নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার কোন দল নাই।

রবি রেহমান

The Truth Seeker

রবি রেহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধ্রুব - ১

২৪ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৮

আমার কাজ দেখে যাওয়া - আমি দেখে যাই। আগের দিনে মানুষ পত্রিকা পড়তো, টিভি দেখতো। এখন ফেসবুক আর ইউটিউব দেখে। এক একটা দিন যায় আর প্রযুক্তি নতুন নতুন চমক নিয়ে হাজির হয়। আর উদ্ভাবক সে নতুন প্রযুক্তির জন্ম দিয়েই হারিয়ে যায় না – নিকোলা টেসলা’র মত। সে তাঁর প্রযুক্তিকে ছড়িয়ে দেয় সারা পৃথিবীব্যাপী - তাঁর শুরু হয় দুর্বলের ক্ষমতায়নের মাধ্যমে, শেষ সবলকে চিরস্থায়ী ক্ষমতায়নের মাধ্যমে।

ইতিহাস বলে কোন সম্রাজ্য তিনশো বছরের বেশি টেকে না। তবে বর্তমানের টেকনোলজিক্যাল দুনিয়ায় এর ব্যপ্তি যে কত হবে কে জানে? একটা সময় ছিল যখন ক্ষমতা দখলের জন্য – গোত্র বা দলের সবচেয়ে শক্তিশালী হতে হত। এরপর মানুষ তথাকথিত সভ্য হয়ে কৃষিভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলে আর এই পুর্বের তুলনায় জটিল ব্যবস্থায় শুধু গায়ের জোরে ক্ষমতায় টেকা যায় না – শুরু হয়ে যায় জমিদারি সিস্টেম। আর এর মাধ্যমে প্রথমবারের মত চালু হয়ে যায় ধর্ম - Voltaire বলে গিয়েছেন: Religion began when the first scoundrel met the first fool.

এইসব হাবিজাবি ভাবনা আর নিজের মধ্যে সবসময় জ্বল-জ্বল করতে থাকা আগ্রহটাকে কোনভাবেই বশে আনতে পারে না, ধ্রুব। আপাতত আর ভাবাভাবি না – হঠাত করেই ফেসবুক অন চিন্তা অফ – আনমনে স্ক্রল করতে করতে চোখে পড়ে গেল -


“বিয়ের বাজারে ছেলেপক্ষ মেয়েকে যতটা না কোরবানীর গরু মনে করে তার থেকে বেশী মেয়েপক্ষই ছেলেকে গরু ক্রেতা মনে করে। ছেলের ভালো চাকরী কিংবা ব্যাবসা আছে কিনা৷ চাকরী করলে, বিচিলেস ক্যাডার কিংবা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার কিনা!! কম টাকার মালিক হলেতো তাদের গরুটাকে নিয়ে ঠিকঠাক মত খর-ভূষি খাওয়াতে পারবে না৷
.
একটা ছেলে মেয়ে পক্ষের এইসব চাহিদা মেটাতে গিয়ে জোঁসনা দেখার সময়গুলো পার করে দেয় কোনো কর্পোরেট হাউজে, কেউবা বিসিএস ক্যাডার হওয়ার জন্য পৃথিবীর সবরকম সাধারণ জ্ঞান আহোরনে নেমে পড়ে। কেউবা না ঘুমিয়ে থিসিস করে, কেউবা নতুন টেকনোলজি বানাতে দিন-রাত এক করে দেয়। গরু কেনার টাকা জমাতে জমাতে তারা ভুলে যায় এ জগতে সুন্দর একটা সকাল হয় কিংবা শরৎের পূর্ণিমা একরাশ স্নিগ্ধ জোঁসনা নিয়ে নেমে আসে পৃথিবীর বুকে।
.
এত কষ্ট, স্ট্রাগল পারি দিয়ে যখন একটা ছেলে গরু কেনার মতো সামর্থ্যবান হয় তখন সে নিশ্চয়ই খুঁতবিহীন গরু কিনতেই চেষ্টা করবে। তারপর সেই গরুকে নিয়ে সিঙ্গাপুর, মরিশাশ, থাইল্যান্ড কিংবা কক্সবাজার হানিমুনে যাবে। তারপর ফিরে এসে আবার গরুর জন্য কাজে নেমে পরবে। আর এদিকে গরুটা একা একা গান গাইবে - " আমি যোয়ান একখান মাইয়া, বুড়া জামাইর কাছে আমায় বাবায় দিছে বিয়া।"
.
কেউ যদি গরু ক্রেতা না খুঁজে অর্ধাঙ্গ খোঁজেন তাহলে বলবো নিজের পরিবারকে এসব ফালতু ডিমান্ড থেকে দূরে থাকতে বলেন। তাদেরকে বোঝান আপনি গরু না, মানুষ, আপনাকে খাওয়াতে হলে কাউকে অনেক টাকার মালিক হতে হবে না। আর আপনি যেহুতু অর্ধাঙ্গিনী হতে চান সেহুতু অর্ধাঙ্গের ঘাড়ে দোষ না চাপিয়ে নিজেও তাকে সহায়তা করুন।

