নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এস এম ইমদাদুল ইসলাম

গহীনে রক্তক্ষরণ

ধার্মিক, সৎ, যোগ্য এবং মেধাবী তরুনদের আমি ছাত্র

গহীনে রক্তক্ষরণ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইরান-ইসরাইল উভয়ের পাপের পরিণতি উভয়েই ভোগ করছে !

২০ শে জুন, ২০২৫ সকাল ৯:৪৫

আমাদের মুসলমানদের অনেকেরই ইসলামের ইতিহাস সম্পর্কে লেখাপড়া অনেক কম । তাই তারা কোন কিছু বাছ-বিচার না করেই বলে ফেলেন, “ বর্তমান জামানায় একমাত্র ইরানই ইসলামের প্রকৃত অনুসারী এবং তাদের নেতৃত্বেই আল্লাহ ইসলামের বিজয় দান করবেন” ! এই হাস্যকর কথা যখন অনেক উচ্চ শিক্ষিত ইসলামী স্কলাররাও বলে ফেলেন, তখন খুব আফসোস হয় । তাদের কথা শুনে যাদের সত্যিকার অর্থে একাডেমিক জ্ঞান আছে, তারা হাসেন । এই একাডেমিক জ্ঞান পৃথিবীতে অল্প কিছু মুসলিমদের পাশাপাশি পশ্চিমা দুনিয়ার অনেকেরই রয়েছে । এ ছাড়া ইহুদীরা জন্মগতভাবে এই ইতিহাস সবচেয়ে বেশী জানে । আল্লাহই বলেছেন, “ওরা এতটাই সত্য ইতিহাস জানে, যতটা তার নিজের সন্তান সম্পর্কে জানে” । বিশেষ করে ইরান-ইসরাইল যুদ্ধকে সামনে রেখে ৩টা দেশের ইরানের পাশে থাকার বিষয়ে আরো প্রমাণিত হয় যে, এই একাডেমিক জ্ঞান রাশিয়ার প্রেসিডেস্ট ভ্লাদিমির পুতিন, উত্তর কোরিয়ার তথাকথিত টেররিস্ট প্রেসিটেন্ট কিম জং উন এমনকি চীনের স্বৈরশাসক প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এরও আছে ।

কেন বললাম , “বিশেষ করে রাশিয়ার প্রেসিডেস্ট ভ্লাদিমির পুতিন, উত্তর কোরিয়ার তথাকথিত টেররিস্ট প্রেসিটেন্ট কিম জং উন এমনকি চীনের স্বৈরশাসক প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এরও জানা আছে ? ইরানের শিয়াদের ইতিহাস জানলে আপনি বুঝতে পারবেন । নিজেকে প্রশ্ন করুন, এই ৩ রাষ্ট্র কি ফিলিস্তিনের গণহত্যার জন্য তাদের মানবতাবোধ থেকে ইরানের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে ? ইরান কি সত্যিকারভাবে ইসরাইলের গণহত্যার কারেণেই এতটা ইসলামের জন্য দরদী ভুমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে, নাকি ছিল কোনদিন ?

সম্পূর্ণ ভুল ধারনা ।

আনপারা গুগলে সার্চ করলে ইরানের পাপের পাল্লা যে কতটা ভারী, তা খুব সহজেই বের করতে পারবেন । আমি সংক্ষেপে কেবল এটুকুই স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, আমাদের মুসলিম উম্মাহর একথা ভুলে গেলে চলবে না যে, শিয়ারা হযরত মুহম্মদ(সঃ)কেতো নবী হিসেবেই মানে না, তারা মনে করে, সেটা হযরত আলীর প্রাপ্য ছিল । আল্লাহ ভুল করে আলীর পরিবর্তে মুহাম্মদকে নবুয়ত দিয়েছিলেন ( নাউজুবিল্লাহ ! ) । বর্তমানে কি তারা তওবা করে ফিরে এসেছে ? এমন কোন দালিলিক তথ্য পাওয়া যায় না । তবে তাদের অন্তরের খবর আল্লাহ ভালো জানেন । সাহাবীদের সম্পর্কেও রয়েছে তাদের বিকৃত ধারণা । ইহুদীদের সাথে পাল্লা দিয়ে তাদের চরিত্রেও রয়েছে প্রকৃত ইতিহাসকে বিকৃত করার ইতিহাস ।

