নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ডক্টর এ.বি.এম. রেজাউল করিম ফকির, অধ্যাপক, জাপানি ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগ \nআধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় e-mail: [email protected]

রেজাউল করিম ফকির

অধ্যাপক, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

রেজাউল করিম ফকির › বিস্তারিত পোস্টঃ

জাতির জন্য অশনি সংকেত: শত বার্ষিকীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা বিরোধী অবস্থান

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:১৩

১লা নভেম্বর ২০২১ খ্রিস্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে এর শতবার্ষিকী অনুষ্ঠান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিলো ১লা জুলাই ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে। সে অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শতবর্ষে পদার্পণ করেছে গত ১লা জুলাই ২০২১ খ্রিস্টাব্দ তারিখে। কিন্তু করোনা অতিমারীর কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ শতবার্ষিকী অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা যায়নি। তার পরিবর্তে এ অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হচ্ছে ১লা নভেম্বর ২০২১ খ্রিস্টাব্দে।
একটি বিশ্ববিদ্যালয় একটি উচ্চ বিদ্যাপীঠ। এটি একটি জ্ঞান, মনন, আদর্শ ও চেতনার পরিকর্ষণের ক্ষেত্রে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও গত শতাব্দিকাল ধরে জ্ঞান, মনন, আদর্শ ও চেতনার পরিকর্ষণ সংঘটিত হয়েছে এবং এখনও সংঘটিত হয়ে চলেছে। এটি প্রতিষ্ঠার এক শতাব্দি পর, যখন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন চলছে, তখন শতবর্ষে এর অর্জন এবং ব্যাক্তিক, গৌষ্ঠিক, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এর প্রভাব নিয়ে আলোচনা ও বাহাস চলছে। কিন্তু দেশে এখন অনেক সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপস্থিতি রয়েছে। কাজেই এসব বিষয়গুলো সম্পর্কে আলোচনা ও বাহাসের ক্ষেত্রে,মানুষ এখন অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে তুলনা করছে। আবার দেশের মানুষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কিত এ আলোচনার ক্ষেত্রে বিদেশে অবস্থিত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়কে টেনে আনছে। বিভিন্ন পর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে যে আলোচনা চলছে, তার সবকিছু যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকটি পৌঁচাচ্ছে তেমন নয়। বরং অনেক কিছুই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নজর এড়িয়ে যাচ্ছে। আবার অনেক বার্তা পৌঁচাচ্ছে, যা আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমলে নিচ্ছে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় অর্জন হিসাবে যা দেখা হচ্ছে, তা হলো ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দের বাংলা ভাষা অধিকার আন্দোলন ও ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের স্বাধীনতা আন্দলোন। এই দুই আন্দোলনের পথে বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের স্ফূরণ ঘটে। ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। সে বিবেচনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আলোকবর্তিকা হিসাবে কাজ করে এসেছে। যে কারণে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে গণতন্ত্রের সূতিকাগার হিসাবে বর্ণনা করা হয়। কিন্তু এই গণতন্ত্রের সূতিকার হয়ে উঠার পিছনেও গল্প রয়েছে। যে গল্প প্রমাণ করে যে, গণতন্ত্রের সূতিকাগার হওয়ার বিষয়টি মোটেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একক গৌরব নয়। কারণ পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছিলো বিভিন্ন প্রতিভাবান ছাত্র নেতাদের বিচরণ ক্ষেত্র। মফস্বলে যারা ছাত্র নেতা হিসাবে পরিচিতি লাভ করতো, তাদের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির বিশেষ সুযোগ ছিলো। সে সুযোগকে কাজে লাগিয়েই সমস্ত দেশের ছাত্র নেতাগণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নেতায় পরিণত হতো। যে কারণে বলা যায় যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের আন্দোলন হলো- মূলত সমস্ত দেশের ছাত্র নেতাদেরই আন্দোলন। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে রাজনৈতিক পীঠস্থান হিসাবে খাটো করে দেখার কোনও সুযোগ নেই।
