![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ডাক্তারী বিদ্যায় অধ্যনয়রত শিক্ষানবিস একজন। ছোট বেলা থেকেই সৃজনশীল কাজ ভাল লাগে। বাবার অনুপ্রেরণায় প্রথম লেখালেখির শুরু। ভাল লাগে ছবি তোলতে। বেশ কয়েকবার ছবি প্রদর্শিত ও হয়। এইতো লেখালেখি,ছবি,পড়াশোনা,মানব সেবার ইচ্ছা। সব মিলিয়েই আমি।
- এই শোন,তোমাকে যদি বলি চোখ বন্ধ করে একটা সবুজ বাংলো বাড়ি কল্পনা করতে তুমি পারবে?
-রাত ক'টা বাজে খেয়াল আছে?
-আচ্ছা,ওই তারাভরা আকাশটা কি দেখবো আমরা ছাদে বসে?
-ঘুমাও তো। সারাদিন অফিস করে আসি। বুঝ না তুমি? এত ঘ্যান ঘ্যান করতেসো ক্যান?
মায়া চুপ মেরে যায়। মেয়েটার নামের মত মায়াবী চোখে একটু জল জমে। নতুন কিছু না এটা। সুনীল যেন দিন দিন কেমন হয়ে যাচ্ছে। একটাবার তার খোঁজ নেয় না। কি এমন কাজ অফিসে যে একবার ও একটা ফোন দেয়া যায় না। হাবিজাবি ভাবতে ভাবতে একসময় ঘুমিয়ে যায় মেয়েটি।
সকালের সূর্যের আলো জানালার পর্দার ফাঁক দিয়ে মায়ার মুখে পড়ে। বেশ খানেকক্ষণ আগেই ঘুম ভাঙে সুনীলের। ফ্রেশ হয়ে রুমে ঢূকেই চোখ পড়ে মায়ার উপর। মেয়েটা কি জানে তাকে অপ্সরীর মত লাগছে? যেন ঈশ্বরের অপূর্ব সৃষ্টি... রেডি হতে হতে মায়াকে আলতো করে ছোঁয়ে দেয় সে । মুখের উপরের চুলগুলো একটু সরিয়ে দেয়।
গতরাতের কথা মনে পড়ে যায় ওর। ঘুমের ঘোরে অনেক কিছু বলে ফেলেছে সে। কাজ টা ঠিক করে নি সে। ঘুম থেকে উঠেই মুখ ফুলিয়ে বসে থাকবে। সুনীল একটা চিরকুট লিখে যায় যেখানে ছোট্ট করে দু'টি শব্দ লেখা ছিল "সরি,ভালবাসি" ।
ছোট একটা ফ্ল্যাটে থাকে ওরা। ছোট একটা সংসার, সাজানো গোছানো নিজের হাতে,অনেক বেশি ছিমছাম। মায়া খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে প্রতিদিন ঘরের আনাচ কানাচ গোছিয়ে রাখে। সুনীলের বুকসেলফটা তার অনেক প্রিয়। পছন্দের সব বই সাজানো।
সন্ধ্যা ৭ টা বাজে। একটু পরেই হয়ত সুনীল চলে আসবে। আজ নীল শাড়ি পড়েছে সে। সুনীলের খুব পছন্দের একটা শাড়ি। প্রথম নিজের টাকা দিয়ে কিনে দিয়েছিল সুনীল। সাথে একটা চিকন পায়েল। ডোরে হঠাৎ ই নক পড়লো। প্রায় দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলে দিলো মায়া।
-কেমন কাটলো তোমার অফিস?
-মায়া,তুমি প্রতিদিন একই প্রশ্ন কেন কর? ভাল লাগে না। যেমন কাটার কেটেছে।
-বাদ দাও। আমাকে কেমন লাগছে বল না।
-ভালো।
-শুধু ভালো?
-হুম।
চোখের জল আড়াল করে মায়া....
-সুনীল কাল তোমায় নিয়ে একটা জায়গায় যাব বলেছিলাম। মনে আছে? ছুটি নিতে বলেছিলাম?
-হুম মনে আছে। কই যাব আমরা?
-সেটা গেলেই বুঝতে পারবে।
-খাবার দিবো?
-না,অফিসে খেয়ে এসেছি।
মায়া আর কথা বাড়াতে পাড়লো না। বাইরে ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে। এই মূহুর্তে তার ইচ্ছা করছে ছাদে যেয়ে পৃথিবীর সব কান্না এক করে কাঁদতে। হাজারটা কামান বুলেটের চেয়েও নি:শব্দ কিছু কান্না একদম বুকের মধ্যখানে যেয়ে লাগে।
পরদিন বিকেলে-
-এই সুনীল, রেডি হও। বাইরে যাব আমরা।
-কই যাবো? রেডি হও তো। শোন,ওই লাল গেঞ্জি টা পড়বে।
-কোন লাল টা?
-ওই যে যেটা পড়ে আমাকে প্রথম প্রপোজ করেছিলে।
-ওহ। ওইটা.... আচ্ছা ।
-----------------------------------------------------------------
-সুনীল তোমার মনে আছে আমরা এই নদীর পাড়ে একসময় হাত ধরে কত হাঁটতাম?
