নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কবি, প্রাবন্ধিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক।

মর্তুজা হাসান সৈকত

কবি, প্রাবন্ধিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক।

মর্তুজা হাসান সৈকত › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভালোবাসার গল্প

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:২৩

দরোজা খুলে দাঁড়াতেই চমকে গেলো আবির। রুমগুলো সাজানো
গোছানো তখন। ছিমছাম একদম! ঘরের ভেতরটায় তাকাতেই
সে দেখলো ডাইনিং টেবিলটায় দুটো মোমবাতি জ্বলছে। জ্বলছে
চুপিচুপি আসন্ন উৎসবের অভিপ্রায়ে, একটি কেক তার সামনেই!

মুহূর্তেই সব বুঝে যায় আবির। বুঝে যায় কেনো বউয়ের এই
আয়োজন, ভেতর থেকে দরোজায় লক! ব্যাপারটা বুঝতে
পেরে দুষ্টুমিটাও খেলে যায় আবার! মনে মনে সে ভাবে
কর্পোরেট ব্যস্ততা আর যান্ত্রিকতার একবিংশ শতাব্দী বউয়ের
সাথে খুনসুটি করার সময়টাও কেড়ে নিয়েছে কীভাবে। সে
ভাবে এক্ষুনি তবে হয়ে যাকনা কিছু! আকাশনীল রঙা শাড়ি
পরেছিলো বৃষ্টি। কপালে টিপ, ঠোঁটে গাড় লাল লিপস্টিক।
নেশা ধরে যায় আবিরকে, ধরে যায় তীব্র সৌন্দর্যের মাদকতা!

দুষ্টুমিটাও খেলে যায় আবার, খেলে যায় বারবার! উচ্ছ্বাসটুকুন
আড়াল করে তবুও বলে ফেলে, এ টাইপের ছেলেমানুষিগুলো
কেনো যে করতে যাও এখনো! এভাবে শুনে যেন স্তব্ধ হয়ে
যায় বৃষ্টি, যায় কিছুটা থমকেও। মুহূর্তেই কিছু বুঝতে না
দিয়েই আবিরকে, দৌড়ে বেড রুমে চলে যায়। দুটো নীলাভ
মোমবাতি আসন্ন ঝলমলে উৎসবের অভিপ্রায়ে জ্বলে জ্বলে
নিঃশেষ হচ্ছিলো তখনও, একটা ছোট্ট কেক একটু সামনেই!

সে কী অভিমান অভিমানির। ভেতরে ভেতরে তার বইলো
যেন আকস্মিক ঢেউ মেঘনার! সারারাত ফুঁপিয়ে কাঁদলো
সে, কাঁদলো থেমে থেমে। মাঝে বৃথাই বার কয়েক সরি
বলেছে আবির। ধরতে চেয়েছে হাত, অভিমান ভাঙাতে!
কেবলই হাত সরিয়ে ও বলেছে, ‘আমাকে ছোঁবেনা তুমি।‘

খুব সকালে এরপর যখন আবির ঘুমিয়ে ছিলো, চলে এলো
বাবার কাছে। কি হয়েছে জানতে চাইলে বাবা, কিছুই
বলেনি। ছোট ভাইটিকেও এড়িয়ে গেছে। রুম লক করে
কেবলই কাঁদলো। কাঁদলো ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে। কাউকে
বুঝতে না দিয়েই কেবলই কাঁদলো। খানিক বাদে
বাদে আর মনে পড়ে যাচ্ছিলো গতরাত। সে ভেবেছিলো
হয়তো আবির এসে বলবে সরি অপ্সরী, চলো বাসায় যাই!

কেউ আসেনি অথচ, বলেওনি কোনো সান্ত্বনাসূচক বাক্য!
চুপচাপ দিন, ফোন কিংবা এসএমএসও নয়। সন্ধ্যেবেলা
যখন দক্ষিণের জানালাটা ধরে তাকিয়ে ছিলো আনমনে
কাজের বুয়াটা ফোনে তখন বললো, আফা কই আফনে?
তাড়াতাড়ি বাসায় আইয়েন, স্যারতো বিকাল থন অসুস্থ।‘
মুহূর্তেই কিছু যেন ঘটে যায়! খানিক আগেও অপরিসীম
ক্ষোভ ছিলো যেখানে সেখানে জেগে ওঠে গভীর মমত্ববোধ!

ঘণ্টা খানেক বাদে বাসায় ফিরেই অবাক হয়ে যায় বৃষ্টি।
তখন দু’চোখে তার বিস্ময়ের পর বিস্ময় উন্মোচিত
হচ্ছে যেন। অসংখ্য মোমবাতিতে ছেয়ে আছে রুমগুলো
ওদের। আলোর জোনাকির বিচরণ যেন রুমময় ওদের!
প্রতিটি মোমবাতির পেছনে আর একটি করে টেডি
বিয়ার, ডাইনিং টেবিলটায় সাজানো বিশাল এক কেক!

বৃষ্টির টেডি বিয়ারটা পেছনেই ওটার। হাতে একটা কার্ড।
আবির লিখেছে, ‘,ক্যান্ডেল-লাইট-টেডি বিয়ার তোমার
পছন্দের খুব, আমার চে’ এ বেশি জানে আর কে!
দুটো ক্যান্ডেল আর একটা টেডি বিয়ার বড্ড বেমানান
লেগেছে গতরাতে! খানিকটা কষ্ট দিলাম তাই! সরি
টিয়েপাখি, সরি ফর এভরিথিং।‘ বৃষ্টির চোখ বৃষ্টিতে
ভরে গেছে ততক্ষণে। মুখ ঘুরিয়ে সে তাকাতেই দেখতে
পেলো, আবির তার দিকে চেয়ে মুচকি মুচকি হাসছে!


মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৩৮

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: জীবন যদি এমন হত।

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ৯:০৫

মর্তুজা হাসান সৈকত বলেছেন: এখানেই যত আফসোস মানুষের। আসলে আমাদের প্রত্যহিক জীবনের চাপে প্রেম মলিন হয়ে যায় একসময়।

২| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ৯:১৮

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: মিষ্টি কাহিনী 8-|

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১৬

মর্তুজা হাসান সৈকত বলেছেন: থ্যানক্স।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.