নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যা দেখেও না দেখার ভান করি, আজ থেকে চলুন তাই দেখি।

রিয়াদ আল সাহাফ

রিয়াদ আল সাহাফ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সুখ-অসুখ

০২ রা অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:৩৩

ঘুম ভাঙতেই নিজেকে সম্পূর্ণ অচেনা এক জায়গায় আবিষ্কার করলাম। চারদিকে একটু ঝাপসাও মনে হচ্ছে। এর কারন অবশ্য চোখে চশমা নেই বলে। হাতে শিরশিরে অনুভূতি। ভালো করে তাকিয়ে দেখি স্যালাইন চলছে। ততক্ষণে বুঝে গেছি এটা একটা সরকারি হাসপাতাল। চারদিক রুগীতে ভর্তি। আমার মনে পড়লো কয়েকদিন ধরে প্রচণ্ড জ্বড়ে ভুগছিলাম। বাসার পাশের ডিসপেনসারি থেকে প্রায় সব ওষুধ খেয়েও ভালো হচ্ছিলো না। খুব মাথাব্যাথা করছিলো। অপলাকে ফোন করে জানিয়েছিলাম। এরপর আর কিছু মনে নেই।

আজব ব্যাপার, বাসায় শুয়ে ছিলাম, তারপর কী হলো? এখানে কে আনলো? তবে ভয়াবহ ব্যাপার হলো, সেদিন আমার পরনে লাল রঙের একটা টি-শার্ট ছিলো। গায়ে এখন যেটা আছে সেটা সাদা রঙের। ড্রেস পাল্টে দিলো কে? সেদিন কোন প্যান্ট পরেছিলাম, কিছুতেই মনে পড়ছে না। সেটাও কি কেউ পাল্টে দিয়েছে? ভয়ংকর ব্যাপার! হঠাৎ অপলার আওয়াজ পেলাম।

: কী ব্যাপার, জ্ঞান ফিরলো?
-- বলছি। আগে চশমাটা দাও।

অপলা আমার দিকে চশমাটা এগিয়ে দিলো। চশমাটা পরতে পরতে বললাম,

-- গুড মর্নিং।
: গুড মর্নিং না ছাই। রাত তিনটা বাজে।
-- বলো কী! তিনটা!
: তোমার কী আর সময়ের হিসাব আছে? দুদিন ধরে তো অজ্ঞান হয়েই ছিলে।

এবার আমি আরেকটু অবাক হলাম। সেদিন রাতে জ্বর নিয়ে ঘুমাতে গিয়েছি মনে আছে। এরমধ্যেই দুদিন চলে গেলো! আল্লাহই ভালো জানেন যে, কোন রোগ বাঁধিয়েছি। অপলার দিকে তাকিয়ে বললাম,

-- তাহলে তো একরকম মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এলাম। কী বলো!
: একরকম তাই বলতে পারো।
-- তা আজরাঈলের সাথে তো তোমার ভালোই পাঞ্জা লড়তে হলো মনে হচ্ছে। তোমার চেহারাও তো যুদ্ধফেরত সৈনিকের মতো বিধ্বস্ত হয়ে গেছে।
: হোক, সমস্যা নাই। আমি তো ভেবেছিলাম তোমার জ্ঞান আর ফিরবেই না। যা ভয় পেয়েছিলাম।
-- জ্ঞান ফিরেছে বলে কি মন খারাপ হলো? ইশ! আমার জ্ঞান না ফিরলে কিন্তু তুমি আরেকটা প্রেম করতে পারতে।
: তোমার তো শুধু এসব চিন্তা। তোমার সাথে প্রেম করে আমার প্রেমের শখ মিটে গেছে। আরেকটা করার শখ থাকলে তোমাকে হাসপাতালেই আনতাম না। আজরাঈলের সাথে তোমাকে নিয়ে টানাটানিও করতাম না।
-- দুদিন কী একলাই টানাটানি করলে নাকি অন্য কেউ ছিলো।
: আর কে থাকবে? প্রেম কি আরোও দুয়েকটা করো নাকি?
-- সে সৌভাগ্য কি আমার আছে?
: খুব শখ, না?
-- না। আমারো তোমার সাথে প্রেম করে শখ মিটে গেছে। তো আজরাঈলের সাথে আমার কী ধরে টানাটানি করলে? হাত নাকি পা?
: তোমার মাথা।
-- মাথা ধরে কেউ টানে! সেজন্যই তো ঘাড়ে ব্যাথা করছে।

একথা শুনেই অপলা ব্যস্ত হয়ে উঠলো। বললো,

: সত্যিই ঘাড়ে ব্যাথা! কী বেশি? দাড়াও নার্সের সাথে কথা বলে আসি। আর কোনো সমস্যা আছে?
-- খুব ক্ষুধাও লেগেছে।
: দাড়াও আসছি।

