নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পেশায় সাংবাদিক, লেখক, স্থির চিত্রগ্রাহক। কবি, গবেষক, গ্রন্থকার, আবৃত্তিকার, যুক্তিবাদী মানবতাবাদী আন্দোলন কর্মী। সাধারণ সম্পাদক, ভারতীয় বঙ্গসমাজ। ধর্মহীন সাম্যের সমাজের স্বপ্ন দেখি ও দেখাই।

শমীন্দ্র ঘোষ

সাংবাদিক, গবেষক, লেখক, গ্রন্থকার, ফোটোগ্রাফার, কবি, আবৃত্তিকার, যুক্তিবাদী মানবতাবাদী আন্দোলনকর্মী

শমীন্দ্র ঘোষ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইসলামহীন দেশ গঠনের ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতা:

২৮ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:০৪

ইসলামহীন দেশ গঠনের ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতা:
প্রায় শতবর্ষ পূর্বে চিন্তায় এগিয়ে থাকা ৩/৪জন ব্যক্তিত্ব এ'ব্যবস্থা করেছিলেন। তখন ভারত উপমহাদেশ ধর্ম নিয়ে খেউড়গান শুরু করেছিল ‪#‎নেহরু‬ ও ‪#‎জিন্নাহ‬। কোপ পড়ল বাঙালির ওপরেই বেশি।
‪#‎গান্ধিজি‬ কোন জাতির জনক? তিনি ‪#‎আতাতুর্ক‬, ‪#‎রজাশাহ‬, ‪#‎লেনিন‬, ‪#‎মাও‬-এর যোগ্য? তাঁর রমরমা জীবীতকালেই ওই চারজন স্বদেশ-জাতি গঠন করেছিলেন। কী করেছেন #গান্ধিজি?
বিশ্বে রাষ্ট্রক্ষমতা ব্যবহারে এবং সাংস্কৃতিক আন্দোলনের জন্য ৪টি রাষ্ট্রে ইসলাম নির্মূল-নিয়ন্ত্রিত হয়েছিল স্পষ্টভাবে। সোভিয়েত ইউনিয়ন, ইরাণ, তুরস্ক, চীন। পরে আমেরিকার দৌলতে অস্ত্রব্যবসার খাতিরে ইসলাম ফিরে আসে।
ইতিহাস থেকে:
সোভিয়েত(USSR): রুশবিপ্লবের সময়ে প্রকাশ্যে ধর্মাচরণ নিষিদ্ধ হয়। এতে সাংস্কৃতিক আন্দোলনেরও ভূমিকা ছিল। তখন সমাজতান্ত্রিক হচ্ছে ‪#‎মার্কসবাদ‬-লেনিনবাদ নীতিতে। ‪#‎শাসনে‬ #লেনিন ও পরে স্তালিন। জনগণ স্বতঃস্ফুর্তভাবে ধর্মহীন হচ্ছে। কট্টরপন্থি ও মৌলবাদী ইসলামদের প্রতি ঘোষণাটার নির্যাস হলো, 'মাদ্রাসা-মসজিদ-আযান-নামায-ঈদ-মুহরম-তাজিয়া-মেহফিলের নামে কুত্‍সা প্রচার বন্ধ। ইসলামী-আরব্য রীতিনীতি বাদ। এদেশে থাকতে হলে দেশের আইন এবং স্থানীয় রীতিনীতি আদবকায়দা সংস্কৃতিই মানতে হবে। নচেত্‍ আরবে ভাগো।' কথায় কাজ হয়েছিল। এখনও এই নীতি বহাল। কিছু বছর আগেও আবার এভাবেই সতর্ক করা হয় কিছু উচ্চিংড়ে মুসলিমদের।
আমেরিকার কৌশলে সোভিয়েত ভাঙে। ভাঙে সমাজটাও। পেরেস্ত্রৈকা। ধর্মের রমরমা ফেরে। তবু ইসলামী মৌলবাদ কড়া হাতে নিয়ন্ত্রিত। আইএস নির্মূলে বিরুদ্ধে রাশিয়া যুদ্ধরত।
