নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ডক্টর এ.বি.এম. রেজাউল করিম ফকির, অধ্যাপক, জাপানি ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগ \nআধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় e-mail: [email protected]

রেজাউল করিম ফকির

অধ্যাপক, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

রেজাউল করিম ফকির › বিস্তারিত পোস্টঃ

জাপান স্টাডি সেন্টার: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবছরের প্রতিষ্ঠিত নিয়মের বিপরীতে যার কার্যক্রম

১৯ শে এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১:৪৩

জাপান স্টাডি সেন্টার: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবছরের প্রতিষ্ঠিত নিয়মের বিপরীতে যার কার্যক্রম
২৯শে জুলাই ২০০৮ খ্রিস্টাব্দে জাপানি স্টাডি সেন্টার সম্পর্কে পত্রিকার জন্য একটি লেখা এখানে দেওয়া হলো। সে সময়ে কৃত এই প্রতিষ্ঠানের কর্মকাণ্ডের নানা লেখা ও তথ্য আমার কাছে রয়েছে, সেগুলো পর্যায়ক্রমে প্রকাশ করবো। এ লেখাগুলোর সবগুলোকে সম্পাদনা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত শিক্ষকের নিকট পৌঁছাবো, এর কারণ হলো এই যে ইদানিংকালের জাপান স্টাডি সেন্টারের সাম্প্রতিক কালের তৎপরতা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েক বছর পূর্বে জাপান স্টাডি সেন্টার নামে ১টি গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। কলাভবনের ১ টি কক্ষে এর অবস্থ্ান। এ প্রতিষ্ঠানের জনবল হলো সর্বমোট ২ জন। একজন পরিচালক ও অপরজন গবেষণা সহযোগী। জাপানের রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজব্যবস্থা ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা ও গবেষণা করার জন্য এ গবেষণা কেন্দ্রটি প্রতিষ্টা করা হয়েছে।
উলে­খ্য যে, বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষ কোন ক্ষেত্রে নিবিড়ভাবে গবেষণার সুযোগ সৃষ্টির জন্য মূলতঃ এরূপ গবেষণাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণার অধিকতর সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে জাপান স্টাডি সেন্টারসহ প্রায় ২৫টি গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এরূপ গবেষণা কেন্দ্রের মধ্যে অন্যতম হলো বোস সেন্টার ফর এডভান্সড স্টাডি এন্ড রির্সাচ ও উচ্চতর মানববিদ্যা গবেষনাকেন্দ্র ইত্যাদি। অন্যান্য গবেষণা কেন্দ্রগুলো তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে সাফল্য দেখালেও, জাপান স্টাডি সেন্টার কোনরূপ গবেষণা কর্ম পরিচালনা করেছে বলে জানা যায়নি।
অথচ এ গবেষণা কেন্দ্রটিতে ইউরোপ-আমেরিকার প্রতিষ্ঠিত সেন্টারসমূহের উদাহরণকে কাজে লাগিয়ে এই জাপান স্টাডি সেন্টারে মাস্টার্স কোর্স চালু করা হয়েছে। জাপানের রাষ্ট্রদূতকে সুকৌশলে কাজে লাগিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আতাউর রহমান এ কোর্স চালুর জন্য একাডেমিক কাউন্সিল ও সিনেটের অনুমোদন নিয়েছেন। ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো কোন গবেষণা কেন্দ্রে মাস্টার্স কোর্স চালু হলো। একটি গবেষণা কেন্দ্রে মাস্টার্স কোর্স চালু হলে সেখানে কীরূপ অনিয়ম ও অরাজকতা প্রতিষ্ঠিত হতে পারে সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকায় জাপান স্টাডি সেন্টার একটি অবাঞ্ছিত প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে ।