নবী পরবর্তী ইতিহাসে খিলাফত নিয়ে সাহাবীদের মধ্যে যে মতপার্থক্য দেখা যায়, তা নিয়ে বাস্তব অবস্থা কি ছিল, আর বিভিন্ন লেখকদের ইতিহাসে কি লেখা হয়েছে, তার মধ্যে যে বিস্তর ফারাক রয়েছে, তা থেকে মুসলিম উম্মাহর মধ্যেও অনেক গবেষণা রয়েছে । সেখান থেকে স্পষ্ট যে, তাদের সেই মতপার্থক্যকে পুঁজি করে সংঘিঠত ঘটনার অন্তরালে লেখকদের কল্পণার সংমিশ্রণে বহু অনাকাংখিত মিথ্যা ইতিহাসের ডাল পালা ছড়িয়েছে । তাদের দ্বন্দের মধ্যে যা কিছুই ছিল না কেন, সে বিষয়ে আল্লাহ অবগত আছেন । যেমন এক কথায় বলা চলে “তাদের সেই দ্বন্দ শুধুমাত্র রাজনৈতিক, সামাজিক ছিল না, এর সাথে মূলতঃ প্রধান ফ্যাক্টর জড়িত ছিল আল্লাহ প্রদত্ত ফান্ডামেন্টাল বিধান” । এ বিষয়ে তাদের মনের জগতের খবর আল্লাহ সবচেয়ে ভালো জানেন । কোন্ অবস্থার প্রেক্ষিতে, কি কারণে একজন আর একজনকে হত্যা করেছিলেন, সেটা সবচেয়ে ভালো জানেন আল্লাহ্ ! তাদের বিষয়ে ফয়সালা করবেন স্বয়ং আল্লাহ্ । এ জন্য মুসলিম উম্মাহ মৌলিক বিষয়টাকে প্রাধান্য দিয়ে তাদের দ্বন্দের মধ্যে সামাজিক, পারিবারিক দ্বন্দকে প্রাধান্য না দিয়ে আল্লাহর মৌলিক বিষয়ের আওতায় তাদের গবেষণাকে সীমাবদ্ধ রেখেছেন । কিন্তু পাশাপাশি ঐ যে, শিয়ারা, যাদের অন্তরে লুকিয়ে ছিল “আলীকে নবুয়ত কেন আল্লাহ দিলেন না?” সেই অন্তর্জালা থেকে তাদের অনেকের কলম থেকে এসেছে কাল্পণিক অনেক ইতিহাস, যাদের সাথে যোগ হয়েছে অনেক ইহুদী, খ্রীষ্টান লেখকদের নানা রকম কাহানী । কোন মু’মিন মুসলিমের উচিৎ নয় তাদের সামাজিক, পারিবারিক ইস্যুগুলোকে ইসলামী খিলাফতের দ্বন্দের ইতিহাসের সাথে গুলিয়ে ফেলা । আল্লাহর ফিত্বরাত অর্থাৎ একমাত্র আল্লাহ প্রদত্ত ফান্ডামেন্টালিজম যা প্রকৃত পক্ষে সকল মানুষের জন্যই নিরাপদ চিন্তার আধার, সেখানেই আমাদের স্থির থাকা উচিৎ। এই “ফান্ডামেন্টলিজম” মানে তথাকথিত ইউরোপ আমেরিকা, ইহুদী-পৌত্তলিকদের ভাষায় ফান্ডামেন্টলিজমের বানোয়াট বয়ান নয় । এই “ফান্ডমেন্টালিজম” এর ব্যাখ্যা ইহুদীরা সবচেয়ে ভালো জানে । সেটা হচ্ছে “আল্লাহর ফিত্বরাত” । যে নীতিতে তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন । এই “ফিত্বরাত” তারা জেনেও গোপন করে । প্রত্যেক আল্লাহ বিরোধী মতবাদের মানুষই সেই বিরোধকে জিয়িয়ে রেখে “মানুষ”কে বিভাজিত করেছে বিভিন্ন জাতি, ধর্মে, গোত্রে, বংশে, জাত-কুলিন, অজাত-কুজাত-অস্পৃষ্য ইত্যাদি নানা ডাইমেনশনে । অথচ সকল মানুষ এর মৌলিক বৈশিষ্ট বা মূল গানুবলী একই । তা হচ্ছে, তারা সবাই “আদমের সন্তান” । প্রত্যেকেই একাত্মা । যাদেরকে সকল নবী রাসুলদের মাধ্যমে কিতাব নাজিল করে জানানো হয়েছিল, “ তোমরা একমাত্র মহান “রব” এর আনুগত্য করবে । ” এই আনুগত্যের নাম হচ্ছে “মুসলিম” । তাহলে মূল কথা এটাই যে, প্রতিটি মানব শিশুকে আল্লাহ তার ফিত্বরাতে সৃষ্টি করেছেন । মানে “মুসলিম” হিসেবে সৃষ্টি করেছেন (“মুসলিম মানেই হচ্ছে একমাত্র “রব” এর প্রতি আনুত্যশীল) ।

