![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি অক্সিজেনকে ভালবাসি, তাই বলে কার্বন ডাই-অক্সাইডকে ঘৃণা করতে পারিনা। কারণ আমি যার কাছ থেকে আমার ভালবাসাকে পাই সে তো কার্বন ডাই- অক্সাইডকেই ভালবাসে।
পূর্বাভাস
‘ভাই, আমি আব্দুর রহমান’
আচমকা কথাটি শুনে আমি মাথা ঘুরিয়ে পাশ ফিরে তাকালাম। গায়ে আলখাল্লা জড়ানো। মাফলার দিয়ে মাথা ঢাকা। চেহারা ঠিকঠাক বোঝা যাচ্ছে না। চলন্ত বাসের জানালা দিয়ে রাস্তার আলো যতোটা পৌছায় তাতেও ঠিকঠাক চেহারা বোঝার উপায় নেই। তবে কন্ঠ শুনে আঁচ করা যায় লোকটা মধ্য বয়সী হবে। আবার নাও হতে পারে। অনেকের কন্ঠ বয়সের তুলনায় ভারী বা অল্প বয়সি মনে হয়। সে যাই হোক। আমি লোকটির কথায় কোনরকম উত্তর না দিয়ে চেয়ারে হেলান দিয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করলাম।
খুলনা থেকে ঢাকা যাচ্ছি। সচরাচর আমি দিনে বাস ভ্রমণ করি। সকালে অফিসে হাজিরা দিতে হবে, সেজন্য রাতেই তড়িঘড়ি করে রওয়ানা দেয়া। মা মোটেই রাতে ছাড়তে রাজি হন নি। আমার জন্য চিংড়ি মাছের মালাইকারি রান্না করেছিলেন পরম মমতায়। বাসা থেকে বের হওয়ার সময় টিফিন ক্যারিয়ারে করে দিয়ে দিয়েছেন। মায়ের হাতে খেতে পারিনি বিধায় খুব আফসোস লাগছে।
প্রায় তন্দ্র ভাব চলে এসেছে। এমন সময় লোকটি আবার বললো,
‘শুনছেন? আমি আব্দুর রহমান’
আমার এবার একটু মেজাজ গরম হলো। কেউ ঘুম ভাঙিয়ে দিলে মেজাজ ঠিক রাখাটা কঠিন হয়ে পড়ে। আমি একটু কন্ঠস্বর বাড়িয়ে বললাম.
‘আপনি আব্দুর রহমান হোন বা ডোনাল্ড ট্রাম্প হোন,তাতে আমার কি ভাই? বিরক্ত করবেন না দয়া করে। এখন একটু না ঘুামলে সকালে অফিস করতে পারবো না।’
‘আমি যদি ভুল না করি করি আপনি বিখ্যাত ক্রাইম রিপোর্টার আশিক মাহমুদ। তাই না?’
আমি লোকটির কথায় এবার একটু অবাক হলাম। আমাকে চিনে কিভাবে লোকটা? কখনো কোন পত্রিকায় আমার ছবি ছাপানো হয়নি। ফেসবুকে লোকটা আছে বলে মনে হয়না। তাছাড়া আমি ফেসবুকে আমার পেশা মেনশন করি না। তাহলে!
‘আপনি ভুল করছেন। আমি ক্রাইম রিপোর্টার নই।’
‘আপনি শুধু ক্রাইম রিপোর্টার নন। একজন জাদরেল গোয়েন্দা বটে। গোপন করে কি লাভ বলুন?’
