ছিল যে বল্টুর ৪ ব্যাচ জুনিয়র কিন্তু সমবয়সী কিন্তু ওরা প্রভাবশালী আর বল্টু ছিল ভাড়াটিয়া । এমন ও সময় ছিলো বল্টুকে তার বন্ধুকে ভাই বলে সম্বোধন করা লাগতো।
আর বল্টুর কপালখানা সবসময় খারাপ ছিলো মানুষ তাহাকে অনর্থক বকাঝকা করতো অথচ বল্টু ওই ঘটনার সাথে জড়িত না বা কিছু জানেও না । কতো রকমের যে দাগ কাটতো ছোট কেলটু ওরফে বল্টুর বাচ্চা মনে।
আরেকবার হলো কি ফুটবল খেলতে গিয়ে বল্টুর নখে লেগে একটু ফুটবলের চামড়া উঠে গেলো সর্বসম্মতিক্রমে তাহাকে জরিমানা দেওয়া লাগলো ৫০ টাকা অথচ কিছুদিন আগে এক বন্ধু একটা বল কিক করতে গিয়ে ফাটিয়ে ফেলেছে তার কাছ থেকে জরিমানাতো দূরে থাক তাহাকে আরো সহানুভুতি দেওয়া হয়েছে । কতো কষ্টে যে বল্টু তার টিফিনের ২ টাকা করে জমিয়ে জমিয়ে তার দেনা শোধ করেছে ।
অনেক মানসিক কষ্টে বল্টু তার স্কুল জীবন পাড় করেছে , একটা ছোট্ট ছেলের মনের কষ্ট যে কতো কষ্টকর তাহা কেউ কি উপলব্ধি করতে পারেনি ।
আর বাড়ালাম না বল্টুর কাহিনী বললে একটা সিনেমা হয়ে যাবে। আর বলতে চাইনা , পুরাণ ঘটনা মনে করে বল্টুকে আর কষ্ট দিতে চাই না । কষ্ট দিয়ে কি লাভ।
সময় একদিন বল্টুর ও আসবে , কিন্তু বল্টু তোমাদের কে মাফ করে দিয়েছে ।
২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:২৭
দেওয়ান কামরুল হাসান রথি বলেছেন: পাঠক১৯৭১ @ ভাই এখানে আলাদা ভাবে মেইল বক্স থাকলে আপনাকে একটা কথা বলতাম তাহলে আপনি আপনার লাস্টের শব্দটা ব্যাবহার করতেন না । কিন্তু অনেক কিছু অনেক খানে বলা যায়না গল্প হিসেবে চালিয়ে নিতে হয় । আশা করি আপনি যদি বুদ্ধিমান হন আমার কথার মর্ম বুজতে পেরেছেন ।
২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৯
দেওয়ান কামরুল হাসান রথি বলেছেন: পাঠক ১৯৭১ ভাই আপনি কি আমার কথার অর্থ বুঝতে পেরেছেন ।
©somewhere in net ltd.
১|
২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:১৮
পাঠক১৯৭১ বলেছেন: "
কিন্তু পিকনিকে গোসল করতে যাওয়ার সময় বল্টু ছিড়ে শার্ট সমেত বন্ধুবান্ধবের কাছে ধরা পরে গেলো । আর বন্ধুদের যে দাত কেলীয়ে হাসা বল্টু আজো ভুলতে পারেনা ।
"
বল্টুরা দরিদ্র ছিল, ওর ছেঁড়া শার্ট ছিল; ওর ক্লশমেটেরা এতে হাসলো: যারা হেঁসেছিল, তারা মানুষের বচ্ছা ছিল না; আপনি যেভাবে লিখেছেন, আপনিও ইডিয়ট!