নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিন্দুর মাঝে সিন্ধু দর্শনের আশায় পথ চলি...

রিদওয়ান হাসান

শুধু একদিন ভালোবাসা, মৃত্যু যে তারপর... যদি তা-ও পাই, আমি তা-ই চাই, চাই না বাঁচতে আমি প্রেমহীন হাজার বছর।

রিদওয়ান হাসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঈদের নাটক মি. জনি : একটি অন্য রকম রিভিউ

০৭ ই জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৫:১০

'ছবিয়াল' আর 'আয়নাবাজি' এই ঈদ উপলক্ষ্যে অনেকগুলা আধাঘণ্টা আধাঘণ্টা-র সিরিজ নাটক বানাইছে। 'রেইনবো'-র নির্মাতা আশফাক নিপুনের আইডিতে ঘুরতে ঘুরতে নাটকগুলির লিংক চোখে পড়ল। নাটকের নাম হলো মি. জনি। এই মি. জনি নিয়াই আমি আলাপ্টা করতে চাইতেছি।
নাটকের নাম মি. জনি, নির্মাতা রেদওয়ান রনি। নাম শুইনা জনি চরিত্রটারে যতটা ইন্টারেস্টিং ভাবতেছেন, আদতে জনি ক্যারেক্টারটা তার চাইতেও ইন্টারেস্টিং। প্রথম অঙ্কেই দেখবেন, জনির পাও ভাঙতে এক গাঞ্জাখোররে টাকা দিতেছে দুই লোক। তারপরে আপনার পরিচয় হবে দয়াল-র সাথে, যিনি একজন ভ্যানচালক এবং থাকেন পাচ ওয়াক্ত নামাজি শুভ্র দাড়িওয়ালা এক বুইড়ার বাসায়। বুইড়া তারে দেখলেই নাপাক কয়, তারে ছোঁয় না, তারে ঘরে ঢুকতে দেয় না, এমনকি তার ভাড়ার টাকাটাও সাবান দিয়া ধুইয়া তারপর হাতে নেয়। এত ঘৃনার কী কারণ? কারণ বুইড়া বলে যে, তুমি তো রাইত কাটাও জনির লগে! ছি! এই পর্যায়ে আইসা 'রেইনবো'-র দর্শকদের মাথা গরম হইব। তারা আরেকটা স্টাটাস লেখার উদ্যোগ নিবেন। এবং, যখন দেখবেন, দয়ালের বউ-ও দয়ালের কাছে থাকে না এবং দয়ালরে ঘৃনা করে, এবং এসবের একমাত্র কারণ জনি, তখন তাদের মাথায় আবারও চক্কর দেবে। কিন্তু খাঁড়ান, আরেকটু।
দয়ালের বিচার বসলো। দয়াল হয় জনিরে বাসা ছাড়া করবে, নয় নিজে বাসা ছাড়বে, বুড়া মুসল্লি চাচার এক কথা। কমিশনারও তাই বলে। সালিশে একপ্রস্থ মাইরও দেওয়া হয়। নাটকের এই পর্যায়ে আইসা আমরা জনিরে দেখি। জনি সাহেবের নামের আগে মি. থাকলেও উনি তেমন মিস্টার না, সাধারণ একটা নেড়ি কুত্তা। জ্বী।
দয়াল এরপরে উদাস। ভ্যানচালক দয়ালের দিনরাত, শয়ন-জাগরণ সব কাটে জনিরে ভাইবা। এমনকি কাজেও তিনি যান না। তার বউ ঘরে আসে। একদিন ওই মুসল্লি চাচার পোলা দয়ালের বউরে ধর্ষণ করতে যায়। কোত্থিকা আইসা জনি তারে বাঁচায়। দয়ালের বউর 'জনিবিদ্বেষ' কাইটা যায়। জনি মোটামুটি সন্তানের মর্যাদা পায়। তারপরের কাহিনী ছোট। জনিরে ওই পোলা বিষ খাওয়ায়। জনি মইরা যায়। চাচা, ওই পোলা সকলেই অনুতপ্ত হয়। চাচা ফজরের নামাজের মুনাজাতে কান্দেন। কী কইয়া কান্দেন, তা জানার সুযোগ অধম দর্শকের হয় না। হয়ত জনির জন্যে জান্নাত চান, কিংবা নিজের পাপের জন্য ক্ষমা! তামাম শোধ।

