নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ডক্টর এ.বি.এম. রেজাউল করিম ফকির, অধ্যাপক, জাপানি ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগ \nআধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় e-mail: [email protected]

রেজাউল করিম ফকির

অধ্যাপক, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

রেজাউল করিম ফকির › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশে ঔপনিবেশিক শক্তির থাবা ও আর্থনীতির চালিকা শক্তির বিপরীত ঘূর্ণন

০৮ ই মার্চ, ২০২১ রাত ১০:০৪

১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ বেনিয়া শক্তি দেশ দখলের পর, বাঙ্গলার রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, জ্ঞানীয়, ভাষিক ও প্রাযৌক্তিক অবকাঠামো ধ্বংসের উদ্যোগ নেয়। তারা এ দেশকে শাসন ও শোষণ করতে ইউরোপীয় ধারায় সামন্ততন্ত্র প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করে। ফলশ্রুতিতে দেশে একটি পোষ্য সামন্ত প্রথার তপ্লিবাহক অভিজাত গোষ্ঠী সৃজনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। এই অভিজাত গোষ্ঠীর কাজ ছিলো দেশের মানুষকে অর্থনৈতিকভাবে শোষণ করে, সেই শোষিত অর্থ ইংরেজদের হাতে তুলে দেয়া। কাজেই দু’শ বছর (১৭৫৭-১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দ) ধরে শাসন ও শোষণের ফলে বাঙ্গলার নিজস্ব সামাজিক শক্তি ধ্বংস হয়ে যায়।
এ সময়ে ব্রিটিশদের পোষ্য সামন্ততন্ত্রের দেশীয় সামাজিক-রাজনৈতিক গোষ্ঠী হিসাবে যে অভিজাত গোষ্ঠী গড়ে উঠে, তারা তাদের আবাসস্থল হিসাবে কলকাতা শহরকে বেছে নেয়। ব্রিটিশ সরকার কলকাতায় পাশ্চাত্য ধারার শিক্ষাব্যবস্থা ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে তুললে, কলকাতা কেন্দ্রিক উক্ত অভিজাত গোষ্ঠীর মধ্যে ইউরোপীয় জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা শুরু হয়। তাই তাদের মধ্যে স্বাধীনতার চেতনাবোধ জন্ম নেয়। কিন্তু যাদের মধ্যে স্বাধীনতাবোধ জন্ম নেয়, তাদের মধ্যে আবার হিন্দু-মুসলমান বিভেদ বোধটি গড়ে উঠে। কাজেই তখন হিন্দু-মুসলমান বিভেদের কারণে বাঙ্গলা ভাগ হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। অবশেষে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে বাঙ্গলা ভাগ হয়।
বাঙ্গলা ভাগের মাধ্যমে বর্তমান বাংলাদেশ অংশটি পূর্ব-পাকিস্তান নামে মুসলমান জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে ব্রিটিশ ইণ্ডিয়ার মুসলমানদের জন্য সৃষ্ট আবাস ভূমি পাকিস্তানের অঙ্গীভূত হয়। ফলশ্রুতিতে রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, জ্ঞানীয়, ভাষিক ও প্রাযৌক্তিক দিক থেকে এগিয়ে থাকা বাঙ্গলার আলোকিত অংশটি হিন্দু হিসাবে হিন্দুদের আবাস ভূমি পশ্চিমবঙ্গ ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রে অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়ে। এমনিতেই দু’শ বছরের ইংরেজ শাসনে বাঙ্গলার সামাজিক শক্তিসমূহ ছিলো ম্রিয়মাণ, তার উপর বাঙ্গলা ভাগের ফলে পূর্ব-পাকিস্তান (বাংলাদেশ)-এর রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, জ্ঞানীয়, ভাষিক ও প্রাযৌক্তিক শক্তি নি:শেষ হয়ে পড়ে। পূর্ব-পাকিস্তানে তখন ব্রিটিশ শাসক ও শোষক গোষ্ঠীও নেই, আবার ব্রিটিশদের পোষ্য স্থানীয় অভিজাত শ্রেণীর (যারা হিন্দু) সবাই কলকাতায় স্থানান্তরিত হয়েছে। তখন এক ধরণের রাজনৈতিক শুন্যতার সৃষ্টি হয়। সামাজিক স্তরবিন্যাসেও দেখা যায় বিপর্যয়। এই উপরের স্তরে স্থান করে নিতে ব্রিটিশ ভারত থেকে পশ্চিম পাকিস্তানে প্রত্যাগত আর্য মুসলমানগণ অভিজাত শ্রেণীর অংশ হতে উঠেপড়ে লাগে। সে সময় এ দেশীয় স্থানীয় শিক্ষিত কৃষক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী শ্রেণিও সামাজিক স্তরবিন্যাসের উপরের স্তরে স্থান করে নিতে প্রয়াসী হয়। তখন বাধে নতুন দ্বন্দ্ব। সেই দ্বন্দ্বে পূর্ব-পাকিস্তানের অধিবাসীদের মধ্যে বাঙ্গালী জাতীয়তাবোধ জাগ্রত হয়। তখন তারা বাংলা ভাষাকে জাতীয়তাবাদের প্রতীক হিসাবে ধার্য করে স্বাধীনতা আন্দোলন শুরু করে। রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। কিন্তু এই স্বাধীনতা যুদ্ধে দেশের রেল ও সড়ক যোগাযোগসহ সমস্ত অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে যায়।শিল্প-কারখানা ও সামাজিক স্থাপনার সবকিছু লুট হয়ে যায়। সামাজিক স্তরবিন্যাসের উপরে অবস্থান ছিলো পাকিস্থানি ও এ দেশীয় পাকিস্থানপন্থী অভিজাতদের দখলে। কিন্তু পাকিস্তানের ভাঙ্গনের ফলে এই শ্রেণীটি আস্তিত্ব সঙ্কটে পড়ে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই মার্চ, ২০২১ রাত ১০:২৯

চাঁদগাজী বলেছেন:


আপনি যা বলেছেন, এগুলো ইতিহাস ( কিছুটা ভুল টুলসহ ), এগুলোর আলোকে আপনার নিজস্ব বক্তব্য কি?

২| ০৯ ই মার্চ, ২০২১ রাত ১:০৩

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো কিছু লিখুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.