নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পরিশ্রমকে সঙ্গী করে কত মানুষ উর্ধ্বে গেলো, আকাশের ঐ তারার দলে/ চিরদিনই অলস আমি, আছি পড়ে অনন্তকাল এই ধরনীর গাছের তলে।
সম্প্রতি মেসি ফুটবল খেলা থেকে অবসর নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। কারণ, চিলির সঙ্গে কোপা আমেরিকার ফাইনালের আর্জেন্টিনা হেরেছে। বিষয়টা হাস্যকর ঠেকছে আমার কাছে। বিষয়টা যেন, পাড়ার মোড়ের ফুটবলারদের আচরণের মতো লাগছে। যারা একটু বয়স্ক হয়ে গেছেন। অতীতের কথা একটু ভাবেন। পাড়ায় বর্ষার সময়ে সাধারণত সব সম-বয়সীরা মিলে ফুটবল খেলতেন। অনেক খেলোয়াররাই দু’একটা গোল খাওয়ার পর নানা অজুহাতে আর খেলবে না বলে চলে যেত। এবং প্রতিপক্ষ আনন্দ মিছিল করে বাড়ি ফিরত। এমন ঘটনার সাক্ষী অনেকেই আছেন। কথা হচ্ছে ৯০ মিনিটের খেলা ৩০ মিনিটেই শেষ করে দিয়ে বিজিত নির্ণয় করা কতটুকু যৌক্তিক? লিওনেল মেসির বয়স মাত্র ২৯ বছর। জীবনকে যদি একটা খেলা ধরি, তবে তিনি তাঁর মাঝামাঝিতে আছেন মাত্র। এতেই হাল ছেড়ে পালানো কতটা যৌক্তিক? এটা কি তাঁর জন্য সম্মানজনক? কিছুদিন আগে KFC এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পর্কে কিছু তথ্য ফেসবুকে পড়লাম (তথ্যসূত্র নাই) তাতে দেখলাম ৬৫ বছর বয়সে জীবনে বারবার ব্যর্থ হওয়ার জন্য তিনি আত্মহত্যার সিন্ধান্ত নিয়েছিলেন। পরে অবশ্য ৮৮ বছর বয়সে তিনি পৃথিবীর কোটিপতিদের একজন হয়ে উঠেছেন। সুতরাং ২৯ বছর বয়সী মেসির এমন ভেঙে পড়াটা অন্তত তাঁকে ‘জীবন্ত কিংবদন্তী’ উপাধি দেয়া সমর্থকদের জন্য লজ্জাজনক। মেসি আরও দুটি বিশ্বকাপ ও কোপা আমেরিকায় অংশগ্রহণ করার সময় পাবেন, তিনি কি অতীতের ব্যর্থতা ভুলে নতুন ভাবে শুরুর ঘোষণা দিতে পারতেন না? অসম্ভব পরিমাণে ভালো খেলতে থাকা চিলিকে কি অভিবাদন জানিয়ে বলতে পারতেন না আমেরিকান টিম হিসেবে কেবল ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনা না, এখন থেকে চিলিও পাবে সমান মর্যাদা, সমান সংখ্যক সমর্থক! সেগুলো না বলে তিনি অবসরে যাচ্ছেন, তার দেখাদেখি আরও কয়েকজন আর্জেন্টিয়ান ফুটবলারও অবসরে যাওয়ার চিন্তা করছেন। পাড়ার খেলা আর কি! এই পুরো ব্যাপারটাই নিন্দাযোগ্য। আসল ঘটনা হলো- মিডিয়ার কারসাজি। মিডিয়ার একটি ঐশ্বরিক শক্তি আছে। সেটা হলো যে কোন বাক্যকে ‘চিরন্তন সত্য’ হিসেবে তৈরি করা। মিডিয়াই এমন একটা আবহ তৈরি করেছে যে, মেসি নামটা যেন জয়-এর সমার্থক শব্দ। অর্থাৎ মেসি খেলছে মানেই আর্জেন্টিনা জিতবে। তেমনটাই যদি হত, তাহলে প্রতিপক্ষ টিম খেলা শুরু আগেই ঘোষণা করত আমরা হেরে গেছি। খেলা সৌন্দর্য হারজিতে নয়, খেলার নৈপুন্যে। মেসি সম্ভবত সে কথাটা মনে রাখেননি বা ভুলে গেছেন। তিনি যেভাবে মাঠে বল নিয়ে দৌড়ান, পাস