সহজেই বুঝে নিন, শিয়ারা আর ইহুদীরা উভয়েই এই “ফিত্বরাত” অস্বীকারকারি ( যদি তওবা করে না থাকে, তাহলে তাদের বিষয়ে আল্লাহর যা ফয়সালা তাই হবে ) । প্রকৃত/খাঁটি মুসলমান ব্যতিত পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষই এই “ফিত্বরাত” অস্বীকারকারি । সুতরাং মুসলিম হয়েও ইরান এই মাহপাপের একজন অংশীদার আর ইহুদীরাতো জন্মগতভাবেই এর শরীক । এই বিষয়ে এরা উভয়েই পরম বন্ধু। তারা মানুষ সৃষ্টির এই মৌলিক ফিত্বরাত জানে । জানার পরও তারা মানুষকে বিভাজিত করে সারা পৃথিবীর মানুষকে বিশৃংখল করে রেখেছে ।

এই পাপের শাস্তি আল্লাহ ওদের একজনকে দিয়ে আরেক জনকে দিচ্ছেন । এটা যদি প্রকৃত ইসলামের অনুসারীরা না বোঝেন, তাহলে কেবলমাত্র নানা রকম বিকৃত ইতিহাসকে হাইলাইট করে নিজে বোঝা এবং গণমাধ্যমে প্রচার করে তা বোঝাবার চেষ্টা করলে আপনারা বোকার স্বর্গেই থাকবেন । মনে রাখবেন, আল্লাহ প্রতিটি মানুষরে খুব কাছে থেকে তার মনের জগতের প্রত্যেকটা অবস্থা রেকর্ড করছেন ।

অতএব গোটা মুসলিম জাতিকে আহবান করছি, “আসুন, খাস দিলে তওবা করি, কুরআন এবং সুন্নাহ ব্যতিত এই জামানায় অন্য কোন মতবাদ ( যা মানুষ কালে কালে নিজেরা রচনা করে বিকৃত করেছে, কুরআনকেও বিকৃত করার চেষ্টা হয়েছে, কিন্তু সফল হয়নি) দিয়ে আল্লাহর প্রকৃত খিলাফত প্রতিষ্ঠা করা যাবে না । যারা এই ভুলের মধ্যে নিমজ্জিত থেকে যত রকম লড়াইয়ে অংশ গ্রহণ করেন না কেন, ইহূদীরা আর পশ্চিমা দুনিয়া সবাই আপাদের নিয়ে তামাশা করবে । অনেকেই আপনার বন্ধু সেজে আপনাকে সহযোগীতা করবে । প্রত্যেকটি সহযোগীতার মানে কিন্তু এক একটা ভয়ংকর বাণিজ্যিক চুক্তি । এ ছাড়া যে আর কিছু নয়, তাতো আপনারা ভালো করেই জানেন ।

