নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

উড়তে ভালো লাগে,মেঘের সাথে লুকোচুরি ভাল লাগে। ভাল লাগে এক আকাশ তারা কে সাক্ষী রেখে নাবিকের মত পথ খুঁজে নিতে। চোখ বন্ধ করে একটা নীল সমুদ্র আকঁতে ভাল লাগে। আর ভাল লাগে \"তুমি\" তে হারিয়ে যেতে ।

রঙ্গীন ঘুড়ি

ডাক্তারী বিদ্যায় অধ্যনয়রত শিক্ষানবিস একজন। ছোট বেলা থেকেই সৃজনশীল কাজ ভাল লাগে। বাবার অনুপ্রেরণায় প্রথম লেখালেখির শুরু। ভাল লাগে ছবি তোলতে। বেশ কয়েকবার ছবি প্রদর্শিত ও হয়। এইতো লেখালেখি,ছবি,পড়াশোনা,মানব সেবার ইচ্ছা। সব মিলিয়েই আমি।

রঙ্গীন ঘুড়ি › বিস্তারিত পোস্টঃ

"স্বপ্নঘুম কিংবা একটি রহস্য রাত "

০২ রা অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১০:৫৫




-একটা রাতের আড্ডা গল্প হলে কেমন হয়??
-আচ্ছা কি নিয়ে আড্ডা দেয়া যায়??

আমরা চার রুমমেট একে অন্যের দিকে বেশ কিছুক্ষণ মুখ চাওয়া চাওয়ি করলাম। সবসময়ের বলির পাঠা আমাকে দিয়েই শুরু। আড্ডার বিষয় দেয়া হলো নিজেদের জীবনের এমন একটি সত্যি বলা যা আর কেউ জানে না।

(শুরু)


"আমার জন্মটা হয়েছিল ময়মনসিংহের একটা ছোট প্রাইভেট হাসপাতালে। জন্মের সময় আমার নি:শ্বাস নাকি বন্ধ ছিলো বেশ অনেকক্ষণ। ডাক্তার ইনকিউবেটরে রেখেও কোন আশার আলো দেখছিলেন না। ব্যাপারটা কাকতালীয় কিনা জানি না। হঠাৎ আমার ছোট বুকটা নাকি কেঁপে উঠেছিল।

গল্পের শুরু এখান থেকেই। আমি কেন জানি আগে থেকেই সব ফিল করতে পারতাম। ধরা যাক, আমি একটা জায়গায় বসে আছি। জায়গাটায় আমি আগে কোনদিনও আসি নি। কিন্তু আমার কেন জানি মনে হত জায়গাটা আমার অনেক পরিচিত। আমার এই সিক্রেটটা আর কেউ জানে না। আমি হবুহু জায়গাটা কল্পনা করে বলে দিতে পারতাম। সূক্ষ্ণ থেকে সূক্ষ্ণতম জিনিসও বাদ পড়তো না।


একদিন আমি দেখলাম শামীম বসে আছে একটা ঝরণার পাশে। মনে আছে শামীমের কথা?? শান্ত নিরিবিলি পরিবেশ চারদিকে। মাথার উপর দিয়ে ওর একঝাঁক পাখি উড়ে গেল। আমি অনুভব করতে পারলাম খুব ভয়ঙ্কর কিছু হতে যাচ্ছে। হঠাৎ একটা ঝুপ করে পানিতে কিছু পড়ে যাওয়ার শব্দ শুনলাম কল্পনায়।

তারপরের কাহিনী তো তোমরা জানই... কিছুদিন পর শামীমকে আর কোথাও খোঁজে পাওয়া যায় নি। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত শামীমকে খৈয়া ছড়া ঝরণার কাছে দেখা গিয়েছিল।"

আমার শরীরটা খারাপ লাগছিল কেন জানি। আমি আসর ছেড়ে আমার রুমে চলে আসলাম।

(দুই)


"আমি একজনকে খুন করেছি। এটাই আমার গল্প। এটাই আমার সিক্রেট।"
আকাশ চোখ মুখ শক্ত করে কত সহজে বলে ফেললো কথাটা । উৎপল একদৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলো আকাশের দিকে। আকাশ বলতে লাগলো।


" আমি জানি না আমার কি হয় মাঝে মাঝে। রক্তের নেশা জাগে মাথার ভিতর। অহনার সাথে আমার সম্পর্কের কথা তো তোরা জানিস ই। আমার প্রিয় মানুষকে নিয়ে কেউ হাসি ঠাট্টা করুক আমি তা একদমই মানতে পারি না। গত বছর শীতে আমি আর অহনা লেকের পাশের রোডটা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম সন্ধ্যার দিকে। পিছন থেকে একটা শিষের আওয়াজ আসলো।
আমি পিছনে ফিরে দেখি দুইটা ছেলে আমাদের দিকে তাকিয়ে হাসছে। বাজে ইঙ্গিত ছিল হাসি তে। আমি স্পষ্ট বুঝতে পারছিলাম।

আমি পাত্তা দিলাম না প্রথমবার। দ্বিতীয় বার আবার একই মানুষগুলো শিষ দিচ্ছিল। এবার অহনাকে নিয়ে খুব খারাপ একটা কথা বলেছে। বলেছে "ওই যে দেখ, বেশ্যা যায় কাস্টমার নিয়ে। " আমার মাথায় রক্ত চেপে গেল। ওদের সাথে হাতাহাতির এক পর্যায়ে ওদের হাতে থাকা ছোট পকেট চাকুটা আমার হাতে চলে আসে। দিগ্বিদিক জ্ঞাণ হারিয়ে আমি কখন একজনের বুকের বামপাশে ছুড়ি বসিয়ে দিয়েছি মনে নেই।


