![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হলুদ সাংবাদিকতা শব্দটার সাথে কম বেশী সবাই আমরা পরিচিত। তবুও সবার জানার জন্য বলছি- হলুদ সাংবাদিকতা বলতে আসলে কি বোঝায়? উইকিপিডিয়ার মতে হলুদ সাংবাদিকতা বলতে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ভিত্তিহীন রোমাঞ্চকর সংবাদ পরিবেশন বা উপস্থাপনকে বোঝায়। এ ধরনের সাংবাদিকতায় ভালমত গবেষণা বা খোঁজ-খবর না করেই দৃষ্টিগ্রাহী ও নজরকাড়া শিরোনাম দিয়ে সংবাদ পরিবেশন করা হয়। হলুদ সাংবাদিকতার মূল উদ্দেশ্য হল সাংবাদিকতার রীতিনীতি না মেনে যেভাবেই হোক পত্রিকার কাটতি বাড়ানো বা টেলিভিশন চ্যানেলের দর্শকসংখ্যা বাড়ানো। অর্থাৎ হলুদ সাংবাদিকতা মানেই ভিত্তিহীন সংবাদ পরিবেশন, দৃষ্টি আকৰ্ষণকারী শিরোনাম ব্যবহার করা, সাধারণ ঘটনাকে একটি সাংঘাতিক ঘটনা বলে প্ৰতিষ্ঠা করার চেষ্টা করা, কেলেংকারির খবর গুরুত্ব সহকারে প্ৰচার করা, অহেতুক চমক সৃষ্টি ইত্যাদি।
হলুদ সাংবাদিকতার পাঁচটি বৈশিষ্ট্য:
• সাধারণ ঘটনাকে কয়েকটি কলাম জুড়ে বড় আকারের ভয়ানক একটি শিরোনাম করা।
• ছবি আর কাল্পনিক নক্সার অপরিমিত ব্যবহার।
• ভুয়া সাক্ষাৎকার, ভুল ধারণার জন্ম দিতে পারে এমন শিরোনাম, ভুয়া বিজ্ঞানমূলক রচনা আর তথাকথিত বিশেষজ্ঞ কর্তৃক ভুল শিক্ষামূলক রচনার ব্যবহার।
• সম্পূৰ্ণ রঙিন রবিবাসরীয় সাময়িকী প্রকাশ, যার সাথে সাধারণত কমিক্স সংযুক্ত করা হয়।
• স্রোতের বিপরীতে সাঁতরানো পরাজিত নায়কদের প্ৰতি নাটকীয় সহানুভূতি।
তবে হলুদ সাংবাদিকতার সংজ্ঞায় নতুন একটি বৈশিষ্ট্য যুক্ত করা যায় তা হল একটি নির্দিষ্ট জাতি-গোষ্ঠী বা ব্যক্তিকে সুবিধা দেয়ার জন্য অন্য কোন জাতি-গোষ্ঠী বা ব্যক্তির সংবাদ প্রকাশ না করে উহ্য রাখা অথবা আংশিক প্রকাশ করা। আর এভাবে হলুদ সাংবাদিকতা করে নিজেদের পকেট ভারী করা। পার্বত্য চট্টগ্রাম সংশ্লিষ্ট সংবাদ প্রকাশে বর্তমানে দেশের প্রথম সারির কতিপয় সংবাদমাধ্যমগুলো এই নীতি অনুসরণ করছে। কয়েকটা উদাহরণ দিলে বিষয়টি আপনাদের কাছে আরো পরিস্কার হবে।
ঘটনা-১
গত ২১শে জুন ২০১৮ তারিখে, পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে দশম শ্রেণীর এক ত্রিপুরা কিশোরীকে গণধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া যায়। জানা যায় যে, ত্রিপুরা কিশোরীটি তার বন্ধু নয়নময় ত্রিপুরার সঙ্গে খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ পার্কে ঘুরতে গেলে কয়েকজন স্থাণীয় বাঙালি যুবক এসে নয়নময় ত্রিপুরাকে আটকে রেখে উক্ত কিশোরীর চোখ-মুখ বেঁধে গণধর্ষণ করে। উক্ত ঘটনাটি গত ২২শে জুন ২০১৮ তারিখে, “Indigenous girl 'gang-raped' in Khagrachhari” শিরোনামে দেশের প্রথম সারির একটি