করেন, শর্ট করেন এবং ফেয়ার প্লে-তে তাঁর সে সুনাম সব-ই আদর্শ ফুটবল খেলোয়ার হিসেবে তাঁকে মর্যাদা দিতে সক্ষম কিন্তু তাই বলে কি তিনি কখনও হারবেন না? তার কোন শর্ট গোলপোস্টকে অতিক্রম করবে না? এমন চাওয়াটা কতখানি যুক্তিযুক্ত! একজন বলল ম্যারাডোনা নাকি মেসিকে উদ্দেশ্যে করে বলেছেন কোপা আমেরিকার কাপ না জিতলে দেশে ফিরতে হবে না। ম্যারাডোনা নাকি ‘জীবন্ত কিংবদন্তী’! এই তার নমুনা। একমাত্র সেই মানুষটাই ‘জীবন্ত কিংবদন্তী’ হতে পারেন যিনি ব্যক্তি হিসেবে মহত্তর। ম্যারাডোনা একজন ফুটবলার হিসেবে যতটা সার্থক, মানুষ হিসেবে ততটা নন। মেসিকে নিয়েও সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি করতে যাচ্ছে মিডিয়া এবং তাতে তাল দিচ্ছেন সমর্থকরা। একবার ভেবে দেখেন তো, যে কোন খেলার (যেগুলো টিম হিসেবে খেলে) কোন দলটা শীর্ষে পৌঁছতে পেরেছে একজন খেলোয়ারের উপর নির্ভর করে? পারেনি। আসলে টিম নির্ভর খেলাগুলোতে পুরো টিমকে পারদর্শী করে তোলাটা উচিত এবং কোন খেলোয়ারকে তার দায়িত্ব পালনের সময়ে লিজেন্ড হতে না দেয়া। জার্মানির কথা ভাবুন। প্রতিটি খেলোয়ারকে দক্ষ করে তোলার ক্ষেত্রে তারা কতটা পরিশ্রম করে। তাদের কথা বাদ-ই দেই। চিলিকেই দেখুন না, কাল কেমন খেলছে একবার ভাবুন। ক্রিকেটে আসুন, বিশ্বকাপ ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিসের খেলাটার কথা মনে আছে? ওদের দলের ‘জীবন্ত কিংবদন্তী’ একজন কিন্তু আছেন। ম্যাচটা জেতানোর পেছনে তাঁর কোন কৃতিত্ব ছিল? মেসি কেন লীগ খেলাতে ভালো খেলে? কারণ তার টিমটাকে দেখেন। বিশ্বের সব দক্ষ দক্ষ খেলোয়ারদের নিয়ে গঠিত ঐ টিমটা। মেসি একার খেলাতে গোলের বন্যা ঘটাতে পারে না। আর এমনটা প্রত্যাশাকারীরা নিঃসন্দেহে খেলা বোঝে না। সুতরাং মেসি মেসি করে নাচার কিছু নাই। মেসি নির্ভর আজেন্টিনার বদলে দক্ষ ফুটবলার নির্ভর নন-লিজেন্ড আর্জেন্টিনা দরকার। ব্রাজিলের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা সমান প্রযোজ্য। আর একটা কথা হলো ফুটবলের সৌন্দর্য হারজিতে নয়, ভ্রাতৃত্বের সঙ্গে খেলায়। সুতরাং, মেসি অবসর সিদ্ধান্ত বাতিল করে নতুন ভাবে আর্জেন্টিনা টিমকে আপডেট করার ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ প্রয়োজন। আর চিলির জয়কে সাদরে গ্রহণ করে তাদের জন্য শুভ কামনা করাও কর্তব্য।
সুব্রত দত্ত
২৭/০৬/২০১৬।
২৭ শে জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৯
সুব্রত দত্ত বলেছেন: তা তো অবশ্যই। অামি অামার মত প্রকাশ করলাম। অন্যরা তাদের মত প্রকাশ করবেন। তবে অাবেগ অার যুক্তির ফারাকটা সবারই বোঝা প্রয়োজন।
২| ২৭ শে জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৯
আব্দুল্লাহ্ আল আসিফ বলেছেন: ব্যাপক হয়েছে!
