নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভালবাসি জন্মভুমি বাংলাদেশ ।অসহ্য মনে হয় যে কোন অন্যায়-কে।অসততার সাথে আপোষ নয় কখনই।

সহীদুল হক মানিক

ভালবাসি জন্মভুমি বাংলাদেশ ।অসহ্য মনে হয় যে কোন অন্যায়-কে।অসততার সাথে আপোষ নয় কখনই।

সহীদুল হক মানিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

বন্যার কারণ রেইন বোমা ও উড়ন্ত নদী

৩১ শে আগস্ট, ২০২৪ সকাল ১০:০৬

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিভিন্ন কারণে দেশে-দেশে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিচ্ছে। গত বছরের এপ্রিলে ইরাক, ইরান, কুয়েত এবং জর্ডানে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছিল। এর কারণ ওইসব অঞ্চলের আকাশ বা বায়ুমণ্ডল রেকর্ড পরিমাণ আর্দ্রতা বহন করেছে। গতবছর ৫০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছিল চিলিতে। এতো পানি ঝরেছিল যে আন্দিজ পর্বত অংশের তুষার গলে গিয়েছিল। ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল স্থানীয় রাস্তা, সেতু। বন্ধ হয়ে গিয়েছিল মিঠা পানি সরবরাহ। ওই বৃষ্টিপাতকে রাজনীতিবিদরা বলছেন, ‘রেইন বোমা’। কিছুদিন আগে অস্ট্রেলিয়ায় বন্যা দেখা দিযেছিল— বিজ্ঞানীরা বলছেন, ওই সব অঞ্চলে বায়ুমণ্ডলীয় নদীগুলোর কারণে অধিক বৃষ্টিপাত হয়েছিল। আগামীতেও এই সমস্যা দেখা দেবে। যে আশঙ্কা তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে।

উড়ন্ত নদী ভূপৃষ্ঠ থেকে বায়ুমণ্ডল পর্যন্ত লম্বা ও প্রশস্ত হয়। জলীয় বাষ্পের স্তম্ভ দিয়ে গঠিত হয়। গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চল থেকে ঠান্ডা মেরু অঞ্চলের দিকে যেতে বা প্রবাহিত হতে থাকে। এই নদী প্রায় ৯০ শতাংশ জলীয় বাষ্প বহন করে। এসব নদী প্রায় দুই হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ৫০০ কিলোমিটার প্রশস্ত হয়। নদীর গভীরতা থাকে প্রায় তিন কিলোমিটার। আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে এসব নদী ক্রমেই দীর্ঘ এবং প্রশস্ত হচ্ছে। এই নদী খালি চোখে দেখা যায় না, তবে কোনো কোনো জায়গায় পুঞ্জিভূত মেঘ দেখা যায়।

নাসার জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরির বায়ুমণ্ডলীয় গবেষক ব্রায়ান কান বলেছেন, উড়ন্ত নদীর অস্তিত্ব ইনফ্রারেড এবং মাইক্রোওয়েভ ফ্রিকোয়েন্সি দিয়ে দেখা যেতে পারে।’

উড়ন্ত নদীগুলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় নদী আমাজনের নিয়মিত পানি প্রবাহের প্রায় দ্বিগুণ নিঃসরণ করে। এর প্রভাবে অল্প সময়ের মধ্যে ভূ-পৃষ্ঠে প্রচুর পরিমাণে পানি ঝরে। ফলে বিপর্যয়কর বন্যা এবং ভূমিধ্বস দেখা দেয়।

