নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হাঁসি খুশি বিনোদন, এটাই আমার জীবন।

Raz Arnob

আমি অর্ণব। রম্য গল্প লিখতে ভালোবাসি। নিজে সবসময় হাঁসি খুশি থাকি এবং অন্যদের রাখার চেষ্টা করি।

Raz Arnob › বিস্তারিত পোস্টঃ

আজকালকার কিছু মেয়েদের কাছে টাকাই কি সব?

০১ লা নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৩৬

দৃশ্যপট- ১
.
আমাদের এক আড্ডা গ্রুপে দিয়েছিলাম একটি ভয়েজ রেকর্ড। রেকর্ডটা ছিলো একটি গানের। সেটা দেখে এক মেয়ে বললো- গান শুনতে পারতেছিনা.....
.
বললাম- কেন কেন?
.
মেয়ে বললো- এমবি নাই ভাই। শুনবো কেমনে?
.
মজা কইরা মুখ চাইপা ধরার ইমু দিয়ে কইলাম- জান কইলে না হয় এমবি দেয়া যাইতো....... ভাই কইয়া তো কাম সাইড়া দিছেন....
.
সাথে সাথে মাইয়াটা ঢং কইরা কইলো- জান এমবি দাও না....
.
আমি হাসির ইমু দিয়া কইলাম- দেখছেননি কারবার? এমবির লাইগা ভাই থাইকা জানে নাইমা আইছেন। টাকার লাইগা তো স্বামীরে স্বামী থাইকা বাপে নাইমা আইবেন.....
....................
দৃশ্যপট - ২
.
পছন্দের মেয়ে মাঝে মাঝে আমায় আরমান মল্লিকের দেখিয়ে বলতো- দেখছো কত্ত সুন্দর না?
.
আমি আগুনে জ্বলে শুধু হু হু করতাম। একদিন মল্লিক বেটার সর্টপ্যান্ট পরা ছবি দিয়ে বললো- দেখছো জোস না?
.
আমি তো রেগেমেগে পুরাই আগুন। তো রাগের ইমু দিয়ে বললাম- ঐ বেটারে নিয়ে এত নাচানাচির কি আছে? ওর চেয়ে আমি দেখতে কোনদিক দিয়া খারাপ?
.
সে বললো- উহু উহু খারাপ নাতো বরং আরো ভালো....
.
একটু খুশি হয়ে বললাম- ঐ হালার চেয়ে আমার গানের ভয়েজ কি খুব খারাপ?
.
সে বললো- উহু উহু অনেক ভালো ভয়েজ তোমার...
.
- তাইলে আমি দেখতে সুন্দর, ভয়েজ ভালো এবং সব দিক দিয়া পার্ফেক্ট, খালি ওর মত টাকা-পয়সার দিক ছাড়া। তাইলে আমার উপর ক্রাশ না খাইয়া ওর উপরে উইঠা পইরা লাগছো ক্যান?
.
সে বললো- আসল জিনিসটাই তো তোমার নাই
.
- কও কি? কি নাই?
- ঐ যে টাকা পয়সা.....
.................
.
দৃশ্যপট - ৩
.
.
দীর্ঘ ৪ বছর পর স্কুলের এক ঘনিষ্ঠ বান্ধবীর নাম্বার থেকে ফোন আসতেই ক্ষাণিকটা চমকে গেলাম। কাপাকাপা হতে ফোন রিসিব করতেই ওপাশ থেকে রিতা বললো- দোস্তো কেমন আছিস? তোর দুলাভাই নিয়া আমাগো বাড়ি আইছি। অনেকদিন দেখা হয় না। একটু আয়না আমাগো বাড়ি তোরে দেখি...
.
আমি বললাম- কসকি? কবে আইছোস?
.
- আইজই আইছি। গতকাল বাজান আইছে বিদেশ থাইকা তাই আইজই চইলা আইছি। আয় না তুই...