অপলা আমার কপালে হাত দিয়ে দেখলো জ্বর আছে কিনা। তারপর রুম থেকে বের হয়ে চলে গেলো। ওকে ছাড়া আমার কেমন জানি একা একা লাগছে। আমি ওর চলে যাওয়া রাস্তায় তাকিয়ে আসার অপেক্ষা করছি। অপলা ফিরলো বেশ কিছুক্ষন পর। কতক্ষন হবে? কয়েক মিনিট হয়তো। কিন্তু আমার কাছে মনে হচ্ছে কয়েক ঘন্টা। আসলে হাসপাতালের রুগীরা একটু অভিমানী হয়। কে দেখতে এলো, কে এলো না, কে খোজ করলো, কে করলো না, এসব নিয়ে খুব অভিমান হয় তাদের। হয়তো সেজন্যই অপলাকে এই অল্প কয়েক মিনিটেই খুব মিস করছিলাম। হাতে একটা প্যাকেট নিয়ে অপলা আমার পাশে এসে দাড়ালো। আশেপাশের সবাই ঘুমাচ্ছে। তাই আমরা খুব আস্তে আস্তে কথা বলছি।

-- এতক্ষন লাগলো কেন?
: তোমার জন্য ফল আর ছুড়ি আনতে নিচে গিয়েছিলাম।
-- ছুড়ি দিয়ে কী করবা? ডাক্তার কী তোমাকে অপারেশন করতে বললো নাকি?
: অপারেশন ভয় পাও?
-- তুমি করলে ভয় পাবো না? তুমি তো বাংলা সাহিত্যের ছাত্রী।
: তো কি? আমার ব্যাকগ্রাউন্ড সাইন্স। বায়োলজিতে ভালো ছিলাম। স্কুল-কলেজে ব্যাঙ কেঁটে, সেলাই করে ছেড়ে দিতাম। মানুষ আর ব্যাঙের হার্ট একরকম। সমস্যা হবে না।
-- তাহলে আল্লাহু আকবার বলে কেঁটে ফেলো। তুমি তো বলো আমার হার্ট নাই। কেঁটে নিজ চোখে দেখো, আছে কিনা। তবে পরিমানমতো ক্লোরোফর্ম দিয়ো। আমাদের স্কুলের বায়োলজি স্যার যতোবার ব্যাঙ কাঁটতে যেতো, ততবারই একটু বেশি ক্লোরোফর্ম দিয়ে দিতো। সবগুলো ব্যাঙেরই অকাল মৃত্যু হয়েছে। ইন্নাইলাহি ওয়াইন্নাইলাহি রাজিউন। ব্যাঙগুলো খুব ভালো ছিলো।
: থাক তোমাকে এবার ক্ষমা করলাম। আগে একটা আপেল কেঁটে প্র্যাকটিস্ করে নেই।

অপলা তার হাতের প্যাকেট থেকে আপেল বের করে ধুয়ে কাঁটা শুরু করলো। আপেল কিনে আনতে হলো কেনো? রুগীদের তো ফলের দোকান হয়ে যায়। পরিচিত সবাই আপেল, আঙ্গুর, মাল্টা, কমলা, হরলিক্স নিয়ে দেখতে আসার কথা। সেসব আবার দোকানে বিক্রি করেও অনেকে কোটিপতি হয়েছে শুনেছি। আমার ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হবেই। সবই কপাল। আমিও স্বপ্ন দেখতাম কোনোদিন অসুখ হলে সবাই ফল নিয়ে দেখতে আসবে। সুস্থ হয়ে পাড়ার মোড়ে একটা ফলের দোকান দিবো। রমরমা ব্যবসায়। অবশ্য আমাকে কেউ দেখতে আসার কথাও না। আমার পরিচিত লোক অনেক, তবে শুভাকাঙ্ক্ষী কম। পরিচিত বলতে মেস মেম্বার, পাড়ার চায়ের দোকানদার, লন্ড্রি বয়, দুয়েকজন রিকসাওয়ালা এরাই। এরা কেউ আমাকে দুয়েকদিন না দেখলে খোজ নিতে নিতে হাসপাতাল চলে আসবে, সেটা প্রত্যাশা করিনা। অপলা বেডেই আমার পাশে এক পা ঝুলিয়ে বসে আছে। বসে বসে নিঃশব্দে আপেল কাঁটছে। আমি ওকে বললাম,