এই পর্যায়ে আমরা কাইন্ডনেস, লাভ, অবসেশান আর পেডোফিলিয়ার একটা যোগসূত্র খুঁজব, এই নাটকের আখ্যান ঘাঁইটা। ঘাঁটাঘাঁটিতে আরো দু একটা জিনিশ ইতস্তত বাহির হবে, তাও আমরা একপাশে ফালায়ে রাখব। সন্ধানী পাঠক খুঁইটা নিবেন।

জীবেদয়া বনাম পশ্চিমের পশুপ্রেম: নাটকটাতে মোটাদাগে 'জীবে দয়া'-প্রপঞ্চকে প্রমোট করা হইছে। কিন্তু আমাদের সন্দেহ ঘন হয় একেবারে শুরুতেই, যখন জীবের নাম মি. জনি। বোঝা যায়, এই জনি সাধারণ জীব নয়, যারে যা তা ভাবে দয়া করলেই চলে। এই জনি 'মি.', ফলত ইনি পশ্চিমের পশু-অবসেশনের একজন প্রতীক। তার প্রতি দয়াটাও আসলে সেই দয়া নয়, এইটা মোর দেন দয়া, এইটা প্রেম, এইটা ভালবাসা, এইটা গভীর গভীর গভীরতর আবেগ, যে আবেগের কারণে লোকে বউ ছাইড়া দিতে পারে! তাইলে, এই জীবেদয়া ব্যাপক না, এইটা হইল পশ্চিমের প্রমোট করা বিশেষ দয়া, যারে বলে পশুপ্রেম। পশ্চিমের এই পশুপ্রেম বুদ্ধ বা বিবেকানন্দের জীবে দয়া না, এইটা পরিষ্কার করলাম। এইটা হইলো, পশুপ্রেম। জীবের ভেতর পশু, পাখি, মানুশ সবই আসে। কিন্তু পশুর ভিতর কেবলই পশু। পশ্চিম, পশুরেও যে খুব দয়া করে তা না, পশুর গোশত, পশুর চামড়া সব কাজে লাগায়, এমনকি পশুর প্রজনন তথা যৌন জীবনরেও কৃত্তিমভাবে নিয়ন্ত্রণ করে প্রযুক্তির দ্বারা। কিন্তু ক্ষেত্রবিশেষ পশুরে মানুশেরও উপ্রে তুইলা ফালায়। পশ্চিমে মানুশের সুখ নাই, কিন্তু পশুর আছে। মা বাচ্চারে ঠেলাগাড়িতে আর কুত্তারে কোলে নিয়া ঘুরেন। কুকুর বা বিড়াল হয়া ওঠে পরিবারের একজন অধিক গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। পশ্চিমের এই পশুপ্রেম এরকম, এক ধরণের অবসেশন বা অবচেতন মোহ থেকে পাগলের মত ঘোরগ্রস্ত হয়া কোন পশুর প্রেমে পড়া (প্রেমই, যেমন সন্তানের প্রতি। এইটা কাম না। কাম এর পরের ধাপ)। একটা উদাহরণ দিয়ে পশ্চিমের পশুপ্রেমের প্রকৃতিটা বুঝাই। ইরাকযুদ্ধে নিযুক্ত এক মার্কিন সৈনিক একটি কুকুর পুষলেন সেইখানে, ইরাকী কুকুর। দেশে ফিরা আসার কালে তিনি কুকুরটারে সাথে নিতে চাইলেন, কিন্তু সামরিক ও কাস্টম্‌স্‌ কর্তৃপক্ষ অনুমতি না দেয়ায় তা আর হয় নাই। এ নিয়ে মার্কিন মিডিয়ায় হইচই, জনমত চইলা গেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। কর্তৃপক্ষের অপরাধ? একটা অবলা জীবরে তার মালিকের সাথে বসবাসের অধিকার থিকা তারে বঞ্চিত করা হইছে। কাজেই হাজারে হাজারে ভোট পড়তে লাগল পূণর্মিলনীর পক্ষে। শেষমেশ কর্তৃপক্ষ বাধ্য হইলেন পশুটিরে তার মালিকের কাছে যেতে দিতে। জয় হইল পশুপ্রেমের। কিন্তু একটিবারও সৈনিকটারে কেউ জিজ্ঞাসা করল না, 'কতজন নিরীহ ইরাকী তোমার গুলিতে প্রাণ হারাইছে বা পঙ্গু হইছে?' এই হইল পশুপ্রেম। এরসাথে পুঁজিবাদেরও সম্পর্ক নিবিড়। পুঁজিবাদ একদিকে এই পশুদের খুন কইরা পুঁজির কর্তৃত্ব জারি রাখছে, অপরদিকে পুঁজিবাদী বুর্জোয়াদের বিলাসী জীবনের সঙ্গী বা অবসেশন হিশাবে নির্ধারণ করছে এই পশুরেই। বড়লোকেরাই সাধারণত এইগুলি নিয়া বেশি অবসেশনে ভোগেন, যেহেতু তাদের টাকা আছে, এবং জীবনে পুঁজির সর্বগ্রাসী প্রভাব তাদের সর্বভাবে জীবনরে উপভোগ করতে অনুপ্রাণিত করে। পশ্চিমের পশুপ্রেম জিনিশটা কতটুক ভণ্ডামী এবং একটা প্রবৃত্তির পুঁজিবাদী শখ বা খাহেশ, ভণ্ডামি এবং সাধারণ জীবেদয়ার কনসেপ্ট থিকা আলাদা-আশা করি বুচ্ছেন।