#আজকে_প্রচুর_গরম_উফফফ
©শিমুল তমাল”


আহারে বেচারা ! বিয়ের সময় হয়ে গিয়েছে – আশপাশের লোকজন আজেবাজে কথা বলে। মনের দুক্ষে এটা লিখে ফেলেছে। কিন্তু পাবলিক এটাও মাটিতে পড়তে দেয় নাই – খপ করে ধরে ফেলছে। আগে লেখকদের বড় একটা সুযোগ ছিল – তাঁর আর পাঠকের মাঝে ছিল প্রোডাকশন হাউজ – এখন প্রযুক্তির কল্যাণে মাঠ ফাঁকা। লেখক যাই লিখুক তাতেই ডাইরেক্ট একশন – লাইক না হয় গালাগালি কিছু অবশ্যই জুটবে – বাদ যাবে না কোন শিশু স্টাইলে। ধ্রুব’র সবচেয়ে ভাল লাগে এইসব সোশ্যাল মিডিয়ার কমেন্ট সেকশন – মজাই মজা। মুচকি মুচকি হাঁসতে হাঁসতে কমেন্ট সেকশান স্ক্রল করছে ধ্রুব।

লেখকের সমব্যথী একজন লিখেছে -


“মেয়ের চাহিদা মিটানোর জন্য দরকার মোটা ইনকামওয়ালা ছেলে। ছেলে যখন স্ত্রীর চাহিদা মেটাতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত খাটতে হয় তখন আরেকটা অভিযোগ আসে "তুমি আমাকে একটুও সময় দাও না,ভালোবাস না,ঘুরতে নিয়ে যাও না" সময় দিবে কিভাবে? বউ খাদকের তো চাহিদা মেটাতে হবে যার জন্য বেশিরভাগ সময় চলে যায়, এরপর যায় ক্লান্তিতে। আসলে মেয়েরা চায়, স্বামী বেশি বেশি টাকা ইনকাম করবে আর সারাদিন স্ত্রীর সাথে রোমান্টিকতায় ডুবে থাকবে। তা না হলে মন ক্ষুণ্ণ হয়ে আরেক জনের সাথে ফষ্টিনষ্টি করবে। এতো খাইতে চাইলে কেমনে হবে..? সব তো আর এক সাথে পাওয়া যায় না।“

লেখকের বিপক্ষের একজন লিখেছে -

“ভাই দুঃখিত কিছু মনে নিবেন না, আপনার কথা শুনে মনে হল তাই বলছি এত কিছু না চাইলে আপনি অসুন্দর মেয়েকে বিয়ে করতেন বোধহয়। আমাদের সমাজ ব্যবস্থা পুরুষতান্ত্রিক মেয়ে বাবা/জামাইএর উপর নির্ভরশীল। আর প্রতিটা বাবা/মেয়ে নিজেকে সেখানেই বিয়ে করে যেখানে সে নিজেকে সেইফ মনে করে। তবে আমাদের দেশে এর মাত্রাটা একটু বেশি। যেখানে নিশ্বাস এর কোন নিশ্চয়তা নেই, সেখানে খাদ্য-বস্ত্র, স্ট্যাটাস নিয়ে ব্যস্ত। আর একটা কথা আপনার আমার মত লোক যখন সুন্দরি একটা গরু দেখে তখন বিভিন্ন প্যাকেজ অফার নিয়ে হাজির হয়। সেখানে খুব স্বাভাবিক একজন ওনার ভালো প্যাকেজটি গ্রহন করবে। সবারই ভালো থাকার অধিকার আছে, নিজের ব্যক্তিস্বাধীনতা আছে।
মোদ্দাকথা যে গরু যত সুন্দর তার মেইটেনেন্স কস্ট তত বেশী।“

লেখকের ভক্ত একজন লিখেছে -

‘ভালো লেগেছে আপনার কথা। ’

লেখকের সমব্যথী একজন লিখেছে -

‘গরুর সমাজে মানুষের সংখ্যা নেহাৎ কম বলেই এমন!!

