নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রিয়াজ উদ্দিন মুস্তফা আসাদুল্লাহ

রিয়াজ উদ্দিন মুস্তফা আসাদুল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভাষা আন্দোলন -১৯৫২ সাল-এক অজানা ইতিহাস

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:১৭

এই উপমহাদেশে শিক্ষাবিদ, চিন্তাবিদ , রাজনীতিবিদ, দার্শনিক, ভাষাসৈনিক, সুবক্তা, সুপন্ডিত আবুল হাশিম


✸১৯৫২ সালের ৪ঠা ফেব্র“য়ারী মওলানা ভাষানী, আবুল হাশিম ও অনান্য সদ্যস্যসহ সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কমিটি গঠিত হয় ।
রাষ্ট্রভাষা বাংলার জন্য ২১ শে ফেব্র“য়ারী ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করার ফলে পুলিশের গুলিতে আট জনের মৃত্যু হয় ।
✸২২শে ফেব্রুয়ারি আবুল হাশিমের একটি বিবৃতি সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয় । তার জন্যে মিল্লাত, আজাদ ও ইনসাফ পত্রিকাকে আবুল হাশিম অভিনন্দন জানান।
✸২৩ শে ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কমিটির একটি বৈঠক ডাকা হয়।এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন আবুল হাশিম ।
✸২৫ শে ফেব্রুয়ারি ভোরে আবুল হাশিমকে তৎকালিন সরকার গ্রেফতার করে ১৬ মাস সিলেট ও ঢাকার জেলে রাখা হয় (তখন তিনি সর্ম্পূণ অন্ধ ছিলেন) ১৯৫৩ সালের ৫ ই জুন তাকে মুক্তি দেওয়া হয় ।
✸১৯৬৭ সালের তৎকালীন সরকার কর্তৃক রবীন্দ্র সংগীত নিষিদ্ধ করার বিরুদ্ধে গর্জে উঠেন । আন্দোলনের পুরো ভাগে অংশ গ্রহণ করেন। আইয়ুব শাসনামলে বাঙ্গালীর স্বতন্ত্র সংস্কৃতিকে শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে দমিয়ে রাখার সরকারী নব অপচেষ্টা চালানো হয়। তিনি অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে এবং নির্ভীক ভাবে বিরোধীতা করেছিলেন ।
✸১৯৪৭ সালরে ২০ শে মে কংগ্রেসের শরৎচন্দ্র বসু ও মুসলিম লীগের আবুল হাশিম সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠনের জন্য একটি দলিল স্বাক্ষর করেন। অন্যদিকে ভারতের অন্যান্য অংশের সম্পর্কেও বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবে স্বাধীন বাংলা উল্লখে ছিল ।
✸১৯৪৭ সালে বাংলাকে দুই ভাগ করার জন্য জহরলাল নেহেরু, বল্লভ ভাই প্যাটেল, শ্যামা প্রসাদ লর্ড মাউন্ট ব্যাটনের সাথে আতাত শুরু হয় ।
✸আবুল হাশিম , শরৎ বোস, কিরন শংকর, হোসেন সোহরাওয়ার্দি বাংলাকে স্বাধীন র্সাবভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠনের জন্য মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর সাথে সাক্ষাৎ করেন। জিন্নাহ পরিস্কার জানিয়ে দেন মুসলিম লীগের কোন আপত্তি নেই। যদি কংগ্রেস রাজি থাকে ।
✸কংগ্রেসের জহরলাল নেহেরু, বল্লভ ভাই প্যাটেল, শ্যামা প্রসাদ, লর্ড মাউন্ট ব্যাটন হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে বাংলাকে দুই ভাগে ভাগ করেন । যার ফলে বাংলা দুই ভাগে ভাগ হয় । উভয় বাংলার সাধারণ মানুষ আজও মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে নাই । (১৯৪৩-১৯৪৭)
✸জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজবিুর রহমান, ওলি আহাদ, মোহাম্মদ তোহা, তাজউদ্দিন আহম্মেদ, শামসুল হক , শামশুদ্দিন আরো অনেকেই আবুল হাশিমের হাতে গড়া কর্মী ছিলেন । তখন উভয় বাংলার মুসলিম লীগের সাধারন সম্পাদক ছিলেন আবুল হাশিম ।
✸বঙ্গবন্ধু তার অসমাপ্ত আত্বজীবনীতে নিজ হাতে লিখে গেছেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দির নাম উচ্চারণ করে বলতেন ”মাই লিডার” আর আবুল হাশিমের নাম উচ্চারণ করে বলতেন ”মাই টিচার” । (অর্থাৎ বাংলায় বলতেন “গুরু”) ।