২৭ শে জুন, ২০১৬ রাত ১০:৩৫
সুব্রত দত্ত বলেছেন: কি ব্যাপক হয়েছে বুঝলাম না। সম্ভবত আমার লেখাটা। আমি কিন্তু যথাযথ সম্মানপূর্বক মেসি সম্পর্কে লিখেছি। যা হোক মন্তব্যের জন্য সাধুবাদ।
৩| ২৮ শে জুন, ২০১৬ দুপুর ২:২১
অশ্রুকারিগর বলেছেন: আপনার পোস্টে অনেক বেশি ভালোলাগা। আমি প্রথম পাতায় আপনার পোস্ট দেখেও পড়িনি শিরোনাম দেখে। ভেবেছি কোন ব্রাজিল সাপোর্টার ট্রল করেছে। নির্বাচিত পাতায় যখন আসলো ভাবলাম তাহলে নিশ্চয়ই পড়ার মতো।
পড়ার পরে অনুভুতিটা হলোঃ এভাবে ভেবে দেখিনি। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোও প্রায় একই কথা বলেছে। মেসিও হারতে পারে। মিডিয়া, দর্শক তার উপরে এমন চাপের সৃষ্টি করেছে যে হার মানেই ব্যর্থতা! যদিও টানা ৩বছরে ৩টা ফাইনালে হারার হতাশাটা অনেক তবুও আশা করব মেসি যেন সিদ্ধান্ত বদলে আবার ফিরে আসে। আমাদের এখনো অনেক জাদু দেখাতে পারেন ফুটবলের এই জাদুকর।
আপনি সহ অন্যান্য ব্লগাররা প্যাভিলিয়নে প্রকাশিত এই মেসিকে নিয়ে বিশ্লেষনধর্মী এই লেখাটাও পড়তে পারেন।
ভালোলাগা রইলো।
২৮ শে জুন, ২০১৬ দুপুর ২:৪৫
সুব্রত দত্ত বলেছেন: আপনার মন্তব্য ভালো লাগল। আসলে আমি আর্জেন্টিনা বা ব্রাজিলের সমর্থক নই। আমি ফুটবলের সমর্থক। আর লেখাটা ভালো হয়েছে এবং নির্বাচিত পোস্টে জায়গা পেয়েছে শুনে ভালো লাগল। ধন্যবাদ। আর মেসির জন্যও রইল শুভ কামনা।
৪| ২৮ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:৫১
টোকাই রাজা বলেছেন: মতামত টা ভাল লাগল।
২৯ শে জুন, ২০১৬ রাত ১২:০৯
সুব্রত দত্ত বলেছেন: ধন্যবাদ।
৫| ৩০ শে জুন, ২০১৬ ভোর ৬:৪৮
হুসাইন আহমেদ সৌরভ বলেছেন: ভালো
৩০ শে জুন, ২০১৬ সকাল ১০:০৬
সুব্রত দত্ত বলেছেন: ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ২৭ শে জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০৬
বিজন রয় বলেছেন: আপনার মতামত সবাই গ্রহণ নাও করতে পারে। তবে আপনি অবশ্যই মতামত দিতে পারেন।