চীন: ‪#‎মাও_জে_দঙের‬ নেতৃত্বে সাংস্কৃতিক আন্দোলন শুরু। ১৯৪৮-এ বিপ্লব। সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রগঠন শুরু। জনগণ স্বতঃস্ফুর্তভাবেই ধর্মহীন হয়। মূর্তি ভাঙে নিজেরাই। ইসলামও বাতিল হয়। #মাও পরবর্তীতে ভোগবাদে সওয়ার দেশটি। কিছু মাস আগে ইসলামী মৌলবাদ নিয়ে কড়া পদক্ষেপ করে সরকার। ইসলাম নিয়ন্ত্রিত। তবু, ভোগবাদের কানাগলিতে ঘুরছে চীন।
ইরাণ: ইরাণের এখটা বড় অংশের মানুষ "‪#‎অসুর_আর্য‬", "‪#‎বৈদিক_আর্য‬" এবং ‪#‎বাঙালিদের‬ সঙ্গে সম্পর্কিত।
প্রথম বিশ্ব-মহাযুদ্ধ (১৯১৪-১৭) শেষ। ইরাণের শাসক হলেন সেনাপ্রধান #রজাশাহ। প্রতিষ্ঠা করেন নতুন রাজবংশ। বংশটিকে ঘোষণা করেন ঐতিহাসিক ‪#‎আখামনশী‬ বা ‪#‎সাসানী‬ বংশের উত্তরসূরী।
ঐতিহাসিক #আখামনশী খ্রি.পূ ষষ্ঠ শতকে পারস রাজবংশের প্রভাবশালী গোষ্ঠীপতি। তাঁর উত্তরসূরী ‪#‎সাইরাস‬ বা কোরশ ৫৫০-৫২৯ খ্রি.পূ। বংশের ৫ম পুরুষ ‪#‎দারয়োশ‬(১)। এঁরা সিন্ধু উপত্যকা অধিকার করেন। পার্সীভাষার উচ্চারণ বিপর্যয়ে তখন থেকে অঞ্চলটি ও অধিবাসীদের নাম হয় হন্দউ-হন্দ্-হন্দঅ-হিন্দু।
শাসক #রজাশাহ ১৯২৫-এ ক্ষমতা পান। কৌশলী পথে শুভবুদ্ধির, শিক্ষিত ও অভিজাতদের সঙ্গে নেন। ইসলাম উচ্ছেদে দৃঢ় পদক্ষেপ করেন।
ফলে যা যা বাধ্যতামূলক হয়---
বারতি লিখছি না পরেই তুরস্কের বিষয়ে পড়ে নিন। ৯৯% হুবহু একই ঘটনা ঘটেছিল। তফাত্‍ শুধু, এখানে অভিজাত স্বৈরতান্ত্রিক পদ্ধতি ছিল। তবুও বিপুল জনসমর্থন ছিল আবালবৃদ্ধবনিতা নির্বিশেষে।
রোজা প্রসঙ্গে জনৈকা নারীর উক্তি, "পুরুষেরা রোজা পালন করতে চায়, করুক, মরার পর বেহেস্তে গিয়ে অনেক হুরী পরী পাবে। কিন্তু মেয়েরা রোজা রাখতে যাবে কেন? নিরানব্বইটা সতীন নিয়ে ঘর করার জন্য?" মুক্তি পেয়েছিল পার্শী জাতি,পার্শীভাষা।
এ'ব্যবস্থা চলে ১৯৩৮ অবধি। যুদ্ধের সময়ে অক্ষশক্তির পক্ষ নেওয়ায় দেশছাড়া হন রজাশাহ। মিত্রশক্তি-আমেরিকার দখলে ইসলাম আসে ফিরে।
তুরস্ক: তুর্কীরা "#অসুর_আর্য"দের উত্তরসূরী। #বাঙালিদের সঙ্গেও সম্পর্কিত।
১৯২১-এ সেনাপ্রধান ‪#‎মুস্তাফা_কামাল‬ রাষ্ট্রপতি হন। জনসমর্থনে তিনি নরমপন্থি ও উদার মুসলিমদের বাস্তবটা বোঝান। এতে তাদেরও সঙ্গে নেন তিনি। ইসলাম বাতিল করে দেশের সংস্কার শুরু হয় তাঁর নেতৃত্বে। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিল। রাষ্ট্র হয় ধর্মনিরপেক্ষ।
ফলে যা যা বাধ্যতামূলক হয়---
