![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কিছু মানুষ আছে যারা তাদের মানসিকতা পরিপূর্ণ বাকশক্তি থাকার পরও মুখে বলে প্রকাশ করতে পারে না কিন্তু লিখতে পারে, আমি তাদের-ই একজন...
অনেকদিন আগের কথা তখন আমি অনার্স ১ম বর্ষে ভর্তি হতে গিয়ে স্লিপ করেছি। বছর খানিকের জন্য ছুটি-পড়াশোনার ঝামেলা থেকে অনেকটাই মুক্ত বলা যায়। কোচিং নামক মহা দায়িত্ব ফেলে দিয়ে বাড়ি বসে আছি। এক আন্টি বাবাকে বললেন তার মেয়ে সেবার এস এস সি পরীক্ষা দেবে। আমি যেন একটু গণিত আর রসায়ন টা পড়াই । বাবা আমাকে পড়াতে বললেন। আমি মনে মনে তো ব্যাপক বিপদে পড়ে গেলাম-পাশ কাটিয়ে যেতে বাবাকে বললাম, বাবা আমার তো আগামী বছর যেভাবেই হোক চান্স পেতে হবে-আমার সময় নাই। বাবা হুঙ্কার দিয়ে বললেন এই জন্যই বুঝি সারাদিন টইটই করে মিল্লাদের বাসার সামনে পাওয়া যায় তাই না! তা আগামী বছর পরীক্ষা দিতে কোনো কোচিং এর নাম গন্ধ যেন না শুনি, আমি কিন্তু আর টাকা পয়সা দিতে পারব না। বাবা 'র কথায় বিশেষ পাত্তা দিলাম না। বাঁচা গেছে এটাই বড় কথা। সেই কবে রসায়ন পড়ছি এস এস সি-র , এতোদিনে খেল খতম । যাই হোক আমি আবার টইটই রাজ্যে ফিরে গেলাম। টইটই রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা বন্ধুবর রাজু (যার কিনা চান্স পাওয়ার ১০০% সম্ভাবনা থাকতেও পায় নাই কিছুতে- সেখানে who the hell is me!!!) বলল দোস্ত যে-করেই হোক আগামী বছর চান্সটা কিন্তু নিতেই হবে - অলরেডি মানসম্মান কিন্তু প্লাস্টিক হইয়া গেছে। আমিও মাথা নাড়লাম। এদিকে বালিকার আম্মাজান আবার আমার আম্মুর কাছে ধরা দিয়েছেন , আমি যেন একমাস হলেও তার কন্যাকে পড়াই। আমি এইবার বন্ধু শফিক(আমাদের ব্যাচের অন্যতম সফল পাপী যে কিনা SUST- এ পরিসংখ্যান পেয়ে মহাখুশি ছিল) কে ধরিয়ে দিলাম। বালিকার আম্মা বললেন শফিক তো বাসায়-ই থাকে না সে তো অনেক ব্যস্ত ক্লাশ করতে হয় সে তো এখন হলে থাকে। আমি পুরাই ধরা খাইয়া গেলাম। রসায়নের রস আস্বাদনে আমাকে আবারো বই খুলে বসতে হলো । যাই হোক মাসখনিক পড়ানোর পর সেই বালিকার সাথে আর যোগাযোগ হয় নাই। দীর্ঘদিন পর আজ সেই বালিকার সাথে মোহাম্মদপুরের রাস্তায় ধরা, স্যার ! আমি পিছনে ফিরে তাকিয়ে দেখি বালিকা আমার দিকে তাকিয়ে তার সেই স্বভাব সুলভ হাসি। জানলাম সে এখন একটা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতায় পরছে-১ম বর্ষে। কথা বলার এক পর্যায়ে ব্জানতে চাইলাম পড়াশোনার কী অবস্থা? বালিকার সেই স্বভাব-সুলভ উত্তর- ''পড়তে আর ভালো লাগে না স্যার'' এইবার আমি একটু ভালো করে তাকিয়ে দেখি কী ভুল-টাই না করে ফেলেছি! বালিকা যে আর বালিকা নাই!.......কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই দেখি একখানা পঙ্খিরাজ(বাইক) নিয়ে নায়ক হাজির । বালিকা বলল স্যার যাই, ভালো থাকবেন। আমি একটা নিঃশব্দ দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে পাশের দোকানীকে হাত বাড়িয়ে দিলাম নিকোটিনের নিঃসার্থ ধোঁয়ার সন্ধানে............. ''মামা, একটা বেনসন লাইট হবে?''
©somewhere in net ltd.