নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ডক্টর এ.বি.এম. রেজাউল করিম ফকির, অধ্যাপক, জাপানি ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগ \nআধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় e-mail: [email protected]

রেজাউল করিম ফকির

অধ্যাপক, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

রেজাউল করিম ফকির › বিস্তারিত পোস্টঃ

গণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান হতে পারে কম্পিউটার প্রকৌশলীদের সম্ভাবনাময় নতুন কর্মক্ষেত্র

১৬ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:১৬


দেশে কম্পিউটার প্রকৌশলের একটি বড় কর্মশক্তি সৃষ্টি হয়েছে। অনলাইনে কর্মরত কর্মী সংখ্যায় বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান এখন দ্বিতীয়। দেশে কম্পিউটার প্রকৌশলীর সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেলেও, কম্পিউটার প্রকৌশল সেবাদানকারী বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা আনুপাতিক হারে কম। সেজন্য বাংলাদেশী কম্পিউটার প্রকৌশলীদের কাজ পেতে অন্য দেশের উপর নির্ভর করতে হয়। তাদেরকে ভারত, জাপান ও মালয়েশিয়া ইত্যাদি দেশের প্রকৌশল সেবাদানকারী বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের নির্ভর করতে হয়। সেজন্য বিকাশমান নতুন নতুন ক্ষেত্রে বাংলাদেশী প্রকৌশলীদের প্রবেশ হয় বিলম্বিত। তেমনই একটি বিকাশমান ক্ষেত্র হলো গণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান (ইংরেজি Computational linguistics) ।

গণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান জ্ঞানের একটি আন্ত:শাস্ত্রীয় শাখা যেখানে গণনামূলক দৃষ্টিকোণ থেকে মানুষের মুখের স্বাভাবিক ভাষার পরিসংখ্যানগত বা গাণিতিক সূত্র-ভিত্তিক মডেল তৈরি করা হয়। প্রথাগতভাবে যেসব কম্পিউটার প্রকৌশলী কম্পিউটার প্রয়োগের মাধ্যমে প্রাকৃতিক মানব ভাষা প্রক্রিয়াকরণ (natural language processing) নিয়ে কাজ করতেন, তারাই মূলত গণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের স্বপ্নদ্রষ্টা। কাজেই বলা যায় যে, মানবভাষা প্রক্রিয়াকরণের ভিত্তির উপরই গণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে এটি গণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান নামে স্বতন্ত্র একটি বিজ্ঞান হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কাজেই বর্তমানে গণানামূলক ভাষাবিজ্ঞান ভাষাবিজ্ঞানী, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিশেষজ্ঞ, গণিতবিদ, বোধ বিজ্ঞানী, বোধ মনোবিজ্ঞানী, মনো-ভাষাবিজ্ঞানী এবং স্নায়ুবিজ্ঞানীদের এজমালি গবেষণা ক্ষেত্র হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক দুইটি দিকই আছে। তাত্ত্বিক গণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান তাত্ত্বিক ভাষাবিজ্ঞান ও বোধ বিজ্ঞানের আঙ্গিকে মানব ভাষা প্রক্রিয়াকরণ বিষয়ক বিজ্ঞান। অন্যদিকে ব্যবহারিক গণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান সাবলীল মানব ভাষার মডেল নির্মাণে সহায়ক বিজ্ঞান।

আন্ত:শাস্ত্রীয় এই বিজ্ঞানে ব্যুৎপত্তি অর্জন করতে হলে, তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক— এই দুই দিকেই পারদর্শিতা অর্জন করা প্রয়োজন। কিন্তু প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক বাংলাদেশের এই শিক্ষাব্যবস্থার শিক্ষাক্রমে বিজ্ঞানের তাত্ত্বিক দিকটি উপেক্ষিত। যে কারণে মানব ভাষা প্রক্রিয়াকরণের মড়েল নির্মাণে ব্যবহারিক দিকে জ্ঞান থাকা সত্ত্বেও, বাংলাদেশের কম্পিউটার প্রকৌশলীগণ গণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানে পিছিয়ে রয়েছে। কিন্তু এই ক্ষেত্রে প্রতিবেশী দেশ ভারতের কম্পিউটার প্রকৌশলীগণ এগিয়ে রয়েছে। এ যাবতকাল পর্যন্ত ভাষা বিজ্ঞান সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত বিষয় হলেও, গত এক দশক যাবত সে দেশের আইআইটি নামক প্রকৌশল ইনস্টিটিউটগুলোতে ভাষা বিজ্ঞানের পঠন-পাঠন ও গবেষণা শুরু হয়েছে। আইআইটিগুলোতে একটির পর একটি ভাষাবিজ্ঞানের শস্ত্রীয় সেমিনার ও সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এমনকি সর্বভারতীয় ভাষা বিজ্ঞানীদের প্রতিষ্ঠান লিঙ্গুয়িস্টিক সোসাইটি অব ইণ্ডিয়া (Linguistic Society of India)-ও আইআইটিগুলোতে শাস্ত্রীয় সম্মেলনের আয়োজন করছে।

