![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যতদিন লেখাপড়ার প্রতি আকর্ষণ থাকে, ততদিন মানুষ জ্ঞানী থাকে, আর যখনই তার ধারণা জম্মে যে সে জ্ঞানী হয়ে গেছে, তখনই মূর্খতা তাকে ঘিরে ধরে।- সক্রেটিস
সামজিক সংগঠন হলো, যা কতিপয় ব্যক্তি বিশেষের সমন্বয়ে শিক্ষা, সংষ্কৃতি ইত্যাদি সহ সার্বিক সামাজিক উন্নয়ন কল্পে কাজ করার লক্ষ্যে গঠিত হয়। অর্থ্যাৎ পারস্পরিক স্বার্থে সুনির্দিষ্ট লক্ষ অর্জনের জন্য একটি সামাজিক পদ্ধতি ও সুনির্দিষ্ট কাঠামোর ভিতর অন্তর্ভুক্ত হওয়াকেই সংগঠন বলে । একটি আদর্শ সামাজিক সংগঠন শিক্ষা, সংষ্কৃতি, স্বাস্থ্য উন্নয়ন, দারিদ্র বিমোচনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে । ফলশ্রুতিতে সার্বিক সামাজিক উন্নয়ন হয়, এমন কি সামজিক শান্তি শৃংখলা ও সম্প্রীতি বৃদ্ধি পায়। এক কথায় বলা যায় সামাজিক উন্নয়নে, সামাজিক সংগঠন গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রয়েছে । তবে তার জন্য প্রয়োজন সঠিক লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে কাজ করা ।
একটি আদর্শ সংগঠন কাঠামো গড়ে তুলতে হলে কিছু বৈশিষ্ট্য থাকা একান্ত প্রয়োজন।
সুনির্দিষ্ট কাঠামো: প্রতিটি সংগঠন একটি সুনির্দিষ্ট কাঠামোর আওতায় গড়ে উঠে। কাঠামো সংগঠনের প্রতিটি উপাদানের পারস্পরিক সম্পর্ক ও তাদের যথাযথ ব্যাবহার নির্দেশ করে। অর্থ্যাৎ, একটি সংগঠন কোন ধরনের কাজ করবে, কি কাজ করবে, কে কোন কাজ করবে ইত্যাদি সর্বদা সুনির্দিষ্ট থাকবে।
বিশেষায়ন ও সমন্বয় সাধন: একক প্রচেষ্টায় মানুষ সবকিছু অর্জন করতে পারে না। কারণ কোনো কাজ কেউ জানে আবার কেউ জানে না, আবার কেউ অনেক বেশি জানে। সংগঠনের মাধ্যমে এ সকল কিছুর সমন্বয় সাধন করা হয় ও নতুন নতুন বিষয় নিয়ে গবেষণা করা হয়।
সামাজিক পদ্ধতি: প্রতিটি মানুষ যেমন একটি সামাজিক পদ্ধতির সঙ্গে জড়িত, তেমনি একটি সংগঠনও অপর একটি সংগঠনের সাথে সামাজিকভাবে জড়িত। তবে বিভিন্ন সংগঠনের কাজ ভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। অনেক সময় আবার একটা সংগঠন অন্য একটি সংগঠনের পরিপূরক হয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে একটি সংগঠন অন্য সংগঠনের জন্য সামাজিক দ্বায়িত্ব পালন করে।
ব্যাক্তি ও দলের সমন্বয়: একা কোনো ব্যাক্তি একটি সংগঠন পরিচালনা করতে পারে না যেহেতু সংগঠন একাধিক ব্যাক্তির সমন্বয় তাই তাদের উদ্দ্যেশ্য পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় সকল উপাদান একত্রিত করে সংগঠন সৃষ্টি করতে হবে।
পারস্পরিক স্বার্থ: পারস্পরিক স্বার্থই হচ্ছে সংগঠন গড়ে ওঠার মূল ভিত্তি। মানুষ একে অপরের স্বার্থে কার্য সম্পাদনের মাধ্যমে পারস্পরিক স্বার্থ পূরণ করে থাকে। এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে পারস্পরিক স্বার্থ ও সংগঠনের স্বার্থ এক নয়।
সর্বদাই লক্ষে নির্দেশিত: একটি আদর্শ সামাজিক সংগঠনে কিছু সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য রয়েছে। আদর্শ সংগঠন সর্বদাই লক্ষ নির্দেশিত পথে কাজ করে এবং সে লক্ষ পূরণে সর্বাত্মক প্রচেষ্টায় চালায়। লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হওয়া চলবে না।
