![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ডাক্তারী বিদ্যায় অধ্যনয়রত শিক্ষানবিস একজন। ছোট বেলা থেকেই সৃজনশীল কাজ ভাল লাগে। বাবার অনুপ্রেরণায় প্রথম লেখালেখির শুরু। ভাল লাগে ছবি তোলতে। বেশ কয়েকবার ছবি প্রদর্শিত ও হয়। এইতো লেখালেখি,ছবি,পড়াশোনা,মানব সেবার ইচ্ছা। সব মিলিয়েই আমি।
---------------------
সেদিন ছিল অমাবস্যাতিথি। গভীর রাত....
চার খালাতো ভাই হেঁটে চলেছি গ্রামের একটা পথ দিয়ে। পাশের গ্রামে সার্কাস পার্টি এসেছে। সার্কাসের লোভ সামলানো ১৩/১৪ বছরের ছেলেদের কাছে সম্ভবত খুব কঠিন কাজ। রাতের বেলা কাউকে না বলে ঘরের পিছনের গেইট দিয়ে বের হয়ে আসি আমরা।
সুনসান নীরবতা। বাতাসে বাঁশ পাতার খসখসানি স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে। মনে হচ্ছে এই বুঝি কেউ এসে ঘাড়ের উপর ঝাপটে ধরবে। আমরা চারজন হেঁটে চলেছি। বাঁশ বাগানটার অন্য পাশে ছোট একটা মেঠোপথ। সেটা পেরোলেই অন্য গ্রাম। আমাদের কানে সার্কাসের শব্দ ভেসে আসছিল। আমরা মানে আমি,রিবু,সবুজ আর ইফতেখার কথা বলছিলাম জোরে জোরেই ভয় কাটানোর জন্য।
-কিরে ইফু,আজ বিকেলের ডাংগুলি খেলায় হেরে কেমন লাগছে???
-আতিক,শোন। বেশি ভাব নিস না তো ! এহ...একদিন জিতে যেন ভাবে মরে যাচ্ছে !
-আচ্ছা রিবু,এখানে ভাবের কি হল? একে তো হেরে গেছে তার উপর বড় বড় কথা !!
চারজন সশব্দে হেসে উঠলাম। হাসি থামতে না থামতেই মাথার উপর দিয়ে একদল বাদুড় উড়ে গেল আমাদের। ব্যাপারটা অনেক ভয়ানক লাগলো। আমাদের হাসি তখনও প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল বাঁশ বাগান জুড়ে কেউ আমাদের দিকে তাকিয়ে অট্টহাসিতে ফেটে পড়ছে।
সবুজটা একটু ভীতু প্রকৃতির আমাদের চার জনের মধ্যে। আমরা তিনজন একসাথে হাঁটলেও ও ছিল আমাদের পিছনে। পিছনের দিকে না তাকিয়েই ইফতেখার বলল,
-কিরে সবুজ,ভয় লাগছে তোর?
-না। আর কত দূর রে??
-এই তো। বাঁশ বন প্রায় শেষ। এর পর শুধু একটা চিকন রাস্তা। বেশি নাই রে। ভয় পাস না তো।
-আচ্ছা।
হাঁটতে হাঁটতে আমরা বাঁশ বনের একদম শেষ প্রান্তে চলে আসলাম। ওই যে দূরে একটা লাল আলো দেখা যাচ্ছে এটা কি? সবুজ ভয় পেয়ে রিবু'র হাত শক্ত করে ধরে ফেললো। আমি বললাম, "চল গিয়ে দেখে আসি। "
চল চল যাই... সবাই সায় দিলো একমাত্র সবুজ ছাড়া। ও বললো আমার ভয় লাগছে। তোরা যা। আমি এখানে দাঁড়িয়েছি। তোরা যেয়ে দেখে আবার ফিরে আয়। আমরাও ভাবলাম আচ্ছা ঠিক আছে। ব্যাটা শহরের মানুষ। গ্রামে বেড়াতে এসেছে। থাকুক ওইখানে।
আস্তে আস্তে এগিয়ে গেলাম ওই লাল আলোটার খুঁজে। যত কাছে যাচ্ছি তত আলোটা বড় হচ্ছে। ওমা...একি... আলোর চোখ,মুখ বুঝা যাচ্ছে স্পষ্ট। নাহ..এবার সত্যিই ভয় পেয়ে গেলাম। শত গ্রামের ছেলেই হই না কেন এই জিনিসের জন্য তৈরি ছিলাম না মোটেই। ভীষণ অদ্ভুত তার মুখ। কেমন জানি পাতিলের মত চ্যাপ্টা আর অনেক বিচ্ছিরি হাসি। আমাদের মধে রিবু আবার বেশি সাহসি। ওর কোনকিছুতেই ভয় নেই। ও এগিয়ে গেল। আমরা মানে আমি আর ইফতেখার পিছন থেকে না করছিলাম।
-আতিক,ইফু এদিকে আয়।
-না। ভয় লাগছে।
-আরে আয় না। বলছি তো ভয়ের কিছু নাই।
-সত্যি?