কেননা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক কর্মকাণ্ড নিশ্চিত করার জন্য রয়েছে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক অবকাঠামো ও প্রক্রিয়া। এই প্রশাসনিক অবকাঠামোর মধ্যে রয়েছে অনুষদসমূহ যার অধীনে রয়েছে বিভিন্ন বিভাগ। এছাড়াও রয়েছে কতকগুলো স্বাধীন ইনস্টিটিউট। এ সমস্ত বিভাগ ও ইনস্টিটিউটসমূহের একাডেমিক কার্যক্রমকে পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের জন্য রয়েছে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া। এ প্রক্রিয়া পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের জন্য রয়েছে প্রয়োজনীয় সংখ্যক যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক ও পরস্পর উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন একাধিক কমিটি। এসব কমিটির মধ্যে প্রাথমিক কিন্তু অতি গুরুত্বপূর্ণ কমিটি হলো একাডেমিক কমিটি। তার ওপরে রয়েছে বোর্ড অব স্টাডিজ। প্রশাসনিক প্রক্রিয়াকে পরিচালনার জন্য এছাড়াও রয়েছে সমন্বয় ও উন্নয়ন কমিটি। এসব একাধিক কমিটির সংশ্লিষ্টতার জন্যই বিভাগ ও ইনস্টিটিউটসমূহে একাডেমিক কার্যক্রম নিশ্চিত হয়ে থাকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক কর্মকান্ড নিশ্চিত করার জন্য এরূপ প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক অবকাঠামো ও প্রক্রিয়া একদিনে অর্জিত হয়নি। এগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতার ফসল।
কিন্তু ইউরোপ-আমেরিকার প্রতিষ্ঠিত সেন্টারসমূহকে উদাহরণ হিসাবে নিয়ে যে জাপান স্টাডি সেন্টার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠা করা হলো তার একাডেমিক কর্মকান্ড কেমন চলছে বা আদৌ চলছে কি-না সে খবর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের রয়েছে বলে মনে হয় না।
জাপান স্টাডি সেন্টারসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য গবেষণা কেন্দ্রসমূহ কেবলমাত্র গবেষণা কর্ম পরিচালনার জন্যই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখানে স্থায়ী পদে কোন শিক্ষক নিয়োজিত নেই। কাজেই প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক ও একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাঠামোর কোনটিই উপস্থিত নেই এসমস্ত গবেষণাকেন্দ্রসমূহ। জাপান স্টাডি সেন্টারেরও তা নেই। জাপান স্টাডি সেন্টারে ড. আতাউর রহমান পরিচালক পদে অধিষ্ঠিত রয়েছেন। এটি তার কোন স্থায়ী পদ নয়। যেহেতু এই সেন্টারে একটিও স্থায়ী পদ নেই, কাজেই শিক্ষা কার্যক্রমকে পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয় একাডেমিক কাঠামো ও প্রক্রিয়া এতে নেই। প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক কাঠামো ও প্রক্রিয়ার অস্তিত্বও এখানে নেই।
এ অবস্থায় কারা এই সেন্টারে পড়াচ্ছেন তার খোঁজ নিয়ে পাওয়া গেল এক বিচিত্র ধারণা। এখানে যাঁরা পড়ান তাঁদের কারও জাপানী ভাষা বা জাপান স্টাডি বিষয়ে কোন ডিগ্রী নেই। জাপানফেরত জাপান সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তিদের নিয়ে এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। আসলে এর ভিতরে কী চলছে তা জানার কোন স্বচ্ছ ব্যবস্থা নেই।
যে ভবনে এই জাপান স্টাডি সেন্টার অবস্থিত সেই ভবনের অর্থাৎ কলা ভবনের শিক্ষকদের মতে জাপান স্টাডি সেন্টার পরিচালিত সমস্ত একাডেমিক কর্মকান্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা বহির্ভূত ও অবৈধ। যাঁরা এখানে ক্লাস নেন তারা স্টাডি সেন্টারকে আমেরিকা ও ইংল্যান্ডের অধিভূক্ত স্টাডি সেন্টারের সাথে তুলনা করেন। কিন্তু প্রয়োজনীয় স্থায়ী শিক্ষক ও একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাঠামো ছাড়া কীভাবে বর্তমান নীতিমালা অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ডিগ্রী প্রদান সম্ভব এ প্রশ্নের জবাব তারা দিতে পারেননি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিশিয়ানদের মতে কোন গবেষণা কেন্দ্রে ডিগ্রৃী প্রদানের ব্যবস্থা করতে হলে প্রথমে একাডেমিক কার্যক্রমকে নিশ্চিত করার মতো প্রয়োজনীয় একাডেমিক ও প্রশাসনিক প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৩ বিকাল ৩:৪৪

অধীতি বলেছেন: সর্বক্ষেত্রেই দুর্নীতির আখড়া।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.