রাজনৈতিক আন্দোলনের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যেমন জাতিকে দিশা দেখিয়েছে, তার বিপরীতে এই বিশ্ববিদ্যালয় জাতিকে অনেক বিষয়ে দিশাহীন করেছে। এর প্রধান কারণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাজনৈতিক লক্ষ্য ছাড়া অন্য কোনো আদর্শিক লক্ষ্য ছিলো না। বর্তমানের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আদর্শিক কোনও লক্ষ্য আছে বলে প্রতীয়মান হয় না। বিভিন্ন আলোচনা, কর্মসূচী ও উদ্যোগ থেকে লক্ষণীয় যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এখন প্রধান লক্ষ্য হলো অর্থনৈতিক ও প্রাযৌক্তিক। অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রত্যক্ষভাবে ভাষা-সাংস্কৃতিক লক্ষ্য বিমূখী অবস্থানে দাঁড়িয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়স্থ চিন্তক-বর্গ (think-tank) গত দুই দশক জাতিকে ইংরেজি ভাষার অনুকূলে এবং মাতৃভাষা বাংলা সহ অন্যান্য ভাষার বিরুদ্ধে প্রবাহিত করেছে। নিম্নে প্রদত্ত কয়েকটি উদাহরণ থেকে এই বক্তব্যের পক্ষে প্রমাণ মিলে:
প্রথমত: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্ণধারগণ ভাষা সম্পর্কিত তাঁদের অবস্থান নানা সময় নানা বক্তব্যে স্পষ্ট করেছেন। ভূতপূর্ব এক জন উপ-উপাচার্য ও বর্তমানে দায়িত্ত্ব পালনরত একজন উপ-উপাচার্য স্পষ্টভাবেই বলেছেন যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংস্কৃত ও পালি ভাষার মত বিভাগ রাখার প্রয়োজন নেই। তারা বিভিন্ন কার্যক্রমে ইংরেজি ভাষাকে প্রাধান্য দিয়ে এসেছেন।
দ্বিতীয়ত: এর প্রমাণ পাওয়া যায় শিক্ষানীতি প্রণয়নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিন্তকবর্গের ইংরেজি ভাষার অনুকূলে এবং বাংলা ভাষা ও বিদেশি ভাষার বিপক্ষে অবস্থান থেকে। এখানে উল্লেখ্য যে, ২০০০ খ্রিস্টাব্দ ও ২০১০ খ্রিস্টাব্দে শিক্ষানীতি প্রণয়নের শিরোভাগে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা কয়েকজন অধ্যাপক। উক্ত এই দুই শিক্ষানীতি প্রণয়নের জন্য গঠিত কমিশনের সভাপতি ছিলেন যথাক্রমে অধ্যাপক শামসুল হক ও অধ্যাপক কবীর চৌধুরী। এই দুই জনই ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। ২০০০ খ্রিস্টাব্দ ও ২০১০ খ্রিস্টাব্দে গৃহীত শিক্ষা কমিশনের সদস্য সংখ্যা ছিলো যথাক্রমে ৫৪ জন ও ১৮ জন, যাদের মধ্যে অধিকাংশ সদস্য ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক। ২০১০ খ্রিস্টাব্দে গৃহীত শিক্ষানীতি প্রণয়নে গঠিত শিক্ষা কমিশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত অধ্যাপক ছিলেন ৫ জন। এই দুই শিক্ষানীতিতে রূপান্তরের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দের শিক্ষানীতিতে ব্যপক পরিবর্তন সাধন করা হয়। এই রূপান্তরের মাধ্যমে ২০০০ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়। অধিকন্তু শিক্ষা ব্যবস্থায় ইংলিশ ভার্সন ও ইংরেজি মাধ্যমকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং বিদ্যালয় পর্যায়ে বিদেশি ভাষা শিক্ষা কার্যক্রমের বিধান বাতিল করা হয়। ২০১০ খ্রিস্টাব্দে শিক্ষানীতিকে অধিকতর রূপান্তরের মাধ্যমে বাংলা ভাষার পিঠে ছুরি বসানো হয়। এই শিক্ষানীতিতে মাতৃভাষা বাংলা শিক্ষার বিধানটি উঠিয়ে দেওয়া হয়। বস্তুত বর্তমান শিক্ষানীতিতে মাতৃভাষা বাংলা সম্পর্কে একটি শব্দও উপস্থিত নেই। ঠিক একই ভাবে এই শিক্ষানীতিতে বিদেশি ভাষা শিক্ষা কার্যক্রম সম্পর্কে একটি শব্দ উপস্থিত নেই। অথচ যে শিক্ষানীতিতে মাতৃভাষা ও বিদেশি ভাষা সম্পর্কে কোনোকিছু বিবৃত না থাকে, সে শিক্ষানীতিকে শিক্ষানীতি অভিধা আরোপ করা যায় না।
