![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সাংবাদিক, গবেষক, লেখক, গ্রন্থকার, ফোটোগ্রাফার, কবি, আবৃত্তিকার, যুক্তিবাদী মানবতাবাদী আন্দোলনকর্মী
#ভেবে_দেখার_সময়_হয়েছে
বাঙালির ক্ষেত্রে একটি দিন খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই দিনটিতে কিছু বিশেষ বিষয় লক্ষ্যনীয়। এর থেকে মনস্তাত্ত্বিক ও সমাজতাত্ত্বিক বিষয়ে বেশকিছু জানা ও বোঝা যায়। কিছু তুলে ধরা হচ্ছে; বাকিটা পাঠক-পাঠিকারা ভেবে দেখুন।
দিনটি ১৫আগস্ট।
এই দিনে প্রায় ১৬কোটি বাঙালির গরিষ্ঠাংশ শোক প্রকাশ করে। আনন্দ নেই। কারণ, #শেখ_মুজিবকে হারিয়েছিল তারা। এই বাঙালিরা বাংলাদেশের।
আবার, প্রায় ১৫কোটি বাঙালির গরিষ্ঠাংশ এই দিনে আনন্দ করে; উল্লাসে মাতে। কারণ, তারা বিশ্বাস করে, এই দিনে ভারত স্বাধীন হয়েছিল। #স্বাধীনতা দিবসের আনন্দে মাতে ভারতীয় বাঙালিরা। এরা ছড়িয়ে আছে, পশ্চিমবাংলা, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, আসাম, ত্রিপুরায় এবং আন্দামানে।
এইবার বিষয়টি দেখছি---
শুধু খোপ বদলালেই উল্টো কাণ্ড হবে।
এই ভারতীয় বাঙালিদের বাংলাদেশে রাখলে, তারা বর্তমান বাংলাদেশী বাঙালিদের মতনই আচরণ করতো। #মুজিবের বিরুদ্ধে বললেই গোঁসা করতো। আর বাংলাদেশীদের ভারতে রাখলে তারাও ভারতীয়দের মতন আচরণ করতো। #স্বাধীনতার বিরুদ্ধে বললেই খিস্তি মারত। যেন কিছু কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।
অথচ, এই দিনটিতে বাঙালিকে খণ্ডিত করা হয়েছিল। এই বিচ্ছেদটি নিয়ে তাপউত্তাপ নেই। তারা যেন প্রকারান্তরে এটা মেনে নিচ্ছে। প্রতিবাদ নেই।
আবার, এই বাঙালিরাই বলছে, দুটোরই বাংলা ভাষা, একই খাওয়াদাওয়া ইত্যাদি। অর্থাত্ মিল খুঁজে যেন বিকল্প সুখ পাচ্ছে। বলছে, "সাংস্কৃতিক দিক থেকে 'আমরা বাঙালি"। অর্থাত্, ভজঘট ব্যাপার। নয় কি?
অর্থাত্, এদের এই জানাটা, বোধটা, বিশ্বাসটা রাষ্ট্র গড়ে তুলেছে। ধীরে ধীরে প্রজন্ম ধরে মগজধোলাইয়ের ফল হলো এই ধরনের বোধ বিশ্বাস। ব্যক্তিটি নিজের বিচার বিশ্লেষণ ক্ষমতাকে কাজে লাগাচ্ছে না। বদলে রাষ্ট্রীয় হুজুকে মাতছে। নয় কি?
আবার, এই বিষয়টি নিয়েই খণ্ডিত থাকছে মনের গভীরে। অর্থাত্ রাষ্ট্রকৃত "খণ্ডন এবং শাসন" নীতিকে অগোচরেই সমর্থন করে চলেছে বাঙালিগণ। নয় কি?
অর্থাত্ বাঙালির যে স্বতন্ত্র জাতিসত্ত্বা, ভাষাগোষ্ঠী সত্ত্বা, সাংস্কৃতিক সত্ত্বা আছে এবং এগুলোর দ্বারাই বাঙালি এক ঐক্যবদ্ধ, তা ভুলে থাকছে বা থাকানো হচ্ছে। বদলে আনা হচ্ছে রাষ্ট্রতত্ত্ব; যা আরোপিত এবং রাষ্ট্রস্বার্থ চরিতার্থ করে। নয় কি? এখানেই দেখা যাচ্ছে গভীর অস্তিত্ত্ব সংকট। ভারতীয় বাঙালিরা #বাঙালিত্ব গ্রহণ করবে,নাকি ভারতীয়ত্ব গ্রহণ করবে বুঝে উঠতে পারে না। এই নিয়ে চলে বাদানুবাদ। বুঝতে চায় না বা বুঝলেও ভবিষ্যতটা বুঝতে পারে না। শেষমেশ "ধরো ভাই লক্ষ্মণ" রাষ্ট্রীয় চরিত্রটি বজায় রাখতে বাধ্য হচ্ছে। এটা ভয়ে অজ্ঞতায় ইত্যাদি নানা কারণে।
অর্থাত্ একই ও অখণ্ড জাতি, ভাষা ও সাংস্কৃতিক সত্ত্বার সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে একই দিনে। এটি হচ্ছে দুটি ভিন্ন রাষ্ট্রীয় প্রতিবেশের ফলে।
তাহলে, কী দাঁড়ালো?
১) সমাজ ব্যক্তিকে প্রভাবিত করে। এটা চাক্ষুস করলাম।
২) সমাজকে বর্তমানে রাষ্ট্র পরিচালনা করে।
৩) রাষ্ট্রের অধীনে প্রতিটি ব্যক্তিই রাজনীতি করে।
৪) বাঙালি আত্মপরিচয়হীন।
৫) বাঙালি আত্মঘাতী।
৬) বাঙালি আত্মবিস্মৃত জাতি।
৭) বাঙালি হুজুকে।
৮) বাঙালি স্ববিরোধী ও দ্বিচারী।
৯) বাঙালির অস্তিত্ব সংকটে আছে।
১০) গড় বাঙালির আবেগ বেশি।
***স্থানাভাবে আর বেশি বলা গেলো না। তবে, পাঠক-পাঠিকারাও ভাবলে আরও কিছু পাবেনই। রাষ্ট্র, সমাজ ও মনবিষয়ক আরও কিছু বুঝতে পারবেন। এছাড়া আগ্রহীরা পড়তে পারেন এই PAGE-এর একটি নিবন্ধ। শিরোনাম "কেমন করে মানুষ চালাতে হয়"। বাকিটা বুঝে যাবেনই।
*এখন, বাঙালির এই সংকট থেকে পরিত্রাণের উপায় খুঁজতে হবে বাঙালিকেই। সেই মোতাবেক তা প্রয়োগ করতে হবে।
ভেবে দেখার সময় এসেছে।
#শমীন্দ্রঘোষ
১৫/০৮/১৬
©somewhere in net ltd.