নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ডক্টর এ.বি.এম. রেজাউল করিম ফকির, অধ্যাপক, জাপানি ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগ \nআধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় e-mail: [email protected]

রেজাউল করিম ফকির

অধ্যাপক, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

রেজাউল করিম ফকির › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটসমূহে পরিচালিত বিদেশি ভাষা শিক্ষা কার্যক্রমকে গ্রহণযোগ্য ও যুগপোযোগীকরণে নীতি প্রণয়ন সম্পর্কে

২৩ শে জুন, ২০২১ রাত ১০:১৩

বাংলাদেশে ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দে গঠিত প্রথম শিক্ষা কমিশন কর্তৃক প্রণীত ও ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে জাতীয় সংসদে গৃহীত শিক্ষানীতির আলোকে শিক্ষা-পরিকল্পনার বাস্তবায়নের ফলশ্রুতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়স্থ আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রসঙ্গত বাংলাদেশ সরকার গৃহীত প্রথম শিক্ষানীতির ৪.৯ এবং ৪.১১ অনুচ্ছেদে এতদসংক্রান্ত বিধৃত বিষয়টি এখানে যুক্ত করা হলো:
উল্লেখ্য যে, বিদেশি ভাষা শিক্ষার প্রসারের জন্য ১৯৬৭ খ্রিস্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে বিদেশি ভাষা বিভাগ নামে একটি বিভাগ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিলো। এই শিক্ষানীতি গৃহীত হওয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালস্থ পূর্বতন এই বিদেশি ভাষা বিভাগকে রূপন্তরের মাধ্যমে আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়স্থ এই ইনস্টিটিউটে চীনা ভাষা ও সংস্কৃতি, ফরাসি ভাষা ও সংস্কৃতি ও জাপানি ভাষা ও সংস্কৃতিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষা কার্যক্রম চালু রয়েছে। এ ছাড়া ইংরেজিতে English for the Speaker of Other Languages ও Teaching English for the Speakers of Other Languages-এ যথাক্রমে স্নাতক ও স্নতকোত্তর শিক্ষা কার্যক্রম চালু রয়েছে।


কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়স্থ আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের অস্নাতক শিক্ষা কার্যক্রমের অনুকরণে ও অনুসরণে বর্তমানে বিভিন্ন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, গণ বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্যক্তি মালিকানাধীন বিশ্ববিদ্যালয়ে আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট বা অনুরূপ নামের ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। কিন্তু এই ইনস্টিটিউটসমূহের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো ও শিক্ষা কার্যক্রম মান সম্পন্ন নয়। এর নানাবিধ কারণের মধ্য অন্যতম হলো:
১) শিক্ষক নিয়োগের আদর্শ মানের অনুপস্থিতি,
২) সিলেবাস ও কারিক্যুলামের দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে মানহীনতা,
৩) প্রদত্ত শিক্ষা কার্যক্রমগুলোর শিরোনামে ও পরস্পরায় অসঙ্গতি,
৪) কোর্সগুলোর কালব্যপ্তি ও দক্ষতার ব্যপ্তিতে অসঙ্গতি।

উক্ত কারণে এই ইনস্টিটউটগুলোর একটিতে অর্জিত সার্টিফিকেট ও ডিপ্লোমা অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউটে গ্রহণযোগ্য হয় না। আবার দেশের কোনো ইনস্টিটিউটের সার্টিফিকেট বিদেশে গ্রহণযোগ্য নয়, কারণ মান্ধাদাতার আমলের কোর্সের নাম বিদেশের কোনো প্রতিষ্ঠানে বোধগম্য নয়।
কিন্তু বিদেশি ভাষা শিক্ষার চাহিদা রয়েছে, যে কারণে মান নিয়ন্ত্রণহীনভাবে এই শিক্ষার অনিয়মিত বিস্তার ঘটছে। এই শিক্ষা কার্যক্রম বর্তমানে বিভিন্ন ধরণের প্রতিষ্ঠানে দৃষ্ট হয়। তার অন্যতম হলো:
১) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়াধীন একাডেমীসমূহে
২) শ্রম ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন কারিগরী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে
৩) বিভিন্ন বিদেশি কূটনৈতিক মিশন পরিচালিত সাংস্কৃতিক কেন্দ্রসমূহে
৪) English Medium School সমূহে
৫) বিভিন্ন শহরে বা বাজারে অবস্থিত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসমূহে

সবগুলোর মধ্যে বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের ইনস্টিটিউটসমূহে উচ্চ শিক্ষাব্যবস্থার অংশ হিসাবে এই বিদেশি ভাষা শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। সে জন্য বিদ্যালয়ে বা অন্য কোনো সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় শিক্ষক সৃষ্টির জন্য এই আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটগুলোর কোমল অবকাঠামো গড়ে তোলা প্রয়োজন। এই শিক্ষাব্যবস্থা যেনো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বা কোচিং সেন্টার কর্তৃক প্রদত্ত বিদেশি ভাষা শিক্ষা কার্যক্রমের মতো না হয়, বিশ্ববিদ্যালয় মানের হয়, সেজন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। সেজন্য নিম্নের পদক্ষেপসমূহ গ্রহণ করা যেতে পারে:

১) বিদেশি মাতৃভাষী (native speaker) শিক্ষক নিয়োগের বিধান চালু করণ,
২) বিশ্বজুড়ে গ্রহণযোগ্য দক্ষতা ভিত্তিক ভাষা শিক্ষা কাযক্রম চালু করণ,
৩) কোর্সগুলোর শিরোনাম ও ক্রেডিট হিসাবের গ্রহণযোগ্য এজমালি মান নিরুপণ,
৪) জাতীয় ভাষাগত দক্ষতা প্রতিষ্ঠান চালু করণ এবং
৫) আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট থেকে ইংরেজি ভাষা শিক্ষা কার্যক্রম রহিত করণ। এমন প্রস্তাবের বহুবিধ কারণ রয়েছে, তার অন্যতম হলো: ক) বাংলাদেশের ভাষা-পরিস্থিতিতে ইংরেজি বিদেশি ভাষা নয়, খ) আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের বিদেশি ভাষার কোর্স সমূহ শুন্য থেকে শুরু করা হয়, এগুলো বিদ্যালয় পর্যায়ে ১২ বছর শিখে আসা শিক্ষার্থীদের জন্য উপযোগী নয়, ও গ) আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটে মূলত বিদ্যালয় পর্যায়ের ইংরেজিই চর্চা করা হয়।

অতএব, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধীন আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটসমূহের শিক্ষা কার্যক্রমগুলোকে সর্বজনগ্রাহ্য গ্রহণযোগ্য ও যুগপোযোগী করণে সহায়ক প্রয়োজনীয় নীতি প্রণয়ন এখন সময়ের দাবী।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.