নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ডক্টর এ.বি.এম. রেজাউল করিম ফকির, অধ্যাপক, জাপানি ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগ \nআধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় e-mail: [email protected]

রেজাউল করিম ফকির

অধ্যাপক, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

রেজাউল করিম ফকির › বিস্তারিত পোস্টঃ

দেশের ইংরেজি ভাষা শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে করণীয়

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৫৪

উপক্রমণিকা
বাংলাদেশে একটি সর্বব্যাপী ইংরেজি ভাষা শিক্ষাব্যবস্থা চালু রয়েছে। বাংলাদেশে বিরাজিত ইংরেজি শিক্ষাব্যবস্থাটি প্রাথমিক শ্রেণি থেকে শুরু করে ত্রয়োদশ শ্রেণি পর্যন্ত বিস্তৃত সাক্ষরতা ইংরেজি ভাষা শিক্ষা কার্যক্রম এবং প্রথম শ্রেণি থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত বিস্তৃত ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে গঠিত। কিন্তু দেশে বিরাজিত এই ইংরেজি শিক্ষাব্যবস্থাটি একটি অপরিকল্পিত শিক্ষাব্যবস্থা। এটি অপরিকল্পিত শিক্ষাব্যবস্থা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কারণ নিহিত রয়েছে এর ভাষানীতির শুন্যতায়। অর্থ্যাৎ এ শিক্ষাব্যবস্থাটি কোনও ভাষানীতি ও ভাষা-পরিকল্পনা অনুসরণে প্রবর্তন করা হয়নি। কাজেই এই শিক্ষাব্যবস্থাটির মাধ্যমে ইংরেজি শিক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে বটে, কিন্তু প্রকৃত অর্থে ইংরেজি শিক্ষার লক্ষ্য অর্জিত হচ্ছে না। দেশের প্রায় প্রতিটি শিক্ষিত মানুষ ইংরেজি শিখছে, এবং ইংরেজিতে পারদর্শীতার ভান করছে। কিন্তু কার্যত দেশের ইংরেজি শিক্ষক থেকে শুরু করে শিক্ষিত জনের অধিকাংশেরই ইংরেজিতে প্রয়োজনীয় দক্ষতা নেই। এ থেকে বুঝা যাচ্ছে যে দেশের ইংরেজি শিক্ষাব্যবস্থা ভালো নয়। কাজেই ইংরেজিতে পারদর্শী জনবল গড়ে তুলতে হলে দেশে বিদ্যমান এই ইংরেজি শিক্ষাব্যবস্থাটির উন্নয়ন করা প্রয়োজন। কিন্তু এই শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন সাধন করতে হলে, ইংরেজি শিক্ষাব্যবস্থাটি সংজ্ঞায়ন করা প্রয়োজন এবং এর উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলো নির্ধারণ করা প্রয়োজন।

যে কোনও শিক্ষাব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গগুলো হলো—শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, পাঠ্যক্রম, শিক্ষাকার্যক্রম, শিক্ষক ও শিক্ষার্থী। কাজেই ইংরেজি শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন বলতে বুঝায় শিক্ষাব্যবস্থার সাথে সম্পর্কিত শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, পাঠ্যক্রম, শিক্ষাকার্যক্রম, শিক্ষক ও শিক্ষার্থী ইত্যাদি সমস্ত অনুষঙ্গগুলোর উন্নয়ন। সেজন্য ইংরেজি শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে যে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হলে, ইংরেজি শিক্ষাব্যবস্থা সংশ্লিষ্ট অনুষঙ্গসমূহ, যথা—শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, পাঠ্যক্রম, শিক্ষাকার্যক্রম, শিক্ষক ও শিক্ষার্থী সমূহ-এর প্রত্যেকটিকে সঠিকভাব সংজ্ঞায়িত করে, প্রত্যেকটির জন্য উন্নয়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। ইংরেজি ভাষা শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন সম্পর্কে উক্ত ধারণাকে বিবেচনায় নিয়ে, প্রত্যেকটি অনুষঙ্গকে কেন্দ্র করে পর্যায়ক্রমে আলোচনা উপস্থাপন করা হলো:

১) ইংরেজি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান: দেশজুড়ে প্রাথমিক স্তর থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষা স্তর পর্যন্ত বিস্তৃত ইংরেজিতে ভাষিক দক্ষতা উন্নয়ন সহায়ক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ইংরেজি মাধ্যমে পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বুঝায়। দক্ষতা উন্নয়ন সহায়ক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে সাংজ্ঞাপনিক ইংরেজি (Communicative English) অনুশীলনে সহায়ক প্রতিষ্ঠানসমূহ। এর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন বাণিজ্যিক ভবনে স্থাপিত কোচিং সেন্টার, প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত বিস্তৃত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেখানে শ্রবণ, বাচন, পঠন ও লিখন—এই দক্ষতা চতুষ্টয়ের সম্বলিত সাক্ষরতা ইংরেজি [(বিদ্যালয় পর্যায়ে এই ইংরেজি বিষয়ের নাম ইংরেজি ১ম ও ২য় পত্র) Literacy English]-এর প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়ে থাকে। এছাড়া রয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড অনুমোদিত প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত বিস্তৃত English Version বিদ্যালয়। উপরন্তু রয়েছে শিক্ষানীতি দ্বারা অসিদ্ধ English Medium School। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত ইংরেজি বিভাগ বা ইংরেজি বিশেষণ যুক্ত বিভাগ যেমন- Department of English and Applied Linguistics বিভাগসমূহও এই ইংরেজি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে যেগুলো আপাদমস্তক ইংরেজি মাধ্যমে পরিচালিত হয়, সেগুলোকেও ইংরেজি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসাবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।

ইংরেজি শিক্ষাকার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য ইংরেজি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের সুষ্ঠু ভৌত অবকাঠামগত সুবিধা থাকা বাঞ্ছনীয়। এই প্রাতিষ্ঠানিক ভৌত অবকাঠামোতে লিখন, পঠন, বাচন ও শ্রবণ—এই চার দক্ষতা অনুশীলনে সহায়ক শ্রাব্য-দর্শনীয় যন্ত্রপাতি সজ্জিত শ্রেণিকক্ষ থাকা বাঞ্ছনীয়। কিন্তু বাংলাদেশের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভৌত অবকাঠামোগত ব্যবস্থা অপ্রতুল। সেগুলোর অধিকাংশই শ্রাব্য-দর্শনীয় যন্ত্রপাতি সজ্জিত শ্রেণিকক্ষ নেই। কাজেই দেশের ইংরেজি শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন সাধন করতে হলে, সুষ্ঠু ভৌত অবকাঠামোযুক্ত লিখন, পঠন, বাচন ও শ্রবণ—এই চার দক্ষতা অনুশীলনে সহায়ক শ্রাব্য-দর্শনীয় যন্ত্রপাতি সজ্জিত শ্রেণিকক্ষ প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন।

২) ইংরেজি পাঠ্যক্রম: বর্তমান ইংরেজি ভাষা শিক্ষাব্যবস্থায় বিদ্যালয় পর্যায়ে বাধ্যতামূলক বাংলা-ইংরেজি যুগপৎ দ্বি-সাক্ষরতা বিশিষ্ট শিক্ষাকার্যক্রম এবং ইংরেজি মাধ্যম বিশিষ্ট শিক্ষাকার্যক্রম চালু রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে বাংলা, ইংরেজি ও বাংলা-ইংরেজি মিশ্রিত মাধ্যমের শিক্ষা কার্যক্রম চালু রয়েছে। বিরাজমান এই ইংরেজি শিক্ষাব্যবস্থাটি ভাষানীতির দৃষ্টিকোণ থেকে কয়েক প্রকার দোষে দুষ্ট। নিম্নে এই শিক্ষাব্যবস্থার দোষগুলো চিহ্নিত করে, সে দোষগুলো নিরসনে করণীয়গুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হবে।

বিদ্যালয় পর্যায়ে পরিচালিত বাধ্যতামূলক যুগপৎ দ্বি-সাক্ষরতা বিশিষ্ট ইংরেজি শিক্ষাকার্যক্রমের পাঠ্যক্রমটি ভাষিক দক্ষতা ভিত্তিক নয়। পাঠ্যক্রমটি বাধ্যতামূলক যুগপৎ বাংলার সাথে ইংরেজি ভাষার শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে বিধায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভাষিক মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটে থাকে। এই মূল্যবোধের অবক্ষয় জনিত কারণে দেশের মানুষের মধ্যে বাংলা ভাষার চেয়ে ইংরেজি ভাষাকে অধিকতর মর্যাদা ও প্রায়োগিকতা দানের প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। এই শিক্ষাব্যবস্থায় ইংরেজি শিক্ষায় বাধ্যবাধকতা আরোপিত হয় বিধায় অর্থনৈতিক, সামাজিক অথবা বৌদ্ধিক কারণে শিক্ষাকার্যক্রম থেকে ছিটকে পড়ার আশঙ্কায় থাকা শিক্ষার্থীদেরকেও বাধ্যতামূলকভাবে সাক্ষরতা ইংরেজি শিক্ষা গ্রহণ করতে হয়। অন্যদিকে ভাষিক দক্ষতা ভিত্তিক মূল্যায়ন পদ্ধতি চালু না থাকার কারণে, একই ক্লাসে বিভিন্ন দক্ষতার শিক্ষার্থীকে বাধ্যতামূলকভাবে ইংরেজি পাঠ গ্রহণ করতে হয়।