পশু যখন কুকুর, ধর্ম যখন মুগুর: আমাদের সন্দেহ আরেকবার গাঢ় হয়, পশু নির্বাচনে। আমাদের দেশে অনেকেই পশু পালে, পাখি পালে। বিড়াল, খরগোশ আর বিলাতি ইন্দুর-পশুর ক্ষেত্রে সাধারণত এইগুলিই বেশি। এইটা তো শখের কথা কইলাম। শখের বাইরে, অর্থনৈতিক কারণে যে পশুপালন আর সেইখান থিকা উদ্ভুত প্রেম ভালোবাসা (শরতচন্দ্রের 'মহেষ' বা সুফিয়া কামাল-র 'পুটু' গল্প দ্রষ্টব্য) এইটা পশ্চিমের যে পশুপ্রেম আমাদের আলোচ্য, তার বাইরে। তো, কুত্তা আমাদের দেশে খুবই কম দেখা যায়, 'পেট' হিশাবে। অথচ 'মি. জনি' তে কুত্তারেই প্রেম পাওয়ার যোগ্য পশু হিশাবে দেখান হইলো। এইটা কি অসচেতন চয়েজ? নাহ। এইটা সচেতন। সচেতন কেমনে বুঝলাম? ধর্মের সাথে আর কোন পালনযোগ্য পশু (বিলাই বা খরগোশ) এর শত্রুতা নাই, যা আছে কুকুরের লগে। ধর্মরে যেহেতু সচেতনভাবেই আনা হইছে, তার মানে কুত্তারেও যে সচেতনভাবেই আনা হইছে বলাইবাহুল্য। কেন? কারণটা ধর্মীয়। ইসলামি ফেকা বলে, কুকুর আর শুকর এগুলা নাজাসাতে আইন, এগুলার সত্তাই নাপাক। হাদিসে কুকুরের উপস্থিতিরে রহমতের ফেরেশতা আসার প্রতিবন্ধকও বলা হইছে। এই 'নাপাক'-র ধারণাই আমাদেরে কুকুরপ্রেম থিকা বাঁচায়ে রাখছে। ফলে পশ্চিমের পশুপ্রেম আমাদের মাঝে ছড়াইছে অন্যান্য হালাল 'পেট'-র মাধ্যমে, যেমন, বিড়াল। কিন্তু, বিড়ালে তো পশ্চিমের কাজ না! তাদের দরকার কুকুরের সম অধিকার! নইলে ধর্মের সাথে কনফ্লিক্ট তো হবে না। আপনি দেখেন, পশ্চিমে ৮০% পেট কুকুরই। ফলে, কুকুররে প্রমোট জরুরি, পশ্চিমের পশুপ্রেমের সঠিক প্রমোটের জন্যে এবং মুসলমানদেরকে 'সত্তাগত নাপাক' জিনিশের সাথে ঢলাঢলি করে নিজেদের পবিত্রতা হারানোয় উদ্বুদ্ধ করার জন্যে। এবং, ইসলামরে একটা পশুবিদ্বেষী ধর্ম হিশাবে দেখানোর জন্য। ফলে, পশু হিশাবে কুকুরই থাকেন, আর কেউ না। এবং, কুকুররে আপন করার প্রধান অন্তরায় হিশাবে ওই ধর্ম আর নাপাকিরেই দেখান হয়।

