নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার ডায়েরি

দেওয়ান কামরুল হাসান রথি

আত্মকেন্দ্রিক, একা থাকতে খুব ভালো লাগে এবং একাকীত্ব আমি দারুণ ভালবাসি এবং উপভোগ করি ।

দেওয়ান কামরুল হাসান রথি › বিস্তারিত পোস্টঃ

চক দিয়া ব্ল্যাকবোর্ডে একটা গুঁতা মার।

০৩ রা এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১:০২

অনেক আগের কথা আমি তখন বি.এ.এফ শাহীন কলেজ (কুর্মিটোলা) শাখাতে পড়তাম। তা আমি ছিলাম স্কুল শাখায় শ্রেণী ছিল চতুর্থ। স্কুলে যাতায়তের মাধ্যম ছিল বাস। প্রতিদিন আমাদের বাস ফার্মগেট পুলিশ বক্সের সামনে দিয়ে ঘুরিয়ে যেত, আমরা ঐখান থেকে স্কুলের উদ্দেশে বাসে উঠে পরতাম। মাজেমধ্যে বাস না আসলে এক বন্ধুর সাথে তার বাবার মোটরসাইকেল অথবা লোকাল বাসে করে স্কুলে চলে যেতাম।



বেশীরভাগ সময় আমাদের বাস আসতে দেরী করতো অথবা অনেক সময় আসতোনা তাই সকালের প্রথম ক্লাসে সবসময় আমরা লেট করেই পৌছাতাম। ক্লাসে ঢুকতে ঢুকতে অনেক সময় দেখা যেত ক্লাসের অর্ধেক শেষ হয়ে গেছে। ম্যাডাম খুব রাগারাগি করতো অনেক সময় প্রেজেন্ট নিতে চাইতোনা। ক্লাস ফোরের ছেলে ম্যাডামকে বুজানোর এতটুকু সামর্থ্য ছিলোনা যে আমিতো ইচ্ছা করে দেরী করিনি। আর আমাদের সময়টাতে ম্যাডাম বা স্যার এর মুখে মুখে কথা বলা মানে বেয়াদবির সামিল যার শাস্তি ছিল আরো ভয়ানক।



মড়ার উপর আবার খাড়ার ঘা ছিলো, যেদিন স্কুলে আগে আগে ঢুকতাম ভয়ে থাকতাম এক জন স্যার এর কারনে। স্যার কে আমরা সবাই যতসম্ভব দাদু স্যার বলে ডাকতাম। তার বাবা একজন বিখ্যাত কবি ছিলেন অনেকদিন আগের কথা তাই নামটা ভুলে গেছি। আমরা যখন সবাই বাস দিয়ে নামতাম তখন তিনি বাহিরে দাড়িয়ে থাকতেন। আরে বাব্বা তারে দেখলেই কলজের পানি শুকিয়ে যেত।



তা ঐসময় আমার স্কুল হাতখরচা ছিল দুই টাকা কি পাঁচ টাকা কোনদিন আবার শুন্য হাতে স্কুলে আসতে হতো। সকালে তাড়াতাড়ি বাস ধরার জন্য বাসায় বসে আর নাস্তা করা হতোনা। টিফিন বক্সে করে নিয়ে যেতাম, বেশীরভাগ সময় রুটির সাথে আলুভাজি মাজে মধ্যে ডিম সেদ্ধ বা ভাজি থাকতো। আমি আবার একটু ছোঁচা টাইপের আর শারীরিকভাবে কিছুটা স্থুল ছিলাম। সবসময় পেটের মধ্যে ক্ষুধায় ছুঁচো দৌড়াদৌড়ি করতো।