‘লাভ লোকসানের কিছু নেই এখানে। আপনি নিজের কাজ করুন।’
‘দেখুন আমি আর বেশীক্ষণ বাঁচবো না। একটু পর আমি আমার কোন শত্রুর আঘাতে মারা যাবো।’
‘কি সব যাতা বলছেন? আপনি সম্ভবত মানসিক অশান্তিতে আছেন। কিছু সময় ঘুম দিন, দেখবেন সব ঠিক হয়ে যাবে।’
লোকটির আর কথা বাড়ালো না। আমি কানে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়লাম। তারপর সারারাত লোকটির আমাকে বিরক্ত করেনি।
বেশ কিছু সময় পর অনুভব করলাম বাসটি থেমে আছে। মোবাইল বের করে সময় দেখে নিলাম। তিনটা বাজে। পাশের লোকটি নেই। হয়তো পথে কোথাও নেমে গিয়েছে। জানালা দিয়ে মাথা বের করে তাকিয়ে দেখলাম। না বাস ফেরিতে নয়। বড় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে। আড়মোড়া ভেঙে চেয়ার ছেড়ে উঠে দেখি পুরো বাসে কেউ কেউ নাক ডেকে ঘুামাচ্ছে। আবার কোন কোন সিট খালি। আড়মোড় ভেঙে সামনে এগোতেই বাসের সুপারভাইজার সাবধান করে বললো,
‘স্যার এদিক ওদিক যাইয়েন না। একটা মার্ডার হইছে। রাস্তা আটকায় রাখছে পুলিশ। কাল সকালের আগে মনে হয় না রাস্তা ছাড়বো।’
‘কি বলো মার্ডার! কখন কিভাবে হলো?’
‘তা তো বলতে পারবো না স্যার। তয় শুনলাম যে মার্ডার হইছে সে নাকি কোন এক মন্ত্রীর সম্বোন্ধী।’
আমি বাস থেকে নেমে ধীর পায়ে ক্রাইম স্পটে দিকে এগিয়ে গেলাম। কয়েকজন পুলিশ দাঁড়িয়ে আছে। একটু দূর থেকে তাকিয়ে দেখার চেষ্টা করছি। চমকে উঠলাম। আমার পাশের সিটে বসা সেই আলখাল্লা পরা,মাফলার দিয়ে মুখ ঢাকা লোকটি। আমি ভুল দেখছি নাতো? নিজেকে প্রশ্ন করলাম। কয়েকবার চোখ ডলে নিশ্চিত হলাম। না,আমি ভুল দেখছি না। জোর কদমে বাসের দিকে এগিয়ে এলাম। সুপ্রাভাইজারকে ডেকে জিজ্ঞেস করলাম,
‘এই তো সেই লোক যে আমার পাশে বসেছিলো।’
‘আপনার পাশের সিট তো ফাঁকা ছিলো। গোপালগঞ্জ কাউন্টার থেকে এক যাত্রীর ওঠার কথা থাকলেও সে আসেনি।’
আমি যেনো আরো অবাক হলাম,
‘আপনি কি নিশ্চিত আমার পাশের সিটটি ফাঁকা ছিলো?’
‘আমি টিকিট চেক করি স্যার। নিশ্চিত হয়েই বলছি। আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে।’
আমি আর বাক্য বিনিময় করলাম না। কিছুই বুঝতে পারছি না। সুপারভাইজারের কথা সত্যি মেনে নিলে আমি তাহলে যে লোকটির সাথে কথা বলেছি সে কে? বিভ্রম? হতে পারে না।
অধ্যায় এক
আসরের নামাজ শেষে মসজিদের ইমাম সাহেব রাস্তার পাশে শাহজাহানের চায়ের দোকানে এসে বসলেন। শাহজাহান তাকে দেখে লম্বা একটি সালাম দিয়ে বললো,
‘হুজুর চিনি ছাড়া এক কাপ স্পেশাল চা বানায় দেই?’
‘চিনি ছাড়া আবার স্পেশাল চা হয় নাকি মিয়া? সেই তিতাই তো লাগবো।’
‘তা ঠিক। তয় হুজুর আইজকা তিতা কম লাগব দেইখেন।’
‘আইচ্ছা বানাও দেখি।’
ইমাম সাহেব পাঞ্জাবীর পকেট থেকে তজবি বের করে ঝিকির করতে আরম্ভ করলেন। ওদিকে শহাজাহান চা বানিয়ে হুজুরকে দিলো। ইমাম সাহেব চা নিতে নিতে বললেন,
‘শাহজাহান মিয়া,মসজিদ তো পাশেই। নিয়মিত নামাজ পড়তে পারো তো।’
‘আমি পড়তে চাই হুজুর। দোকান রাইখা যাইতে পারি না।’
‘এইডা জীবন না মিয়া। পরকালের কথা ভাবো। হিসাব নিকাশ সব ওখানে হবে। কি জবাব দিবা আল্লাহরে?’