ধর্ম যার যার, কুত্তা সবার: ফলত, কুকুর নাপাক, এই ফতোয়ারে অবজ্ঞা করা হয়। কীভাবে? ওই মুসল্লির মাধ্যমে। দাড়িওয়ালা চাচা। উনি কুকুর পালা লোকের টাকা সাবানে ধুইয়া ইউজ করেন, তারে নাপাক কন, তার লগে যেসব ভাষা আর আচরণ ইউজ করেন, তাতে ওই চাচার প্রতি একটা স্বাভাবিক ঘৃনা আসার সাথেসাথে ওই যে তিনি 'নাপাক' শব্দটা বলেন, সেইটার প্রতিও অবচেতন ঘৃনা আসে। অথচ, ইসলাম কুকুররে নাপাক বললেও কুকুরের সাথে পাশবিক আচরণ করতে বলে না, যে কুকুর পালে তার সাথে তো না-ই। অথচ, এই নাটকে, ধর্মের কুকুর সংক্রান্ত দৃষ্টিভঙ্গির কেবল একটা সাইড দেখায়ে, সেই সাইডটা যে খুবই পাশবিক ও খারাপ তা বুঝায়ে, কুকুরের ব্যাপারে ধর্মের যে নাপাকি দর্শন তারে হাস্যকর ও খেলো বানায়ে দেয়া হয়। যেন ধর্ম কুকুরবিদ্বেষী, আর তারা কুকুরপ্রেমী। ফলে ব্যাপারটা দাঁড়ায় এই, দর্শকের মনে হয়, ধর্মের ওই 'নাপাক' দর্শনটা অ-কুকুরিক (অমানবিক আরকি)। অতএব, ওই দর্শনটার প্রতি তার মনে বিতৃষ্ণা তৈরি হয় এবং কুকুরে দয়া করতে গিয়া অজান্তেই সে কুকুরপ্রেমে পতিত হয় এবং নাপাকি ব্যাপারটারে হালকা ভাইবা উপেক্ষা করে। অথচ ধর্ম কুকুরের ব্যাপারে যা বলছে, তার একটা খন্ডিত অংশ দেখান হইছে নাটকে। ফল দাঁড়ায়, ধর্ম ধর্মের জায়গায়, কুকুরের সাথে ধর্ম মেশাবেন নাহ।

সুক্ষ্ম সুক্ষ্ম বিষয়: আমরা দাবি করলাম যে, পশ্চিমের পশুপ্রীতির যে ধারণা তারে প্রমোট করে এই নাটক এবং সেই সূত্রেই কুত্তা। এবং ধর্ম আর কুত্তার দ্বন্দ খাঁড়া করা। কিন্তু, দু একটা প্রমান তো লাগবে, নাকি? দিতেছি।
একটা দৃশ্যে দেখায় যে, কুত্তারে দয়াল চুমিতেছে। আমাদের দেশে বাড়িঘর পাহারার লিগা কুত্তা পালার যে রীতি আছে, তা ভিন্ন। ওইখানে কুত্তার প্রতি একটা দয়া ছাড়া আর বাড়তি কোন অবসেশন নাই। কুত্তারে চুমা দেওয়া তো দূরে থাক। কিন্তু, কুত্তারে নাপাক ভাইবাই, নাপাকের জায়গায় রাইখাই যদি আপনি দয়া করেন, তাইলে পশ্চিম যে পশুপ্রেমরে প্রমোট করে, তা হাসিল হয় না। ফলে, চুমা। হাত দিয়া খাওয়াইয়া দেওয়া। একই ঘরে জড়াজড়ি কইরা থাকা। এইগুলি ছোট ছোট নুকতা, যা দর্শকরে বুঝায়, প্রেম কোন পর্যায়ের হওয়া চাই। ছোটখাটো 'নাপাক ধইরা নিয়া প্রেম' চলবে না। একেবারে চুমাচুমিতে না গেলে প্রেম কিসের!