স্বণামধন্য ইংরেজী পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ঠিক এমনই আরেকটা ঘটনা ঘটে গত ২৯শে মে ২০১৮ তারিখে। খাগড়াছড়ির মহালছড়িতে একই সঙ্গে দশম শ্রেণীর তিনজন মারমা ছাত্রী ৪ জন উপজাতি যুবক কর্তৃক ধর্ষণের শিকার হয়। জানা যায় যে, মহালছড়ি উপজেলার মানিকছড়িমুখ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে উক্ত তিন মারমা ছাত্রী বসে আড্ডা দিচ্ছিল। এ সময় চারজন উপজাতি যুবক তাদেরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোর করে পার্শ্ববর্তী সেগুন বাগানে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। বর্ণিত দুটি ঘটনা একই রকম হলেও পরের ঘটনাটি কোন এক দৈব কারণে সেই স্বণামধন্য পত্রিকায় প্রকাশিত হয়নি।
ঘটনা-২
তারিখঃ ২২শে মে ২০১৮। স্থাণঃ খাগড়াছড়ি জেলা শহরের স্বনির্ভর বাজার। সেদিন দিনে দুপুরে জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্রে দুই দল উপজাতি সন্ত্রাসীর মধ্যে শতাধিক রাউন্ড গুলি বিনিময় হয়। দিনে দুপুরে একটা জেলা শহরের মাঝে গোলাগুলির মত এত বড় একটা ঘটনা ঘটলো অথচ সে বিষয়ে গুটিকয়েক পত্রিকা ছাড়া দেশের প্রথম সারির অধিকাংশ জাতীয় পত্রিকাতেই সংবাদটি প্রকাশ পায়নি। বলা বাহুল্য প্রথম ঘটনায় বর্ণিত সেই স্বণামধন্য পত্রিকাটিও এই সংবাদ এড়িয়ে গিয়েছিলো।
ঘটনা-৩
২০১৭ সালের জুন মাসের ২ তারিখে রাংগামাটি জেলার লংগদুতে সংঘটিত অগ্নিকান্ডের ঘটনায় শতাধিক বাড়ি পোড়ানোর মত ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটলেও সেখানে প্রাণহানির কোন ঘটনা ঘটেনি। অথচ দেশের প্রথম সারির একটি স্বণামধন্য বাংলা পত্রিকা গুণমালা চাকমা নামে ৭০ বছরের এক উপজাতি বৃদ্ধা আগুনে পুড়ে মারা যায় বলে দাবী করে সংবাদ প্রকাশ করে। অথচ, অগ্নিকান্ডের পরে লংগদু উপজেলা কার্যালয় কর্তৃক ক্ষয়ক্ষতির যে চুড়ান্ত তালিকা/বিবরণ তৈরী করা হয় সেখানে আগুনে পুড়ে গুণমালা চাকমার মৃত্যু সংক্রান্ত কোন তথ্য নেই। উল্লেখ্য যে, স্বণামধন্য ঐ বাংলা পত্রিকার সাংবাদিক ছিলো একজন উপজাতি জনগোষ্ঠীর।
ঘটনা-৪
গত ২০১৭ সালের ১৩ই জুন রাংগামাটি জেলাতে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। উক্ত ঘটনায় ব্যাপক প্রাণহানিসহ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা মারাত্নকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করার জন্য ১৪ জুন তারিখ থেকে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়ন বিভিন্ন স্থানে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামত/সংস্কার কাজ শুরু করে। পাশাপাশি ১৩ জুন তারিখ থেকেই সেনাবাহিনীর জওয়ানরা স্থাণীয় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য