নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যা দেখেও না দেখার ভান করি, আজ থেকে চলুন তাই দেখি।

রিয়াদ আল সাহাফ

রিয়াদ আল সাহাফ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কর্পোরেট লাইফে প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা

১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৩৮

ব্যাংক এশিয়ার হেড অফিসে ইন্টার্নি হিসেবে জয়েন করলাম আজ। মোটামুটি বিনা বেতনে তিন মাসের চাকরি।
স্যুটেড, বুটেড না হলে কর্পোরেট অফিসে ঠিক মানানসই না। আর গায়ের যা রং আর চেহারার যা শ্রী একটু ক্যাজুয়েল হয়ে আসলেই অফিসের পিয়ন বা অন্যকিছু ভেবে যে কেউ ভুল বুঝতে পারে।
তাই, টি-শার্ট ছেড়ে সাদা ফরমাল শার্ট, জিন্স ছেড়ে ল্যুজ প্যান্ট, কনভার্স ছেড়ে পলিশড ফরমাল সুজ, আর স্যুট-টাই পড়ে পুরোই কর্পোরেট কর্পোরেট একটা ভাব নিয়ে হল থেকে বের হলাম।
প্রথমেই রিকসা বিরম্বনা।
-স্যার, কই যাইবেন?
-যাবো না।
আরে বেটা, রিকসা দিয়ে যে যাবো পকেটে কি ভাড়া আছে নাকি? আর যা আছে তা যদি রিকসা ভাড়াই দেই তাহলে বেতন তো পুরোটা যাবেই, আব্বাকেও বলতে হবে বিকাশ করে কিছু টাকা পাঠাতে।
শাহবাগ থেকে উঠলাম লোকাল বাসে। যাবো পুরানা পল্টন। দিলাম ছাত্র ভাড়া। তো, কন্ডক্টর টিপ্পনি কেটে বললো, কি কন, স্যার? কোট টাই পইড়া কেউ কলেজে যায় নাকি? বাসের যাত্রীরাও একটু আড়চোখে এই কর্পোরেটকে দেখে নিলো। ভাবটা এমন যেন, "হারামজাদা, ৫০ হাজার টাকা বেতন পাস কিন্তু দিস ছাত্র ভাড়া!"
অবশেষে আসলাম অফিসে। ইউনিভার্সিটির এক সিনিয়র ভাইয়াকে ফোন দিলাম। উনি এখানেই জব করেন। উনি নিয়ে গেলেন আরের সিনিয়র আপুর কাছে। উনিও আমার ইউনিভার্সিটি এবং ফ্যাকাল্টির সিনিয়র আপু। তিনি নিয়ে গেলেন এইচ.আর. হেডের কাছে। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য তিনিও আমার ইউনিভার্সিটির সিনিয়র। আমার বাপের বয়সী অবশ্য। তবে সেই লেভেলের স্মার্ট।
প্রথম কথাতেই আমাকে বললেন, "হেই ইয়্যং ম্যান, দেখতে তো দেখা যায় বুদ্ধিজীবীদের মতো, তো কনফিডেন্স এতো কম কেনো? আমাকে দেখো, তোমার ডবলের চেয়েও বেশী বয়স। কত্তো কনফিডেন্স!
স্যারের কথা শুনে আবেগে আপ্লুত হয়ে চোখটা একটু বন্ধ করতেই চোখের সামনে মুনীর চৌধুরী, আলতাফ মাহমুদ, আনোয়ার পাশার সাদাকালো ছবির পাশে নিজের চেহারাটাও দেখতে পেলাম। দ্রুতই বাস্তবতাই ফিরলাম।
তারপর আপুর সাথে কথা বলছিলাম। উনি দিক-নির্দেশনাতেই আমাকে কাজ করতে হবে। আমার বস। জিজ্ঞেস করলাম, "আপনি কোন ব্যাচের?"
গেস করতে বললেন।
বললাম "টুয়েল্ভ অথবা থার্টিন।"
ব্যাস, এতেই কাজ হয়ে গেলো।
উনি এখন জনে জনে বলে বেড়ান যে আমি উনাকে থার্টিন ব্যাচ ভেবেছি।
তারপর বললেন, "শোন, আমার বচ্চা ক্লাস ফাইভে পড়ে। আমি থার্ড ব্যাচ। তুমি আমার বয়স দশ বছর কম ভেবেছো। খুশী হয়েছি অবশ্য।"
উনি রকজ্ আমি শকজ্।
তবে বুঝতে দিলাম না। জিজ্ঞেস করলাম, "আপনি কিভাবে শিওর হলেন আমি আপনাকে পাম দিয়ে মিথ্যা কথা বলিনি?"
"তাই নাকি? রাগ করবো কিন্তু।"
"না, না, আপু। আপনাকে দেখে সত্যিই বোঝা যায় না যে আপনি থার্ড ব্যাচের।"
যাক বসও খুশী আমিও খুশী।
দেখি নেক্স্ট দিন কি হয়।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৬

ইফতেখার রাজু বলেছেন: হাফ ভাড়ার বিষয়টা কেমন জানি হয়েছে। তা ছাড়া বাস সহকারি আপনাকে স্যার বলেছে এটা বিশ্বাসযোগ্য সত্য নয়। এরা যে বেয়াদব কোর্ট-টাই ওদের কাছে কোনো অর্থ বহন করে না। হুদাই ঝামেলা পাকায়।

২| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১০

মাহবুবুল আজাদ বলেছেন: প্রথম দিক কার অভিজ্ঞতা বেশ দারুণ, এমনি করে বাকি সময়টা ভাল ভাবে কাটান, শুভ কামনা রইল।

৩| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৮

হাবীব কাইউম বলেছেন: আমাদের মতো গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এবং পাতলা পোশাকের দেশে সুট-বুট আসলেই বাইরের জন্য না। আপনার জন্য পরামর্শ হলো টাই অফিসে অথবা পকেটে রাখবেন। পারলে ব্লেজারও।

৪| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪৮

মৈত্রী বলেছেন: হারামজাদা, ৫০ হাজার টাকা বেতন পাস কিন্তু দিস ছাত্র ভাড়া X(

৫| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৩১

সুমন কর বলেছেন: অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.