![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বড় হয়ে উঠার গল্পটা অনেক সময় তৃপ্তিকর আবার মাঝেমাঝে পীড়াদায়ক খুব।
ছোটবেলায় জ্বর, সর্দি হলে আব্বা ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতেন। ডাক্তার জিভ আর চোখ দেখে ঔষধ দিয়ে বিদায় দিতেন। আর বড় মানুষদের প্রেসার চেক করতেন। প্রেসার মাপার ওই বিশেষ মেশিনটার উপর আমার সবসময় একটা আকর্ষণ ছিলো। ভাবতাম কবে বড় হব, কবে আমারও প্রেসার মাপবে।
রাস্তায় বের হলে আব্বাকে লোকজন আপনি আর আমাকে বাবু, তুমি বলে সম্বোধন করতো। ভাবতাম আমাকেও কবে লোকজন আপনি আপনি বলে ডাকবে।
মানিব্যাগ ব্যবহারে আমার ছিলো তীব্র আকাঙ্ক্ষা কিন্তু মানিই তো নাই মানিব্যাগ দিয়ে কি করবো?
ভাবতাম কবে মাথা ব্যাথা হবে, চোখের ডাক্তার দেখাবো, চশমা দেবে, চোখে চশমা দিয়ে মেধাবী একটা ভাব নিয়ে ঘুরে বেড়াবো।
বড় আপুরা যখন পড়তো শরৎচন্দ্র কিংবা হুমায়ূন আহমেদ তখন আমার হাতে বড়জোড় ঈশপের গল্প বা জাপানি রূপকথা। বড়দের বই লুকিয়ে লুকিয়ে কখনো ধরলেও পড়ার সাহসটা হয়নি।
পাশের বাসার বড় ভাই সকাল ১০টা পর্যন্ত ঘুমালেও কেউ কিছু বলতো না আর আমার স্কুলইতো সকাল ৮টায়।
বাসার নিয়ম ছিলো মাগরিবের আযানের আগে ফিরতে হবে। তাই ফিরতাম আর রাস্তার মোড়ে দাড়িয়ে থাকা বড় ভাইদের হিংসার চোখে তাকাতাম।
বিস্কিট বা চানাচুরের বয়ামের আশেপাশে যাওয়া আমার জন্য কারফিউ ছিলো।
খুব ইচ্ছা হত বাসার টিভি বা জানালার পর্দাটা আমার পছন্দ মত কেনা হোক কিন্তু এসব কিনতে যাওয়ার সময় কান্নাকাটি করেও মার্কেটে যওয়ার অনুমতি মিলতো না।
মামাতো ভাইয়ের বিয়ে। লুকিয়ে লুকিয়ে হিসাব করতাম ভাইয়া আমার চেয়ে কত বছরের বড়।
এখন ডাক্তার দেখালে আমারও প্রেসার মাপা হয়। ডাক্তার লো প্রেসার দেখে পরামর্শ দেন ভালো ভালো খেতে। ইউনিভার্সিটির প্রফেসররাও আপনি ডাকে। মানিব্যাগ ভর্তি থাকে টাকা, এটিএম কার্ড, আইডি কার্ড।
চোখে থাকে ভারী গ্লাসের চশমা। পাওয়ার দেখে ডাক্তারও অবাক হয়। এখন আমারও ল্যাপটপ ভরা শরৎচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথের ই-বুক। আমিও সকালে না খেয়ে দুপুর পর্যন্ত ঘুমাই। সন্ধ্যার পর আড্ডা দিতে বের হই। বাসার সব বিস্কিট চানাচুর খেয়ে ফেললেও কেউ কিছু বলে না। আমার হাতেই এখন টাকা দিয়ে বলে যা তো একটা ফ্রীজ কিনে নিয়ে আয়। বিয়ের বয়সটাও হয়ে গেছে। আইনত বিয়ে করতে নেই কোন বাধা।
মাঝেমাঝে মনে হয় অনেক বড় হয়ে গেছি।কিন্তু, সত্তিই কি অনেক বড় হয়ে গেছি? সত্তিই কি বড় হওয়াতে অনেক আনন্দ?
এখনোও বুঝে উঠতে পারিনা।
২| ১২ ই মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০৭
মুসাফির নামা বলেছেন: সময়ের দড়ি খান যদি কেটে দিতে পারতাম
তবে বুঝি চিরকাল সে বালকই থাকতাম।
নারে ভাই ঐ জীবটাই মজার
৩| ১২ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:৩৬
রাশেদ রাহাত বলেছেন: ছোডুবেলারে বড়ই মিসুই।
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০৪
আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: মানুষ ছোটও নয়, বড়ও নয়। যেহেতু হকিং-এর 'ব্রিফ হিস্টোরি অফ টাইম' বলছে আসলে সময় বলে কিছু নেই, সময় মানুষের তৈরি, তাই মানুষের এই ছোট বড়র ধারণাও সময়ের সাথে সম্পর্কিত। সময়ের ধারণা বাদ দিলে ছোট বড়র ধারণাও থাকে না।
ভালো লিখেছেন। ধন্যবাদ ভাই রিয়াদ আল সাহাফ।