✸কলামিস্ট গাফফার চৌধুরী ২০ শে মার্চ বুধবার ২০০২ ইং প্রথম আলো পত্রিকায় লিখেন বাংলার রাষ্ট্রগুরু আবুল হাশিম থেকে রাষ্ট্র পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব।
✸ "আবুল হাশিম ছিলেন প্রথম মুসলিমলীগের নেতা, যিনি অতি সহজে কংগ্রেস, কমিউনিষ্ট পার্টি ও ইসলামপন্থীদের সাথে উদারনৈতিক, মার্কসবাদ এবং ইসলাম নিয়ে আলোচনা করতে পারতেন”।
✸জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বাঙ্গালি জাতিকে একটি শিক্ষা দিয়ে গেছেন যা প্রতিটি বাঙ্গালির স্মরণ রাখা উচিত সেটা হল কৃতজ্ঞতা বোধ । হোসেন সোহরাওয়ার্দিকে ”লিডার” এবং আবুল হাশিম সাহেবকে ”টিচার” বলে যে সম্মান দিয়েছেন তা সত্যিই মহত্বের পরিচয় বহন করে ।
✸প্রতি বছর ২১ শে ফেব্রুয়ারি শহীদ মিনার ঘিরে বাংলাদেশের নামীদামী বুদ্ধিজীবীদের রাষ্ট্র ভাষা আন্দোলনের আলোচনা, সেমিনারের ঢল নামে এ সব আন্দোলনে যাদের পরোক্ষ ভূমিকা ছিল, তাদের তুলে আনা হয় অনেক উচ্চ আসনে অথচ বছরের পর বছর দেখছি ভাষা আন্দোলনের প্রত্যক্ষ ভূমিকায় অবতীর্ণ বরেণ্য আবুল হাশিম দীর্ঘদিন রাষ্ট্র ভাষার দাবিতে কারা ভোগ করেন । তাকে স্মরণ করতে এক ধরনের কৃপণতায় যেন পেয়ে বসে। এ সব তথাকথিত বুদ্ধিজীবীদের বাঙ্গালি জাতির জন্য এ এক দুর্ভাগ্য। (তার জীবন ও সময়)।
✸সাতক্ষীরার খলিসখালীর ইউনিয়নের প্রগতিশীল যুবক, ব্যবসায়ী, কৃষক, দিনমজুর, শিক্ষক, ছাত্র, হাশিম পরিবারের কয়েকজনের নিজস্ব অর্থে তিন কাঠা জমি কিনে আবুল হাশিম স্মৃতি পাঠাগার গড়ে তুলেছেন ২০০৮ সালে। বর্তমান সরকার যৎসামান্য অনুদানে পাঠাগারের নিজস্ব জমিতে ভবন নির্মাণ চলছে । উল্লেখ্য অদ্যবধি তার নামে কোন ছাত্রাবাস , স্কুল ,কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের রাস্তার নাম রাখা হয়নি,
✸আবুল হাশিমের চেয়ে অনেক প্রভাবশালী এবং জনপ্রিয় নেতা আমাদের দেশে জন্মগ্রহণ করেছেন । কিন্তু জ্ঞানে, পাণ্ডিত্যে, বুদ্ধিতে, মননে আবুল হাশিমের সমকক্ষ কেহ ছিল না। নি:সন্দেহে তিনি ছিলেন বাঙ্গলি জাতীয়তার অন্যতম দার্শনিক।
✸মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, উত্তর ও দক্ষিণ ঢাকার মেয়রদ্বয়ের কাছে আবুল হাশিম স্মৃতি পাঠাগারের এবং আবুল হাশেম ট্রাষ্ট বোর্ডের সদস্য বৃন্দ আবেদন জানাচ্ছি তার নামকে ধরে রাখার জন্য যে কোন প্রতিষ্ঠানের নামকরন প্রদান করে বাংলাদেশের ইতিহাস ধরে রাখা হোক। আবুল হাশিমের নাম বাদ দিলে এই মহাদেশের বাংলার ইতিহাস সত্য হবে না সেটাই সত্য ।
✸আজ বাংলাদেশে টেলিভিশন চ্যানেল এবং দৈনিক পত্রিকার অভাব নাই অথচ আবুল হাশিমের মতো ব্যক্তিদের জন্মদিন ও মৃত্যু দিনের সংবাদটি ছাপানো বা তথাকথিত বুদ্ধিজীবীদের টকশো বা আলোচনায় তাদের নাম শুনা যায় না। এটা আমাদের তথাকথিত বুদ্ধিজীবীদের সংস্কৃতির অবক্ষয় ছাড়া আর কিছুই নয়, যা সত্যিই বাঙ্গালী জাতির জন্য দুঃখজনক।
✸আবুল হাশিম বিভিন্ন বিষয়ের উপর কয়েকটি গ্রন্থ ও প্রবন্ধবলী রচনা করেন ১৯৫০ সালে তার রচিত প্রথম গ্রন্থ ”দ্যা ক্রীড অব ইসলাম” প্রকাশিত হয় । বাংলায় তাঁর রচিত সুরা ফাতিহার তফসীর গ্রন্থটি ইংরেজতে অনুদিত হয়ে প্রকাশিত হয়। তার তত্বাবধানে পবিত্র কোরআনের বাংলা অনুবাদ প্রকাশিত হয়। তখন তিনি ইসলামিক একাডেমির ডাইরেক্টর ছিলেন । ”এরাবিক মেড ইজী” র তিনি প্রনেতা। “ ইনরেষ্ট্রোসপেষ্ট” হচ্ছে মূলত : তার রাজনৈতিক জীবনের স্মৃতিচারণ, যখন তিনি বাংলার রাজনীতিতে বিশেষ কার্যকর ভূমিকা পালন করেন।
✸আবুল হাশিম ১৯০৫ সালে পশ্চিম বঙ্গের বর্ধমানে ২৭ জানুয়ারি জন্ম গ্রহণ করেন । ১৯৭৪ সালে ৫ ই অক্টোবর ঢাকায় এই মহান ব্যক্তিত্বের জীবনাবসান ঘটে।

সদস্যবৃন্দের পক্ষে,
আবুল কাসেম জিয়াউদ্দিন
আবুল হাশিম স্মৃতি পাঠাগার,

আবুল হাশিম মেমোরিয়াল ট্রাষ্টবোর্ড
খলিশখালী, সাতক্ষীরা

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.