নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আম জনতার একজন।

ইছামতির তী্রে

I have a dream.

ইছামতির তী্রে › বিস্তারিত পোস্টঃ

‘Back to the Qur’an, ‘তোরা ফিরে যা কোর’আন’

৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৯:৫৮

আমরা তখন দ্বিতীয় বা তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ি। ঐ সময় আমাদের স্কুলে একজন নতুন শিক্ষকের আগমন ঘটলো। দু’একদিন পরেই উনার সাথে আমাদের প্রথম ক্লাস হলো। তিনি আমাদের সবার সাথে পরিচিত হলেন। আমরা একে একে দাঁড়িয়ে নিজেদের নাম-পরিচয় দিলাম। তিনিও তাঁর পরিচয় দিলেন। জানলাম স্যারের নাম প্রমথ নাথ। আমাদের স্কুল থেকে কাছেই অন্য একটা গ্রামে স্যারের বাড়ি। বেশ আন্তরিকতার সাথে স্যার আমাদের প্রথম ক্লাস নিলেন। আমরাও স্যারের আন্তরিকতায় মুগ্ধ হলাম। তাকে আমরা পছন্দ করে ফেললাম।



ক্লাসের পড়া শেষ হলেও সাথে সাথে তিনি উঠলেন না। স্যার ঘড়ির দিকে তাকালেন। হয়ত কিছুটা সময় তাঁর হাতে ছিল। এই সময় আমাদের সবাইকে উদ্দেশ্য করে তিনি বললেন, বাবারা (আম্মারাও ছিল) আজকে তোমাদের একটা নতুন বিষয় শেখাব। আমরা সবাই একটু ভয়ই পেলাম। কাজের পড়া নিয়েই বিরাট টেনশনে থাকি; আবার নতুন বিষয়। কিন্তু কিছুই করার নেই। স্যার বলে কথা! কাজেই আমরা স্যারের নতুন বিষয়ের দিকে মনোযোগী হতে সচেস্ট হলাম। তিনি হাঁক ছেড়ে বললেন, সবাই আমার সাথে সাথে পড়:



Back to the Qur’an,

তোরা ফিরে যা কোর’আন’।



‘Back to the Qur’an,

তোরা ফিরে যা কোর’আন’।



আমরা তো হতবাক! বলে কি লোকটা! কোর’আনকে ফিরে যেতে বলছে!! এই স্যারের নতুন বিষয়!?! কোর’আনের আসল মাহাত্ব্য তখনো আমাদের অজানা। কিন্তু আমাদের এইটুকু ধারণা ছিল যে এটা একজন মুসলিমের কাছে কী। সেই কোর’আনকে নিয়ে স্যারের এমন আজগুবি কথা!! আমরা সবাই বিস্ময়ে ‘থ হয়ে ঠায় বসে রইলাম। স্যারের হাঁকে আমরা কেউই সাড়া দিলাম না।



স্যার আমাদের দিকে তাকালেন। তিনি হয়ত আমাদের মনের কথা ধরতে পারলেন। তারপর স্মিত হেসে বললেন, “বুঝেছি, তোমরা এর অর্থ বুঝতে পারো নাই”। এর মানে হলো, তোরা কোর’আনে ফিরে যা। এখানেই তোদের মুক্তি; এর মধ্যেই তোদের কল্যাণ। কথাগুলোর মানে বুঝে আমরা একেবারে উচ্ছসিত হয়ে গেলাম। স্যার তখন ‘এবার বলো তো...’ বলা মাত্রই আমরা একযোগে চিতকার করে বলে উঠলাম,



Back to the Qur’an

তোরা ফিরে যা কোর’আন।



Back to the Qur’an

তোরা ফিরে যা কোর’আন।।



সেই যে শুরু...



এরপর থেকে স্যারের প্রতিটা ক্লাসে এই শ্লোগান আমাদের কাছে অতিপ্রিয় একটা বিষয় হয়ে গেল। আমরা শুধু ক্লাস শেষের অপেক্ষা করতাম। স্যারও আমাদের মনের অবস্থা বুঝে নিতেন। তাই তিনি প্রতিদিন হাতে কিছুটা সময় রাখতেন। ক্লাস শেষ হলেই আমরা আর স্যারের জন্য অপেক্ষা করতাম না; চিত্কার করে বলা শুরু করতাম, ‘Back to the Qur’an…’।



এভাবে অতি অল্প দিনের মধ্যেই স্কুলের সবার মুখে মুখে ফিরতে লাগলো, ‘Back to the Qur’an, তোরা ফিরে যা কোর’আন’। শুধু আমাদের ক্লাসেই নয় পুরো স্কুলে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ল এই কথা। শুধু স্কুলই বা বলি কেন; স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে পুরো গ্রামের সকল শ্রেণির মানুষের প্রিয় ডায়ালগে পরিণত হলো। এবং একটা মাত্র কথা দিয়েই প্রমথ স্যার আমাদের এলাকায় তুমুল জনপ্রিয় একজন শিক্ষক হয়ে গেলেন।



সেদিন স্যারের কথা ভাল লাগলেও বুঝতে পারিনি এর অন্তর্নিহিত বাণী। আজোও হয়ত পুরোপুরি বুঝে উঠতে পারিনি। তবে হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে পারি স্যার কি বোঝাতে চেয়েছিলেন।



আজ এতটা বছর পরেও স্যারের সেই কথা ভুলতে পারিনি। এখনো মনে মনে আউড়াই, Back to the Qur’an, তোরা ফিরে যা কোর’আন’।



সবাইকে অনেক ধন্যবাদ।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:০৯

ইণ কোযেসট অব ট্রুথ বলেছেন: স্যার কি মুসলিম ছিলো না? স্যারের নাম প্রমথ নাথ।

৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১১:৩২

ইছামতির তী্রে বলেছেন: স্যার হিন্দু ছিলেন। আমি ইচ্ছে করেই এটা বলিনি। আমার বা আমাদের কাছে স্যারের মেসেজটিই বেশী গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

২| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:৩৯

ফিলিংস বলেছেন: কেন হিন্দু মুসলিম তুল্লেন, সে জানে কোর’আন সত্য ,তাই সবাই কে কোর’আন মানতে বা অনুসরণ করতে বলছেন,

৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১১:৩৪

ইছামতির তী্রে বলেছেন: আপনার সাথে একমত পোষণ করছি।
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।

৩| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১১:৫০

ইণ কোযেসট অব ট্রুথ বলেছেন: এই জননই তো ভালো লাগলো।

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:০৪

ইছামতির তী্রে বলেছেন: আবারও আপনাকে ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.