তারপর অনেকদিন ফেরারী ছিলাম। সবার সাথে যোগাযোগ অফ ছিলো। আব্বা,আম্মা, আতিয়া। সবার সাথেই কথা বন্ধ ছিলো। গত বছরের শেষের দিকে উনাদের কাছে ফিরে যেয়ে ক্ষমা চাই আমি। "

(তিন)


এবার রাকিন তুই বল। রাকিন খানিকটা চুপ থেকে বলা শুরু করল-

"আমার গল্পটা একটু অন্যরকম। আমি একটা মেয়েকে ভালবাসি অনেকদিন থেকে। ভালবাসি বলতে কোনদিন মুখ ফোটে বলতে পারি নি। আমি জানি না কবে পারবো। আমি প্রায় প্রতিদিন ওর জন্য দাঁড়িয়ে থাকি ওর কলেজের সামনে শুধু এক নজর দেখার জন্য। "

আকাশ এতক্ষণ চুপ ছিলো। ওর খুব মাথাটা ধরেছে। ও চলে গেল ওর রুমে । রাকিন আর উৎপল তাকিয়ে ছিলো যাওয়ার পথে। কেমন জানি অস্বাভাবিক লাগছে আকাশকে । চোখগুলো লাল হয়ে গেছে।
রাত তিনটা চারটা লাগাত রাকিন আর উৎপলের আড্ডা চললো। লাইট নিভিয়ে যে যার রুমে চলে যাওয়ার আগে একটা ভদ্রতার হাসি দিলো।

(চার)


-আকাশ, কি হয়েছে তোমার??
-তুই আমার বোনকে ভালবাসিস?
-আরে না। আমি তো নিশিতা কে...
-দেখ রাকিন,মিথ্যা বলবি না। আমি মিথ্যা একদম পছন্দ করি না।
-আকাশ তুই থাম।

-না থামবো না। কি ভেবেছিস তুই??
-তোর ভয়ে আমার ছোট বোনটা কলেজ যাওয়া থামিয়ে দিয়েছে।
-মানে??
-মানে কি বুঝ না?? ধোঁয়া তুলসী পাতা??
- আকাশ, থাম তো। বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে। হ্যাঁ,আমি তোর বোনকে ভালবাসি।
-তোর জন্য আমার ছোট বোনটা কলেজে যাওয়া অফ করে দিয়েছে। যেখানে যায় তুই তাকিয়ে থাকিস। পেয়েছিস কি তুই??
- হ্যাঁ,তাকিয়ে থাকি। কি করবি তুই??
- রাকিন,ভাল হবে না কিন্তু।


একটা অস্ফুট শব্দ শুনে উৎপল ছুটে আসলো। রক্তমাখা হাতে আকাশকে দেখে চমকে গেল সে।
-একি করলি তুই আকাশ??
-খবরদার সাউন্ড করবি না উৎপল। একদম কোন সাউন্ড না।
-রাকিনকে মেরে ফেললি?? এটা কেমনে সম্ভব?
-একবার আমার দিকে তাকা উৎপল। চল,আমরা লাশটা কোথাও ফেলে দিয়ে আসি।
-কি বলছিস তুই??আমি পারবো না। আমি সবাইকে বলে দিবো তুই রাকিন কে খুন করেছিস।
-খবরদার। একদম চুপ। জানে মেরে ফেলবো একদম। চুপ।
-আমি শাদকে ডাকতে যাচ্ছি। এখনই। তোকে পুলিশে দেয়া উচিত। এখনই....

(পাঁচ)


আমার ঘুমটা ভেঙে গেল। আমি কোনভাবেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম এটা শুধুই একটা স্বপ্ন ছিলো। আমি ঘেমে ভিজে গেছি একদম। মাথার কাছে পানি রাখা ছিলো।এখনো আমি নিজেকে শান্ত করতে পারছি না। এটা কি দেখলাম আমি?? এ কি করে সম্ভব??


আমি ড্রয়িং রুমে যেয়ে দেখলাম রাকিন,আকাশ,উৎপল বসে আড্ডা দিচ্ছে।
উৎপলকে একটু কেমন জানি লাগছে । আমি স্পষ্ট শুনতে পেলাম উৎপল বলছে -
এবার রাকিন বল। রাকিন কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলা শুরু করল-

" আমার গল্পটা একটু অন্যরকম। আমি একটা মেয়েকে ভালবাসি অনেকদিন থেকে....... "

আমার ভয় লাগছে। সত্যিই খুব ভয় লাগছে....

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১১:৩১

কল্পদ্রুম বলেছেন: ভালো লাগলো।

২| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৩:১২

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন:
ভালো ছিল গল্পটা। কাহিনী বেশ জমাট। তবে গোছানো ছিল না। খেই হারিয়েছে মাঝে মাঝেই।

এই সমস্যাটা আমারও আছে। যখন কোন কিছু করি, তখন মনে হয় আমি কাজটা আগেও করেছি। ঠিক একই ভাবে করেছি। মাঝে সমস্যাটা বেশি বেড়ে গিয়েছিল। এখন মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে।

আপনার আগের পোস্টের মন্তব্যের জবাব এখনও পাইনি। জবাবগুলো ঠিকঠাক মত দেওয়া উচিৎ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.