প্রচলিত এই ইংরেজি শিক্ষাব্যবস্থায় ইংরেজি ভাষায় যথেষ্ট দক্ষতা অর্জন না করেও, শিক্ষার্থীদের ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষাগ্রহণের সুযোগ থাকে। কিন্তু জেমস কামিনস (১৯৪৯-)-এর গবেষণালব্ধ ফলাফল থেকে জানা যায় যে, স্বল্প ইংরেজি দক্ষতা নিয়ে ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষা অর্জনে ব্যাপৃত হওয়ার কারণে শিশুর পরিজ্ঞানমূলক বিকাশ ব্যাহত হয়। ফলশ্রুতিতে ভবিষ্যত জ্ঞান অর্জনে সহায়ক পরিজ্ঞানমূলক ভিত রচিত হয় না। অনুরূপভাবে পরিজ্ঞান, জ্ঞান ও ইংরেজি ভাষাগত দক্ষতা—এই তিনটিতে ঘাটতি নিয়ে উচ্চশিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত হলে, জ্ঞান অর্জন প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। সে জন্য স্কুটনাবব-কাঙ্গাস (১৯৪০-) ও জেমস কামিনস (১৯৪৯-) প্রমুখ ভাষা বিজ্ঞানীগণ ৫-৭ বছর বয়স পর্যন্ত মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষা গ্রহণের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন। তাঁরা সে সময়কালের মধ্যে বিদেশি ভাষায় (অর্থ্যাৎ সাক্ষরতা ইংরেজি) দক্ষতা অর্জন সাপেক্ষে ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষা গ্রহণের ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছেন।

ইংরেজি পাঠ্যক্রম থেকে উক্ত নেতিবাচক ফলাফল থেকে উৎরাতে হলে বাধ্যতামূলক যুগপৎ দ্বি-সাক্ষরতা বিশিষ্ট ইংরেজি পাঠ্যক্রম বাতিল করে, তৃতীয় শ্রেণি থেকে ঐচ্ছিক দক্ষতা ভিত্তিক ইংরেজি শিক্ষাব্যবস্থা চালু করা প্রয়োজন। ইংরেজিতে দক্ষতা থাকা সাপেক্ষে শিক্ষার সর্বস্তরে এক-তৃতীয়াংশ জ্ঞানীয় বিষয়ে ইংরেজি মাধ্যমে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণের সুষোগ রেখে দুই-তৃতীয়াংশ বিষয় বাংলা মাধ্যমে শিক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। প্রস্তাবিত এই শিক্ষাক্রম চালু হলে ভাষিক মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ হবে; ভাষিক প্রতিবন্ধকতার কারণে জ্ঞানীয় অর্জন ও পরিজ্ঞানমূলক বিকাশের প্রতিবন্ধকতা তিরোহিত হবে এবং ইংরেজি ভাষায় পর্যায়ক্রমিকভাবে ভাষাগত দক্ষতা অর্জন নিশ্চিত হবে। ফলশ্রুতিতে ইংরেজি ভাষা শিক্ষাব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধন হবে।

