![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব ।
কোন্ ধরনের মানুষ আসলে সেই শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা লাভ করতে পারে ?
যে মানুষ প্রকৃতপক্ষে “মানুষ”, যে মানুষ মনে করে সে “ আদম এর বংশধর” ( ডারউইনের ভুয়া তত্ব বিশ্বাস করে না ), যে মানুষ তার শ্রষ্টার প্রতি আনুগত্যশীল, যে মানুষ মানবতার কল্যাণ করে, যে মানুষ শ্রষ্টার আদেশ এবং শ্রষ্টা কর্তৃক মনোনীত রাসুল(সঃ) উপদেশ কোন রকম দ্বিধা-দ্বন্দ ছাড়াই “শোনে আর মানে”, যে মানুষ অন্য কোন মানুষের জন্য নিরাপদ “মানুষ” সেই মূলতঃ শ্রেষ্ঠ “মানুষ” ।
সমাজে অনেক রকম মানুষের বাস ।
ধর্মহীন মানুষের সংখ্যাই বর্তমান পৃথিবীতে বেশী । কিন্তু আসলেই কি তারা ধর্মহীন ?
না । তারা ধর্মহীন নয় । তারা একধরনের প্রতারক । নিজের সাথেই নিজেকে প্রতারণা করে তারা । এই মানুষগুলো নিজেদের মেধা, বুদ্ধি, কর্মক্ষমতা, আর্থিকভাবে প্রভাবশালী হয়ে ওঠাকে একান্তই তার ব্যক্তিগত অর্জন মনে করে তার শ্রষ্টাকে ভুলে যায় । এর ফলে মূলতঃ সেই মানুষ নিজের অস্তিত্বকেই ভুলে যায় । সেই মানুষ ভুলে যায়, সে এক সময় কিছুই ছিল না । মানে তার যে “আমিত্ব”, এর কোন অস্তিত্বই ছিল না । তার বাবা মায়ের ভালোবাসার বন্ধনের মাধ্যমে শ্রষ্টার হুকুমে সে একটা অবয়বে এই পৃথিবীতে এসেছে । এটা সে আবার বুঝতে পারবে কখন ? যখন সে আবার এই পৃথিবী থেকে “নাই” হয়ে যাবে । সে এটা জানে যে, এক সময় সে এই পৃথিবী থেকে অস্তিত্বহীন হয়ে বিলিন হয়ে যাবে । তাই সে ক্ষণিকের কৃতিত্ব, গৌরব, বংশ মর্যাদা, ক্ষমতার স্বাদ ইত্যাদি নানা রকম প্রলোভনের মধ্যে নিমজ্জিত রেখে আসলে তার সেই বিলিন হয়ে যাওয়ার বিষয়টা একেবারেই ভুলে থাকার জন্যই এই প্রতারণার ফাঁদে নিজেকে বন্দী করে ফেলে ।
এই প্রতারক মানুষ নিজেকে পৃথিবীর একজন শ্রেষ্ঠতম মানুষ মনে করে, গৌরব প্রকাশ করে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে , যা মন চায় তাই করে । এদের অনুসারীরা যে কোন রাষ্ট্রে, সমাজে একটা এলিটশ্রেণীভুক্ত সংঘবদ্ধ জীবন বেছে নিয়ে তার মধ্য দিয়ে জীবনের অপূর্ণ তৃপ্তি খুঁজে ফেরে । নানা রকম এলিট ক্লাব সৃষ্টি করেছে এই শ্রেণীর মানুষেরা । এদের অভিজাত ক্লাব এর নানা রকম ডইমেনশন থাকে। যারা এর সদস্য থাকেন, তারা বিভিন্ন ডাইমেনশনের মর্ম বোঝেন । বিশেষ করে যারা অঢেল টাকার মালিক বনে যায়, তারা তাদের সমমনা বন্ধুদের নিয়ে ঐক্যবদ্ধ জোট গঠণ করে নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে এধরনের ক্লাব সৃষ্টি করে । দুর্ণীতি, কালোবাজারী, ঘুষ, চাঁদাবাজী, জোর জবরদস্তির মাধ্যমে অর্জিত অবৈধ অর্থের ভারে ভারাক্রান্ত মানুষদের আশ্রয়স্থল হয়ে ওঠে এধরনের ক্লাব । আভিজাত্যের মোড়াকে নিজেদের নানা রকম অপকর্ম আড়াল করার একটা কৌশল হিসেবেও এই ক্লাব ব্যবহৃত হয় । এক কথায় বলা চলে একাধিক দুর্ণীতগ্রস্থ্য, অবৈধ সম্পদের অধিকারি মানুষদের জোটবদ্ধ মিলনমেলা হচ্ছে “এলিট ক্লাব” , ইত্যাদি ইত্যাদি --- ।( বাস্তবে ব্যতিক্রম আছে কি না, বলা মুশকিল ) ।
কিন্তু দিন শেষে গভীর রাতে সে যখন তার নিজের বাসভবনে ফিরে যায়, সেখানে সে কোন রকম সুখ অনুভব করে না (ব্যতিক্রম ব্যতিত)। জাগতিক , কামণা -বাসনা , আহার -নিদ্রা সর্বস্ব জীবন যে অন্যান্য সকল প্রাণীর মধ্যে রয়েছে এই বোধবুদ্ধিও তাদের বিলুপ্ত হয়ে যায় । অস্থিরতা , মানসিক অশান্তি নানা রকম জীবনবোধবিরুদ্ধ স্বভাব মন মস্তিষ্ককে এতটাই ব্যস্ত করে ফেলে যে, তাদের ঘুম স্বাভাবিক হয় না । ঘুমের ঔষধ খেয়ে ঘুমাতে হয় ।
ধর্মীয় রীতি-নীতি সামাজিকভাবে ঠিক যতটুকু প্রয়োজন পড়ে, ততটুকুই লৌকিকভাবে পালন করতে তারা বাধ্য হয় । এ কর্ম তাদের মন থেকে করে না । জীবনের অধিকাংশ সময় ধর্মহীন, নীতিহীন মানুষ হিসেবেই তার জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে ।
ঠিক মৃত্যুর সময় বুঝতে পারে , যেমন করে ফিরআউন বুঝেছিল , ঠিক তেমন করে । তখন চিৎকার করবে আর বলবে, “হে আমার রব ! আমাকে আর একটু অবকাশ দিন, আমি দুনিয়াতে আপনার হুকুম পরিপূর্ণ পালন করে আবার আসব” । আল্লাহ তখন ফিরআউনকে যেমন ধমক মেরে বলেছিলেন, “এখন ?” । এখন আর কোন অবকাশ প্রদানের কোন সুযোগ নেই, তেমন করেই তার জীবনের যবনিকাপাত ঘটবে । সেদিন এলিট শ্রেণীর ক্লাবের কোন শক্তিশালী কেউ কারো সংগী হয়ে বলবে না, “আমি তোমার বিপদ থেকে উদ্ধারের জন্য আছি”।
অতএব এলিট ক্লাবের সদস্য হলেই মানুষ জাতে উঠে যায় না । মানুষকে আসলে প্রকৃত “মানুষ” হতে হয় ।
হে আল্লাহ! আমাদের সবাইকে চেতনা জাগ্রত থাকতেই হিদায়াৎ দান করুন ।
©somewhere in net ltd.