কানারে হাইকোর্ট দেখানো: মাঝখানে, দয়ালের বউরে ধর্ষণ থিকা জনির বাঁচানো, এইটুক হইল কানারে হাইকোর্ট দেখানো। আবেগী বাঙালির যুক্তিরে দাবাইয়া আবেগরে উস্কায়ে দেয়া। প্রথমত, এইটা তো কষ্টকল্পনা। বাঙলাদেশে আজ পর্যন্ত কোন কুত্তা কোন নারীরে ধর্ষণ থিকা বাঁচাইতে পারছে কিনা জানি না! দ্বিতীয়ত, কোন পশু কাউরে বাঁচাইতেই পারে! যে কুত্তা ঘরে চোর আসলে খবর দেয় নিয়মিত, চোররে তাড়া করে, সেও উপকারই করে। সেইজন্যে তারে সন্তান বানায়ে চুমা খাওয়ার যুক্তি নাই, তার এতে কিছু আসে যায়ও না। কিন্তু নির্মাতা চালাক, তিনি আরেকটু ডিপে গেছেন। একাবারে ইজ্জতের রক্ষক বানাইছেন মি. জনিরে। ইজ্জত নারীর বড় সম্পদ। এইটা যে বাঁচাবে তারে সে মাথায় তুইলা রাখবে। দর্শকের কাছে জনি মিয়ার প্রতি ভালবাসারে বৈধ, বরং, প্রশংসিত ও স্বাভাবিক করতে ইজ্জত রক্ষাকারী হিশাবে তারে দেখাইছে নির্মাতারা যা বাস্তবে প্রায় হয় না বললেই চলে! কুকুর আপনের ইজ্জত বাঁচাবে কিনা তা তো ভগা জানে, আপাতত যা হইল তা হইল, নাটকে কুকুরের ইজ্জত বাঁচানি দেইখা নাটকে প্রমোটিত কুকুরপ্রীতি ব্যাপারটারে আপনে মাইনা নিলেন এবং তারে মনে মনে ভাল বললেন। ইহাই মাইন্ড গেম।

পশুপ্রেম থেকে পশুকাম: অবসেশন বা ঘোরের পরিণতি কীঃ পশ্চিমের পশুকাম কইত্থিকা আসছে? নোংরা কামবাসনা চরিতার্থ করার ব্যাপার তো আছেই।ফ্রি সেক্সের ব্যাপার। কিন্তু লক্ষণীয়, পশ্চিম এই সবগুলা বিকৃত কামের বৈধতা দিতে গিয়া মানবিকতা ও প্রেমের জায়গাটা হাজির করতেছে। সমকামীদের বেলায় তারা কী বলতেছে? তারা বলতেছে, এইটা একটা প্রেম। তারও হৃদয় আছে, প্রেমে ব্যথা পেলে সেও কাঁদে। সমকামী মানেই খালি যৌনতা না, ইটস আ লাভ। দে আর মেকিং লাভ লাইক আদারস, এন্ড সেক্স ইজ আ পার্ট অব দ্যাট লাভ! এইটাই তাদের বড় যুক্তি। তাইলে, দেখা যায়, বিকৃত যৌনতারে বৈধতা দেয়ার বড় যুক্তি হইল এইগুলি প্রেম, মন থেকে আগে প্রেম হয়, পরে যৌনতা।
যৌনতার সাথে ভালোবাসার সম্পর্ক কেমন বা কতটুকু তা ভিন্ন আলাপ। কিন্তুক, মোহ বা অবসেশন বা পাগলের মত প্রেম, এইগুলির সাথে কামের সম্পর্ক আছে। পশ্চিমে পশুকাম কীভাবে ছড়াইলো? পশুরে নিজেদের সাথে রাখে, তারে কোলে নেয়, একসাথে খায়, ঘুমায় অর্থাৎ, একটা মানুশের সাথে ভালোবাসার যে যে বন্ধন গইড়া উঠতে পারে এবং তার যা যা প্রতিক্রিয়া হইতে পারে, কুত্তার ক্ষেত্রেও তা হইতে পারে-এইমত অবস্থা তৈরি হয়, ফলে তাই। মানুশের সাথে যেমন প্রেম হইতে পারে, কুকুরের সাথেও হইতে পারে। মানুশের সাথে প্রেমের প্রতিক্রিয়ায় সেক্স হইতে পারলে, কুকুরের সাথেও পারে। যে যৌন অতৃপ্ত মহিলা সেক্স টয় ইউজ করতে পারেন, তিনি পরিচ্ছন্ন একটা কুত্তা নিয়া প্রতিদিন ঘুমাইলে, ঘুমের ভিতর তার নানা জায়গায় হাত গিয়া পড়লে, অটোমেটিক তিনি তার লগে সেক্স করবেন। যে পুরুষ হস্তমৈথুন করে, সে একটা কুত্তা জড়ায়ে ধইরা ঘুমাইতে থাকলে আর সচেতন দুনিয়ায় পশুকামের প্রচার হইতে থাকলে, সে অটোমেটিক পশুকামে আক্রান্ত হবে।
নাটক থিকা কথাটা বুঝেন। কুত্তার জন্য নিজের বউরে ঘরে রাখে না, বউয়ের সাথে থাকার চাইতে যে কুত্তার সাথে থাকারে প্রায়োরিটি দেয়, যার যৌনইচ্ছার মত প্রবল ইচ্ছা একটা কুকুরের কাছে পরাজিত হয়, সে ওই কুকুরের মাঝেই যদি তার সব দৈহিক ও মানসিক চাহিদা খোঁজে, তাতে অবাক কী? এবং সে তাই করবে। কুকুর তার ধ্যান জ্ঞান, জীবন। আর জীবনের মধ্যে সেক্সও একটা পার্ট।
বলতে চাই, পশুর প্রতি এই অবসেশনমার্কা বিলাসী পুঁজিবাদী যে প্রেম পশ্চিমের, যে প্রেম চরিত্রে পাগল পাগল আর যে প্রেম পশুরে মানুশের মর্যাদা দেয় সেই প্রেম থিকাই পশুকামের উদ্ভব। এবং পশুকাম প্রমোটাররা তাই বলে, কেউ যদি একটা কুত্তারে ভালবেসে তার সাথে শোয়, কী ক্ষতি! বাঙলাদেশে এখন প্রমোট করা হইতেছে পশুপ্রেম, পরের ধাপই হবে পশুকাম! সেইটা অনেক দূরেও না!