- আইচ্ছা বিকালে আমুনে যা।
- ওক্কে আসিস কিন্তু। না আসলে কিন্তু খবর আছে।
- আরে আমু আমু। বাই.....
.
ফোন কেটে দিয়ে বিকালের দিকে ওদের বাড়ির দিকে হাটা দিলাম। ৪ বছর ওর সাথে যোগাযোগ নেই। তাছাড়া আরো বেশি আগ্রহ নিয়ে গেলাম রিতার বাবা আর স্বামীর জন্য। কেননা রিতার বাবাকে আমি আগে কখনো দেখিনি। ছোট বেলা থেকেই নাকি বেচারা বাহিরে থাকেন। শুধু বিয়েটা দেশে এসে করে বছরখানি পর আবার ভেগেছেন। এদিকে আমি আবার চট্রগ্রামে থাকার কারনে রিতার বিয়েতে উপস্থিত থাকতে পারিনি। তাই স্বামীর সাথেও পরিচিত নই। তো আর কি? গেলাম ওদের বাড়িতে....
.
বাড়ির ভিতর ঢুকতেই রিতা দৌড়ে এসে বললো- দোস্তো আইছোস? কেমন আছোস আগে ক....
.
বললাম- ভালো আছি, তুই?
.
- আমি ভালো আছি। আয় ঘরে আয়।
.
রিতার সাথে ওদের ঘরের দিকে হাটা দিতেই দরজার সামনে দেখা মিললো ওর বাপের সাথে। সাদা পাঞ্জাবি পরা ছোট খাটো বুড়ো টাইপ একটা মানুষ। বয়স ষাটের মত হবে। মাথায় ইয়া বড় একটা ক্রিকেট স্টেডিয়াম। যেখানে উকুনেরা দল বেঁধে নির্বিঘ্নে ক্রিকেট খেলতে পারবে। তাকে দেখা মাত্র তার দিকে ছুটে গিয়ে মাথা নিচু করে পায়ে হাত দিয়ে হুমড়ি খেয়ে পরে সালাম করে বললাম- আঙ্কেল ভালো আছেন?
.
আঙ্কেল আমার সালামের কোন রেসপন্স করলো না। সালামে ভুল ঠুল করলাম নাতো আবার? ভাবতে ভাবতেই রিতা দৌড়ে পিঠে কিল একটা বসিয়ে দিয়ে বললো- ঐ বান্দর করোস কি, করোস কি?
.
- করি কি মানে? সালাম করতাছি চোঁখে দেহোস না? লাত্থি খাবি....
- লাত্থি তুই খাবি। ওট হালা। কারে সালাম করোস তুই?
- কারে মানে? আঙ্কেলরে...
- তোরে উঠতে কইছি উঠ বান্দর। এইডা তোর দুলাভাই...
.
আমি আবুল হয়ে ধিরে ধিরে উঠে দাড়ালাম। লজ্জা কি ওরা দুজন পেলো নাকি আমি পেলাম বুঝলাম না। বললাম- ওহ সরি সরি দুলাভাই বুঝবার পারিনাই। কেমন আছেন?
.
সে বললো- এইতো ভালো আছি। তুমি?
.
- জ্বী আমিও।
- আচ্ছা যাও, ভিতরে যাও। আমি একটু হেটে আসি।
- জ্বী আচ্ছা।
.

দুলাভাই চলে গেলো। আমি বলদ হয়ে ঘরের ভিতরে ঢুকে বললাম- কিরে বাপের চেয়েও তো বয়স বেশি হইবো। কেমনে কি?
.
রিতা ঝাড়ি একটা দিয়ে বললো- চুপ কর হারামি। ওমন কথা মুখেও আনবি না। ঐরূপ দেখা গেলে কি হইবো? টেকা পয়সা আছে.......
.
.
এখন প্রশ্ন হইলো- টাকা ছাড়াও যে পৃথিবীতে কিছু একটা আছে, কিছু মেয়েরা আসলেই তা জানেতো?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.