নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ডক্টর এ.বি.এম. রেজাউল করিম ফকির, অধ্যাপক, জাপানি ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগ \nআধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় e-mail: [email protected]

রেজাউল করিম ফকির

অধ্যাপক, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

রেজাউল করিম ফকির › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রসঙ্গ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা প্রকাশনা মেলা-২০২২: গবেষণা-প্রকাশায় গতি আনতে যা করণীয়

২২ শে অক্টোবর, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৫২



শতবর্ষের আলোয় যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উদ্ভাসিত, সে বিষয়টি প্রচার করতে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্ম শতবার্ষিকীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ খেলার মাঠে গবেষণা-প্রকাশনা মেলা-২০২২ আয়োজন করেছে। এই আয়োজনের মাধ্যমে জানান দেওয়া হলো যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা ও প্রকাশনায় গতি রয়েছে। সেজন্য ফরমায়েসি কিছু গবেষণার ফলাফলকে শতবার্ষিকী গবেষণা গ্রন্থ হিসাবে প্রকাশনার মাধ্যমে জনসমক্ষে উন্মুক্ত করা হলো, যার প্রকাশ হলো এই আনুষ্ঠানিকতা। এই গবেষণা-প্রকাশনাগুলোর মান সংরক্ষণে আন্তর্জাাতিক মূল্যায়নের ব্যবস্থা করা হয়েছিলো, যা অবশ্যই প্রসংশার যোগ্য।

এই মেলার অন্যতম লক্ষ্যণীয় দিক হলো এই যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিকীকরণের দোহাই দিয়ে সমস্ত প্রকাশনাকেই ইংরেজিতে মুদ্রণ করা হয়েছে। এমনকি মূল মঞ্চ ব্যতীত অন্যান্য সকল পোস্টারে ইংরেজি ভাষার আতিশায্য বিশেষভাবে লক্ষণীয় হয়েছে। অবশ্য গত দুই দশক ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাহ্যিক আভরণে ইংরেজির আতিশায্যের বিষয়টি স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইংরেজির আতিশায্যের মাধ্যমে যে বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদের প্রতীক বাংলা ভাষার মর্যাদার বিষয়টিকে এড়িয়ে, ইংরেজি ভাষার প্রতি ঝুঁকে পড়েছে সেই বিষয়টিই যেনো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জাতিকে ও বিশ্ববাসীকে জানান দিচ্ছে।

এ মেলার মাধ্যমে জনসমক্ষে উপস্থাপিত প্রকাশনাগুলোর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মানাঙ্ক (রেঙ্কিং) বাড়বে বলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যায় কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে। কিন্তু কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে বাস্তবতা নির্ভর গবেষণার আবহ সৃষ্টি না করা হলে, তা দিয়ে লোক দেখানো গবেষণা হয় বটে, তবে তা দিয়ে দীর্ঘমেয়াদে গবেষণা ও প্রকাশনায় গতি আসে না। দেশে একটি কথা প্রচলিত আছে বা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তা ব্যক্তিদের অনেকেই প্রায়শই বলে থাকেন যে, প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে গবেষণা কর্ম পরিচলানা করা যাচ্ছে না। এই লোককথা দ্বারা বোঝানোর চেষ্টা করা হয় যে, অর্থের অভাবে গবেষণা হয় না, তাই প্রকাশনও হয় না। কিন্তু অর্থ দিয়ে গবেষনার প্রণোদনা দেওয়া যায় বটে, কিন্তু গবেষণা ও প্রকাশনা কর্ম সাধিত হয় অর্থ প্রাপ্ত গবেষকের মেধা, অধ্যবসায় ও শ্রমের সমন্বিত প্রয়াসের ফলশ্রুতিতে। অথচ গবেষকের গবেষণা কর্ম সম্পাদনে যে প্রয়াস, সেটির মূল্যায়ন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা প্রশাসনের আওতাভুক্ত নয়। কাজেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মান (মর্যাদা) ও মানাঙ্ক (রেঙ্কিং)-ই যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য হয়: তাহলে ফরমায়েসি গবেষণার পথকে পরিহার করে, গবেষণা কর্মযজ্ঞকে প্রণোদনা দিতে নিম্মের পদক্ষেপগুলো নেওয়া প্রয়োজন:

গবেষকদের সম্মান ও সম্মাননার মাধ্যমে পুরষ্কৃতকরণের ক্ষেত্রে

ক) শ্রেষ্ঠ গবেষক পুরষ্কার প্রবর্তন করা প্রয়োজন
খ) শ্রেষ্ঠ গবেষকদেরকে উপযুক্ত মূল্যায়ন করতে বিশেষ অধ্যাপক ও সম্মানসূচক অধ্যাপক ইত্যাদি বিশেষ সম্মানসূচক অধ্যাপক পদ (অতিরিক্ত বেতন-ভাতাসহ) সৃষ্টি করে তাঁদেরকে সে সব পদে পদায়নের রেওয়াজ চালু করা প্রয়োজন।
গ) শ্রেষ্ঠ গবেষকদের ১টি পুল তৈরি করে সেই পুল থেকে ডীন মনোনয়নের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
ঘ) শ্রেষ্ঠ অধ্যাপকদের জাতীয়ভাবে মর্যাদা দানের জন্য জ্ঞানের প্রতিটি শাখার শ্রেষ্ঠ অধ্যাপক পুল থেকে শ্রেষ্ঠতমকে জাতীয় অধ্যাপক সম্মানে ভূষিত করণে রেওয়াজ চালু করা প্রয়োজন।

গবেষণা সঞ্জাত প্রকাশনাগুলোর গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে

ক) গবেষণা পত্রিকাগুলোকে প্রথমত বিমক (UGC) কর্তৃক জার্নাল সূচীপত্র তৈরির রেওয়াজ চালু করে তাতে অন্তর্ভুক্ত করার রেওয়াজ চালু প্রয়োজন।
খ) জার্নালগুলোকে আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য ইনডেক্স, যেমন- scopus, corss-reference -এ অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন।
গ) জার্নালগুলোকে বিভিন্ন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সূচীতে অন্তর্ভুক্ত জার্নালগুলো উন্মুক্তভাবে উপলদ্ধ (Open Access)-এর ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা প্রশাসন যদি উপর্যুক্ত দু ধরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করে তাহলে আশা করা যায় যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা যেমন তাঁদের উপযুক্ত মর্যাদা পাবে, তেমনিভাবে গবেষণা কর্মগুলোর ফলাফল যথাযথভাবে ও পরিমিতভাবে জনসম্মুখে উন্মুক্ত হবে। এগুলো জনসম্মুখে উন্মুক্তির মাধ্যমে দেশেবিদেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুখ্যাতি ছড়াবে। আর সে পথেই বাড়বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মান (মর্যাদা) ও মানাঙ্ক (রেঙ্কিং) মান (মর্যাদা) ও মানাঙ্ক (রেঙ্কিং)।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.