![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমিঃ- আস সালামু আ’লাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ্ ! হুজুর একটা প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে পারি ?
ইমাম ছাহেবঃ- ওয়া আ’লাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ্ ! জ্বী, জনাব বলুন ।
আমিঃ- আজ বাংলাদেশের ক্যালেন্ডার মোতাবেক ১৫ ই শাওয়াল (বাস্তবে ১৬ই শাওয়াল)’১৪৪৬, ১লা বৈশাখ’১৪৩২, ১৪ই এপ্রিল’ ২০২৫ । যদি এই সময় রামাদান মাস থাকত, তাহলে এই মসজিদে কয়টায় ফজরের আযান হত ?
ইমাম ছাহেবঃ- উম--- একটু দেইখা বলি ? উ---, হ্যা, পাইছি । ভোর ৪ঃ ২০ এ আযান হত ।
আমিঃ- ধন্যবাদ আপনাকে । তাহলে জামাত হত কয়টায় ?
ইমাম ছাহেবঃ- ৪ঃ ৩৫ এ ।
আমিঃ- আচ্ছা, তাহলে অধম এই গোনাহগারের বিনীত প্রশ্ন, রামাদানে যদি আমরা এই টাইম মেনটেন করতে পারি, তাহলে সারা বছর কেন পারব না ?
ইমাম ছাহেবঃ- ইয়ে--মানে -- আসলে আপনাদের কমিটি চাইলে আমারতো কোন সমস্যা না ।
আমিঃ- শুধু আপনার , আমার জন্যই বলছি না । ধরুন, আপনাদের ইমাম সম্মেলন হয়, সেখানে কি কোনদিন এধরনের আলাপ হয়েছে ?
ইমাম ছাহেবঃ- আমি যতগুলো সম্মেলনে আজ পর্যন্ত ছিলাম, না । এমন কোন আলাপ হয়নাই ।
আমিঃ- তাহলে সমস্যা কিন্তু শুধু কমিটির মধ্যে নেই । আপনাদের মধ্যেও আছে । যাহোক, কেন এমন হয় আমাদের ? আপনার কি মনে হয়? এর কারণ কি ? এই প্রাকটিচটা আমরা সারা বছর কেন জারি রাখতে পারছি না ?
ইমাম ছাহেবঃ- আমার মনে হয়, কমিউনিটির ম্যক্সিমাম মানুষতো কর্মজীবি, শ্রমজীবি । সবাই সারা বছরই নানা কাজে ব্যস্ত থাকে । রমাদানে সবাই আল্লাহর রহমতে এক মাস কষ্ট করে তাদের ইবাদাত বন্দেগী করতে বাধ্য হয় । কিন্তু বাকী ১১ মাসও যদি একইভাবে তারা পেরেশানীর মধ্যে থাকে, তাহলে বিষয়টা অমানবিক হয় । তা ছাড়া ম্যাক্সিমাম মানুষ যেন ফজরের জামাতে অংশ নিতে পারেন, সে জন্যই এরকম সিদ্ধান্ত নেয়া হয় ।
আমিঃ- আপনার কাছে কি মনে হয় ? এই বিবেচনায় কমিটি বা আপনাদের ইমাম ছাহেবদের এই সিদ্ধান্ত কি সঠিক ?
ইমাম ছাহেবঃ- মনে হয় সঠিক ।
আমিঃ- এই বিবেচনায় এই সিদ্ধান্ত যে মোটেই সঠিক নয়, তার প্রমাণ দেখেন, এখানেই রয়েছে । আপনি বলছেন, ম্যাক্সিমাম মুসল্লী যেন ফজরের জামাতে অংশ নিতে পারেন, তার জন্যই এই ব্যবস্থা, তাই তো ? তাহলে দেখুন, রমাদানেও ফজর জামাতে যারা অংশ গ্রহণ করতেন, এখনো কেবল তারাই থাকেন সারা বছর, ঠিক কি না ? ( তবে রমাদানে ফজরের জামাতে ব্যতিক্রম হিসেবে বড় জোর ছিটে ফোটা কয়েকজন মুসল্লী বাড়ে, যা কোন কমিউনিটির শতকরা হারে যদি হিসেব করেন তো গণনার মধ্যেই গন্য হবে না )
ইমাম ছাহেবঃ- হুম ! তা আপনি ঠিকই বলেছেন ।
আমিঃ- জ্বী, জনাব । আল্লাহ আমাকে অত্যন্ত দয়া করে সব সময় সঠিক কথাটি বলবার তৌফিক দিয়েছেন । সে জন্য আমি আল্লাহর দরবারে শুকরিয়াহ জানাই ।
ইমাম ছাহেবঃ- মাশ্- আল্লাহ্ ! আল্লাহ আপনাকে যাযাহ খায়ের দান করুন ।
আমিঃ- আমীন !!! আপনি আমাদের সবার জন্য দোয়া করবেন, আল্লাহ যেন আমাদের মুসলমানদের মাথার মধ্যে সু-চিন্তার বিকাশ ঘটিয়ে দেন । আপনারাও পারলে মানুষদের বোঝান যে, একটানা ৩০ দিন পারলে বাকী ৩৩৫ দিনও পারা সম্ভব । ইমাম সম্মেলনে আপনারা এভাবে তুলে ধরতে পারেনঃ যাদেরকে আল্লাহ ফজরের জামাতে অংশ গ্রহণ করার তৌফিক দিবেন, তারা সারা বছরই যথাসময়ে স’লাত আদায় করতে পারবেন । আর যাদের তৌফিক দিবেন না, তারা সারা জীবন চেষ্টা করলেও পারবেন না । তারা কেবল বিদ্-আত আর সিজনাল মুসলিম সাজতে পারবেন । যেমন সারা জীবন নামাযের সাথে সম্পর্ক নেই, অথচ জুম’আতে লোক দেখানো, বরাত, কদর, ঈদ --ইত্যাদি স’লাতে অংশ গ্রহণ করেন। মানে অনেকটা সিজনাল পূজা-পার্বনে অংশ নেয়ার মতই অংশ নিবেন । বরং আপনারা যদি এইভাবে দওয়াত দিতে থাকেন যে, মুসলিমরা যদি আজীবন ফজরের স’লাত যথা সময়ে রমাদান মাসের মতই যথা সমেয় জামাতের সাথে আদায়ের প্রাকটিচ করতে পারে, তাহলে কোনদিনও তাদের বড় কোন রোগ-ব্যাধি হবে না ইন শা আল্লাহ্ ( ব্যতিক্রম ব্যতিত) ।
ইমাম ছাহেবঃ জ্বী । ইন শা আল্লাহ্ !
পাদটিকাঃ আল্লাহ আমাদের মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সর্বদা সঠিক কাজ করার তৌফিক দিন ।
©somewhere in net ltd.