![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পরিচয় দিয়ে কিছুই হয় না, কাজ ই আসল।
মাত্র মাকে দেখে আসলাম!
ভালোই আছেন!১০০ স্কয়ার ফিট এর ছোট ঘুপটি মতো ঘরে আম্মা থাকেন!
যদিও বৃদ্ধাশ্রমে প্রতি মাসে ঠিক মতোই বড় অংকের টাকাই আমি দিয়ে থাকি, তবুও কেনো যে তারা আম্মাকে এতো ছোট রুম দিল আমি বুঝতেই পারলাম না!
ওহ, যাইহোক, আমার পরিচয় দিয়ে নেই,
আমি আহনাফ আল সালমান, এখন ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছি! আব্বা আর আম্মার একমাত্র আদরে বেড়ে ওঠা একজন পরিপূর্ণ অমানুষ!
অমানুষ বলার কারণ, আমি নিজেও জানি যে আমি সন্তান হিসেবে শুধুই ব্যার্থই নই বরং সন্তান শব্দটিও আমার জন্যেই কলঙ্কিত!
আব্বা যখন মারা যায় তখন আমি জাপানে ছিলাম, টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গিয়েছিলাম আর পাশাপাশি একটা পার্টটাইম জবও খুজে নিয়েছিলাম!
বিদেশ যাওয়ার মূল খরচ বড় চাচার দেওয়ার কথা থাকলেও শেষে বাবা ই আমার শখ আর আবদার মেটাবার জন্যেই নিজের অপারেশন এর আংশিক এবং মার নামে যেটুকু সম্পত্তি ছিল তার পুরোটাই বিক্রী করে দিয়েছিলেন!
আমি যদিও পুরো ব্যাপারটাই জানতাম, তবুও বিন্দুমাত্র সিমপ্যাথি বা অন্য কিছু আমার মাঝে কাজ করেনি! কারণ তখন আমি টিনেজার কাম প্রাপ্তবয়স্ক! মনে উড়ে বেড়াচ্ছিল হাজারো রঙ্গিন স্বপ্ন সেই স্বপ্নগুলোর মাঝে আব্বা আম্মার সেক্রিফাইস টাকে আমার এক ধরণের উটকো চিন্তা আর খুবই তুচ্ছ মনে হচ্ছিল!
আমি বিদেশে পাড়ি দেওয়ার ঠিক এক বছর আর মাস খানেক এর মাথায় বাবা ইন্তেকাল করেন! ইচ্ছা থাকলেও শেষ বারের মত বাবার মুখ দেখা বা লাশ দাফন করার ভাগ্য আমার হয়নি!
এর পর থেকে আম্মা একা হয়ে পড়েন, একদমই একা!কয়েক বছর পরেই আমি ফিরে আসি দেশে, আর হাতে করে নিয়ে আসি অনেক দামি সার্টিফিকেট! যে সার্টিফিকেট এর কাছে আমার বাবার মৃত্যু তুচ্ছ, যেই সার্টিফিকেট এর কাছে আমার মার একাকিত্ব টা খুবই সাধারণ ব্যাপার!
ব্যার্থ আমার বাবা-মা নন, ব্যার্থ আমি, ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভালো ডিগ্রী নিয়ে এসেছি ঠিক ই, কিন্তু মানুষ হতে পারিনি।
হয়ত ঐ বৃদ্ধাশ্রমের সেই ছোট রুম এর ভেতর থেকে মা কে আর ফিরিয়ে আনতে পারবোনা।
টাকার পাহাড়ে কোনদিন হয়ত চাপা পড়ে মরে যাবো, দম বন্ধ হয়ে আসবে, কিন্তু মাথায় হাত বুলিয়ে দেওয়ার কেউ থাকবেনা।
জীবনে অনেক চড়াই উতরাই পেরিয়ে এসেছি, এসবের মাঝে নিজের বাবা-মার খবর রাখতে পারিনি,হতে পারিনি মানুষ, মাঝে মাঝে খুব মনে পড়ে বাবা-মার কথা,তাদের ত্যাগ আর বিসর্জন এর কথা।যেসবের প্রতিদানে আমি তাদেরকে দিলাম চরম মানসিক যন্ত্রণা আর অবহেলা।
আমি অমানুষ,আমি আসলেই অমানুষ,বলতে আমার কোন সমস্যা নেই।আমার এই অপরাধীর মত স্বীকারোক্তি কখনো আমার পিতা-মাতার কাছে পৌছোবেনা।কিছু সত্য প্রকাশ করার মত হয় না,শুধু মনের ভেতর আঁকড়ে ধরে ডুকরে কাঁদতে হয়, কিছু ভুল কখনো সংশোধন করা যায় না, শুধু এর ফল ভোগ করে আহত হতে হয়।
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫৫
ওমেরা বলেছেন: সময় হারিয়ে অনুশোচনা করে লাভ নেই ! ভাল লাগল লিখা ধন্যবাদ ।