বায়ুমণ্ডলীয় নদীগুলো পৃথিবীর নতুন নতুন অঞ্চলে পৌঁছে যাচ্ছে। বিশ্বে বিপর্যয়কর বন্যা এবং ভূমিধ্বসের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে। যদিও সব বায়ুমণ্ডলীয় নদী ক্ষতিকর নয়, তীব্রতা কম থাকা নদীগুলো উপকারিও হতে পারে। বিশেষ করে যেখানে দীর্ঘদিন বৃষ্টি হয় না সেখানে এই বায়ুমণ্ডলীয় নদী উপকারী হতে পারে।
গবেষণায় দেখা গেছে যে, গ্রীষ্মমন্ডলীয় দক্ষিণ আমেরিকা, উত্তর আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বায়ুমণ্ডলীয় নদী আছে। এগুলো অনেক দীর্ঘ সময় ধরে অবস্থান করছে।
বায়ুমণ্ডলীয় নদীগুলো পৃথিবীর নতুন নতুন অঞ্চলেও পৌঁছে যাচ্ছে। বিজ্ঞানীরা এর একটি কারণ হিসেবে জেট স্ট্রিমের কথা বলছেন।

জেট স্ট্রিম হল জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বায়ুর একটি পরিবর্তিত ধরন। এর গতি অনেক দ্রুত এবং পরিধি বেশ সংকীর্ণ হয়।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন যে বায়ুমণ্ডলীয় নদীগুলি ভারতের আবহাওয়াকেও প্রভাবিত করছে।

এই জেট স্ট্রিম বেশ দ্রুত গতিতে এবং সংকীর্ণ স্রোতে পশ্চিম থেকে পূর্বে প্রবাহিত হতে থাকে।

"বাতাসে ঢেউয়ের পরিমাণ বেশি থাকা এবং জেট স্ট্রিম মানে এই দ্রুত গতির বাতাস আঁকাবাঁকা পথে যাবে এবং এতে সাধারণ গতিপথ থেকে বিচ্যুতিও হতে পারে," চিলির ভালপারাইসো বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়াবিদ ডেনিজ বোজকুর্ট এ কথা বলেছেন।

"এটি বায়ুমণ্ডলীয় নদীগুলোকে আরও জটিল পথে ধাবিত করতে পারে, সেইসাথে এর সময়কাল এবং বিভিন্ন অঞ্চলে প্রভাব বাড়িয়ে তুলতে পারে।"

সারা বিশ্বে বিপর্যয়কর বন্যা এবং ভূমিধ্বসের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে, এমন বায়ুমণ্ডলীয় নদীগুলোকে তাদের আকার এবং শক্তির ভিত্তিতে পাঁচ ভাগে ভাগ করা হয়েছে - ঠিক হারিকেনের মতো।

যদিও সমস্ত বায়ুমণ্ডলীয় নদী ক্ষতিকর নয়, বিশেষ করে যদি সেগুলোর তীব্রতা কম হয়।

বিশেষ করে এটি যদি এমন কোন জায়গায় গিয়ে হাজির হয় যা কিনা দীর্ঘস্থায়ী খরায় ভুগছে তাহলে এই বায়ুমণ্ডলীয় নদী উপকারী হতে পারে।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, বায়ুমণ্ডলীয় নদীগুলোর পর্যবেক্ষণ এবং পূর্বাভাস শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চল থেকেই দেয়া সম্ভব।

অর্থাৎ বায়ুমণ্ডলীয় নদীগুলো ওই অঞ্চলে অবস্থান করলে সেখান থেকে এর প্রভাবগুলো পর্যবেক্ষণ করা যায়। বহু দশক ধরে তারা বেশ ভালভাবেই পর্যবেক্ষণ করে আসছে।

"আঞ্চলিক আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বায়ুমণ্ডলীয় নদী সম্পর্কে ধারণা বেশ সীমিত," বলেছেন ভালপারাইসো বিশ্ববিদ্যালয়ের বোজকার্ট।

"এক্ষেত্রে প্রধান চ্যালেঞ্জ হল জটিল অঞ্চলগুলোয় বায়ুমণ্ডলীয় নদীগুলোর উপস্থিতি সংক্রান্ত তথ্যের ঘাটতি থাকা।"

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.