![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অধ্যাপক, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ভারত নামে কোনও রাষ্ট্র কখনও ছিলো না। যাকে ভারত বলা হয়, তা হলো ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদীদের কর্তৃক দখলকৃত অঞ্চল, যার দাপ্তরিক নাম Republic of India; Bharat Ganrajya। ইউরোপে উনবিংশ শতাব্দীতে জাতীয়তাবাদী আন্দোলন উ্ত্থিত হলে, তার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে ব্রিটিশ শাসনাধীন ইণ্ডিয়ার জনগণ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন শুরু করলে ব্রিটিশ ইণ্ডিয়া স্বাধীন হয়। স্বাধীনতার পর জাতীয়তাবাদী আন্দলোনসমূহ দমনের মাধ্যমে বর্তমান Republic of India; Bharat Ganrajya গঠন করা হয়। কিন্তু ব্রিটিশ ইণ্ডিয়ার জাতীয়তাবাদী আন্দোলনসমূহকে সম্মান দিয়ে Republic of India; Bharat Ganrajya এর জনগণেকে ভাগ্য নির্ধারণের সুযোগ দেওয়া হলে, Republic of India; Bharat Ganrajya তে অনেকগুলো জাতি রাষ্ট্র গঠিত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে। ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ এবং Republic of India; Bharat Ganrajya এর বাঙ্গালী জনগণ অধ্যুষিত অঞ্চল নিয়ে একটি বৃহৎ বাংলাদেশ গঠনের সম্ভাবনা দেখা দিবে। কাজেই এই বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদী উচ্ছাসকে ভারতবিদ্বেষ বলে বর্ণনা করার সুযোগ নেই।
১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ই আগস্ট ব্রিটিশ ইণ্ডিয়া সাম্রাজ্যের অধিকাংশ অঞ্চলের (সার্কভুক্ত অন্যান্য দেশসমূহ বাদে) শাসনভার ইণ্ডিয়ান ন্যাশানাল কংগ্রেসের কট্টরপন্থী হিন্দুত্ববাদীদের হাতে অর্পিত হলে, ব্রিটিশ ইণ্ডিয়ার সে অঞ্চলটি Republic of India বা ভারত গণরাজ্য নাম ধারণ করে। এই অঞ্চলের কিছু অংশ মোগল আমলে হিন্দুস্থান নামে পরিচিত ছিলো। India নামটি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অবশেষ হিসাবে প্রাপ্ত নাম বিশেষ আর ভারত নামটি মহাভারত মহাকাব্যের চরিত্র ভরতের কল্যাণে প্রাপ্ত। কিন্ত ইতিহাসে ভারত নামে ক্ষুদ্র একটি রাজ্যের অস্তিত্ব থাকার আভাস পাওয়া গেলেও, ভারত নামের কোনও সাম্রাজ্যের অস্তিত্ব ছিলো না। এই British India বা ভারত গণরাজ্যের অর্জন বিষয়ক সর্বশেষ একটি খবর চাউর হয়েছে। সেটি হলো এই যে এই রাষ্ট্র প্রেরিত একটি চন্দ্রযান গতকাল চন্দ্রে অবতরণ করেছে। Republic of India বা ভারত গণরাজ্যের এই চন্দ্র জয়ের বিষয়টি জাতীয় অর্জন হিসাবে ব্যাপকভাবে প্রচার ও প্রচারণা চালানো হচ্ছে আর এই অর্জনটিকে জাতীয় প্রযুক্তির উৎকর্ষতার প্রতীক হিসাবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এই Republic of India বা ভারত গণরাজ্য দেশটি তার চন্দ্র জয় শীর্ষক অর্জনের সাক্ষর হিসাবে চাঁদে অশোকস্তম্ভের চিত্র অংকনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এখানেই Republic of India বা ভারত গণরাজ্যের আদর্শিক বৈপরীত্য। এই বৈপ্যরীত্যের বিষয়টি হলো এই যে, এখানে Republic of India বা ভারত গণরাজ্য তার জাতীয় মহিমাকে প্রচারের জন্য যে সম্রাট অশোকের অশোকস্তম্ভের চিত্র আঁকতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, সেই সম্রাট অশোক বৌদ্ধ ধর্মের পৃষ্টপোষক ছিলেন। তিনি বৌদ্ধধর্মকে পুরো দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চল জুড়ে প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। তাঁর ঐ প্রচেষ্টায় পুরো এশিয়া মহাদেশে বৌদ্ধ ধর্ম প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো। কিন্তু তাঁর সাম্রাজ্য কোনওক্রমেই সারা দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে বিস্তৃত ছিলো না। তাঁর সাম্রাজ্য বিস্তৃত ছিলো বর্তমান বিহার ও উত্তর প্রদেশ অঞ্চল জুড়ে। কিন্তু তাঁর প্রচারিত বৌদ্ধ ধর্ম ও বৌদ্ধ ধর্মের সমস্ত নিদর্শনকে নিশ্চিহ্ন করার প্রক্রিয়ায় হিন্দু ধর্ম প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। এখন সেই হিন্দু ধর্মের আদর্শে বলীয়ান Republic of India বা ভারত গণরাজ্যের রাজনৈতিক শক্তি বৌদ্ধ ধর্মের স্মারক অশোকস্তম্ভকে Republic of India বা ভারত গণরাজ্যের প্রতীক হিসাবে চন্দ্রে অংকনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এই Republic of India বা ভারত গণরাজ্য যদি অশোকস্তম্ভের সাথে সাথে সম্রাট অশোকের বৌদ্ধ ধর্মীয় আদর্শকে ভূপৃষ্ঠে প্রচার ও প্রসারে পৃষ্টপোষকতা করতো, তাহলে আর Republic of India বা ভারত গণরাজ্যের আদর্শিক বৈপরীত্য সম্পর্কে এই প্রশ্ন উঠতো না। Republic of India বা ভারত গণরাজ্যের চন্দ্রাভিযান ও আদর্শিক বৈপরীত্য
©somewhere in net ltd.