উপরের আলোচনা স্পষ্ট যে, বাংলাদেশের কম্পিউটার প্রকৌশলীদের গণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানে ব্যুৎপত্তি অর্জনে তত্ত্বীয় ভাষাবিজ্ঞান পাঠ জরুরী। তত্ত্বীয় ভাষাবিজ্ঞান আবার ধ্বনি তত্ত্ব, রূপমূল তত্ত্ব, বাক্যবিন্যাস তত্ত্ব ও বাগর্থ তত্ত্ব ইত্যাদি নানা ধারায় বিভক্ত। কাজেই দেশের যে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগ রয়েছে, সে সব বিভাগের পাঠক্রমে তত্ত্বীয় ভাষাবিজ্ঞান অন্তর্ভুক্ত করা হলে, শিক্ষার্থী ও গবেষকগণ তত্ত্বীয় ভাষাবিজ্ঞান অধ্যয়ন ও গবেষণার সুযোগ পাবে। ফলশ্রুতিতে তারা গণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানে পারদর্শিতা অর্জন করতে পারবে এবং তাদের কাছে বিশ্বের গণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের নতুন কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের পথ উন্মুক্ত হবে। দেশের কম্পিউটার প্রকৌশলীগণের কর্মক্ষেত্র প্রসারিত হবে এবং তারা দেশের জন্য অর্থ ও সুনাম বয়ে আনার সুযোগ পাবে। কাজেই দেশের যে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগ রয়েছে, সে সব বিভাগের পাঠক্রমে তত্ত্বীয় ভাষাবিজ্ঞান অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি।

.
দেশে কম্পিউটার প্রকৌশলের একটি বড় কর্মশক্তি সৃষ্টি হয়েছে। অনলাইনে কর্মরত কর্মী সংখ্যায় বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান এখন দ্বিতীয়। দেশে কম্পিউটার প্রকৌশলীর সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেলেও, কম্পিউটার প্রকৌশল সেবাদানকারী বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা আনুপাতিক হারে কম। সেজন্য বাংলাদেশী কম্পিউটার প্রকৌশলীদের কাজ পেতে অন্য দেশের উপর নির্ভর করতে হয়। তাদেরকে ভারত, জাপান ও মালয়েশিয়া ইত্যাদি দেশের প্রকৌশল সেবাদানকারী বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের নির্ভর করতে হয়। সেজন্য বিকাশমান নতুন নতুন ক্ষেত্রে বাংলাদেশী প্রকৌশলীদের প্রবেশ হয় বিলম্বিত। তেমনই একটি বিকাশমান ক্ষেত্র হলো গণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান (ইংরেজি Computational linguistics) ।

গণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান জ্ঞানের একটি আন্ত:শাস্ত্রীয় শাখা যেখানে গণনামূলক দৃষ্টিকোণ থেকে মানুষের মুখের স্বাভাবিক ভাষার পরিসংখ্যানগত বা গাণিতিক সূত্র-ভিত্তিক মডেল তৈরি করা হয়। প্রথাগতভাবে যেসব কম্পিউটার প্রকৌশলী কম্পিউটার প্রয়োগের মাধ্যমে প্রাকৃতিক মানব ভাষা প্রক্রিয়াকরণ (natural language processing) নিয়ে কাজ করতেন, তারাই মূলত গণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের স্বপ্নদ্রষ্টা। কাজেই বলা যায় যে, মানবভাষা প্রক্রিয়াকরণের ভিত্তির উপরই গণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে এটি গণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান নামে স্বতন্ত্র একটি বিজ্ঞান হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কাজেই বর্তমানে গণানামূলক ভাষাবিজ্ঞান ভাষাবিজ্ঞানী, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিশেষজ্ঞ, গণিতবিদ, বোধ বিজ্ঞানী, বোধ মনোবিজ্ঞানী, মনো-ভাষাবিজ্ঞানী এবং স্নায়ুবিজ্ঞানীদের এজমালি গবেষণা ক্ষেত্র হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক দুইটি দিকই আছে। তাত্ত্বিক গণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান তাত্ত্বিক ভাষাবিজ্ঞান ও বোধ বিজ্ঞানের আঙ্গিকে মানব ভাষা প্রক্রিয়াকরণ বিষয়ক বিজ্ঞান। অন্যদিকে ব্যবহারিক গণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান সাবলীল মানব ভাষার মডেল নির্মাণে সহায়ক বিজ্ঞান।