নাটকের মেকিং: এইটার ক্রিটিক আমি পারব না। তয় একটা কথা কওনই লাগে, এক ভ্যানচালক, ভ্যান চালায়ে যার রোজগার, যার একটা সুন্দর ফুটফুইট্যা বউ আছে তার জীবন ও আশপাশের সবকিছুর থিকা একটা কুত্তা বড় হয়া যাওয়া এইদেশের প্রেক্ষাপটে অস্বাভাবিক! আবার, 'ওইগুলি বড়লোকের বিলাস' বইলা কেউ যেন এই পশুপ্রেমের পুঁজিবাদী দিকটা ধরায় দিতে না পারে সেইজন্যে আবার এক গরীব ভ্যানচালকরে বানাইছে কুকুরপ্রেমী আর কুত্তাটাও সাহেবি না, নেড়ি কুত্তা! চালাক, চালাক!! যেন বলতে চাওয়া, আমরা পুঁজিবাদী জায়গা থিকা না, নিখাদ প্রেমের জায়গা থিকা পশু ভালবাসি। বাট এদের বাসায় গিয়ে দেখেন। সব বিদেশী কুত্তা, এলসেশিয়ান, শেফার।

[এই লেখাটির জন্য ধন্যবাদ পাবেন একমাত্র তুহিন খান। চিন্তা মিলে গেছে তাই নতুন করে না লিখে ইষৎ পরিবর্তন করে বাকিটা কপিপেস্ট করেছি বললেও অত্যুক্তি হবে না।]

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ৮:১০

আলগা কপাল বলেছেন: কি যে কমু ভাই!

১১ ই জুলাই, ২০১৭ ভোর ৫:১১

রিদওয়ান হাসান বলেছেন: কওনের কিছু নাই।

২| ১১ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ৩:১২

চাঁদগাজী বলেছেন:


আমি ঈদের নাটক দেখনি, আমাদের মানুষের জীবনের গল্প এতে আছে বলে তো মনে হয় না।

১১ ই জুলাই, ২০১৭ ভোর ৫:১১

রিদওয়ান হাসান বলেছেন: বাইর থেকে ধার করা এসব নাটকেও রয়েছে নাটকীয়তা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.