সহ-শিক্ষা কার্যক্রম হিসেবে সামাজিক সংগঠন: অনেকে মনে করে সংগঠনে কাজ করা মানে সময় নষ্ট, পড়ালেখার ক্ষতি! আসলে এটা ভুল ধারণা । বরং সুস্থ সংগঠনগুলোতে কাজ করার মাধ্যমে ইতিবাচক গুণাবলি তৈরি হয়। দায়িত্বশীলতা বাড়ে। নেতৃত্বগুণ তৈরি হয়। একজন সংগঠন করা ব্যক্তি “সংগঠন না করা” ব্যক্তির চেয়ে আলাদা।’ সংগঠন মানুষকে সহনশীলতা শেখায়, একসঙ্গে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করে।সাংস্কৃতিক, ক্রীড়াকেন্দ্রিক যা-ই হোক না কেন, তার নির্দিষ্ট মূল্যবোধ বা আদর্শ থাকে। সেই সংগঠনের ছায়ায় দাঁড়িয়ে ব্যক্তি যেমন নিজেকে বিকশিত করতে পারে, তেমনি সামাজিক সুস্থতাও আসতে পারে এই উপায়ে। শিক্ষা প্রতিষ্টানে বিশেষ করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিভিন্ন প্রকারের সংগঠনের অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যায়, যার অধিকাংশই আঞ্চলিক ছাত্র সংগঠন । পারস্পরিক সম্প্রীতি সৃষ্টির লক্ষ্যে তারা পিকনিক, খেলাধুলা, ঈদ পূনর্মিলনীসহ ধর্মীয় অনুষ্ঠান ইত্যাদির আয়োজন করে থাকে । এর পাশাপাশি তারা বিভিন্ন সৃজনশীল কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করে থাকে । যেমন, বার্ষিক ম্যাগাজিন প্রকাশ ।
সামাজিক সংগঠনের নেতৃত্ব : যারা দেশপ্রেম, সততা ও নিষ্ঠার চর্চা করেন এবং উপযুক্ত পরিবেশ পেলে দেশ বা সমাজের জন্যে কিছু করতে চান তাদেরকে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং তাদের মধ্যে থেকে যোগ্য ব্যক্তিদের সামাজিক সংগঠনের নেতৃত্ব প্রদান করতে হবে । তবে সংগঠনের বৃহত্তর স্বার্থে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সামাজিক সংগঠনের নেতৃত্ব গ্রহণে নিরুৎসাহিত করতে হবে। রাজনৈতিক দলের সক্রিয় সদস্য সংগঠনের কমিটিতে থাকা উচিত না। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায়, অনেকের মূখ্য উদ্দেশ্য থাকে সংগঠনের পদবী লাভ করা। সভাপতি, সেক্রেটারি বা কার্যকরী কমিটিতে একটি পদ চাই! পদ পাওয়ার পর তারা হয়ে যান নিষ্ক্রিয়। এদের ধারণা এসব পদবীর প্রচারে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুবিধা পাওয়া যায় । এই ধরনের ব্যক্তিদের সংগঠনের দ্বায়িত্ব থেকে দূরে রাখা ভালো ।
পরিশেষে একটা কথাই বলব, সঠিক লক্ষ্য নিয়ে কাজ করেলে সামাজিক সংগঠন সত্যিকার অর্থেই সমাজের সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখতে পারে। তাই আমদের সকলের উচিৎ হবে, সভাপতি, সেক্রেটারি ইত্যাদি পদবীর লোভ বিসর্জন দিয়ে, সম্মাননা উপাধী বানিজ্যের চিন্তা না করে; সত্যিকার উন্নয়নমূলক কাজের সংকল্প নিয়ে সংগঠন করা। তা করতে পারলেই সম্ভব হবে সমাজের উন্নয়ন করা। নিজের এলাকাকে আদর্শ এলাকা হিসাবে প্রতিষ্ঠা করা, সম্প্রীতির বন্ধন দূড় করা। তাহলে সাধারণ মানুষ সম্মানের সাথে ব্যক্তি ও সংগঠনকে স্মরণ করবে অনন্ত কাল।
১৮ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১০:৩৫
মোঃ রায়হান খান ঝুমন বলেছেন: সহমত । @ চাঁদগাজী
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৩:৪৬
চাঁদগাজী বলেছেন:
বাংগালীরা সভাপতি ও সেক্রেটারী হওয়ার জন্য পাগল; প্রত্যেককে সেক্রেটারী ও সভাপতি বানিয়ে, ১ জনকে মেন্বার করা দরকার; মেম্বার সংগঠন চালাবেন।