৩) ইংরেজি শিক্ষা কার্যক্রম: ইংরেজি শিক্ষক-শিক্ষার্থী এই উভয়েরই ইংরেজিতে প্রয়োজনীয় দক্ষতা থাকা সাপেক্ষে ইংরেজি শিক্ষা প্রক্রিয়াটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়ে থাকে। তবে উপযুক্ত পাঠ্যক্রম ও পাঠদান পদ্ধতি অনুসরণ না করা হলে, সুষ্ঠু ইংরেজি সাক্ষরতা শিক্ষা ও ইংরেজি মাধ্যমে উদ্দিষ্ট শিক্ষাপ্রক্রিয়া অনুষ্ঠিত হবে না। কিন্তু বাংলাদেশের ইংরেজি শিক্ষাব্যবস্থায় ইংরেজি পাঠ্যক্রম ভাষিক দক্ষতা ভিত্তিক নয় এবং ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম অনুঘটনে সহায়ক শিক্ষাদান পদ্ধতি সম্পর্কেও অধিকাংশ শিক্ষক অবহিত নন। সেজন্য দেশে যেমন সাক্ষরতা ইংরেজি শিক্ষা প্রক্রিয়া ব্যহত হচ্ছে, তেমনিভাবে ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষা কার্যক্রমও ব্যহত হচ্ছে। সেজন্য সাক্ষরতা ইংরেজি শিক্ষা কার্যক্রমে লিখন, পঠন, বাচন ও শ্রবণ—এই চার দক্ষতা অনুশীলনে সহায়ক পাঠ্যক্রম চালু করা প্রয়োজন এবং ঠিক একইভাবে ইংরেজি শিক্ষকদেরকে আধুনিক ভাষা শিক্ষাদান পদ্ধতি অনুসরণে পাঠদান করা প্রয়োজন। কাজেই ইংরেজি শিক্ষা-কার্যক্রমে গতিশীলতা আনয়ন করতে হলে, আধুনিক পাঠ্যক্রম প্রণয়নে অনুসৃত নীতিমালা অনুযায়ী পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করা প্রয়োজন। একইসাথে ইংরেজি শিক্ষকদেরকে আধুনিক ইংরেজি পাঠদান পদ্ধতি অর্জনে সহায়ক শিক্ষক প্রশিক্ষণ দেওয়া। এভাবে যথাযথভাবে প্রণীত ইংরেজি পাঠ্যপুস্তক ব্যবহার করে সঠিক পাঠদান পদ্ধতি অনুসরণে ইংরেজি পাঠদানের ব্যবস্থা চালু করা হলে, দেশের ইংরেজি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমূহে সুষ্ঠু ইংরেজি শিক্ষা কার্যক্রম চালু হবে। ফলশ্রুতিতে ইংরেজি শিক্ষাব্যবস্থার প্রভূত উন্নয়ন ঘটবে।

৪) ইংরেজি শিক্ষক: বিদ্যালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত বিস্তৃত সরকার অনুমোদিত বাংলা মাধ্যম ও English version শিক্ষাব্যবস্থায় স্বাক্ষরতা ইংরেজি পাঠদান এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা/মানবিক অনুষদস্থ ইংরেজি বা ইংরেজি বিশেষণ যুক্ত বিভাগ, যেমন-Department of English Studies বিভাগে ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষাদানে নিয়োজিত শিক্ষকগণ ইংরেজি শিক্ষক নামে পরিচিত। তাছাড়া English Medium স্কুলের সকল শিক্ষকই ইংরেজি শিক্ষক হিসাবে পরিচিত। সরকার অনুমোদিত গণ বিশ্ববিদ্যালয় (public university) এবং Private University সমূহে অনেক শিক্ষক বিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞান ও কলা অনুষদের নানা বিষয় ইংরেজি মাধ্যমে পাঠদান করে থাকেন, কিন্তু তাঁরা সাধারণ্যে ইংরেজি শিক্ষক হিসাবে পরিচিত নন।

এরূপে সাক্ষরতা ইংরেজি পাঠদানে নিয়োজিত শিক্ষকগণ এবং ইংরেজি বিষয় বা অ-ইংরেজি বিষয় ইংরেজি মাধ্যমে পাঠদানে নিয়োজিত শিক্ষক—এই উভয় ধরণের শিক্ষকগণেরই ইংরেজিতে ভাষাগত দক্ষতা থাকা প্রয়োজন। নামে ইংরেজি শিক্ষক বা ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষক, কিন্তু কাজে ইংরেজিতে অদক্ষ, এমন শিক্ষকগণ দ্বারা সাক্ষরতা ইংরেজি শিক্ষা ও ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষা—এই উভয় প্রকার শিক্ষাকার্যক্রম ব্যহত হয়। কাজেই দেশে পরিকল্পিত ও সুষ্ঠু ইংরেজি শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হলে, ভাষিক দক্ষতার মানদণ্ডে নির্বচিত উচ্চতর দক্ষতা সম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন। কাজেই প্রয়োজনীয় এই ভাষগত দক্ষতা সম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ ও তাদের পদোন্নতি নিশ্চিত করতে, প্রমিত ভাষিক মানদণ্ড ভিত্তিক ভাষাগত দক্ষতা অভীক্ষা প্রণয়ন ও প্রবর্তন করা প্রয়োজন। এই ভাষাগত দক্ষতা অভীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষকদের ভাষিক দক্ষতা নিরূপণ করে, শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ ও পদোন্নতি প্রদানের ব্যবস্থা করা হলে, ইংরেজি শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটবে।