-- নিচ থেকে গিয়ে ফল আনতে হলো? আমাকে কেউ আপেল, কমলা, পাউরুটি, হরলিক্স নিয়ে দেখতে আসেনি?
: তোমার এক রুমমেট এসেছিলো কিছু ফলটল নিয়ে। আর কেউ আসেনি।
-- দেখেছো আমার পোড়া কপাল? মানুষের অসুখ হলে দর্শনার্থীদের লাইন লেগে যায়। পুলিশ দিয়ে পিটিয়ে দর্শনার্থী ঠেকাতে হয়। ফলমূল দিয়ে বেডের নিচটা ভরে যায়। রুগীর চৌদ্দ গুষ্ঠি চৌদ্দ মাস ভরা সেসব খেয়ে তরতাজা হয়। আর আমাকে কেউ দেখতেই এলো না।
: এতো মানুষ দিয়ে কী করবা? তোমার রুমমেট তো এসেছিলো। আর আমি তো আছিই।
-- তুমি থেকে তো লাভ নাই। তুমি তো আমার ফল সব খেয়ে শেষ করে দিবা।
: ধুর। তোমার খালি বাজে কথা।

অপলা আমার দিকে পিস পিস করে কাঁটা আপেলগুলো এগিয়ে দিলো।

: নিজ হাতে খেতে পারবা?
-- যদি না পারি, তাহলে কি খাইয়ে দিবা?
: এতোগুলা লোকের সামনে, তোমাকে মুখে তুলে খাইয়ে দিবো! তোমার লজ্জা-শরম নাই?
-- দুদিন দুরাত তুমি আমার সাথে আছো। আমার জ্ঞান ছিলো না। আমার টি-শার্ট চেঞ্জ করে দিয়েছো। প্যান্ট পাল্টে দিয়েছো কিনা মনে পড়ছে না। আমাকে একলা অসহায় পেয়ে আর কী কী করেছো আল্লাহ্ জানে। তোমার কাছে আবার কিসের লজ্জা? বাই দ্য ওয়ে, এখন রাত, আশেপাশে সবাই ঘুমে। তুমি নিশ্চিন্তে পতিসেবা করতে পারো।
: ইশ! আসছে আমার পতি! হাসপাতালে এসেও তোমার ঢং কমলো না!

অপলা আমার মাথার পেছনে ঠাস করে একটা চড় মেরে প্লেট নিয়ে, আমার পাশে এসে বসলো। আমি আধ-শোয়া হয়ে বসে আছি। ইচ্ছা করলেই নিজহাতে খেতে পারি, কিন্তু ইচ্ছা করছে না। এই মেয়েটা আমাকে বহুত জ্বালায়। শপিংয়ে গেলে আমাকে সাথে নিয়ে যেতে হবে, কাঁচাবাজারেও আমার যেতে হবে, সকালে জগিং করতে ইচ্ছা হলে আমাকেই যেতে হবে, বিকালে হাটতে ইচ্ছা হলে আমাকে যেতে হবে, রেস্টুরেন্টে খেতে গেলে আমার যাওয়া চাই। মোটকথা সবকিছুতেই তার আমাকে লাগবে। এজন্য পরিচিত কয়েকজন আমাদের আড়ালে আমাকে নিয়ে হাসাহাসিও করে। অসুস্থ হয়েছি এই সুযোগে এবার ওকে একটু জ্বালিয়ে নেই।

অপলা আমার পাশে এসে বসলো। সে একটা একটা আপেলের টুকরা আমার মুখের কাছে ধরছে, আমি মাছের মতো টোপ গিলছি আর প্রতিবার ওর হাতে কামড় দেয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করছি।। সে ভেবেছে আমি হয়তো একটু বেশিই অসুস্থ যে নিজহাতে খেতে পারছি না। সে মমতামাখা চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। বললো,

: তোমার কি খেতে কষ্ট হচ্ছে?
-- না।
: হাতে কি ব্যাথা?
- কই, নাতো।
: তো নিজহাতে খেতে পারো না! খালি আমাকে খাটানোর ধান্ধা।

আমি নিজহাতে খাওয়া শুরু করলাম। অপলা আবার একটু বারান্দার দিকে এগুলো। খেতে খেতে আমি চারপাশে তাকালাম। বিশাল বড় ওয়ার্ড। অসংখ্য রুগী, এ্যাটেনডেন্ট। গেটের দিকে একটা টিউবলাইট জ্বলছে। বাকি সব লাইট অফ। বেশিরভাগ লোক ঘুমাচ্ছে। দুয়েকজনের নাকডাকা শব্দ বাদে মৃদু আলোয় পুরো রুমটা নিস্তব্ধ। দেখি মধ্যবয়স্ক এক ভদ্রলোক বিছানা ছেড়ে উঠলেন। প্রথমে ভাবলাম হয়তো বাথরুমে যাবে। পরে দেখি আমার দিকে এগিয়ে আসছেন। তিনি বললেন, "বাবা, আপনার জ্ঞান ফিরেছে তাহলে?" আমি বোকার মতো একটু হেঁসে বললাম,

-- জ্বী
: আপনাকে নিয়ে আমরা সবাই টেনশনে ছিলাম।
-- এইতো আঙ্কেল। এখন মোটামুটি ভালো আছি। টেনশন শেষ।
: অপলা মেয়েটা আপনার কী হয়? আপনার স্ত্রী?

