নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পেশায় সাংবাদিক, লেখক, স্থির চিত্রগ্রাহক। কবি, গবেষক, গ্রন্থকার, আবৃত্তিকার, যুক্তিবাদী মানবতাবাদী আন্দোলন কর্মী। সাধারণ সম্পাদক, ভারতীয় বঙ্গসমাজ। ধর্মহীন সাম্যের সমাজের স্বপ্ন দেখি ও দেখাই।

শমীন্দ্র ঘোষ

সাংবাদিক, গবেষক, লেখক, গ্রন্থকার, ফোটোগ্রাফার, কবি, আবৃত্তিকার, যুক্তিবাদী মানবতাবাদী আন্দোলনকর্মী

শমীন্দ্র ঘোষ › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিবরাত্রির ইতিহাস

০৮ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:৩৪

মহাশিবরাত্রি আজ। ২৩ ফাল্গুন ১৪২২, ৭ মার্চ, ২০১৬।
শিবপূজার নামে নোংরামী চলছে। শিব ভেবে যাতে জল-দুধ ঢালা হয় সেটা লিঙ্গ এবং তা যোনিতে প্রথিত। ওটা শিবের মুণ্ডু নয়। অর্থাত্‍ মৈথুনরত অবস্থা! ইক্!
শিবলিঙ্গতে জল-দুধ ঢালে কেন হিন্দু মেয়েরা? শিবের মতন গাঁজাখোড় বাউণ্ডুলে ছাইভস্ম মাখা বর বা জীবনসঙ্গী কেন পেতে চায়? শিবের সব শক্তি কি লিঙ্গেই? সেই শক্তিই কি পেতে চায় মেয়েরা?
এখনও বহুকোটি মেয়ে আধুনিকতার তকমায় চলেছে। জিন্স প্যান্ট টিশার্ট পরে, মুখে মাথায় নানান মশলা পালিশ করে, মুখে ফটাফট বাংরেজি-বান্দি ভাষায় বুলির ফোয়ারা তুলছে বঙ্গনারীগণ। বয়স ১৮-৪০বছর। আধুনিকতার বিজ্ঞাপনে সজ্জিত যেন। অথচ, লুকিয়ে বা প্রকাশ্যেই হাতে-পায়ে-গলায় বাঁধা গ্রহরত্নের আঙটি-তাগা-তাবিজ-মাদুলী-যন্ত্রম এবং মনের ভিতরে বাসা বেঁধে আছে কাল্পনিক ঈশ্বরবিশ্বাস। হায়! একেই বলছে আধুনিকতা! মাথার ওপরটা পালিশ করতে যে খরচ লাগে, তার চেয়ে খরচ কম মাথার ভিতরটা ঝকঝকে করতে। অথচ, সেখানে অন্ধকার! এটা দূর করতে লাগে যুক্তিবোধ, ভাবনাচর্চা। আধুনিকতা পোশাকে নয়, মননে হয়। মস্তিষ্কচর্চায় আধুনিক হয়ে উঠতে হয়। এসবের ধার ধারে না এরা। বহিরাঙ্গের রূপ নামক দাসীমার্কা হুজুকে ভাসা দেখে বোঝা যায়, এরা ভোগবাদে ও ভাববাদের থাবায় শিকার। মেরুদণ্ড বাঁকা। মন মানসিকতায় দীনহীন। নাহলে প্রকাশ্যে লিঙ্গপূজা করে কেন?

শিব নামক ঈশ্বর একটি গুজব। লিঙ্গের ঢগায় জল-দুধ ঢালা মানে অর্থ -সম্পদ-সময়-সম্মান নষ্ট। কী মানের মূর্খ এরা, দুধ-জল না খেয়ে কল্পিত-লিঙ্গে ঢালে; এবং গরুর মুত্র খায়! এটাই নাকি আ-ধু-নি-ক-তা!