-তিন সত্যি। আয় তো।
আমি আর ইফতেখার এগিয়ে গেলাম। রিবু হাসতে হাসতে হাত থেকে টর্চটা বের করে মুখে আলো ফেললো জিনিসটার। সাথে সাথে তিনজনই হো হো করে হেসে উঠলাম।
-আরে এইটা তো দেখি কাকতাড়ুয়া। হা হা হা। ব্যাটা মুখের ভিতর মোমবাতি জ্বালিয়ে রেখেছিল। যেন কেউ ভয় পাবে !! হা হা হা
"চল,সবুজ বোকাটা একা দাঁড়িয়ে আছে " রিবু বললো। আমরা সবাই সায় দিয়ে সবুজের দিকে হাঁটা শুরু করলাম। কি ব্যাপার !! বাঁশ ঝার টা কই গেল? আমরা তো দক্ষিণে খোলা মাঠ আর উত্তরে মন্দিরটাকে রেখেই এগিয়ে ছিলাম। মন্দিরটা তো ঠিকই আছে। বাঁশ ঝারটা গেল কই?? আজব...
আমরা চিৎকার শুরু করলাম। সবুজ....স...বু...জ..
নাহ..কোন সাড়া শব্দ নেই কোথাও।
হঠাৎ করেই ঘুমটা ভেঙে গেল আমার। ভর দুপুরে ঘেমে পুরো শেষ আমি। ভয় পেয়ে মা কে ডাকলাম খুব জোরে জোরে। পরক্ষণেই মনে হল সবুজ,রিবু আর ইফতেখার এর কথা। মা কে জিজ্ঞেস করলাম ওরা কোথায়। মা জানালো ওরা তো গত পরশুই চলে গেছে ওদের বাড়ি। ঈদের ছূটিতে সবাই এসেছিল বেড়াতে। আমি বেমালুল ভুলে গেলাম সব! অথচ আমি না কাল বিকেলে ডাংগুলি খেললাম ওদের সাথে? ইফতেখার কে হারালাম ডাংগুলিতে। সার্কাস পার্টি এসেছিল গত রাতে। বাঁশ ঝারটার ঠিক শেষে উত্তরে মন্দির আর দক্ষিণে খোলা মাঠটার একটু সামনে। আমি এক দৌড়ে চলে গেলাম সেখানে।
বাতাসে ঘন্টার আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। কাকতাড়ুয়াটা সেই ভয়ঙ্কর বিচ্ছিরি হাসি দিয়ে তাকিয়ে আছে । এই ভর দুপুরেও খুব ভয় লাগছে আমার, খুব ভয় লাগছে.......
২৩ শে জুন, ২০১৬ সকাল ১১:৫৩
রঙ্গীন ঘুড়ি বলেছেন: হা হা হা। ভয় পেলেই ভয় আসে। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য
২| ২৩ শে জুন, ২০১৬ সকাল ১১:৫৩
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: বেশ লিখেছেন অনেক ভাল লাগল
২৩ শে জুন, ২০১৬ দুপুর ১২:০৪
রঙ্গীন ঘুড়ি বলেছেন: মজার ব্যাপার এই স্বপ্নটা আমি দেখেছিলাম। ধন্যবাদ নিবেন। শুভ কামনা রইলো
৩| ২৩ শে জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪৪
সুমন কর বলেছেন: হাহাহাহা.....ভালো লাগল।
২৩ শে জুন, ২০১৬ রাত ৮:৫৮
রঙ্গীন ঘুড়ি বলেছেন: হা হা হা। অসংখ্য ধন্যবাদ। শুভ কামনা রইলো কাকতাড়ুয়ার পক্ষ থেকে।
৪| ২৪ শে জুন, ২০১৬ রাত ৩:০৮
কালনী নদী বলেছেন: বাহঃ দুরন্ত কৈশোর, অনেকটাই আমার জীবনের সাথে মিল আছে।
২৪ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৫:১৮
রঙ্গীন ঘুড়ি বলেছেন: দু:স্বপ্ন থেকে গল্প । একটু রঙ চঙ লাগিয়ে লেখা। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। কালনী নদী ভাই. ।।
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে জুন, ২০১৬ সকাল ১১:৪৭
বিজন রয় বলেছেন: হা হা হা
দিন দুপুরে কাকতাড়ুয়ার ভয়!!
++++