বয়স্ক কোনো লোকের মুখে এই প্রশ্ন আজই প্রথম শুনলাম। ভাবলাম, আমাকে দেখে কি তাহলে বিবাহিত, বাচ্চাকাচ্চার বাপের মতো দেখা যায়? যাইহোক, মুরুব্বী একজন মানুষের এরকম প্রশ্নের উত্তরে গার্লফ্রেন্ড বা প্রেমিকা বলা কতোটা উচিৎ, অদৌ উচিৎ কিনা ভাবতে ভাবতে হ্যা বলে দিলাম। তিনি বললেন,

: নতুন বিয়ে করেছেন, মনে হয়?
-- জ্বী।
: মেয়েটা এতো কষ্ট করতে পারে! গত দুদিন থেকে বললাম, মাগো, তুমি একটু ঘুমাও আমরা অনেকেই আছি। কিছু হলে তোমাকে ডেকে দিবো। একটাবারের জন্যও চোখের পাতা এক করলো না। সারারাত আপনার পাশে বসে বসে কান্নাকাটি করেছে।
-- ও আসলে ঘাবড়ে গিয়েছিলো। আমার আসলে অসুখ-বিসুখ সচরাচর হয় না। এজন্য। আচ্ছা, এবার ওকে ঘুমাতে বলছি।
: হ্যা, ওকে একটু ঘুমাতে বলবেন। রাত জেগে জেগে সেও যদি অসুস্থ হয়ে যায়, তাহলে তার সেবা কে করবে, বলেন তো?

আমি সুন্দর করে ঘাড় নাড়লাম। আঙ্কেল চলে গেলেন বাথরুমের দিকে। এবার আমার একটু অপরাধ-বোধ হচ্ছে। প্রেমিকাকে মিথ্যা করে বিবাহিত স্ত্রী বলেছি বলে নয়। ওর দিকে আমি একবারও তাকাইনি বলে। একথাটা আরোও আগেই আমারই একবার ভাবা উচিৎ ছিলো। দেখলাম অপলা হাত-মুখ ধুয়ে আমার দিকে আসছে। তার চলা-ফেরা, কথা-বার্তা, আচার-আচরণে কোনো কান্তি নেই। বোঝা যায় না যে সে গত দুদিন-দুরাত না ঘুমিয়ে কাঁটিয়ে দিয়েছে। কিন্তু চোখের দিকে তাকালেই তার সব ক্লান্তি ধরা পড়ে। ফ্যাশন সচেতন মেয়েটার চোখের নিচে কালি পড়েছে, মুখটা কালো হয়ে ছোট হয়ে গেছে, উসকো-খুশকো চুলই সব বলে দেয় কতোটা ধকল সে পোহাচ্ছে গত দুদিন ধরে।।

অপলার হাত ধরে ওকে বিছানায় বসালাম। বললাম,

-- তুমি নাকি গত দুদিন খুব কান্নাকাটি করেছো?
: কে বললো?
-- যেই বলুক। করেছো?
: তোমার জন্য কান্নাকাটি করতে আমার ঠেকা পড়েছে? কে বলে এসব আবোল-তাবোল কথা?
-- আচ্ছা, আবোল-তাবোল হোক আর যা-ই হোক, এবার একটু ঘুমাও তো।
: তুমি কী করবা?
-- আমি তো অনেক ঘুমালাম। একটু বসে থাকি। আমার ঘুম আসবে না। তুমি ঘুমাও।
: তাহলে তোমার কোনো সমস্যা হলে আমাকে ডাক দিয়ো কিন্তু।
-- আচ্ছা।
: কোথায় ঘুমাবো? তুমি একটু সরে বসো।

