![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অধ্যাপক, কোবে গাকুইন বিশ্ববিদ্যালয়
ভূমিকা:
"গোপালগঞ্জ যদি দি'ল্লি হতে চায় - আমরা তাদের ধানমন্ডি ৩২ বানিয়ে দিব। লং মার্চ টু গোপালগঞ্জ।" - এই বক্তব্য বাংলাদেশের রাজনৈতিক বর্ণপরিচয়ে একটি শক্তিশালী আদর্শিক অবস্থান ও প্রতিরোধের সংস্কৃতিকে নির্দেশ করে। এটি কেবল একটি রাজনৈতিক স্লোগান নয়; এটি বাংলাদেশ রাষ্ট্রের গঠন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, ধর্মনিরপেক্ষতা বনাম ধর্মভিত্তিক রাজনীতি, এবং "শত্রু" নির্মাণের জটিল প্রক্রিয়ার দলিল। এই গবেষণাপত্রে বক্তব্যটির অন্তর্নিহিত আদর্শ, ঐতিহাসিক ভিত্তি, সমাজতাত্ত্বিক প্রেক্ষাপট, শত্রু চিহ্নিতকরণের কাঠামো, ধর্মের ব্যবহার, এবং আন্তর্জাতিক প্রাসঙ্গিকতা (বিশেষত পাকিস্তান ও ভারত) গভীরভাবে বিশ্লেষণ করা হবে
১. আদর্শ ও দার্শনিক ভিত্তি: মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও তার বিকৃতি-প্রতিরোধ
• মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কেন্দ্রীয়তা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রণীত ১৯৭২ সালের সংবিধানের চার মূলস্তম্ভ - জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা - এই বক্তব্যের আদর্শিক কেন্দ্র (আহমেদ, ১৯৯৪)। "ধানমন্ডি ৩২" এই চেতনার প্রতীকী কেন্দ্রবিন্দু।
• বঙ্গবন্ধুকেন্দ্রিক জাতীয়তাবাদ (Mujibism): শেখ মুজিবকে কেবল নেতা নয়, জাতির জনক ও আদর্শিক প্রতীকে রূপান্তরিত করা হয়েছে। তার জন্মস্থান গোপালগঞ্জ এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র ধানমন্ডি ৩২-কে প্রতীকী স্থান হিসেবে ব্যবহার করা হয় (লিফটিন, ২০১১)। "ধানমন্ডি ৩২ বানিয়ে দিব" বলতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ পুনঃপ্রতিষ্ঠার সংকল্প বোঝায়।
• ধর্মনিরপেক্ষতার সংগ্রাম: ৭৫-পরবর্তী সামরিক শাসনামলে (বিশেষত জিয়াউর রহমান ও এরশাদ) সংবিধানে "বিসমিল্লাহ" সংযোজন ও ৮ম সংশোধনীতে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম প্রবর্তনের মাধ্যমে ধর্মনিরপেক্ষ চেতনার ক্ষয় ঘটে (রিয়াজ, ২০০৪)। এই বক্তব্য সেই ক্ষয়রোধ ও মূল সংবিধানের চেতনা পুনরুদ্ধারের দাবিকে শক্তিশালী করে।
• সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই: ১৯৭১-এর গণহত্যা ছিল ধর্মীয় জাতীয়তাবাদের (পাকিস্তানের "দ্বিজাতি তত্ত্ব") বিরুদ্ধে বাঙালি জাতীয়তাবাদের সংগ্রাম। এই বক্তব্যে "শত্রু" হিসাবে যারা চিহ্নিত, তারা প্রায়শই সেই সাম্প্রদায়িক শক্তির ধারক বলে বিবেচিত (মুর্শিদ, ১৯৯৫)।
২. আদর্শ অনুসারীদের কর্মকাণ্ড: ইতিহাস পুনর্লিখন ও প্রতিরোধ আন্দোলন
• মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণ ও প্রচার: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, গবেষণা কেন্দ্র, সাহিত্য ও মিডিয়ার মাধ্যমে ৭১-এর গণহত্যা ও মুক্তিসংগ্রামের ন্যারেটিভ রক্ষা (ইমাম, ২০১০)। যুদ্ধাপরাধের বিচার (ICT-BD) এই কর্মকাণ্ডের একটি বিচারিক রূপ।
• রাজনৈতিক সংগঠন: আওয়ামী লীগ এই আদর্শের প্রধান রাজনৈতিক ধারক, তবে এর বাইরে ছাত্র সংগঠন (বাসদ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট), সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী (উদীচী) এবং নাগরিক প্ল্যাটফর্ম (গণজাগরণ মঞ্চ, ২০১৩) সক্রিয় (কোহলি, ২০১৫)।
• প্রতীকী আন্দোলন ও "লং মার্চ": শাহবাগ আন্দোলন (২০১৩) ছিল যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে একটি গণজাগরণ। "লং মার্চ টু গোপালগঞ্জ" প্রতীকী - এটি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের উৎসস্থলের দিকে ফিরে যাওয়া এবং প্রতিরোধের নতুন শক্তি সঞ্চয়ের ইঙ্গিত (ভ্যান শেভেনিংগেন, ২০১৪)।