আন্ত:শাস্ত্রীয় এই বিজ্ঞানে ব্যুৎপত্তি অর্জন করতে হলে, তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক— এই দুই দিকেই পারদর্শিতা অর্জন করা প্রয়োজন। কিন্তু প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক বাংলাদেশের এই শিক্ষাব্যবস্থার শিক্ষাক্রমে বিজ্ঞানের তাত্ত্বিক দিকটি উপেক্ষিত। যে কারণে মানব ভাষা প্রক্রিয়াকরণের মড়েল নির্মাণে ব্যবহারিক দিকে জ্ঞান থাকা সত্ত্বেও, বাংলাদেশের কম্পিউটার প্রকৌশলীগণ গণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানে পিছিয়ে রয়েছে। কিন্তু এই ক্ষেত্রে প্রতিবেশী দেশ ভারতের কম্পিউটার প্রকৌশলীগণ এগিয়ে রয়েছে। এ যাবতকাল পর্যন্ত ভাষা বিজ্ঞান সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত বিষয় হলেও, গত এক দশক যাবত সে দেশের আইআইটি নামক প্রকৌশল ইনস্টিটিউটগুলোতে ভাষা বিজ্ঞানের পঠন-পাঠন ও গবেষণা শুরু হয়েছে। আইআইটিগুলোতে একটির পর একটি ভাষাবিজ্ঞানের শস্ত্রীয় সেমিনার ও সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এমনকি সর্বভারতীয় ভাষা বিজ্ঞানীদের প্রতিষ্ঠান লিঙ্গুয়িস্টিক সোসাইটি অব ইণ্ডিয়া (Linguistic Society of India)-ও আইআইটিগুলোতে শাস্ত্রীয় সম্মেলনের আয়োজন করছে।

উপরের আলোচনা স্পষ্ট যে, বাংলাদেশের কম্পিউটার প্রকৌশলীদের গণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানে ব্যুৎপত্তি অর্জনে তত্ত্বীয় ভাষাবিজ্ঞান পাঠ জরুরী। তত্ত্বীয় ভাষাবিজ্ঞান আবার ধ্বনি তত্ত্ব, রূপমূল তত্ত্ব, বাক্যবিন্যাস তত্ত্ব ও বাগর্থ তত্ত্ব ইত্যাদি নানা ধারায় বিভক্ত। কাজেই দেশের যে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগ রয়েছে, সে সব বিভাগের পাঠক্রমে তত্ত্বীয় ভাষাবিজ্ঞান অন্তর্ভুক্ত করা হলে, শিক্ষার্থী ও গবেষকগণ তত্ত্বীয় ভাষাবিজ্ঞান অধ্যয়ন ও গবেষণার সুযোগ পাবে। ফলশ্রুতিতে তারা গণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানে পারদর্শিতা অর্জন করতে পারবে এবং তাদের কাছে বিশ্বের গণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের নতুন কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের পথ উন্মুক্ত হবে। দেশের কম্পিউটার প্রকৌশলীগণের কর্মক্ষেত্র প্রসারিত হবে এবং তারা দেশের জন্য অর্থ ও সুনাম বয়ে আনার সুযোগ পাবে। কাজেই দেশের যে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগ রয়েছে, সে সব বিভাগের পাঠক্রমে তত্ত্বীয় ভাষাবিজ্ঞান অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি।

পরিচালক, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ভূতপূর্ব অতিথি শিক্ষক, টোকিও বিদেশবিদ্যা বিশ্ববিদ্যালয়
ভূতপূর্ব গবেষণা ফেলো, জাপান রাষ্ট্রভাষা ইনস্টিটিউট


.

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.