আমি একটু সরে বসলাম। অপলা আর কোনো কথা বললো না। সে বিছানায় উঠেই বালিশের কোণায় মাথা রেখে ওড়না দিয়ে সারা শরীর ঢেকে, গুটিশুটি হয়ে শুয়ে পড়লো। আমি ওর মাথায় হাত রাখলাম, আস্তে আস্তে করে ওর চুলে বিলি কেঁটে দিচ্ছি আর ভাবছি, এটাই মনে হয় পৃথিবীর সেরা প্রেম। কতো মানুষকে দেখেছি প্রেম করতে, এরা একজন আরেকজনকে যতোটা ভালোবাসে, তারচেয়ে বেশি প্রকাশ করে। একজন আরেকজনের জন্য যতোটা করে, তারচেয়ে বেশি দেখায়। কিন্তু কেউ কেউ ভিন্ন হয়। এরা অন্যজনের জন্য মন-প্রাণ সব উজাড় করে দেয়, কিন্তু বুঝতে দিতে চায়না। বুঝে গেলেও স্বীকার করতে চায়না। এরা যতোটা উদাসীনতা দেখায়, ততোটাই ত্যাগ করতে জানে, করতে পারে। এরা বাহিরে যতোটা কঠিন রূপ প্রকাশ করে, ভিতরে ভিতরে এদের মন ততোটাই নরম। এই ভালোবাসাটা কখনো দেখা যায় না, প্রকাশ পায় না, শুধু একমনে অনুভব করা যায়। অক্সিজেনের মতো এ ভালোবাসা সবসময় ঘিরে থাকে বলে এর অস্তিত্ব সচরাচর টের পাওয়া যায় না, তবে হঠাৎ কোনো কারনে অক্সিজেনের ঘাঁটতি পড়লে বেঁচে থাকাই দায় হয়ে পড়ে।

কখন ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম খেয়াল নেই। সকালের দিকে ঘুম ভাঙলো। উঠে দেখি অপলা পাশে বসে চুল আচড়াচ্ছে। তার ভেজা চুল থেকে পানি ছিটে আসছে আমার চোখে-মুখে। আজ ওকে খুব ফ্রেশ ফ্রেশ লাগছে। গত কয়েকদিনে যা ধকল গিয়েছে, হয়তো গোসল করার সময়টাও পায়নি। ওর স্নিগ্ধ চেহারাটা দেখে পানি ছিটিয়ে ঘুম ভাঙ্গানোর অপরাধ ক্ষমা করাই যায়। বললাম,

-- এই তোমাকে না নতুন বউয়ের মতো লাগছে?
: কেনো?
-- এই যে নতুন বউয়েরা যেরকম সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে, গোসল করে, চুল শুকায়, তাই।
: কেন? পুরান বউয়েরা সকালে উঠে গোসল করে না?
-- হয়তো করে। কিন্তু পুরান বউয়ের খবর তো কেউ রাখে না। টিভিতে তো পুরান বউয়ের সকাল দেখায় না।
: বহুত জামাই-বউ, জামাই-বউ কথাবার্তা হইছে। এবার ব্রাশে পেস্ট নিয়ে ব্রাশ করে আসো। গত দুইদিন ব্রাশ করা হয়নি। মুখে গন্ধ হয়ে গেছে। একলা যেতে পারবা নাকি আমি সাথে আসবো?
-- তুমি টের পেলে কিভাবে?
: জানি না। যাও তো।
-- আমি তো ভাবলাম... থাক বাদ দাও। আসল কথা হলো, তুমি মোটেও রোমান্টিক না।
: এটা কি রোমান্স করার জায়গা?
-- মুখে তো ঠিকই বলছো, রোমান্স করার জায়গা না। কিন্তু সারারাত তো জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়েছো। আমার গা-হাত-পা ব্যাথা হয়ে গেছে। এতো টাইট করে কেউ ধরে?
: তুমি বাথরুমে যাবা নাকি স্ট্যাপলার দিয়ে তোমার মুখে পিন মেরে দিবো?

আমি আর কথা বাড়ালাম না। অপলা এককথার মেয়ে। আরেকটা কথা বললে দেখা যাবে, ঠিকই নার্সের কাছ থেকে স্ট্যাপলার এনে জাপটে ধরে মুখে পিন মেরে দিবে। ব্রাশ হাতে নিয়ে আমি বাথরুমের দিকে ছুটলাম। এসে দেখি সে নাস্তা রেডি করে বসে আছে। নাস্তা খেতে খেতে অপলা বললো,

: কাল রাতে কি সত্যিই আমি তোমাকে জড়িয়ে ধরেছিলাম?
-- হুম। খুব টাইট করে।

লজ্জা পাবার মেয়ে অপলা নয়। তবু সে একটু লজ্জা পেলো। বললো,

: আসলে কোলবালিশ নিয়ে ঘুমিয়ে অভ্যাস তো।
-- সমস্যা নাই। আমার বেডমেটেরও জড়িয়ে ধরে ঘুমানোর অভ্যাস। আমি অভ্যস্ত। সেও প্রতিদিন আমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমায়। তবে তোমার মতো এতো জোরে ধরে না। তবে এখন থেকে তুমি একটু আস্তে কোলবালিশ জড়িয়ে ধরো। নাহলে কোলবালিশ ছিড়ে তুলা বেরিয়ে যেতে পারে।
: তোমার তো একটা টপিক পেলেই হলো, প্যাচাল শুরু করে দাও। এবার খাও তো।