ভাউ কিছু মনে কইরেন না কস্ট মেইটেনেন্স বহন করতে তো তাকে কাজ করতে হবে তাই না... আর এর মধ্যে গরু যদি থাক... গরুরে টাইম দেয় না এইটা এইটা করে গরু তখন কি বরবেন...’

অপরাধী একজন লিখেছে -

‘ভালোই লিখেছেন কিন্তু আসল কথা হলো আমাদেরকে আমাদের বাবামারাই বোবা গরু ভেবে নিজেদের ইচ্ছে অনিচ্ছে চাপিয়ে দেয়, নিজেদের ইচ্ছেমতো গরুক্রেতা খুঁজে বের করে আমাদের যেভাবে ইচ্ছে গছিয়ে দেয়!!! এখানে কিছু বলা বা প্রতিবাদ করার মত অবস্থা এখনো কমই থাকে!!! সো বাবামাদের না বলে আমাদের বলে তেমন একটা লাভ নেই!!!’

বিদ্রোহী একজন লিখেছে -

‘টুডেজ রিঅ্যালিটি! ছেলেদের আগে উচিত নিজের মনমতো জব করা! সেটা যদি কেউ পছন্দ করে তো হলো আর পছন্দ না করলে নাই!! মানুষের এসব রঙঢঙ যত পারুন এভয়েড করুন!

ছেলেদেরও সময় হয়েছে নিজেকে চেইঞ্জ করার! :)

দোষী একজন লিখেছে -

‘u know, parents r sending their daughter in a different place for the rest of her life. of course they will try to ensure that the girl stays in a solvent family.so from that perspective u can't actually blame them’

টেকি একজন লিখেছে -

‘বাংলাদেশ এখনো মার্ক জাকারবার্গের দেয়া জবের চেয়ে BCSকে বেশী নির্ভর যোগ্য ভাবে... ’

পোড়-খাওয়া একজন লিখেছে -

‘কাব্যে বা উপন্যাসে বা লেখনীতে এগুলো মানায়। বাস্তবে নয়। কজ" অভাবের ঘরে স্বভাব উঁকি দেয় নাহ।‘

ধ্রুব অনেকক্ষণ ধরে খুজেও - কোন কোঠা’র লোক পেল না। অবশ্য উনারা সব্বাই ব্যস্ত আছেন আন্দোলন নিয়ে –
‘এবারের আন্দোলন শিকল পরার আন্দোলন
এবারের আন্দোলন মুক্তদের যুক্ত হওয়ার আন্দোলন’

দেশের সবচেয়ে ভালো অংশটা যখন বৃটিশদের ছেড়ে যাওয়া কলোনিয়াল সিস্টেমের অংশীদার হওয়ার জন্য ব্যস্ত – ঠিক তখনি দেশের সবচেয়ে নষ্ট অংশটা নিজের আঁখের গুছাতে ব্যস্ত। ধীরে ধীরে ধ্রুব’র মনটা খারাপ হয়ে যাচ্ছে – শিক্ষা যদি শুধুই একটা চাকরির জন্য হবে তাইলে আর এত খরচ করে এডুকেশন সিস্টেম চালু রাখার দরকার কি? তারচেয়ে কর্ম-সংস্থান ব্যুরোকে আরো শক্তিশালী করে – ভোকেশনাল সিস্টেমের মাধ্যমে সবার কাজের ব্যবস্থা করলে হয়।
ধ্রুব আরো কিছুক্ষন খুজলো – কোন বুদ্ধিদীপ্ত কমেন্টস পাওয়া যায় কিনা? না – পাওয়া গেল না।


চলবে...

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:১৩

বিজন রয় বলেছেন: এত কথা কোথায় পান?

খারাপ না।

২| ২৪ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:৪০

সাইন বোর্ড বলেছেন: ভাবনা এবং লেখা চমৎকার !

৩| ২৪ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:৫২

মোগল সম্রাট বলেছেন: যখন আমাদের দেশে শিক্ষার হার অনেক কম ছিলো তখন আমরা অনেক বেশি সৎ/আদর্শবান/নিতীবান মানুষ দেখতাম কালক্রমে দেশে শিক্ষার হার(!)বৃদ্ধির সাথে সাথে ভালো মানুষের সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। তাহলে কি এডুকেশন সিস্টেমের গলদের জন্য কি এখন দেশে সব মরাললেস/ইথিক্সলেস মানুষ তৈরি হচ্ছে? সমস্যা আসলে অন্য কোথাও

৪| ২৪ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৫

কাইকর বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন

৫| ২৪ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:০৮

রাজীব নুর বলেছেন: চলুক।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.