মুসলিদের প্রকৃত শক্তি হচ্ছে “একমাত্র ‘রব’ এর উপর ১০০% আনুগত্য করে খাঁটি তৌহীদের উপর অটল অবিচল থেকে নিজেকে, নিজ পরিবারকে, সমাজকে গঠণ করা” । সেই শক্তি শুুধুমাত্র মানবজমিনে জনবলের শক্তি, পারামাণবিক শক্তি দিয়ে পরিমাপযোগ্য নয়। সেগুলোর জাগতিক প্রয়োজন থাকবে বটে, তবে মূল প্রাণশক্তি হচ্ছে সেই “ফান্ডামেন্টাল শক্তি”, যে শক্তিকে পৃথিবীর সকল শক্তি একযোগে “চরমভাবে ভয় পায়” । আবার বলছি, সেই “ফান্ডামেন্টাল শক্তি”কে পৃথিবীর সকল এন্টি-মুসলিমরা একযোগে “চরম ভয় পায়” । আর সেই ভয় থেকেই এত যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা । একটা উদাহরণ দেখলেই আপনারা বুঝতে পারবেন,

ইসরাইলের এক সামরিক অফিসার তাদের একটা সামাজিক মাধ্যমে একটা স্টাটাস লিখেছিলেন(পরে খুব দ্রুতই সেটাকে সেখান থেকে মুছে ফেলা হয়েছে ) ।

“ যতকাল মুসলমানদের জুমআ’র জামাতে যে পরিমাণ মানুষের ভিড় হয়, সেই পরিমাণ ভিড় ওদের ফজর জামাতে না হবে, ততকাল আমরা ওদের উপর বিজয়ী থাকব এবং এভাবে চলতে থাকলে পৃথিবী থেকে মুসলিম জাতিকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলা আমাদের জন্য সহজ হবে” ।

সম্ভবতঃ ওদের কোন মেধাবী লোক এই স্টাটাসটা লেখককে দ্রুত সরিয়ে নিতে বলেছিলেন যে, এই যুগে এরকম একটা একটা লেখা গণমাধ্যমে থাকা মানে “মুসলিমদের সজাগ করে দেয়া” । কেননা সবাই তারা মুর্খ নয়, তাদের মধ্যে অনেকে লেখা পড়া করেন ।

অতএব হিসাবটা মিলিয়ে দেখি, ইরান-ইসরাইল যুদ্ধে ইরানের পাশে কারা দাঁড়িয়েছে ? তাদের চরিত্র কি আমরা জানি না ? তারা কি ইসলামের বন্ধু ? সুতরাং আবেগে কথা না বলে ইতিহাস জানি । ইতিহাসের আলোকে আমরা দেখতে পাচ্ছি “ইরান-ইসরাইল যুদ্ধে উভয় পক্ষই তাদের পাপের পরিণতি ভোগ করছে । যারা তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে, স্রেফ তাদের বাণিজ্যিক স্বার্থেই দাঁড়িয়েছে, অন্য কোন কারণ নেই । ইরান-ইসরাইল যুদ্ধ আল্লাহ কর্তৃক নিবেদিত ফয়সালা । আল্লাহ ভালো জানেন । তিনিই মহা পরিকল্পণাকরি । আল্লাহ আমাদের মত দুর্বল ঈমানের মানুষদের হেফাযত করুন ।

বিঃদ্রঃ ঐতিহাসিক রেফারেন্সগুলোর বর্ণনা করতে গেলে কলেবর অনেক বেড়ে যাবে, তাই সেখানে গেলামনা । প্লীজ এ বিষয়ে যাদের জানার আগ্রহ আছে, তারা অবশ্যই গুগলে সার্চ করে পেয়ে যাবেন ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.