![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১৯৮৮ এর ভয়াবহ বণ্যাও ছিল বরাবরের মতই ভারতের সৃষ্ট । তখন আমি দাকোপ উপজেলায় কর্মরত ছিলাম । আমার একটা অভিজ্ঞতার কথা বলব । তবে তার আগে প্রসংগক্রমে বলে রাখি, স্বাধীনতার পর থেকে যতগুলো বণ্যার কবলে আমরা পড়েছি, তার সব কয়টির মূলে ছিল ভারত । এবারতো তারা প্রকাশ্যে ধরা খেয়েছে । কিভাবে ধরা খেয়েছে ? শুনুন, তারা বলেছে, ”অতিবৃষ্টির কারণে অতিরিক্ত পানির চাপে গেইটের দরজা অটোমেটিক খুলে গেছে” কি বুঝলেন ? আমরা কি সব গাধা ? আমরা বুঝি জানিনা, বাঁধের গেট কিভাবে খোলা হয় ? পানির চাপে অটোমেটিক খুলবে ? এই কথা শুনে আমাদের এক শ্রমিক ভাই হেসে দিয়ে বললেন, “ওরা কি আমাদের এত বলদ মনে করে ? “
ভারত আমাদের দেশের স্বাধীনতার পর থেকেই শয়তানী করে আসছে । তারা শুকনোর সময় আমাদের ন্যায্য পানি বন্টন না করে উজানে পানি উঠিয়ে নিয়ে বাঁধের গেট বন্ধ করে আমাদের শুকিয়ে মারে । আবার বর্ষার সময় যখন অতি বৃষ্টির চাপে তারা ডুবে যাবার আশংকা করে, তখন গেট খুলে দেয় । আর আমাদের দেশের সরকারগুলো বিকল্প ব্যবস্থা না করে চিরকাল ভারতের পা চেটে এসেছে ( ব্যতিক্রম ব্যতিত ) ।
যাহোক, যা বলছিলাম, নদীর কাছাকাছি বিএডিসির কয়েকজন মিলে একটা ডরমেটরি ভাড়া নিয়ে থাকত । আমাদের ডরমেটরীর সিট না পেয়ে সেখানে ছিলাম কিছুদিন । সেই ডরমেটরীর বারান্দায় জোয়ারের পানি ছুঁই ছুঁই করছে । ডরমেটরীর পিলারের সাথে নৌকার দড়ি বেঁধে একজন মাঝি আল্লাহর সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় করুণদৃষ্টিতে প্রকৃতির সেই ভয়াবহতা দেখছেন । আমি তার সাথে অনেকক্ষণ কথা বললাম । শুনলাম । তিনি বলছিলেন, ” এই যে পুব দিকির বাতাস ? এই বাতাস অলো অভিশাপ । এই বাতাসের বেগ যত বাড়ে, ততো পানি ফুঁইশে ওঠে । তহন, খালি মনে অয়, আল্লাহ , তুমি যদি আমাগে উপর দিয়ে এই গজব তুইলে না নেও, তালি আমরা সবাই পানিতি চুইবে মইরে যাব । এহন ভাবতিছি, এই বাতাসতো আল্লাহ কমাচ্ছে না, আরো জোরে জোরে বাড়তিছে । ভাবতিছি, বউ ছাওয়াল মাইয়েগেতো আপনাগে অফিসি আপনারা যায়গা দেছেন । কিন্তু এই বাতাস যদি আল্লাহ ফিরাইয়ে না দেন, তালি আমাগে মরণ ছাড়া বাঁচন নাই । “
দেখুন, মাঝি কত বড় একজন জ্ঞানী মানুষ ! প্রকৃতির সাথে যার বসবাস, তিনি প্রকৃতির ভাষা বোঝেন । মানে প্রকৃতি যার সৃষ্টি সেই আল্লাহর ক্ষমতা সম্পর্কে তার ধারনা খুবই স্পষ্ট ।
তাই আমি বলতে চাচ্ছি, বাংলাদেশের উপর দিয়ে জুলাই এবং আগষ্ট এর ৫ তারিখ পর্যন্ত যা ঘটেছে, তাকে আপনারা কি মনে করেন ?