হুম দ্রুত নাস্তা শেষ করা দরকার। তারপর নার্স এসে একটা ইঞ্জেকশন দিয়ে যাবে। একঘন্টা রেস্ট নেয়ার পর কতগুলো টেস্ট করাতে হবে। আরোও হাবিজাবি কতো কাজ বাকি আছে। তারমানে হাসপাতালের নিচতলা থেকে উপরতলা পর্যন্ত কয়েক দফা দৌড়াদৌড়ি করতে হবে মনে হচ্ছে।

নিজেকে এতক্ষন সুস্থই মনে হচ্ছিলো। অল্প অল্প জ্বর অবশ্য ছিলো। তবে অসুস্থতার মাত্রাটা টের পেলাম ইঞ্জেকশন দেবার পর। মনে হচ্ছে আমার সারা শরীরে বিদ্যুৎ খেলে বেড়াচ্ছে। হাত-পা শক্ত হয়ে যাচ্ছে, গায়ের তাপমাত্রা আবার বেড়ে যাচ্ছে, কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলছি।

ডাক্তার বললেন, পাওয়ারফুল ওষুধ। এমন হবেই। চিন্তা করার কিছু নেই। কিছুক্ষণ পর আবার ঠিক হয়ে যাবে। অপলা শুধু একবার আমাকে জিজ্ঞেস করলো বেশি খারাপ লাগছে কিনা। মুখ ফুটে কিছু বলতে পারলাম না, শুধু মাথা নেড়ে সায় দিলাম। তারপর হয়তো জ্ঞান হারালাম আবার।

কিছুক্ষণ পরেই অবশ্য সব ঠিক হয়ে গেলো। ঘুম থেকে উঠার মতোই স্বাভাবিক ভাবে উঠলাম। গায়ে অল্প জ্বর ছিলো। নার্স এসে বললেন, নিচে গিয়ে টেস্টগুলো করিয়ে ফেলতে। অপলা আর আমি নিচে আসছি। অপলা বললো,

: ইঞ্জেকশন দেয়ার পর কি তোমার খুব কষ্ট হচ্ছিলো?
-- হুম।
: একটু সহ্য করো।
-- আরোও দিতে হবে নাকি?
: সর্বমোট চারটা। তিনটা অলরেডি হয়ে গেছে। আর একটা বাকি।
-- বল কি? ওই নার্স আরেকবার ইঞ্জেকশন নিয়ে এসে আমার তো উঠে দৌড় দিতে হবে। নাহলে বাচ্চাদের মতো কান্নাকাটি করতে হবে। কান্না করার শক্তি অবশ্য গায়ে থাকবে না। উঠে দৌড় দেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
: তবু তো ভাগ্য ভালো যে জ্ঞান না থাকা অবস্থায় দুটো ইঞ্জেকশন দেয়া হয়ে গেছে।

অপলার সাথে কথা বলার ফাঁকে অবশ্য সব টেস্ট করানো শেষ হলো। বিলের কাগজ দেখে এবার আমার আক্কেল গুড়ুম অবস্থা। যা বিল অলরেডি এসেছে আমাকে বিক্রি করে দিলেও এতো টাকা হবে না। অপলাকে বললাম,

-- আচ্ছা ভালো কথা, আমরা কয়তলায় যেনো আছি?
: তিনতলায়। কেনো?
-- হাসপাতালের বিল তো বহুত হয়ে গেছে। জানালা দিয়ে লাফিয়ে পালানো ছাড়া তো উপায় নেই।
: তুমি লাফ দিয়ো। আমি পারবো না।
-- তাহলে দুইজন ধরা খাওয়ার চেয়ে একজন ধরা পড়া ভালো। তুমি হাসপাতালের থালা-বাসন ধুইয়ো, আমি পালাবো।
: হয়েছে, পালাতে হবে না। টাকা ম্যানেজ করেছি কোনো রকমে। হাসপাতাল থেকে ফিরে সব পাই-টু-পাই শোধ করবা। ধার করতে হয়েছে।

এরপর আমরা ওয়ার্ডে ফিরলাম। ততক্ষণে দুপুরের খাবার সময় হয়েছে। গোসল করে খাবার খেলাম। খেয়ে-দেয়ে আমি একটা ঘুম দিলাম। বিকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি, অপলা নিচ থেকে ওষুধ আর কিছু ফল কিনে এনেছে। একটু গল্প করলাম, একটু খাওয়া-দাওয়া করলাম। অপলা আরেকটু খাবার জন্য জোড় করলো, আমি বাচ্চাদের মতো ডিসটার্ব করলাম ওকে। মুখে রুচি ছিলো না। ঠিকমতো খেতে পারলাম না।

