![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি অক্সিজেনকে ভালবাসি, তাই বলে কার্বন ডাই-অক্সাইডকে ঘৃণা করতে পারিনা। কারণ আমি যার কাছ থেকে আমার ভালবাসাকে পাই সে তো কার্বন ডাই- অক্সাইডকেই ভালবাসে।
এক।
পিউ ফিরে যাচ্ছে। ফিরে তাকে যেতে হচ্ছে।
জীবনে মাঝে মাঝে এমন সময় আসে, যখন কোনো একটা সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হতে হয়। আজ পিউকে তাই করতে হচ্ছে। তিন বছর সংসারের ইতি টানতে যাচ্ছে সে। একটু একটু করে বাড়তে থাকা অবিশ্বাস যখন বিরাট আকার ধারণ করে, তখন দু’জনের মাঝে অদৃশ্য এক দেয়াল তৈরি হয়। সেই দেয়াল না যায় সরানো, না যায় ভাঙা।
সংসার টিকিয়ে রাখতে নাকি মেয়েদের সবথেকে বেশি স্যাক্রিফাইজ করতে হয়। পিউও তাই করেছে। ওর স্যাক্রিফাইজেই তিন বছর অব্দি টিকেছে সংসার। নতুবা ভেঙে যেত সেই কবেই।
রাহুলকে বাবা—মায়ের অমতে বিয়ে করেছিল পিউ। বাংলাদেশি মুসলিম ছেলের সাথে বিয়ে দিতে মোটেই রাজি ছিল না তারা। রাহুলের ভালোবাসায় পিউ এতটাই অন্ধ ছিল যে, এক কাপড়ে রাহুলের সঙ্গে বাংলাদেশে চলে আসতে দ্বিতীয়বার ভাবেনি।
এই তিন বছরে বাবাকে হারিয়েছে পিউ। অথচ দেখতে যেতে পারেনি সে। মায়ের কাছে জেনেছে, মৃত্যুর আগে একমাত্র মেয়েকে শেষবারের মতো দেখতে চেয়েছিল বাবা। সেই কথা ভাবতেই পিউয়ের মনটা হুঁ হুঁ করে কেঁদে ওঠে। তখন বাবার ছবি বের করে একটা কথাই বলে, ‘আমাকে ক্ষমা করে দিও বাবা। আমাকে ক্ষমা করে দিও…..।’
শোবার ঘর, ব্যালকনি, রান্নাঘর—সবখানে গিয়ে হাত বোলাতে লাগলো পিউ। একটু একটু করে যে সংসার সাজিয়ে তুলেছিল, সেই সংসার ছেড়ে চলে যেতে হচ্ছে চিরতরে। একটা জোরে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে পিউ।
রাতে বাসায় ফেরেনি রাহুল। যাওয়ার আগে হয়ত শেষ দেখা হবে না তার সাথে। তবুও মন মানছে না। ফোন থেকে রাহুলের নম্বর ডায়াল করলো। বেজে গেলো। ধরলো না। উপায় না পেয়ে রাহুলকে মেসেজ করলো, ‘আমি চলে যাচ্ছি রাহুল। ভালো থেকো। জীবনে সুখি হও।’
তিন ঘন্টা পর ফ্ল্যাইট। এখনই বের না হলে দেরি হয়ে যাবে। ব্যাগ রাতেই গোছানো ছিল। উবার ডাকলো পিউ। গাড়িতে উঠতে ফোন বেজে উঠলো। রাহুল ফোন করেছে ভাবল। কিন্তু না, কলকাতা থেকে মা ফোন করেছে। রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে মা বললো, ‘কখন আসছিস ?’ মলিন কণ্ঠে পিউয়ের উত্তর, ‘এই তো বের হয়েছি। আমি আসছি। কতদিন তোমার কোলে মাথা রেখে ঘুমাই না।’
ফোন কেটে দিলো পিউ। দু’চোখ থেকে পানি পড়ছে অঝোরে। নিঃশব্দে কাঁদছে সে। বুকটা ফেটে যাচ্ছে কষ্টে। দেখার কেউ নেই। এই শহর তার অচেনা। শহরের মানুষ তার অচেনা। যে ছিলো চেনা, সেও অচেনা হয়ে গেলো নিমিষেই।
গাড়ি ছুটে চলছে এয়ারপোর্টের দিকে। গাড়ির কাঁচের ভেতর দিয়ে শহরটা শেষবার দেখে নিচ্ছে পিউ। হয়ত আর কখনও আসা হবে না এই শহরে। ভালোবাসার মানুষের হাত ধরে হাঁটা হবে না টিএসসি, হাতিরঝিল কিংবা ধানমন্ডি লেক।
(চলবে....)
২০ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ৮:২৭
রেজওয়ান সিদ্দিকী অর্ণ বলেছেন: ধন্যবাদ আপু। দেখি শেষটা নামাতে পারি কিনা!
২| ২০ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:২২
অপু তানভীর বলেছেন: শুরুটা চমৎকার । গল্প দ্রুত শেষ হোক ।
৩| ২০ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:২৯
নেওয়াজ আলি বলেছেন: মোহনীয় পরিবেশন। চালিয়ে যান অবিরাম ।
৪| ২০ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:৩৬
শোভন শামস বলেছেন: চমৎকার গল্প
৫| ২০ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ১০:০০
শায়মা বলেছেন: রাহুল চলে আসুক এয়ার পোর্টে। ফিরিয়ে নিয়ে যাক।
৬| ২০ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ১০:৩৪
রাজীব নুর বলেছেন: সবে তো শুরু। দেখি কোথায় গিয়ে শেষ হয়। আর কি কি চমক থাকে।
৭| ২১ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১২:০১
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: "প্রেমে যা কিছু পাওয়া যায় তার চেয়ে অনেক বেশী কিছু হারাতে হয় বা কেড়ে নেয়" - তারপরেও যুগে যুগে মানব-মানবী প্রেম নামক সোনার হরিণের পিছনে ছুটেছে।
তাতে কেউ কেউ হ্য়ত কিছু একটা পেয়েছে তবে অধিকাংশেরই আশা ভংগের বেদনায় ছটফট করতে হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও হবে।তার পরেও প্রেমের মরা জলে না ঢুবে উপরে ভেসে থেকে দুনিয়াকে প্রলোভন দিয়ে যাচছে প্রতিনিয়ত।
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ৮:১৯
মনিরা সুলতানা বলেছেন: শহরের আনাচে কানাচে বাড়ছে দেয়াল। শুরুটা বেশ হয়েছে।