• সাম্প্রদায়িক সহিংসতা প্রতিরোধ: সংখ্যালঘু (হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, আহমদীয়া) সম্প্রদায়ের উপর হামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, আইনি সহায়তা ও সুরক্ষা নেটওয়ার্ক গঠন।
৩. প্রতিপক্ষ ও "শত্রু" নির্মাণ: সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ
• প্রতিপক্ষ চিহ্নিতকরণের স্তর:
1. স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি: ১৯৭১ সালে সরাসরি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সহযোগী (রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস), তাদের উত্তরাধিকারী এবং আদর্শিক অনুসারী (যুদ্ধাপরাধের বিচারে দণ্ডপ্রাপ্তদের দল/সমর্থক) (সাইদ, ২০১৬)।
2. ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল: জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ (যার নেতৃত্বাধীন অনেকেই যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত) এবং হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মতো সংগঠন, যারা ইসলামিক রাষ্ট্রব্যবস্থা (খিলাফত/শরিয়া) কামনা করে (রিয়াজ, ২০০৮)। তারা "মুক্তিযুদ্ধের চেতনা"কে "নাস্তিক্যবাদ" হিসাবে চিহ্নিত করে।
3. সাম্প্রদায়িক শক্তি: স্থানীয় পর্যায়ে ধর্মীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতার দাবিতে সংখ্যালঘু সম্পত্তি দখল, উপাসনালয়ে হামলা চালানো গোষ্ঠী।
4. মৌলবাদী/জিহাদী গ্রুপ: জেএমবি, আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের মতো সংগঠন, যারা সহিংসতার মাধ্যমে রাষ্ট্রপরিচালনা করতে চায় (রহমান, ২০১৪)।
• "শত্রু" হিসেবে নির্মাণের প্রক্রিয়া:
o ঐতিহাসিক স্মৃতি (Historical Memory): ৭১-এর গণহত্যাকে অবিচ্ছিন্ন হুমকি হিসেবে উপস্থাপন। প্রতিপক্ষকে "৭১-এর ঘাতকদের উত্তরসূরি" হিসেবে ফ্রেম করা (কন্নী, ২০১৮)। এটি একটি শক্তিশালী "আমরা বনাম তাঁরা" (Ingroup vs. Outgroup) বিভাজন তৈরি করে (তাজফেল ও টার্নার, ১৯৭৯)।
o জাতীয় পরিচয় বনাম ধর্মীয় পরিচয়: "বাঙালি জাতীয়তাবাদ" (মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভিত্তি) বনাম "মুসলিম/ইসলামী পরিচয়" (প্রতিপক্ষের দাবি) - এই দ্বন্দ্ব শত্রুতা তৈরির মৌলিক কাঠামো (শেঠ, ২০০৭)।
o রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্বের প্রতিদ্বন্দ্বিতা: প্রতিপক্ষকে রাষ্ট্রের ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল চরিত্র ধ্বংসের ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে চিত্রিত করা। তাদের দমনে রাষ্ট্রীয় শক্তি ব্যবহারকে বৈধতা দেয়া।
o নিরাপত্তা বনাম স্বাধীনতার দ্বন্দ্ব (Securitization): প্রতিপক্ষকে "জাতীয় অস্তিত্বের জন্য হুমকি" হিসেবে উপস্থাপন করে, তাদের দমনকে "জাতীয় নিরাপত্তা"র অপরিহার্য কাজ হিসেবে ন্যায্যতা দেয়া (বুজান, ওয়েভার ও ডি উয়েল্ড, ১৯৯৮)।
৪. পাকিস্তান প্রীতি: একটি জটিল সম্পর্কের নিরিখ
• প্রত্যক্ষ প্রীতির অভাব: মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীরা পাকিস্তানকে বাংলাদেশের জন্মের বিরোধিতা, গণহত্যা ও সাংস্কৃতিক নিপীড়নের প্রতীক হিসেবে দেখে। পাকিস্তানি ভাবধারা (Two-Nation Theory) প্রত্যাখ্যান তাদের আদর্শিক ভিত্তি।
• পরোক্ষ প্রভাবের উদ্বেগ: এই দৃষ্টিভঙ্গির অনুসারীদের মতে, তাদের প্রতিপক্ষ (জামায়াত, হেফাজত, কিছু অংশে বিএনপি) পাকিস্তানি ভাবধারায় প্রভাবিত:
o আদর্শিক মিল: ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থার ধারণা, দ্বিজাতি তত্ত্বের প্রতি অন্তর্নিহিত অনুরাগ (যদিও প্রকাশ্যে স্বীকার না-ও করতে পারে)।