শাহজান বেশ লজ্জা পেলো। কোন প্রতিউত্তর করলো না। অন্য কাস্টমারের জন্য চা বানাতে আরম্ভ করলো। চা বানানোর এক ফাঁকে শাহজাহান আবার বললো,
‘হুজুর,খবর শুনছেন?’
‘কি খবর ?’
‘সাইদের বউ হালিমারে তো ভূতে ধরছে একটু আগে।’
‘কও কি?’
‘সত্যি কইতাছি। আপনাওে ডাকতে আইলে বইলা।’
ইমাম সাহেব চা শেষ করে কাপটি শাহজাহানের হাতে দিতেই পেছনে এসে দাঁড়িয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে সাইদ বললো,
‘হুজুর,জলদি চলেন। আমার বউরে ভুতে ধরছে। সেই ভুতটা আবার মনে হয় আইছে।’
ইমাম সাহেব আর দেরী করলেন না। সাইদের সাথে রওয়ানা দিলেন। বাড়ির ভিতর গিয়ে দেখেন হালিমাকে গাছের সাথে বেধে রাখা হয়েছে। আর হালিমা একা একা চিৎকার করে সেই বাধন ছোটানোর চেষ্টা করছে। ইমাম সাহেব গিয়ে পাশে বসে মনে মনে দরুদ পড়ে বাধন খুলে দিলেন। হালিমা একদম শান্ত।
কিছু সময় পর হালিমা আবার মাটিতে গড়াগড়ি খেতে লাগলো। ইমাম সাহবে বুঝতে পারলেন একটু কঠিন হতে হবে। সহজে যাবে না। তিনি তাবিজ পুড়িয়ে হালিমার নাকে ধরলেন। হালিমার ছটফটানি আরো বাড়লো। তবে সেটা বেশীক্ষন স্থায়ী হলো না। হালিমা নিস্তেজ হয়ে মাটিতে পড়ে রইলো। জোরে জোরে নিশ্বাস নিচ্ছে। ইমাম সাহেব হালিমার হাতে কয়েকটি তাবিজ বেধে দিলেন।
মাগরিবের আজান পড়েছে। ইমাম সাহেব মসজিদের উদ্দেশ্যে পা বাড়ালেন।
........................... চলবে
০৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:০০
রেজওয়ান সিদ্দিকী অর্ণ বলেছেন: অতিপাকৃত বটে। পাশাপাশি একটি গোয়েন্দা চরিত্র স্টাবলিশ হবে। ধন্যবাদ সম্রাট ভাই।
২| ০৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:৫৮
রাজীব নুর বলেছেন: বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে লেখা নাকি?
০৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:০০
রেজওয়ান সিদ্দিকী অর্ণ বলেছেন: হা হা হা। বাস্তবে হলে ভালো হতো। তবে সম্পূর্ণ ইমাজিনেশন।
৩| ০৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:১৭
এ্যান্টনি ফিরিঙ্গী বলেছেন: চলুক,,,,,
৪| ০৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:২৯
সে্নসেটিভ শিমুল বলেছেন: চলবে!
লাশ টা পোঁচে যাবে, তাই বেশি দেরি করবেন না।
যতদূর চোললো ভালো লাগলো ।
০৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:৩১
রেজওয়ান সিদ্দিকী অর্ণ বলেছেন: হা হা হা। ধন্যবাদ।
৫| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৮ ভোর ৬:৪৫
Sujon Mahmud বলেছেন: চলুক
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:৫৬
সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: এটা কি অতিপ্রাকৃত গল্প? ভালই লাগল। সামনের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।