তৃতীয়ত: অনুষ্ঠেয় শতবার্ষিকীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ স্পষ্টতই জানান দিয়েছে যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি ইংরেজি মাধ্যমের বিশ্ববিদ্যালয়। বস্তুত এটি এখন বহিরাবরণে ও অন্তরাত্মায় ইংরেজি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়েছে। শতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে নির্মিত এর ওয়েবপেজগুলো ইংরেজি ভাষায় উৎকীর্ণ করা হয়েছে। সম্প্রতি এই ওয়েবপেজ নির্মাণ ও হালনাগাদ করণ উপলক্ষে আহূত এবং উপ-উপাচার্য (প্রশাসন)-এর নেতৃত্বে পরিচালিত এক নীতি-নির্ধারণী সভায়, এই নিবন্ধকার এর ওয়েবপেজগুলোকে বাধ্যতামূলকভাবে বাংলা ভাষায় ও ঐচ্ছিকভাবে ইংরেজি ও অন্যান্য বিদেশি ভাষায় প্রকাশের জন্য প্রস্তাব করে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ প্রস্তাবটিকে আমলে না নিয়ে, শুধুমাত্র ইংরেজি ভাষায় ওয়েবপেজ প্রকাশ করে। ইংরেজি ভাষায় এই ওয়েবপেজ প্রকাশের ফলে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক দীর্ঘ সংগ্রাম ও আন্দলনের মাধ্যমে নিজস্ব অর্জন বাংলা ভাষার অধিকার ও মর্যাদার বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করে। এর মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে একটি বার্তা পৌঁছে যায় যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অন্তত বাহ্যিকভাবে একটি ইংরেজি মাধ্যমের বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রমও অনুষ্ঠিত হচ্ছে বাংলা ও ইংরেজি মিশেল ভাষায়। অনেক সময় দেখা যায় শিক্ষকের ইংরেজিতে দক্ষতা নেই, অথচ শিক্ষক ইংরেজির প্রতি জোশ দেখাতে বিকৃত বাংলা ও ইংরেজিতে ক্লাস নিচ্ছেন। অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে অদক্ষতার জন্য জ্ঞান চর্চা ব্যহত হচ্ছে। কিন্তু জরীপে দেখা গেছে যে, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত অদক্ষতার কারণে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যপকভাবে ব্যহত হচ্ছে। তবু ইংরেজির প্রতি মোহ যেনো কোনোভাবেই কাঁটছে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, এর চিন্তক-বর্গ বা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকপ্রাপ্তগণ ইংরেজি ভাষার অনুকূলে ও মাতৃভাষা বাংলাসহ বিভিন্ন ভাষার বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণের ফলশ্রুতিতে দেশে ব্যাপকভাবে সাংস্কৃতিক রূপান্তর ঘটছে। এই সাংস্কৃতিক রূপান্তর ব্যক্তিক, পারিবারিক, গৌষ্ঠিক ও সামাজিক পর্যায়ে প্রতিফলিত হচ্ছে। শিক্ষিত মানুষের লেখ্য ভাষা হয়েছে ইংরজি আর কথ্য ভাষা হয়েছে বাংলিশ। তার মধ্যে নতুন প্রজন্মের একটি অংশের প্রথম ভাষা হয়েছে ইংরেজি । দেশের বাড়িঘর, রাস্তাঘাট এবং সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সমূহের নামকরণে ইংরেজি অথবা মিশেল ভাষা ব্যবহার করা হচ্ছে। এখন শহরের বিভিন্ন প্রান্তের ভাষিক ভূদৃশ্য দেখে বুঝার উপায় নেই এটি কী দেশ না বিদেশ। এভাবে এ দেশের অর্থে ইংরেজি প্রতিষ্ঠান স্থাপন করে ইংরেজি ভাষাকে প্রতিষ্ঠার এই অপরিণামদর্শী উদ্যোগ চলছে। জাতীয় প্রধান প্রধান অর্জনগুলো রচিত হচ্ছে ইংরেজি ভাষায় আর বাংলা ভাষা হয়েছে অপাংক্তেয়। বিদেশিরা তাদের প্রয়োজনে বিদেশি ভাষা হিসাবে বাংলা ভাষা শিখতে গিয়ে দেখছে, তারা যে ভাষা শিখছে তা বাংলাদেশের মানুষ ব্যবহার করছে না। ইংরেজি অনেকের জন্য গর্বের বিষয় হলেও, বাঙ্গালি জাতি হিসাবে বাংলা ভাষার স্থানটির কবর রচনা করা হচ্ছে। এই কবর রচনার অপউদ্যোগে যোগালীর কাজ করছে এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিন্তক-বর্গ অথবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক প্রাপ্তগণ।
উক্ত রূপান্তরের ফলশ্রুতিতে দেশে অনাহূত যে সাংস্কৃতিক রূপান্তরের সূচনা হয়েছে, তা দেশের সংস্কৃতিতে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করছে, যার মাশুল জাতিকে একদিন অক্ষরে অক্ষরে দিতে হবে। কাজেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিন্তক-বর্গ অথবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক প্রাপ্তগণ এর দায়-দায়িত্ব এড়াতে পারবে না।


মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.