o সাম্প্রদায়িক বয়ান: ধর্মকে রাজনীতিকরণের কৌশল, সংখ্যালঘুদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি।
o ঐতিহাসিক সংযোগ: জামায়াতের গোলাম আযম প্রাক্তন পাকিস্তানি নাগরিক ও দলটির পাকিস্তান শাখার নেতা ছিলেন।
• "প্রীতি" নয়, "অনুরণন": মূল অনুসারীদের মধ্যে পাকিস্তান-প্রীতি নেই, বরং তারা তাদের প্রতিপক্ষের মধ্যে পাকিস্তানি ভাবধারার অনুরণন দেখে এবং তা বাংলাদেশের স্বাধীন অস্তিত্বের জন্য হুমকি বলে মনে করে।
৫. ইসলামের ব্যাখ্যা ও রাজনৈতিক ব্যবহার: একটি সংবেদনশীল প্রসঙ্গ
• ভুল ব্যাখ্যার অভিযোগ ও জটিলতা: এই আদর্শের অনুসারীরা প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ইসলামের "ভুল" বা "রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহারকৃত" ব্যাখ্যার অভিযোগ তোলে। তাদের যুক্তি:
o ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার করা: ধর্মকে ভোটের পণ্য বা জনসমর্থন আদায়ের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার (যেমন: "ইসলাম বিপন্ন" এর বয়ান তৈরি)।
o সহিংসতা ও নিপীড়নের ধর্মীয় ন্যায্যতা: রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, ধর্মীয় সংখ্যালঘু, নাস্তিক বা ভিন্নমতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার ধর্মীয় ব্যাখ্যা প্রদান (ব্লগার হত্যা, সংখ্যালঘু হামলা)।
o অসহিষ্ণুতা ও ফতোয়াবাদ: বহুত্ববাদ ও ধর্মীয় স্বাধীনতাকে অস্বীকার করে ফতোয়ার মাধ্যমে শাসনের চেষ্টা।
• নিজেদের অবস্থান: তারা দাবি করে যে তাদের সংগ্রাম ইসলামের বিরুদ্ধে নয়, বরং:
1. ধর্মনিরপেক্ষতা: রাষ্ট্র সকল ধর্মের প্রতি নিরপেক্ষ থাকবে, ব্যক্তির ধর্মপালনের স্বাধীনতা রক্ষা করবে। এটি ইসলামকে আক্রমন করে না (হক, ২০০৯)।
2. মৌলবাদ/সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে: ধর্মের নামে সহিংসতা ও বিভাজনের বিরোধিতা।
3. সহনশীলতার পক্ষে: সকল ধর্ম ও মতের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান।
• সমালোচনা: বিরোধীরা এই আদর্শকে প্রায়শই "নাস্তিক্যবাদী" বা "হিন্দুত্ববাদী প্রভাবিত" হিসেবে চিহ্নিত করে, যা তাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে বিকৃত করে উপস্থাপন করে। এটিও ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের একটি রূপ।
৬. "গোপালগঞ্জ যদি দি'ল্লি হতে চায়": সার্বভৌমত্ব ও বিদেশী প্রভাবের জটিল রাজনীতি
• "দিল্লি"র প্রতীকী অর্থ: এখানে "দিল্লি" সরাসরি ভারতের রাজধানী, কিন্তু রূপকভাবে যেকোনো বিদেশী শক্তি (বিশেষত ভারত) বা তাদের প্রভাব/আধিপত্যের প্রতীক।
• আদর্শিক অবস্থান: বক্তব্যটি বাংলাদেশের স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি ও সার্বভৌম সিদ্ধান্তগ্রহণের অধিকারের প্রতি অঙ্গীকার প্রকাশ করে:
o ভারত-প্রভাব বিরোধিতা: বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ভারতের অত্যধিক প্রভাব বা হস্তক্ষেপের (বা তার ধারণার) বিরুদ্ধে অবস্থান। এটি আওয়ামী লীগ সরকারের উপর "ভারতের দালাল" এর অভিযোগের পাল্টা জবাব (মোহসিন, ২০০৩)।
o সার্বভৌমত্বের দাবি: বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারই দেশের ভাগ্য নির্ধারণ করবে, কোন বিদেশী শক্তি নয়। "গোপালগঞ্জ" (বঙ্গবন্ধুর জন্মস্থান) বাংলাদেশের স্বাধীন ইচ্ছার প্রতীক।
• প্যারাডক্স: এই অবস্থান প্রায়শই ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ কৌশলগত ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখা আওয়ামী লীগ সরকারের নীতির সাথে দ্বন্দ্বপূর্ণ বলে সমালোচিত হয়। এটি ভারত-বিরোধিতার চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষার একটি প্রতীকী ঘোষণা।
উপসংহার:
"গোপালগঞ্জ যদি দি'ল্লি হতে চায়..." বক্তব্যটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও আদর্শিক ভূদৃশ্যের একটি কেন্দ্রীয় দ্বন্দ্বের সূচক: মুক্তিযুদ্ধের ধর্মনিরপেক্ষ, বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনা বনাম ধর্মভিত্তিক, পাকিস্তানি ভাবধারায় প্রভাবিত রাজনীতির দ্বন্দ্ব। এটি শুধু একটি রাজনৈতিক অবস্থান নয়; এটি ইতিহাসের পুনর্লিখনের দাবি, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সংগ্রামের ডাক, এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষার অঙ্গীকার। "শত্রু" নির্মাণের প্রক্রিয়া গভীরভাবে প্রোথিত আছে ১৯৭১-এর বিভীষিকাময় স্মৃতি, ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহার এবং জাতীয় পরিচয়ের সংকটে। ইসলামের ব্যাখ্যা নিয়ে বিতর্ক ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র বনাম ধর্মীয় রাষ্ট্রের এই মৌলিক দ্বন্দ্বেরই প্রকাশ। পাকিস্তান প্রীতির অভিযোগ আসলে প্রতিপক্ষের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন, যেখানে পাকিস্তানি ভাবধারাকে বাংলাদেশের স্বাধীন অস্তিত্বের হুমকি হিসেবে দেখা হয়। "দিল্লি"র উল্লেখ বিদেশী প্রভাব (বিশেষত ভারতীয়) মেনে না নেওয়ার দৃঢ়তা দেখায়, যদিও তা বাস্তব রাজনীতির সাথে প্রায়শই জটিল সম্পর্ক তৈরি করে।
এই আদর্শিক সংঘাত বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ গঠনে নির্ধারক ভূমিকা রাখবে। সমাজের বৃহত্তর অংশকে ধর্মনিরপেক্ষ-গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে ঐক্যবদ্ধ করা, সাম্প্রদায়িক শক্তির রাজনৈতিক প্রভাব কমানো, এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের সুফল সুষমভাবে বণ্টনের মাধ্যমে এই বিভাজন অতিক্রম করার সামাজিক ভিত্তি তৈরি করা চ্যালেঞ্জ হিসেবে থেকে যাচ্ছে। "ধানমন্ডি ৩২" কেবল একটি জায়গা নয়; এটি একটি আদর্শিক লক্ষ্য, যার দিকে "লং মার্চ" বাংলাদেশের নিজস্ব ধারায় গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার নিরন্তর সংগ্রামেরই প্রতীক।
________________________________________
গবেষণাপত্রের বৈশিষ্ট্য:
• ঐতিহাসিক সূত্র: ১৯৭২ সংবিধান, সামরিক শাসনের সংশোধনী, যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল, শাহবাগ আন্দোলন।
• সমাজতাত্ত্বিক তত্ত্ব: Ingroup/Outgroup (তাজফেল), Securitization (বুজান), Historical Memory, National Identity Formation.
• বিশ্লেষণাত্মক কাঠামো: আদর্শ, প্রতিপক্ষ নির্মাণ, ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহার, বিদেশী প্রভাবের রাজনীতি।
• প্রাসঙ্গিকতা: বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক ও সামাজিক বিতর্কের সাথে সরাসরি সংযোগ।
• সূত্রনির্দেশ (উল্লেখযোগ্য কিছু):
o আহমেদ, এ. (১৯৯৪)। Religion and Nationalism in Bangladesh.
o রিয়াজ, এ. (২০০৪)। God Willing: The Politics of Islamism in Bangladesh.
o রিয়াজ, এ. (২০০৮)। Islamist Militancy in Bangladesh: A Complex Web.
o লিফটিন, টি. (২০১১)। Sheikh Mujib: Charisma and Political Leadership.
o বোজান, বি., ওয়েভার, ও., & ডি উয়েল্ড, জে. (১৯৯৮)। Security: A New Framework for Analysis.
o ভ্যান শেভেনিংগেন, ই. (২০১৪)। The Shahbag Movement: A New Form of Politics in Bangladesh?
o হক, ফ. (২০০৯)। The Problem of Secularism in Bangladesh.
o শেঠ, স. (২০০৭)। The Politics of Muslim Identity in South Asia.
o কন্নী, ন. (২০১৮)। Memory Politics and Identity: The Case of Bangladesh. (Journal Article)
o সাইদ, জেড. (২০১৬)। War Crimes Tribunals in Bangladesh: Justice or Politics? (Journal Article)
©somewhere in net ltd.