এখনো যা ঘটছে , তা কি কেবল ভারতের খেলা বলেই আমাদের ভাববার কোন অবকাশ আছে ? তারা খেলে কার ইশারায় ? কেন আল্লাহ তাদেরকে দিয়ে খেলান ? আসুন, গভীরভাবে উপলব্ধি করার চেষ্টা করি । হিসেব কষে দেখি, কারে দুষি ? সব রকম গজব আমাদের দুই হাতের কামাই কি না ?
৩য় বার স্বাধীনতা পেয়ে আমরা কি করছি ? আল্লাহর ক্ষমতাকে কেউ অনুভব করছি ? নাকি আবার ভেসে যাচ্ছি, যার যার আপন খেয়ালে ?
আমি বিনীত আরজ করছি, বিশেষ করে আমরা যারা মুসলমান আমি সহ আমাদের সবাইকে । কেননা অন্য ধর্মের মানুষদের সম্পর্কে আমি যতটুকু জানি, তারা তাদের ধর্মীয় বিষয়ে খুবই সচেতন এবং যারা প্রকৃত ধার্মিক, তারা তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের এতটুকু অমর্যাদা করেন না । আর তারা অনেক ভালো মানুষ হিসেবে জীবন যাপন করেন । তারা সৎভাবে ব্যবসা করেন । সৎ কাজ করেন । আমি বহু সাক্ষী । কিন্তু আমি বাস্তবে দেখেছি, মুসলমান ব্যবসায়ী কতটা জঘন্ন । নামে মুসলমান, কিন্তু তার চরিত্রে মুসলমিানিত্বের বালাই নেই । কারণ কি ? কারণ আমরা অধিকাংশই আমাদের ধর্ম সম্পর্কে কোন জ্ঞান রাখি না । ধর্মীয় জ্ঞান নেই এই সংখ্যাই আমরা বেশী । যাদের জ্ঞান আছে, তারা বহুধা বিভক্ত হয়ে লাঞ্চিত অপমানিত হয়েছেন, এখনো হচ্ছেন । মুসলমানদেরকে আল্লাহ বলেছেন, “তোমাদের সৃষ্টি করা হয়েছে মানব জাতির কল্যাণের জন্য । সূরা আল ইমরান আয়াত ১১০ এর অংশ” । অথচ দেখেন, অধিকাংশ ইউরোপ আমেরিকার রাষ্ট্র নায়করা তাদের নাগরিকদের কল্যাণের জন্য ১০০% কাজ করে যাচ্ছে । আর আমরা বেক্কল মুসলমানরা এখনো পর্যন্ত সুদমুক্ত অর্থনীতি কিভাবে গড়ে তুলতে বলেছেন আল্লাহ সেই কাজই করিনি, মানুষের কল্যাণতো বহু দূরের কথা । আমরা কি মুসলমান ? যে ইহুদীদের আমরা প্রত্যেক নামাযে বরদোয়া করি, সেই ইহুদীরা সারা দুনিয়ায় সুদের কারবার ছড়িয়ে দিলেও তারা নিজেদের স্ব-জাতির মধ্যে মধ্যে আর্থিক লেনদেন কিভাবে করে ? আমরা জানি কি ? তারা নিজেদের মধ্যে বিনা সূদে ঋণ দেয়ার মাধ্যমে প্রত্যেকেই আর্থিকভাবে ধনী হয়ে উঠেছে । আর এভাবেই তারা এখন পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যাদের শক্তির কাছে আমেরিকাও নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে । যে কারণে আমেরিকা ইসরাইলের কথা শুনে বাংলাদেশের বিষয়ে ভারতের নাক গলানোর সুযোগ দিয়েছে বার বার । এখনো সেই সুযোগের অপেক্ষায় আছে ভারত ।
