![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ডাক্তারী বিদ্যায় অধ্যনয়রত শিক্ষানবিস একজন। ছোট বেলা থেকেই সৃজনশীল কাজ ভাল লাগে। বাবার অনুপ্রেরণায় প্রথম লেখালেখির শুরু। ভাল লাগে ছবি তোলতে। বেশ কয়েকবার ছবি প্রদর্শিত ও হয়। এইতো লেখালেখি,ছবি,পড়াশোনা,মানব সেবার ইচ্ছা। সব মিলিয়েই আমি।
অবশেষে চোখ মেলে তাকালো রিমি । চোখ থেকে তার টপটপ করে পানি পড়ছে। স্বচ্ছ, নোনা জল।
কে ভেবেছিল এমন হবে??এই তো সেদিন ও তারা একসাথে হেঁটেছিল। পাশাপাশি হাত ধরে অনেক দূর। যতখানি দৃষ্টি যায়। ঝুপ করে বৃষ্টি নেমেছিল সেদিন। ভিজতে ভিজতে গাছের নিচে আশ্রয়। তারপর হারিয়ে যাওয়া অন্য জগতে ।
বৃষ্টির এই ক্ষণগুলো খুব মিস করবে রিমি কিংবা জোছনা রাতটা। রাতুল ফোন দিয়ে ওকে বলবে বারান্দায় যেতে। বরাবরের মত রিমি না করবে । তারপর মিথ্যে অভিনয় করে একটু রাগ দেখিয়ে বারান্দায় ঠিকই যাবে। তখন সেই পাগলটা ফোনের অন্যপ্রান্তে থেকে গিটারের তারগুলো ছুঁয়ে দিবে । রিমিকে নিয়ে আবার হারিয়ে যাবে ভাল লাগার সেই জগতে ।
রাতুল কেন এমন করল তার সাথে?? সারাজীবন সাথে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তবে কেন চলে গেল??
রিমি আর ভাবতে পারে না। আবার ঐ কালো মেঘের মত চোখ জোড়া বানের জলে ভেসে যাচ্ছিল।
কাল বাদে পড়শু ওদের ভালবাসার ২ বছর পূর্ণ হতো । কত প্ল্যান করেছিল দু'জন মিলে। গত একমাস ধরে একটু একটু করে ভাবছিল তারা । দু'জন দু'জনকে সারপ্রাইজ দেয়ার কথা ভেবেছিল। যদিও ঐ পাগলটার সাথে পেরে উঠা রিমির সম্ভব না।
কি কিসব আজগুবি কাজ করে !! রিমি জানে গতবারের মত এবারও পাগলটা অনেক বড় সারপ্রাইজ দিবে ।
নাহ। কাজটা ঠিক করে নি রাতুল। এবার রাগ উঠছে রিমির। খুব বেশি কি চেয়েছিল রাতুলের কাছে?? ছেলেটা শুধু নিজের কথাই ভাবলো। স্বার্থপর একটা ।
কত করে বললো রিমি। তাও কথা রাখলো না নাছোড়বান্দা ছেলেটা । "ও মনে রাখে নাই তবে আমি কেন ওকে মনে রাখবো? " রিমি বিড়বিড় করে বলছিল আনমনে ।
খুব বেশি রাগ হচ্ছিল তার। এই মুহূর্তে ওই পাগলটার গালে দুইটা চড় দিতে পারলে শান্তি লাগতো রিমির।
অনেক লোক জড়ো হয়ে গেছে আশেপাশে । আর হয়ত বেশিক্ষণ থাকা যাবে না এখানে। চলে যেতে হবে
রাতুলের মেহেদী খুব প্রিয় ছিল। পড়শু তাকে সারপ্রাইজ দেয়ার জন্য হাত ভর্তি করে মেহেদি দিয়েছিল রিমি । সাথে হরেক রঙের চুড়ি আর ম্যাচিং করে টুকটাক গহনা আর একটা নীল রঙের শাড়ি ।
আর নিতে পারছে না রিমি। অনেক হয়েছে অনেক। রাতুল তাকে এত বড় সারপ্রাইজ দিবে ভাবতেও পারে নি। একদম ই না।
ছেলেটা আবারো জিতে গেছে। রিমি আবারো হেরে গেল রাতুলের কাছে।
আচ্ছা,মৃত মানুষ কি অনুভূতি বোঝে?? এই যে রাতুলের লাশের পাশে বসে টপটপ উষ্ণ চোখের জলে রাতুলকে ভিজিয়ে দিচ্ছে রিমি তা কি রাতুল জানে?? মৃত মানুষ এর কি ক্ষীণ কোন দৃষ্টিশক্তি আছে?? কতবার বলেছিল ফোন দিয়ে রিমি রাতুল কে "লাইফ জ্যাকেট" পড়ে সমুদ্রে নামতে। কে শোনে কার কথা?? পাগলামিরও একটা মাত্রা আছে।
খাটিয়া চলে এসেছে। রাতুলকে এখনই নিয়ে যাওয়া হবে । শেষবারের মত দেখে নিচ্ছে প্রিয় মুখটিকে রিমি। তার ভিতরটা জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়ে যাচ্ছে ।
অনেক অনেকদিন পরের কথা । রিমির এখন অনেক বয়স। থুরথুরে বুড়ি । লাঠিতে ভর দিয়ে হাঁটে । বিয়ে করে নি সে। সারাজীবন চ্যারিটির কাজে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছে। জীবনের এই পড়ন্ত বিকেলে এসে ডায়েরীর শেষ কয়েকটা পৃষ্ঠা আজও তার চোখ ভিজিয়ে দেয় আগের মতই । ফিরিয়ে নিয়য়ে যায় প্রিয় মুখের প্রিয় মানুষটার কাছে ।
২| ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:২৬
রঙ্গীন ঘুড়ি বলেছেন: ঠিকই বলেছেন। আশা করবো কারো জীবন যেন গল্পের মত না হয়।
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৩৯
মাহবুবুল আজাদ বলেছেন: খুবই কষ্টদায়ক । কারো জীবন যেন এমন না হয়।