পুরাতত্ত্ব-নৃতত্ত্ব-সমাজবিদ্যা অনুসারে শিব প্রাচীনবঙ্গের কৃষিদেবতা। শিবাণী তাঁর বউ। শিব ছিল বঙ্গের আইকন। উর্বরতামূলক জাদুবিশ্বাস থেকে এ'পূজা সৃষ্ট। লিঙ্গ-যোনি পূজা হতো। তবে, পরে মূর্তিতেই পূজিত হতো শিব। সিন্ধুসভ্যতায় পাওয়া গেছে শিবমূর্তি। এটা হয় আদি-অস্ত্রালরা, নয় অসুররা সেখানে নিয়েছিল। পরবর্তীতেও কৃষিদেবতা হিসেবেই পূজা করা হতো। মঙ্গলকাব্য যুগে শিবায়ণেও কৃষিদেবতা হিসেবে বিবৃত শিব। হিন্দুত্ববাদীদের সঙ্গে লড়াই থাকলেও এ'ধারা খ্রিস্ট-প্রথম সহস্রকেও ছিল অব্যাহত। খ্রিস্টিয় প্রথম শতাব্দি পর্যন্তও শুধু লিঙ্গ পূজা হতো। পৌরাণিক যুগে যোনির মধ্যে লিঙ্গ প্রথিত হলো। এখন যা পূজা করা হয় তা হলো 'জরায়ুর মধ্যে ঢুকে দেখা যোনিতে প্রথিত লিঙ্গ'। অর্থাত্‍ মৈথুনরত লিঙ্গ ও যোনি। ভাবুন একবার কী পূজা করা হচ্ছে। এ'জন্যই কি ভারত উপমহাদেশে এত ধর্ষণ?

বৈদিকরা শিবপূজকদের ঘৃণা করত। পরবর্তীতে পূর্বদেশ রসাতল জয়ের লোভে শিবকে বৈদিক রুদ্রের সঙ্গে সমীকরণ করে বৈদিকরা। ঋগ্বেদে শিব নেই; আছে রুদ্র। বলা হয় রুদ্র হলো শিবেরই অপর রূপ। এরপরে নানান রূপে তাকে বর্ণনা করা হয়। সদাশিব নটরাজ ইত্যাদি। রচিত হয় পুরাণ। রকমারি গপ্প ফাঁদা হয়। বৈদিক ও প্রাগ্বৈদিক ধর্মের সংশ্লেষে উদ্ভূত হিন্দুধর্মেই শিবের লিঙ্গপূজা জাঁকিয়ে বসে। প্রাচীন তন্ত্র হয় ভোগের তত্ত্ব। যত নারী তত শক্তি। শুরু শিব-শক্তির পূজা। নানান গপ্প ফেঁদে এ'চর্চা শুরু। বজ্রলিঙ্গ চাই। শিবলিঙ্গ পূজাও শুরু। শিবের শক্তি কালীরূপী যোনি। মৈথুন হলো কর্ম। সেই কর্মই ধর্ম। অর্থাত্‍ আধুনিক নাইটক্লাব-পানশালা ও বেশ্যালয়ের সংমিশ্রণে সমাজগঠন করা চলল বঙ্গে। হিন্দু তথা বৈদিক ধর্মে ধর্ষণের সমর্থন আছে বহু। ঋগ্বেদ থেকে পুরাণ পর্যন্ত এবং পরবর্তীর তন্ত্র এক একটা পর্ণো বিবরণ সম্বৃদ্ধ সাহিত্য।
এভাবেই ভোগবাদী ভাববাদের মিশ্রণে বঙ্গদেশে কদাচার অনাচার অত্যাচার খুন ধর্ষণ লুঠপাট চালাতে থাকল হিন্দুত্ববাদীরা। যেমনটা এখন করছে হিন্দুত্ববাদী সংঘ পরিবার ও বিজেপি। এই সংঘ পরিবার ছিল ব্রিটিশ পদলেহী ভৃত্য। সাভারকার ব্রিটিশদের কাছে মুচলেকা দিয়ে সেলুলার কারাগার থেকে মুক্তি পান। আরএসএস গড়তে থাকেন ব্রিটিশের দাস হিসেবেই। এই তাদেরই উত্তরাধিকারীরা এখন পূর্বভারত জুড়ে সুতীব্র আগ্রাসন চালাচ্ছে সেই বৈদিক তথা হিন্দুদের মতনই। এর প্রভাব পড়ছে জনমানসে। অথচ, প্রাচীনবঙ্গ বা পূর্বদেশ বা রসাতল যেনামেই ডাকা হোক, বঙ্গদেশ ছিল নাস্তিকতা সম্বৃদ্ধ। সে'ধারার উত্তরাধিকার এখন বাড়ছে দেখে ভালো লাগছে। কিন্তু এখনও পিছিয়ে রয়েছে বঙ্গনারীগণ। তাদের মননে যুক্তিবোধ, ভাবনাচর্চাই পারে এমন কদাচার রুখতে। দরকার শুধু জানার প্রবল ইচ্ছা। নারী হয়ে উঠুক প্রকৃত আধুনিক; মননে, যাপনে, জীবনসঙ্গেও।
তাই, শিবের লিঙ্গপূজা বন্ধ করুন। বন্ধ করুন ঈশ্বরবিশ্বাস। বাংলার সাংস্কৃতিক ইতিহাস জানুন।
শুভেচ্ছা।