অতএব , কাংগালের কথা যদি কেউ না মানেন, সেটা আপনাদের ইচ্ছা । আমরা এই দেশের মুসলমানরা যদি সত্যিকার মুসলমান হই, তাহলে জাতি , ধর্ম , বর্ণ , নির্বিশেষে সকল মানুষকে নিয়ে একসাথে একটা শান্তির দেশ বানাতে সক্ষম হব । সত্যিকার মুসলমান হতে হলে সূরা বাকারার ১৭৭ নম্বর আয়াত এর আদেশ ১০০% মেনে চলতে হবে । না পারলে ধ্বংস হতেই হবে, এটা নিয়মের অংকের হিসেব । যেভাবে ভেজাল হয়েছি, এই ভেজালই যদি থেকে যাই, তাহলে মনে রাখবেন, আবার ইসরাইলের সহায়তায় ভারত বিজয়ী হবে এবং এই জাতিকে তাদের সৈনিকদের জুতা চেটে পরিস্কার করাবে আমাদের মত নাদান মুসলমানদের দিয়ে । অপ্রিয় হলেও আমার এই কথাগুলো কপি পেষ্ট করে রেখে দিয়েন আপনাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য । কেননা তারা অন্তত বুঝতে পারবে, কি কারণে তাদেরকে ভারতের সৈনিকদের জুতো জিহবা দিয়ে চেটে পরিস্কার করতে হচ্ছে !!!
আসুন, সত্যিকার মুসলমান হই । তাহলেই অক্ষুন্ন থাকবে আমাদের মান, সম্মান, মর্যাদা । আল্লাহ বিমুখ করবেন না । নয়তো এই পরীক্ষায় আপাতত টেনেটুনে পাশ মার্ক দিলেও যদি এর মান বাড়াতে না পারি, তাহলে আমাদের ধ্বংসের হাত থেকে কেউ বাঁচাতে পারবে না ।
আল্লাহ আমাদের হেফাযত করুন ।
২| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ৯:৪৩
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: মুসলমানদের মধ্যে মোনাফেক বেশী। এই কারণে আমাদের এই অবস্থা।
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:০৪
গহীনে রক্তক্ষরণ বলেছেন: আমার লেখায় সাধারণতঃ পাঠক কম থাকেন । আমার তাতে কোন দুঃখ নেই । এই রাষ্ট্রের স্বাধীনতা, স্বার্বভৌমত্ব রক্ষা, শক্তিশালী একটা রাষ্ট্র গড়ে তোলা, নীতিবান আদর্শ জনশক্তি তৈরী তথা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে কোন সদুপদেশ প্রদানমূলক কোন কর্মসূচি আজতক রাষ্ট্র কর্তৃক গৃহীত হয়েছি বলে প্রতীয়মান হয়নি ( জিয়াউর রহমান সরকারের কিছু ব্যতিক্রম পদক্ষেপ ব্যতিত) । এর পর থেকে কোন সরকার কর্তৃকই এই রাষ্ট্রকে একটা শক্তিশালী, স্বাধীন মর্যাদায় উন্নীত করার জন্য কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নাই । এখন যে ঝুলন্ত অবস্থা চলছে, তার গোড়ায় ভুল করা হয়েছে । জন বিপ্লবের ক্ষমতার বৈধতাকে পাশ কাটিয়ে পতিত বাতিল সংবিধানের ফাঁদে পড়েছে বলে আশংকা হচ্ছে এর পরিণতি আবার ৪র্থ স্বাধীনতা যুদ্ধের দিকে ধাবিত করবে কি না !! তাই বেঁচে থাকতে নতুন প্রজন্মের জন্য কিছু পাগলামী শেয়ার করে রাখলাম । যাতে কবরে যেয়ে বলতে পারব, “আল্লাহ চেষ্টা করেছি আমাদের বেভোলা জাতিকে কিছুটা হলেও পথের দিশা দিতে ।