-হুম। মনে আছে মায়া।
-তুমি অনেক বদলে গেছ। জানো? আমাকে আর ভালবাসো না।
-মায়া,বিশ্বাস কর..হয়ত বাস্তবতার খাতিরে একটু অন্যরকম হয়ে গেছে ভালবাসা টা। কিন্তু আমি সত্যিই তোমাকে অনেক ভালবাসি।
পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল একটা কাপল। মেয়েটার পড়নে নীল শাড়ি আর ছেলেটার লাল গেঞ্জি। ব্যাপারটা খুবই কাকতালীয় হয়ে গেল। ছেলেটা ফিরে তাকালো এক নজর...
নাহ...দূরে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটির সাথে তো কেউ নেই। তবে কার সাথে কথা বলছে? কাকে সরি বলছে??
পুনশ্চ:
মায়া ব্রেইন ক্যান্সারে মারা গেল আজ প্রায় দুই বছর হতে চলেছে । আজও সুনীল ওই ফ্ল্যাট ছেড়ে যায় নি। ওর বাবা মা অনেক ডাক্তার দেখিয়েছেন। কোন লাভ হয় নি। একা একা কথা বলে, সকালে উঠে রেডি হয়ে কই যেন চলে যায়, সারাদিন ফোন দিয়েও পাওয়া যায় না। সন্ধ্যায় ঠিক ফিরে আসে। নিজের কাছে চাবি থাকা সত্ত্বেও একবার কলিং বেল চাপ দেয় নিয়ম করেই। প্রতি সপ্তাহে একবার এই নদীর পাড়ে "লাল" গেঞ্জিটা পড়ে চলে আসে। বিড়বিড় করে কথা বলে একা একা। ডাক্তার বলেছেন ভিজ্যুয়াল হ্যালুসিনেশনে এমনটা হয় যা থেকে পেশেন্টের বের হয়ে আসাটা খুব কষ্টের কাজ।
"আজ বহুদূরে হেঁটে যাব বলে
নিয়ন আলো হাতে আমি দাড়িয়ে-
আজ তুমি রোদে ভেজা ভোরের শিশিরে
আমার না ঘুমের স্বপন হয়ে।
তোমার আঁকা জোছনায় কিছু স্বপ্ন আছে বাকি-
জোছনারই গল্প শেষে পাশে রব আমি। "
কি জানি হয়ত এভাবেই সুনীলরা "অদৃশ্য মায়ার" বন্ধনে আটকা পড়ে. ..
১১ ই জুন, ২০১৬ রাত ১০:২৬
রঙ্গীন ঘুড়ি বলেছেন: এন্ডিংটা আমারও মন মত হয় নি। প্লট সাজিয়ে ছিলাম অন্যভাবে। শেষে হঠাৎ কি জানি হল গল্পের মোড় এইদিকে দিলাম। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। আমার ব্লগে স্বাগতম।
২| ১২ ই জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০৭
কালনী নদী বলেছেন: আমার মতন গল্প লেখাতে বড় তাড়াহুড়া তাই শেষটা ঠিক জমে ওঠে নি, কিন্তু গল্পটা অসাধারণ হয়েছে ভাই।
১২ ই জুন, ২০১৬ রাত ৮:৫৮
রঙ্গীন ঘুড়ি বলেছেন: গল্পে হাতটা এখনো আসে নি ভাল মত। ইনশাহল্লাহ সামনে সময় নিয়ে কিছু লিখবো।
৩| ১২ ই জুন, ২০১৬ রাত ১০:১৩
কালনী নদী বলেছেন: সময় নিয়ে লিখলে অবশ্যই আসবে! শুভ কামনা থাকলো, অপেক্ষায় রহিলাম।
১২ ই জুন, ২০১৬ রাত ১০:৩৭
রঙ্গীন ঘুড়ি বলেছেন: এই লেখাটা এক বসায় একবারেই লেখা।কোনরকম প্ল্যান করে না। যেভাবে মাথায় এসেছে সেভাবেই এগিয়েছি। শেষদিকে খাপ ছাড়া হয়ে গেল। তৃপ্তি পায় নি এতটা। যাই হোক, এই অধমের পাশে থাকবেন আশা করি।
৪| ১২ ই জুন, ২০১৬ রাত ১০:৪৮
কালনী নদী বলেছেন: আপনি সময় নিয়ে লিখলে অসাধারণ হবে!
আচ্ছা আপনি ভাই না বোন?
১৩ ই জুন, ২০১৬ রাত ১২:৪৪
রঙ্গীন ঘুড়ি বলেছেন: আমি ভাই। আপনি নিশ্চয় ভাই?? যদিও নদীর নামে নাম মেয়েরই হয়ে থাকে।
©somewhere in net ltd.
১|
১১ ই জুন, ২০১৬ রাত ১০:১৭
সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: ছবিটা অনেক সুন্দর কালাফুল সেটা চোখে পরেই আসা।
শুরুটা অসাধারন ছিল কিন্তু শেষে মনে তাড়াহুড়ো করে ক্লিশে একটা এন্ড করে দিলেন।
কিন্তু ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ আপনাকে।