নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ডক্টর এ.বি.এম. রেজাউল করিম ফকির, অধ্যাপক, জাপানি ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগ \nআধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় e-mail: [email protected]

রেজাউল করিম ফকির

অধ্যাপক, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

রেজাউল করিম ফকির › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাঙ্গালী জাতিসত্ত্বা ও বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদী আদর্শ বিনাশী ইঙ্গ-মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের থাবা

০৬ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ৮:৪৮


সাম্রাজ্যবাদী দেশসমূহ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তরকালে প্রজাতন্ত্র হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অষ্ট্রেলিয়া, কানাডা ও নিউজিল্যাণ্ড ইত্যাদি সাবেক উপনিবেশসমূহে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর রক্তমাংস ও হাড়গোড়ের ওপর প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে। এসব রাষ্ট্র সাবেক উপনিবেশভুক্ত দেশসমূহের লুটেরা শক্তিকে অভিবাসনে উৎসাহী করতে, লোভনীয় সুযোগ-সুবিধার আশ্বাস প্রদান করে থাকে। চারটি উদ্দেশ্য নিয়ে তাঁরা এই অভিবাসন মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে: ১) বাংলাদেশসহ সাবেক ব্রিটিশ উপনিবেশসমূহে ইংরেজি ভাষার মাধ্যমে সাংস্কৃতিক আধিপত্য কায়েম করে, জাতীয়তাবাদ বিরোধী নব্য-উপনিবেশবাদের প্রতিভূ শক্তি সৃষ্টি করা, ২) সাবেক উপনিবেশভুক্ত দেশসমূহের লুটেরা শক্তিকে নাগরিকত্বের সুযোগ দিয়ে তৃতীয় বিশ্বের সম্পদ লুন্ঠন, ৩) অভিবাসিত নব্য-উপনিবেশবাদের প্রতিভূ গোষ্ঠীভুক্ত জনগোষ্ঠীর নিকট থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে নীলনক্সা প্রণয়ন করে, সংশ্লিষ্ট সাবেক উপনিবেশভুক্ত দেশসমূহকে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিকভাবে শাসন ও শোষণ, ও ৪) অন্য জাতির দেশ বেদখলের মাধ্যমে নিজেদের প্রজাতন্ত্র কায়েম করার অনৈতিক বিষয়টিকে নৈতিক ভিত্তি দান।

সাম্রাজ্যবাদের যুগের অবসান হলেও, এ সব দেশ নতুন সাম্রাজ্যবাদী অপশক্তি অবির্ভূত হয়েছে, যারা এখন পুঁজিবাদী ও নব্য-সাম্রাজ্যবাদী দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখন তারা তাদের পোষিত নব্য-সাম্রাজ্যবাদী নীতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে দুর্বল দেশসমূহকে অর্থনৈতিকভাবে শাসন শোষণ করে চলেছে। তাদের সেই পোষিত নব্য-সাম্রাজ্যবাদী নীতির অংশ হিসেবে বিভিন্ন দেশে তাদের অনুগামী দেশীয় প্রতিভূ অভিজাত শ্রেণী সৃষ্টি করে চলেছে। আর নব্য-সাম্রাজ্যবাদের প্রতিভূ অভিজাত শ্রেণির কাজ হলো সাম্রাজ্যবাদের দালাল হিসেবে কাজ করা। আর এই সাম্রাজ্যবাদী দেশসমূহ সাম্রাজ্যবাদী দালাল অভিজাত শ্রেণি সৃষ্টির জন্য অনুবর্তী দেশসমূহে ভাষিক সাম্রাজ্যবাদী নীতি চাপিয়ে দিচ্ছে। বাংলাদেশেও ইঙ্গ-মার্কিন ভাষিক সাম্রাজ্যবাদী নীতি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে রয়েছে, যেখানে দেশে একটি ইংরেজি ভাষিক সাম্রাজ্যবাদের প্রতিভূ দালাল শ্রেণি সৃষ্টি হয়েছে, ইংরেজি ভাষাকে শিক্ষা ও সংস্কৃতির ভাষা হিসেবে গ্রহণ করার ফলে ইতোমধ্যে যাদের বাঙ্গালী জাতিসত্ত্বা বিনষ্ট হয়েছে। এই শ্রেণির মধ্যে ইংরেজি ভাষাকে নিজের ভাষা হিসেবে গ্রহণ করার জন্য কোনও অনুশোচনা বোধ বা গ্লানি বোধ নেই। তাঁরা বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদী দর্শনকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে এবং ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের উত্তরাধিকারী দেশের নাগরিকত্ব লাভের জন্য উচ্চসিত থাকে এবং এর আতিশয্যে ভুলে যায় যে, তাঁর নতুন নাগরিকত্ব দাতা দেশটিও অর্থনৈতিক সাম্রাজ্যবাদ, সাংস্কৃতিক সাম্রাজ্যবাদ ও নব্য-সাম্রাজ্যবাদ নামক রাজনৈতিক আদর্শ দ্বারা পরিচালিত হয়। বস্তুত: কোনও রাষ্ট্রই যে রাজনৈতিক মতবাদ ব্যতীত পরিচালিত হয় না— সে বিষয়ে তারা সম্পূর্ণ অজ্ঞ রয়েছে। যে কারণে তাদের কাছে বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ একটি অর্থহীন বা বাজে রাজনৈতিক মতবাদ হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে।

বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদী আদর্শ বিচ্যুত এই দালাল অভিজাত শ্রেণি বাঙ্গালী জাতিসত্ত্বার উপাদান ও বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ এবং সভ্যতার প্রতীক বাংলা ভাষাকে তার মর্যাদা ও প্রায়োগিকতা মাড়িয়ে ইংরেজি ভাষাকে সর্বত্র মর্যাদা ও প্রায়োগিকতায় প্রতিষ্ঠিত করতে প্রয়াসী রয়েছে। এই শ্রেণিটি দেশে জাতীয় শিক্ষানীতিকে পাশ কাঁটিয়ে ইংলিশ মিডিয়াম নামক বিকল্প একটি শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে। এই শিক্ষাব্যবস্থা ইংলিশ মিডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় বিধায় এই শিক্ষাব্যবস্থায় নিপতিত নতুন প্রজন্ম বিবাঙ্গালীআয়ন প্রক্রিয়াধীনে নিপতিত রয়েছে। বিবাঙ্গালীআয়ন প্রক্রিয়ায় নিপতিত এই নতুন প্রজন্মের চিন্তাধারা ছাঁচীকৃত হচ্ছে বিধায় বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ তাঁদের কাছে কোনও রাজনৈতিক আদর্শ হিসেবে প্রতিভাত হয় না। তাঁরা এসব ইংলিশ মিডিয়াম শিক্ষাব্যবস্থার থেকে এমন শিক্ষা পায় যে, শত শত বছর ধরে আমাদের পুর্বপুরুষদেরকে অত্যাচার- নির্যাতনের মাধ্যমে যে শাসন-শোষণ করেছে, তা ভুলে যায়। তাঁরা স্বদেশীয় ও স্বজাতির মানুষদের অবহেলা করে এবং ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের উত্তরাধিকারী দেশসমূহের নাগরিক হওয়ার জন্য গর্ববোধ করে।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে মার্চ, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৪

রিফাত হোসেন বলেছেন: বাংলা ভাষার কফিনে পেরেক ঠুকা শুরু হয়েছে। আগে ছিল ইংরেজির চাপ আর এখন উর্দুর! মাঝে হিন্দীর জয়জয়কার। ৫২ এর শহীদেরা শুধুই জীবনটা দিয়ে গেল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.