প্রকাশ্যে ধর্মাচরণ নিষিদ্ধ। ধর্ম হয় ব্যক্তিগত ও ঘরে আচরিত। ধর্মগ্রহণে পারিবারিক প্রথা বাতিল। কুরবানি বাতিল। হ্বজ্জ্ব-ওমরা-ঈদ-মুহরম-তাজিয়া বাতিল। শরীয়তি আইন বাতিল; বদলে আধুনিক আইন চালু। মাদ্রাসা বাতিল করে প্রায় ১০০০টি শিক্ষালয় খোলা হয়। ইওরোপীও ধাঁচে শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো হয়। শিশুদের ইসলামী শিক্ষা নিষিদ্ধ। আরবী ভাষা-শব্দ বাতিল; বদলে তুর্কী ভাষা চালু। আরবী হরফের বদলে ল্যাটিন হরফে লেখা চালু। মাদ্রাসা-মসজিদ বন্ধ। বৃহত্‍ মসজিদগুলোতে নামায বন্ধ; বদলে সেগুলো করা হয় জাদুঘর। দেশের সর্ববৃহৎ মসজিদ 'আয়া ছুফিয়া' পরিণত হয় সরকারি জাদুঘরে। দেশ পুনর্গঠনে রাস্তাঘাট নির্মাণের জন্য বহু মসজিদ-মাদ্রাসা-কবর-মাজার ভাঙা হয়। ওয়াকফ সম্পত্তি বাতিল করে সরকারী করা। আলেমা-উলেমা-ইমাম-মুফতি প্রথা বাতিল। কট্টরপন্থি মৌলবাদীদের অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করা চালু। সংস্কারের বিরোধিতা করলে মৃত্যু ছিল তাদের নিশ্চিত প্রাপ্তি। এতে দেশের সিংহভাগ জনগণের সমর্থন ছিল। তরুণসমাজ এই সংস্কারে সরকারকে পূর্ণ সহযোগিতা করেছিল। সহযোগিতায় ছিল নারীরাও।
নারীদের হিজাব পরা বন্ধ। পথচলতি মুসলিম মহিলাদের ওড়না কেড়ে ছিঁড়ে ফেলত তুর্কী পুলিশ। আরবী পোশাক-জোব্বা-পাগড়ি পরা নিষিদ্ধ; বদলে আধুনিক পোশাক চালু। পুরুষদের দাড়ি রাখা নিষিদ্ধ। আরবীতে কুরআন-নামাযপাঠ এবং আযান নিষিদ্ধ। বক্তৃতা এবং বিবৃতিতে ইসলাম ও ইসলামী পরিভাষা বাতিল এবং এসবে মিথ্যাচার ও কুৎসা রটনা নিষিদ্ধ। সরকারী লোকদের জামাতে নামাযপাঠ নিষিদ্ধ। ইসলামী রীতিতে সালাম নিষিদ্ধ; বদলে সুপ্রভাত-বিদায়-করমর্দন রীতি চালু। সম্পর্কে-সম্বোধনে তুর্কী রীতি চালু। হিজরী সনের বদলে ইংরেজী সন চালু। সাপ্তাহিক ছুটি রবিবার। আরবী ভাষায় নাম রাখা নিষিদ্ধ; বদলে তুর্কী ভাষায় নাম চালু। পারিবারিক পদবীপ্রথা চালু। এ'সময়ে জনগণ ‪#‎মুস্তাফার‬ পদবী দেয় #আতাতুর্ক। এর অর্থ ‪#‎তুর্ক_জাতির_জনক‬।
১৯৩৮ অবধি চলে এ'ব্যবস্থা। তুরস্ক মুক্তি পায় ইসলামী বর্বরতা থেকে। দ্বিতীয় বিশ্ব-মহাযুদ্ধের সময়ে ‪#‎মুস্তাফা_কামাল_আতাতুর্কহীন‬ তুরস্ক আমেরিকার দখলে আসে। আমেরিকার দাদাগিরিতে ফিরে আসে ইসলাম। তবু তুরস্ক আধুনিক এখনও।
আমরা বাঙালিরা এগোচ্ছি...
#শমীন্দ্রঘোষ
২৮/০৩/১৬

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.