![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানুষ বদলে গেছে, বদলে গেছে সমাজ! বাংলার আকাশে বাতাসে আজ পরিবর্তনের ধ্বনি। কিন্তু……… বাংলা সিনেমার পরিবর্তন আর করা গেলনা।
বাংলা সিনেমার খবরাখবর কমবেশি আমরা সকলেই জানি। বর্তমান বাংলাদেশে কমার্শিয়াল ধাঁচের যেসব সিনেমা হয় সিনেমাগুলোর নাম শুনে প্রথমে আমরা আমজনতা নাক সিটকে দেই। তার কারণ একেবারে তুচ্ছ নয়। তথাকথিত সিনেমা দেখতে দেখতে এখন আমরা অনায়াসেই সিনেমার নাম শুনে কাহিনী সংক্ষেপ বলে দিতে পারি।
আমার ধারণামতে বর্তমানে বাংলাদেশে যেসব সিনেমা হচ্ছে তা কেবল পূর্বের সিনেমাগুলোর আপডেট ভার্সন। একই গল্প, ডায়লগ পূর্বের মতোই, অভিনেতা-অভিনেত্রী একই, পরিচালক একই আবার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান একই। তবুও যদি সিনেমার মেকিং আপডেট হতো সেটা দেখে মনকে সান্ত্বনা দেওয়া যায়।
তরুন কিছু নাট্য বা ফিল্ম নির্মাতা সমাজের সাথে কখনো সখনো মেলামেশা হয় আমার। গল্প প্রসঙ্গে তাদের চিন্তা চেতনা জানতে পারি। আমি লক্ষ করেছি সবাই পরিবর্তনমুখী। সবার ভাবনা তারা এমন কিছু কাজ করবে যাতে বাংলা সিনেমার তথাকথিত ধারা পরিবর্তন হয়। কিন্তু দেখা যায় তারা যখন কাজ শুরু করছে তখন তাদের সেই মানসিকতা পরিবর্তিত হয়ে যায়। তারা হয়ে ওঠে গতানুগতিক। এক কথায় সামনের নাঙ্গল যেদিকে পেছনের টা ঠিক সেই দিকটা অনুসরণ করতে চায়। দুইদিন ক্যামেরার পেছনে দাড়িয়ে সিনেমা বানানোর স্বপ্ন দেখলে তো এর থেকে বেশি কিছু আশা করা আমাদের বাতুলতা হবে।
অনেকে বলেন আমরা বাংলাদেশে সিনেমা মেক করলে এফ ডি সি আটকে দেবে। কারণ হিসেবে প্রদর্শন করেন সিনেমার আভ্যন্তরীণ সেক্সুয়াল সিন বা সিকুয়েন্স। তাদের ভাষ্যমতে ইন্ডিয়াতে সেক্সুয়াল সিন সিকুয়েন্স হরহামেশা হচ্ছে। আরে ভাই আপনাদের সেক্সুয়াল সিকুয়েন্স গুলো যদি “যৌবন আমার লাল টমেটো” টাইপের হয় তাহলে তো এফ ডি সির দোষ দিয়ে লাভ নাই। ইন্ডিয়ান সিনেমায় কখনো কি “রসে ভরা যৌবন” টাইপের সিকুয়েন্স দেখাতে পারবেন? সেখানে যেটা হয় আর্টের মধ্যেই হয়। আপনারা সেগুলোকে আর্টের রুপে নিয়ে আসেন। এফ ডি সি অনুমোদন দিতে বাধ্য।
এবার একটু আসি অন্য প্রসঙ্গে। আমরা যদি ভারতীয় বাংলা সিনেমা দেখি তাহলে দেখতে পাব ভেরিয়েশান কাকে বলে। অভিনেতা-অভিনেত্রী থেকে শুরু করে সিনেমা মেকিংয়ের পুরো ইউনিট দেখলে আপনি বুঝতে পারবেন কেন তাদের কাজটা এতো ভালো হয়। সিনেমা বানাতে হলে তো আগে সিনেমা সম্পর্কে জানতে হবে। না জেনে কাজে হাত দিলে সেটা কি কাজ হবে নাকি “ধর সাইকেল মুতে আসি” ধাঁচের সিনেমা হবে? ইন্ডিয়ান কোন পরিচালক বলেন আর অভিনেতা-অভিনেত্রী বলেন সিনেমা সম্পর্কে নুন্যতম জ্ঞান নিয়েই তারা কাজ করতে নামে। এমনকি ক্যামেরাম্যান তার ক্যামেরা পরিচালনায় নিপুন দক্ষতার পরিচয় দেয়। কামের বিনিময়ে কাজ এই প্রথা সেখানে সীমিত বা নেই বললেই চলে।
বাংলাদেশের সিনেমা উন্নয়ন নিয়ে যারা কাজ করছেন তাদের উদ্দ্যেস্যে আমার আকুল আবেদন আপনারা আপনাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করুন। সিনেমা নিয়ে পড়াশুনা করুন। সবকিছুর আগে জানেন, বোঝেন তারপর কাজ শুরু করেন দেখবেন আপনারা বা আমরা যেমনটি আশা করছি তার থেকে অনেক ভালো কাজ বাংলাদেশেই হবে।
©somewhere in net ltd.