![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রত্যেক মানুষকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করতে হবে । সেটা যে কোন সময়ই হতে পারে ।
প্রবাসী বাংলাদেশীরা বিদেশে যে অর্থ আয় করছেন তা প্রেরণ করছেন দেশে। বর্তমানে দেশের বৈদেশিক আয়ের বড় অংশ তাদের প্রেরিত রেমিট্যান্স। এ বিপুল জনশক্তির বেশির ভাগই স্বল্পশিক্ষিত ও দরিদ্র। অন্যদিকে দেশের উচ্চশিক্ষিত, দক্ষ প্রকৌশলী যারা এ গরিব মানুষের দেয়া ট্যাক্সের টাকায় উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেছেন, তারা আরও শিক্ষা গ্রহণের অজুহাতে দেশ থেকে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন। এ দুইয়ের একটিকে দেশপ্রেম আর অন্যটিকে দেশপ্রেমহীনতা, জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা বলে চিহ্নিত করেছেন যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব। সম্প্রতি এ রকম ৯ ডজন কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
তবে প্রকৌশলীদের পেশাজীবী সংগঠন ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেছেন, দেশপ্রেম নেই এটা ঠিক নয়। হতাশা থেকে অনেকেই এ কাজ করতে পারে। বিসিএসের অন্যান্য ক্যাডারের সঙ্গে তাদের বৈষম্য অনেক বেশি। তার এ বক্তব্যকে আংশিক সত্য বলে ধরে নেয়া হলেও দেশপ্রেমহীনতার অভিযোগটি একেবারেই খারিজ করে দেয়া যাবে না।
আসলে সারা দেশে চলছে একটি আস্থার সংকট। এ সংকটে আক্রান্ত ‘দেশপ্রেমে’র চেতনা পর্যন্ত। শুক্রবার যুগান্তরে বিদেশ পাড়ি দেয়ার জন্য অভিযুক্ত প্রকৌশলীদের বরখাস্ত করার সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, কিন্তু যেসব রাজনীতিক বিদেশের নাগরিকত্ব নিয়ে সেখানে ব্যবসা-বাণিজ্য, বাড়ি-গাড়ি করে পাড়ি জমাচ্ছেন, তাদের আমরা কী বলব?
দেশত্যাগের এ তালিকায় অনেক আমলা, সুশীল সমাজের সদস্যকেও পাওয়া যাবে। এর সাধারণ অর্থ হচ্ছে, আস্থার সংকটের ক্রম বিস্তৃতি।
দেশের মেধাবী জনগোষ্ঠীর দেশান্তরের এ পরিস্থিতিকে ব্রেইনড্রেন বা মেধা পাচার বলা হয়ে থাকে। মেধা পাচারের এমন ঘটনা দেশ ও জাতির জন্য উদ্বেগজনক অবশ্যই। কিন্তু যদি এটি ঘটে স্বাভাবিক চাহিদা ও জোগানের স্বার্থে, তাহলে এ ঘটনাকে কেবল নেতিবাচক দৃষ্টিতে বিচার না করে ইতিবাচক দৃষ্টিতেও দেখা প্রয়োজন।
প্রকৌশলীরা বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমাচ্ছেন সেসব দেশে মেধাবী বাঙালি প্রকৌশলীদের চাহিদা রয়েছে বলেই। সেই চাহিদা পূরণে আমরা সরকারিভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করে যেভাবে অদক্ষ জনশক্তি রফতানি করছি, সেভাবে দক্ষ ও মেধাবী প্রকৌশলী, ডাক্তারদেরও প্রেরণ করতে পারি। এমনকি এই চাহিদার বাজার অনুসন্ধান করে বিদেশ গমনকে সহায়তাও দিতে পারি। তাতে এই মেধাবীদের উপার্জিত অর্থও আমাদের রেমিট্যান্সের ভাণ্ডারে যোগ হবে। অর্থাৎ স্বীকৃত ও সম্মানজনক পথে অভিবাসন দেশের জন্য কল্যাণকর। বিষয়টি বিদেশগামী মেধাবী প্রকৌশলী এবং নীতিনির্ধারকদেরও ভেবে দেখা উচিত। অর্থাৎ তৈরি করতে হবে আস্থার পরিবেশ।
তাহলেই দেশপ্রেমহীনতাও পরিণত হবে গভীর ও আন্তরিক দেশপ্রেমে।
Click This Link
©somewhere in net ltd.