সন্ধ্যাটা আমি শুয়ে শুয়েই কাটালাম। অপলার বিশ্রাম নেই, ক্লান্তিও নেই। সে ডাক্তার-নার্সদের সাথে কথা বলছে, টেস্টের রিপোর্ট সংগ্রহ করছে, প্রেসক্রিপশন মোতাবেক ডিসপেনসারি থেকে ওষুধ আনছে, আমার কপালে কিছুক্ষণ পরপর হাত রেখে জ্বর আছে কিনা দেখছে। আমি শুধু ওর ব্যস্ততা দেখছি আর ভাবছি,

আচ্ছা, আমি অপলাকে ভালোবাসি কেনো? সে রূপবতী, গুণবতী, বুদ্ধিমতি। সে আমাকে পাগলের মতো ভালোবাসে, আমার বিপদে পাশে থাকে, এজন্য? ওকে ভালোবাসার জন্য এরকম হাজারটা কারন দেখানো খুব সহজ। আবার উল্টোটা যদি ভাবি? সে আমাকে কেনো ভালোবাসে। আমি একটাও কারন খুজে বের করতে পারিনা।

তাহলে কি আমি খুব স্বার্থপর? ভালো না বাসার জন্য হয়তো কারন প্রয়োজন হতে পারে, ভালোবাসার জন্য এরকম কারনের প্রয়োজন কী? আজকাল যেসব কারনে প্রেম বিয়ে হয়ে থাকে; মেয়েটা সুন্দরী, ছেলেটা স্মার্ট, মেয়ের বাবার প্রচুর টাকা আছে, ছেলেটার ভালো ক্যারিয়ার। এসবে কি ভালোবাসা থাকে নাকি শুধুই স্বার্থ?

স্বার্থহীন এই মেয়েটাকে আমি গত ছয়বছর থেকে চিনি। আমাদের সম্পর্ক গত পাঁচবছর থেকে। ওকে আমি যত দেখছি, ততোই অবাক হচ্ছি। আমার আড্ডা দিতে ভালো লাগে, ঘুরতে যেতে ভালো লাগে, সিনেমা দেখতে ভালো লাগে, তাস খেলতে ভালো লাগে, নতুন মোবাইল কিনলে ভালো লাগে, ফেসবুক চালাতে ভালো লাগে, গল্পের বই পড়তে ভালো লাগে, আরোও ভালোলাগার অনেক কাজ আছে।

কিন্তু অপলার আমার সাথে থাকতে ভালো লাগে, আমার সাথে ঘুরতে গেলে ভালো লাগে, রান্না করে আমাকে খাওয়াতে ভালো লাগে, আমাকে নতুন শার্ট গিফট করতে ভালো লাগে, আমার সাথে কথা বলতে ভালো লাগে, আমার সাথে ঝগড়া করতে ভালো লাগে, এমনকি অসুখ হলে আমার সেবা করতেও তার ভালো লাগে। তার পৃথিবীতে আমি ছাড়া অন্য কিছু নেই।

আমি মেসে থাকি। এখানে সবাই যারযার জন্য ব্যস্ত। আধ খাওয়া সিগারেট ছাড়া বাকি সবকিছুর জন্য এখানে সবাই খুব স্বার্থপর। কেউ কারো খোজ রাখেনা। বড়জোড়, কি অবস্থা? জ্বর কমেছে? ওষুধ খান, ডাক্তার দেখান পর্যন্ত। আমিও ভাবলাম অল্প জ্বর, হয়তো সেড়ে যাবে তাই অপলাকে শুরুতে জানাইনি। ও আবার অল্পতেই বিরাট হুলস্থুল কান্ড বাধিয়ে দেয়। রুমে শুয়ে ছিলাম, প্যারাসিটামল জাতীয় কিছু খেয়েওছিলাম। কিন্তু, ওষুধকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে জ্বর বেড়ে গেলো। অজ্ঞান হবার একটু আগে ওকে ফোন করেছিলাম। তারপর থেকে আমার আর কিছু করার নেই। এমনকি চিন্তাও করার প্রয়োজন নেই। আমি জানি অপলা আছে। সেই সবটা সামলে নেবে। নিচ্ছেও।

অপলা আমার পাশে এসে বসলো। কপালে হাত দিয়ে জ্বর দেখলো। বললো.