প্রথম ক্লাস কিংবা দ্বিতীয় ক্লাস শেষ হওয়ার ফাকে আমার নাস্তা শেষ। পিছনের বেঞ্চে বসতাম স্যার বা ম্যাডামরা ঐভাবে লক্ষ্য করতোনা। আমাদের সময় স্কুলে ক্যান্টিন ছিল দুইটা একটা ছিলো স্কুলের ভিতরে আর একটা বাহিরে। স্কুল শুরু হলে গেট বন্ধ করে দেওয়া হতো। বাসার নাস্তা শেষ হয়ে গেলেও আমার ক্ষুধা কমতোনা। নতুন ক্লাস শুরু হওয়ার আগে টিচারদের আসতে যা সময় এই ফাকে আমি ক্যান্টিন থেকে চানাচুর নাহলে প্যাটিস কিনে খেতাম।



যাহোক এবার আসল কথায় আসি, আমি একটু মুখচোরা বা লাজুক টাইপের ছেলে ছিলাম। স্যার যখন ক্লাসে ডাকতেন পড়া জিজ্ঞাসার জন্য অথবা সামনে এসে সবার সামনে দাড়িয়ে মুখস্থ বলতে বলতেন আমি ঐসময় থ মেরে যেতাম। স্যার সামনে ডাক দিলেই মনে হতো আমার দুনিয়া শেষ। আমার নিজের আত্মস্থ হতে অনেক সময় লাগতো অনেক সময় পড়া পারা সত্ত্বেও মুখ থেকে বের হতো না মোট কথা আমি অচল হয়ে যেতাম ঐ মুহূর্তে।



তা একবার এক ক্লাসে স্যার আমাকে ডাকলেন। স্যারের ডাক শুনে আমার ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। আমাকে কি জানি লিখতে বললেন ব্ল্যাকবোর্ডে আমি যথারীতি থ মেরে আছি পুরা হ্যাংওভার। স্যারের অনেক ধমকানির পর অনেক কষ্টে লিখলাম। লেখা শেষে স্যার বললো ফুলস্টপ দে, আমি আবারো থ মেরে গেলাম এরপরে স্যারের ধমকানিতেও কাজ হচ্ছেনা ফুলস্টপ নামে যে একটা কিছু আছে আমার মাথায় ঢুকছিলোনা। আমাদের ক্লাসের সবাই আমার দিকে তাকিয়ে হাসাহাসি করছে। আমিতো চরম লজ্জায় বেকুবের মতন স্যারের দিকে তাকিয়ে আছি। অবশেষে এই যন্ত্রণা থেকে স্যার আমাকে মুক্তি দিলেন।



ফুলস্টপ কি এটাও জানস না গাধা , চক দিয়া ব্ল্যাকবোর্ডে একটা গুঁতা মার।



তারপরেও আমি অনেকক্ষণ থ মেরে ছিলাম।

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১:১০

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: হাহাহাহাহাহা, মজার স্মৃতিচারণ। জোশতো। +।

০৩ রা এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১:১৮

দেওয়ান কামরুল হাসান রথি বলেছেন: শরৎ ভাই @ আমার স্কুলের কাহিনী নিয়ে পুরা একটা উপন্যাস লেখা যাবে।

২| ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১:২৫

অনন্য দায়িত্বশীল আমি বলেছেন: আহ্ ছোট বেলার স্মৃতি গুলো কতইনা মধুর! আবারও ফিরে যেতে ইচ্ছে করে সেই মধুময় সময়ে।


আপনার লেখা অত্যন্ত সাবলীল।

০৩ রা এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৩:১৮

দেওয়ান কামরুল হাসান রথি বলেছেন: অনন্য দায়িত্বশীল আমি @ প্রতিদিন যখন চোখের সামনে দিয়ে স্কুলে যাওয়া বাচ্চাগুলোকে দেখি। তখন অনেক কষ্ট পাই শৈশবে ফিরে যাই। মনে মনে বলি বাছা তোরা এই ভালো আছিস আর বড় হসনে। বড় হওয়ার কষ্ট অনেক।

৩| ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১:২৭

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: উপন্যাস তো লিখবেনই, তার আগে ব্লগটা পূর্ণ করে ফেলেন। আপনার স্মৃতিচারণ থেকে ব্লগারদের বঞ্চিত কেন করবেন?