৫) ইংরেজি শিক্ষার্থী: বিদ্যালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত বিস্তৃত সরকার অনুমোদিত বাংলা মাধ্যম ও English version শিক্ষাব্যবস্থায় স্বাক্ষরতা ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা অর্জনে ব্যপৃত এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা/মানবিক অনুষদস্থ ইংরেজি বা ইংরেজি বিশেষণ যুক্ত বিষয়, যেমন-Department of English Studies বিভাগে ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষালাভে ব্যপৃত শিক্ষার্থীগণ ইংরেজি শিক্ষার্থী নামে পরিচিত। তাছাড়া English Medium স্কুলের সকল শিক্ষার্থী English Medium-এর শিক্ষার্থী হিসাবে পরিচিত। সরকার অনুমোদিত গণ বিশ্ববিদ্যালয় (public university) এবং Private University সমূহে অনেক শিক্ষার্থী ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষা লাভ করে থাকে; তাদেরকেও অনেক ক্ষেত্রে ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষার্থী হিসাবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।

সাক্ষরতা ইংরেজি শিক্ষার্থী ও ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষার্থী—এই উভয় প্রকার শিক্ষার্থীদের শিক্ষার স্তরভেদে ধাপ ভি্ত্তিক ইংরেজি ভাষিক দক্ষতা থাকা প্রয়োজন। কারণ প্রয়োজনীয় ভাষাগত দক্ষতা না থাকলে এসব শিক্ষার্থীর শিক্ষা গ্রহণের কাজটি ব্যহত হয়। সে জন্য শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে পরস্পর উচ্চতর স্তরে শিক্ষার্থীদের পর্যায়ক্রমিকভাবে উচ্চতর ইংরেজি ভাষিক দক্ষতা থাকা আবশ্যক। কাজেই বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি ও শিক্ষার উচ্চতর স্তরে উত্তীর্ণের ক্ষেত্রে ভাষিক দক্ষতা মূল্যায়ন ব্যবস্থা চালু করা প্রয়োজন। তাই ভাষিক দক্ষতা মূল্যায়নে সহায়ক প্রমিত মানদণ্ড ভিত্তিক ভাষিক দক্ষতা অভীক্ষা প্রণয়ন ও প্রবর্তন করা প্রয়োজন। এই অভীক্ষা চালু করা গেলে উচ্চতর সাক্ষরতা ইংরেজি ক্লাসে ভর্তি বা প্রমোশনের ক্ষেত্রে নির্ধারিত ভাষিক দক্ষতাকে শর্তযুক্ত করা যাবে। ঠিক একইভাবে ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষায় ভর্তির ক্ষেত্রেও প্রয়োজনীয় ভাষিক দক্ষতা শর্তযুক্ত করা সম্ভব হবে। ফলশ্রুতিতে যথার্থ অর্থেই যারা ইংরেজি ভাষা শিক্ষার্থী বা ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষার্থী তারা শুধু ইংরেজি শিক্ষার্থী হিসাবে গণ্য হবে। এ ব্যবস্থায় ভাষিক দক্ষতার মানদণ্ডে ইংরেজিতে অদক্ষগণ ইংরেজি শিক্ষাব্যবস্থা শিক্ষাপ্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে পারবে না। ফলশ্রুতিতে ইংরেজি শিক্ষাকার্যক্রমে গতিশীলতা আসবে এবং ইংরেজি শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন সম্পন্ন হবে।

উপসংহার
উপরের আলোচনায় ইংরেজি শিক্ষাব্যবস্থা সংশ্লিষ্ট ৫টি অনুষঙ্গকে সংজ্ঞায়নপূর্বক সেগুলোর অপূর্ণতাসমূহকে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং সেইসব অসম্পূর্ণতাসমূহকে থেকে উতরানোর উপায়ও বাতলানো হয়েছে। এই উপায়গুলো অনুসরণে ইংরেজি শিক্ষাব্যবস্থার প্রত্যেকটি অনুসঙ্গকে সংস্কার করা হলে, ইংরেজি শিক্ষাব্যবস্থার প্রভূত উন্নয়ন সাধন হবে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.