![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
‘গুডবাই কুমার, থ্যাংক ইউ সাঙ্গাকারা’
অনলাইন ডেস্ক | ২৩ আগস্ট, ২০১৫
অতীত হয়ে গেলেন কুমার সাঙ্গাকারা। খেলে ফেললেন জীবনের শেষ টেস্ট ইনিংসটি। ক্রিকেটের ক্ষুদ্র ফরম্যাটকে ‘বিদায়’ বলে দিয়েছিলেন আগেই। আজ কলম্বোর পি সারা ওভালে শেষবারের মতো খেলোয়াড় হিসেবে আবির্ভূত হলেন আধুনিক ক্রিকেটের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যান।
রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে স্লিপে মুরলি বিজয়ের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়েই সাজঘরের পথে হাঁটলেন সাঙ্গা। উল্লাস থামিয়ে ভারতীয় ক্রিকেটাররা সবাই একে বিদায় সম্ভাষণ জানালেন এই গ্রেট ক্রিকেটারকে। সাঙ্গা যখন হেঁটে যাচ্ছিলেন সাজঘরের দিকে, পুরো পি সারা ওভাল তখন আবেগমথিত। অনেকের চোখেই জল। সনি সিক্সের ক্যামেরা ঠিক সেই সময়ই ধরল প্যাভিলিয়নে বসে থাকা সাঙ্গাকারার স্ত্রী ইয়েহালিকে। রোদ চশমার নিচে হাত দিয়ে তিনি তখন ব্যস্ত চোখের জল মুছতে। পনেরো বছরের ব্যস্ত ক্যারিয়ার শেষ সাঙ্গাকারা এখন একান্তই তাঁর। ইয়েহালির তো খুশি হওয়ার কথা। কিন্তু কী আশ্চর্য, তিনি কাঁদছেন। ক্রিকেট মাঠের বাইরে স্বামীকে দেখাটা যে তাঁর জন্যও যথেষ্ট কষ্টের।
এই দুর্দান্ত ক্রিকেটারের বিদায়ের আনুষ্ঠানিকতাটা যেন একটু দ্রুতই শেষ হয়ে গেল। পুরো ব্যাপারটায় দ্রুততা থাকল খোদ সাঙ্গাকারার জন্যই। আউট হয়ে যাওয়ার পর যেন তিনি আর মাঠেই থাকতে চাইলেন না। বিরাট কোহলির নেতৃত্বে ভারতীয় দলের ক্রিকেটাররা যখন একে একে এসে তাঁর সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন, সেই হাত মেলানোতেও যেন খুব তাড়াহুড়ো করলেন সাঙ্গা। ঝড়ের বেগেই তিনি বেরিয়ে গেলেন মাঠ থেকে। ব্যাপারটা হয়তো তিনি ইচ্ছা করেই করলেন। প্রিয় প্রাঙ্গণ থেকে বিদায়ের ঘোষণা যখন তিনি দিয়েই ফেলেছেন, তখন সেই অতিপ্রিয় প্রাঙ্গণ থেকে দ্রুত বেরিয়ে যাওয়াই যুক্তিযুক্ত। সাঙ্গাকারা তাঁর বিদায়ের লগ্নে যেন সেটাই করলেন।
পি সারা মাঠের চারদিকে ছিল সাঙ্গাকারার ছবি সংবলিত হরেক ব্যানার-ফেস্টুন। ক্যারিয়ারের বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন ঢংয়ে তোলা ওই ফেস্টুনগুলোই ছিল তাঁর বিদায়ী আনুষ্ঠানিকতা। প্রথম ইনিংসে তোপধ্বনি ছিল, কিন্তু সেটা কেমন যেন বেসুরো মনে হয়েছে। আসলে সাঙ্গাকারার গোটা ক্যারিয়ারটাই যেন প্রতিফলিত তাঁর বিদায় বেলায়। তিনি যে মাপের ক্রিকেটার ছিলেন, সে অনুযায়ী প্রচারের আলো তিনি পাননি। কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকার একটি প্রতিবেদনে গতকাল তো এ কথা লিখেই দেওয়া হয়েছে। আক্ষেপ করে বলা হয়েছে, সাঙ্গাকারা যদি আরও একটু উত্তরে জন্মাতেন তাহলে তাঁর ক্যারিয়ারটাই হতো অন্যরকম। শচীন টেন্ডুলকারের বিদায়-লগ্নের সঙ্গে তুলনীয় হয়েছে তাঁর বিদায়। ভারতীয় সাংবাদিকদের কাছেই মনে হয়েছে, যতটা সম্ভাষণ তাঁর প্রাপ্য ছিল ততটা তিনি পাননি। আনন্দবাজার পত্রিকা ওই প্রতিবেদনটির মধ্য দিয়ে ঘোষণাই করে দিয়েছে, শচীন টেন্ডুলকারের চেয়ে কোনো অংশেই কম ছিলেন না এই কুমার সাঙ্গাকারা। ক্রিকেট ইতিহাস তাঁর অর্জনগুলো বিশ্লেষণ করেই তাঁকে মূল্যায়ন করবে।
শ্রীলঙ্কানরা অবশ্য সেই মূল্যায়নের ধার ধারে না । প্রচারের ডামাডোলে নয়, একজন ক্রীড়াবিদের প্রাপ্তি মানুষের ভালোবাসাতেই। সাঙ্গাকারা ভারত মহাসাগরের ওই ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্রে সেই ভালোবাসা পেয়েছেন দুহাত ভরেই।
তাঁর বিদায়ের মুহূর্তে তাই চোখ মুছতে মুছতে পি সারায় খেলা দেখতে আসা ওই ছোট্ট ছেলেটিও অস্ফুটে বলে ওঠে, ‘গুডবাই কুমার’ ‘থ্যাংক ইউ সাঙ্গাকারা।’
©somewhere in net ltd.