উদ্ধার তৎপরতা ও বিভিন্ন প্রকার জনকল্যাণমূলক কার্যক্রম চালাতে থাকে। সেনাবাহিনীর এরুপ মানবিক কাজের প্রশংসা করে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে ব্যাপকভাবে সংবাদ প্রকাশিত হয়। কিন্তু ১৭ জুন তারিখে দেশের সেই প্রথম সারির স্বণামধন্য বাংলা পত্রিকাটি “যেন যুদ্ধ বিধ্বস্ত জনপদ” শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করে যেখানে পাহাড় ধসের ঘটনায় রাংগামাটির দূর্যোগ পরবর্তী দূরাবস্থা, উদ্ধার তৎপরতা এবং বিধ্বস্ত সড়ক যোগাযোগ নিয়ে বলা হয়। অথচ, ঐ রিপোর্টে সেনাবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত রাস্তাঘাট সংস্কার/মেরামতসহ নানাবিধ জনকল্যাণমূলক কাজের তথ্যসমূহ উহ্য রাখা হয়। এখানে বলে রাখতে চাই যে, যেদিন সংবাদটি প্রকাশ করা হয়েছিলো সেদিনও সেনাবাহিনীর সড়ক মেরামত/সংস্কার এবং জনকল্যাণমূলক কার্যক্রম অব্যাহত ছিলো। তথ্য উহ্য রেখে পক্ষপাতদুষ্ট সংবাদ পরিবেশন কি সাংবাদিকতা পেশার নৈতিকতা বিবর্জিত নয়?
পার্বত্য চট্টগ্রাম সংশ্লিষ্ট সংবাদ প্রকাশে “হলুদ সাংবাদিকতার” এরকম হাজারো উদাহরণ আছে। পরিশেষে বলতে চাই যে, নৈতিকতা বলে সাংবাদিকতায় একটি বিষয় আছে যা না থাকলে সাংবাদিকতা আর সাংবাদিকতা থাকে না। পার্বত্য চট্টগ্রাম ইস্যুতে সেই নৈতিকতা এখন সাংবাদিতকতা পেশায় বিরল। কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে একটু নজর দিবেন কি?
২৫ শে জুন, ২০১৮ সকাল ১০:৪৭
রিফাত রিদম বলেছেন: সময় নিয়ে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
২| ২৫ শে জুন, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৫
কাইকর বলেছেন: ব্লগে স্বাগতম। শুভ ব্লগিং
২৫ শে জুন, ২০১৮ দুপুর ১:০৯
রিফাত রিদম বলেছেন: ধন্যবাদ।
৩| ২৫ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:০৯
খায়রুল আহসান বলেছেন: এখানে প্রকাশিত আপনার প্রথম পোস্টটা পড়ে গেলাম। ভাল লেগেছে।
ব্লগে সুস্বাগতম! এখানে আপনার বিচরণ দীর্ঘস্থায়ী হোক, আনন্দময় ও স্বচ্ছন্দ হোক!
হ্যাপী ব্লগিং!
২৫ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:৩১
রিফাত রিদম বলেছেন: উৎসাহ দেবার জন্য ধন্যবাদ। আপনাদের অনুপ্রেরণা আমার পথ চলার সাহস যোগাবে।
৪| ০১ লা জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১:৪৪
রাকু হাসান বলেছেন: হলুদ সাংবদিকদের জন্য কোন সত্য কোনটা মিথ্যা বলা কঠিন । এ রকম অসঙ্গতি হলে .লিখার অনুরোদ জানাচ্ছি .
৫| ১২ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১০:২১
রিফাত রিদম বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
২৫ শে জুন, ২০১৮ সকাল ১০:৩৫
লাবণ্য ২ বলেছেন: সুন্দর পোস্ট।শুভ ব্লগিং!