০৩ রা এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৩:৩০

দেওয়ান কামরুল হাসান রথি বলেছেন: শরৎ ভাই @ প্রথম ধন্যবাদ অভ্রকে এতো সহজভাবে বাংলা লেখার জন্য তারপরের ধন্যবাদ সামুকে আমার মতন নগণ্য লোকদের লেখার সুযোগ তৈরি করে দেওয়ার জন্য। হ্যাঁ চিন্তা করছি এরপর থেকে স্কুল বিষয়ক স্মৃতিগুলি ব্লগারদের সাথে শেয়ার করবো।

৪| ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:১৬

বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন: আবার যদি ছেলেবেলায় ফিরে যেতে পারতাম।

কতনা মধুর ছিল সে দিনগুলি!!

০৩ রা এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৭

দেওয়ান কামরুল হাসান রথি বলেছেন: বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় ভাই @ টাইম মেশিন দরকার। ছেলেবেলাতে ফিরে যেতে পারলে আমাকেও সাথে করে নিয়েন। বড় হওয়ার দায়বদ্ধতা থেকে মুক্তি পেতে চাই।

৫| ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:৫১

কোবিদ বলেছেন: =p~ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~

০৩ রা এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৯

দেওয়ান কামরুল হাসান রথি বলেছেন: কোবিদ ভাই স্মৃতিচারণ চলছে। আপনিও সব বিখ্যাত ব্যাক্তিদের ছোটবেলা নিয়ে একটা লেখা লিখে ফেলেন।

৬| ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৫:৩১

বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: এতো মজার স্মৃতিচারণ অনেক দিন হল পড়ি না। ভীষণ আনন্দ পেলাম রথি। কিছুটা নস্টালজিক হলাম বটে। অনেক ধন্যবাদ।

০৩ রা এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪১

দেওয়ান কামরুল হাসান রথি বলেছেন: বিদ্রোহী বাঙালী @ ধন্যবাদ ভাই আপনাকে। একবারেই আমার জীবন থেকে নেওয়া একটি সত্যি ঘটনা।

৭| ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৬

উদাস কিশোর বলেছেন: পুরোনো সময় রোমন্থন করলাম যেন !

০৩ রা এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪২

দেওয়ান কামরুল হাসান রথি বলেছেন: কিশোর ভাই আপনার নাম দেখলেই কিশোর পাশার কথা মনে পরে যায়, নস্টালজিক হয়ে যাই আমি আরো।

৮| ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:১৭

মামুন রশিদ বলেছেন: হুম, বেশ লাগলো !

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১২:০৮

দেওয়ান কামরুল হাসান রথি বলেছেন: ধন্যবাদ মামুন ভাই।

৯| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৮:৫৭

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:


আরও এমন ঘটনা শেয়ার করবেন আশা করি।

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:৫০

দেওয়ান কামরুল হাসান রথি বলেছেন: কান্ডারি অথর্ব ভাই @ আছে আরো অনেক মজার ঘটনা আছে। লেখার হাতটা আরো ভালো করে পাকুক। ধন্যবাদ।

১০| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১১:১৭

নীল জোসনা বলেছেন: স্কুলে থাকা কালে মনে হতো ক্লাস করা , পড়া তৈরি করা , টিচার দের বেতের বাড়ি । আহ !! কবে যে এখান থেকে মুক্তি পাবো.......।

পরে সেই স্কুল জীবনটাকেই সবচেয়ে মধুর মনে হয় ।

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১:৪৬

দেওয়ান কামরুল হাসান রথি বলেছেন: নীল জোসনা @ ভাই এখনকার জীবনের চেয়ে স্কুলের বেতের বাড়ি অনেক ভালো ছিল। আমিও মুক্তি চাইতাম কিন্তু এখন ফিরে যেতে চাই।

১১| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৪

মশিকুর বলেছেন:
মজার সব ঘটনা :)

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩৯

দেওয়ান কামরুল হাসান রথি বলেছেন: ধন্যবাদ মশিকুর ভাই :D

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.