: অল্প জ্বর এখনো আছে।
-- হুম।
: কী ভাবছো?
-- ভাবছি গতকাল রাতে কেমন লজ্জাকর একটা কাজ করে ফেললাম।
: কী করেছো? বিছানা ভিজিয়েছো নাকি?
-- তাহলে তো এতো লজ্জার কিছু ছিলো না। তুমি ছাড়া আর কেউ দেখতো না। যা হলো তুমি আর আমি ছাড়া বাকি সবাই দেখেছে।

অপলা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো,

: কী হয়েছে?
-- আমরা জীবনে প্রথমবার একসাথে ঘুমালাম। ভদ্রভাষায় একে ফুলশয্যা বলে। আমাদের কেউ কোনো প্রাইভেসি দিলো না। আলাদা রুম তো দূরের কথা, লাইটটাও নিভালো না। কী লজ্জা বলোতো।

গত চব্বিশঘন্টার মধ্যে দ্বিতীয়বার মাথার পেছনে ঠাস করে একটা চড় খেলাম। এমন অসুস্থ একজন মানুষকে একমাত্র অপলার মতো নির্দয় মেয়েই এমনভাবে অত্যাচার করতে পারে। সে বললো, "সারাদিন এসব উল্টাপাল্টা চিন্তা করো তো তাই আল্লাহ্ তোমার শাস্তি দিয়েছে। দেখবা একদিন তোমার উপর ঠাডা পড়তে পারে। অসম্ভব না।"

এরপর আরোও অনেক কথা হলো। একটু খুনসুটি আর আড়ালে একটু মারামারিও হলো। অনেক কাজ হলো, রাতও হলো। ওয়ার্ডের মেইন লাইটটা অফ করে দেয়া হয়েছে। মৃদু আলোর একটা লাইট জ্বলছে। আবার ইঞ্জেকশন দেবার সময় হয়েছে। আমি আবার শুয়ে পড়লাম। নার্স এসে ইঞ্জেকশন দিয়ে গেলো। গায়ের প্রতিটা রগ মনে হচ্ছে কেউ টেনে ধরছে। প্রতিটা শিরায় শিরায় ব্যাথা হচ্ছে। অপলা বললো

: খুব ব্যাথা হচ্ছে?
-- হুম।
: একটু তো হবেই। একটু সহ্য করো। এটাই শেষ। ঘুমানোর চেষ্টা করো। আমি মাথার চুলগুলো টেনে দিচ্ছি।

অপলা আমার গা ঘেষে দেয়ালে হেলান দিয়ে বসলো। সে আমার চুলের ভিতর দিয়ে আঙ্গুলে বিলি কাটছে। হঠাৎ মাথাটা নিচু করে বললো, "ঘুমিয়ে গেছো?" আমি কোনো উত্তর দিতে পারলাম না। আমার কথা বলার কোনো শক্তি ছিলো না। সে নিজের মাথাটা নিচু করে আমার কপালে ঠোঁট ছোয়ালো।

সে চুমুতে কোনো কাম ছিলো না, কোনো উত্তেজনা ছিলো না, কোনো অশ্লীলতা ছিলো না, কোনো পাপ ছিলো না; ছিলো শুধু প্রগাঢ় মমতা আর নিখাদ ভালোবাসা।

আমি গত তিনদিন থেকে হাসপাতালে ভর্তি, প্রতিদিন হাজার হাজার টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে। প্রচণ্ড জ্বরের তীব্রতায় অজ্ঞান ছিলাম দুদিন, একাএকা হাটতে কষ্ট হয়, একাএকা খেতে কষ্ট হয়, একেকটা ইঞ্জেকশন দেয়ার পর সারা গা কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে। তখন নিশ্বাস নিতে কষ্ট হয়, মনে হয় কাপড় নিংরানোর মতো কেউ আমাকে মুচড়ে সব রক্ত শুষে নিচ্ছে। চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করে কিন্তু শব্দ করার শক্তি গায়ে থাকে না। আমার কোনো বন্ধু নেই, কেউ দেখতে আসে না, কেউ ফোন দিয়ে একটা খোঁজ নেয়না। তবু এই মুহূর্তে আমার নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মনে হচ্ছে। ব্যাথাটা আছে জানি কিন্তু অনুভব করতে পারছি না।

পৃথিবীর পবিত্রতম ভালোবাসা মনে হয় গোপনে গোপনে ভালোবাসাটা। যেটা গোপন রাখার চেষ্টা করা হয়, গোপন থাকে না। কথায়, আচরণে বারবার ভালোবাসার অস্তিত্ব প্রকাশ পেয়ে যায়। আর সুন্দরতম অনুভূতি হলো এমন ভালোবাসা টের পাওয়া, চুপিচুপি অনূভব করা।

আমি ভাগ্যবান, আমি পৃথিবীর সবচাইতে সুখী মানুষ। তবুও, আমার চোখ থেকে দু'ফোটা অশ্রু গড়িয়ে পড়লো। আমার কোনো দুঃখ নেই, আমার অপলা আছে। আমি অপলার হাতটা আরেকবার আকড়ে ধরলাম।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১১:৩৪

ওমেরা বলেছেন: আপনি তো অসুস্থ এত কথা বলছেন কেন !!

০৫ ই অক্টোবর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১৭

রিয়াদ আল সাহাফ বলেছেন: কথা বলতে ভালো লাগে যে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.