***উক্ত নিবন্ধটি এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে লিখলাম। যে কেউই দ্বিমত পোষণ করতে পারেন। তবে, যুক্তি তথ্য প্রমাণ দেবেন। নচেত্‍ চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত থাকবেন।
ছবি: ঐতিহাসিক #মহাস্থানগড়
#শমীন্দ্রঘোষ
০৭/০৩/১৬

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:৪৪

মণীশ রায় চৌধুরী বলেছেন: দারুণ বলেছ।

২| ০৮ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:৪৯

রাইসুল ইসলাম রাণা বলেছেন: ভাই,লীলা পূজা কবে হবে?

৩| ০৮ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:৫৫

সুজন চন্দ্র পাল বলেছেন: উক্ত নিবন্ধটি এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে লিখলাম।

তথ্যের মনগড়া ঊৎসের দু এক টা উদাহরন দিয়েছেন, সঠীক ঊৎস জানান।

আপনার লেখা পড়ে মনে হচ্ছে , আপনি আধুনিকতার সঙ্গা বুঝেন না , লুঙ্গি পড়েও আধুনিক হওয়া যায় ।

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ২:২৩

শমীন্দ্র ঘোষ বলেছেন: খুব পণ্ডিত... B-)

৪| ০৮ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১:০৩

প্রামানিক বলেছেন: পুরোটাই পড়লাম।

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ২:২৫

শমীন্দ্র ঘোষ বলেছেন: ধন্যবাদ

৫| ০৮ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ২:১৫

Tanzimul Haque Alamin বলেছেন: এরা কি করে মাথায় ই হেট হয়ে যায় ....আল্লাহ এদের বুঝার তৌফিক দাও

৬| ০৮ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ৯:৪৮

বিজন রয় বলেছেন: ভদ্র লোক।

৭| ০৮ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ১০:৪৯

মাসুদ মাহামুদ বলেছেন: লীলা পূজা কি ??

৮| ০৮ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ১১:১৮

বিজন শররমা বলেছেন: এভাবে বললে আপনাকে হতাশ করে দিতে পারি । জগতে অত্যন্ত সুন্দর বলে যার পরিচিতি, যা ছাড়া ভালোবাসা হয় না, সেই পুস্প, ফুল, আই মিন ফ্লাওয়ার হচ্ছে বৃক্ষের যোনি ও প্রজনন দন্ড । বিশ্বাস হয় ? এটি পেয়েই প্রেমিকারা নিজেদের ধন্য মনে করে ।

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ২:২৭

শমীন্দ্র ঘোষ বলেছেন: চ্যালেঞ্জটা দেওয়া আছে। কবে নেবেন? সেদিন মিডিয়ার সামনে শুনবনে... :-D

৯| ০৯ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১২:১২

বিজন শররমা বলেছেন: এরা কি করে মাথায় ই হেট হয়ে যায় ....আল্লাহ এদের বুঝার তৌফিক দাও । আই এস এর কান্ড দেখে কি মাথা উচু হয়ে যায় ?

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:৪০

শমীন্দ্র ঘোষ বলেছেন: চ্যালেঞ্জটা দেওয়া আছে। কবে নেবেন? সেদিন মিডিয়ার সামনে শুনবনে...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.